চতুর্দশ দালাইলামা তানজিন গিয়েৎসো ও তার বিখ্যাত কিছু উক্তি



যাকওয়ান সাঈদ, কন্ট্রিবিউটর
চতুর্দশ দালাইলামা তানজিন গিয়েৎসো

চতুর্দশ দালাইলামা তানজিন গিয়েৎসো

  • Font increase
  • Font Decrease

চতুর্দশ দালাইলামা, তানজিন গিয়েৎসো বলে যাকে অবিহিত করা হয়, তিনি তিব্বতি জনগোষ্ঠীর আধ্যাত্মিক এবং পার্থিব নেতা। তাকে ‘অপরাহ’ নামক একটি ম্যাগাজিন থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘অনেক আমেরিকানরা আপনার বই পড়ে, এবং সেইসব বই মূলত সুখশান্তি ও প্রশান্তির পথনির্দেশক। কিন্তু তারা অনেকেই সেই সুখশান্তি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। যে সমাজটি মূলত বস্তুবাদকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে, সে সমাজে সুখশান্তি কী করে অর্জন করা সম্ভব?’

এমন প্রশ্নের উত্তরে তানজিন গিয়েৎসো বলেন, ‘একজন মানুষ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা, তথা, ভালো খাবার, ভালো থাকার জায়গা, ভালো সঙ্গী—ইত্যাদি পেয়ে যাওয়ার পরেও অসুখি থাকতে পারে, অর্থাৎ যখন সে কোনো বাজে অবস্থার মুখোমুখি হয়। দেহের আরাম কখনো মন ও মস্তিষ্কের কায়ক্লেশকে সরাতে পারে না। যদি আমরা আরেকটু গভীরভাবে তাকাই তাহলে বুঝতে পারব, যাদের অনেক সম্পত্তি আছে তারা সুখি নন। এমনকি তাদের সুখি হবার তাড়না তাদেরকে আরো অসুখি করে তুলছে। অন্যদিকে যাদের তেমন কোনো সম্পত্তি নেই, কিন্তু সন্তোষ হয়ে যাবার ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট পছন্দ রয়েছে, আর আছে শৃঙ্খল জীবনচর্চা, তারা সুখি। এমনকি এসকল ক্ষেত্রে যখন আমাদের দেহের অনারামও ঘটে, তখনও আমরা সুখি থাকতে পারি।’

ম্যাগাজিনটির পক্ষ থেকে তাকে ছোট ছোট কিছু প্রশ্ন করা হয়। যেমন, ‘আমাদের জীবনে ধর্ম আসলে কিভাবে ফাংশন করে?’ উত্তরে তানজিন গিয়েৎসো বলেন, ‘ধর্ম আমাদের সহানুভূতিশীল এবং যত্নশীল হতে সাহায্য করে। আমি মনে করি, ধর্ম উদ্দেশ্যের ব্যাপারে অনুভূতিশীল হওয়ার একটা বিষয়।’

আরেকটি প্রশ্ন এমন, ‘পৃথিবীতে আমাদের বেঁচে থাকার কী প্রয়োজন?’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘একে অপরকে সাহায্য করবার জন্য।’

এছাড়াও তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘কোনো মানুষ ধর্ম পালন করা ছাড়া কি ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারবে?’ তানজিন এর উত্তরে বলেন, ‘হ্যাঁ পারবে। এবং সে চাইলে ধর্ম ব্যাতিরেকে সুখিও হতে পারবে।’

তানজিন গিয়েৎসোকে এই সাক্ষাৎকারেই প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি কখনো পরিবার অথবা সন্তানাদির পরিকল্পনা করেছেন কিনা?’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘না। তবে আমার বয়স যখন ১৫/১৬ ছিল তখন আমার মধ্যে এই ধরনের কিছু ইন্টারেস্ট তৈরি হয়েছিল। আর এটার কারণ ছিল শারীরিক। কিন্তু তারপরে, আমার কয়েকজন বয়স্ক সঙ্গী, যারা মংকে উপাসনা করতেন, তারা আমাকে পরিবারের কিছু জটিলতাপূর্ণ বিষয় নিয়ে বলেছিলেন। অবশ্যই, পরিবার-চর্চার মধ্যে একটা প্রচণ্ড সুখানুভব আছে, কিন্তু একই সঙ্গে আছে অনেক ধরনের সমস্যা।’

সুখ ও শান্তি বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘আপনাকে দেখলে বোঝা যায় আপনি অত্যন্ত সুখি একজন মানুষ। আপনি কিভাবে নিজের জন্য এই সুখ বা প্রশান্তির জীবন বিধান করেছেন?’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি কখনো নিজেকে তেমন সিরিয়াসলি নিই না। এটাই আমাকে সুখি রাখে।’

শেষ প্রশ্নে ম্যাগাজিনটির সাক্ষাৎকারগ্রহণকারী তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘প্রতি সপ্তাহে ম্যাগাজিনটিতে আমার একটি কলাম লিখতে হয়, বিষয় থাকে, সুনিশ্চিতভাবে আমি কী জানি? আপনি বলবেন, সুনিশ্চিতভাবে আপনি কী জানেন?’ উত্তরে তানজিন গিয়েৎসো বলেন, ‘পরার্থপরতা, বা পরদুঃখকাতরতা সুখ বিধান করবার সবচেয়ে সহজ পথ। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/13/1563023701657.jpg

নিচে বার্তার পাঠকদের জন্য চতুর্দশ দালাইলামা তানজিন গিয়েৎসোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি পেশ করা হলো। তার আগে আবশ্যিকভাবে কয়েকটি বিষয় জানা প্রয়োজন—ফুটনোট আকারে বিষয়গুলো জেনে তারপর আমরা উক্তিতে যাব।

১. ভারত এবং চিনের মতো দুইটি প্রাচীন সভ্যতার মধ্যবর্তী স্থানে তিব্বতি সভ্যতার অবস্থান।

২. তিব্বতের আধ্যাত্মিক এবং পার্থিব প্রধানকে দালাইলামা বলা হয়। মোঙ্গলিয় ভাষায় দালাই শব্দের অর্থ সমুদ্র, আর লামা শব্দের অর্থ জ্ঞানী। অর্থাৎ, দালাই লামা শব্দের অর্থ দাঁড়ায়, যে ব্যক্তির জ্ঞান সমুদ্রের মতোই গভীর।

৩. এই পর্যন্ত চৌদ্দজন দালাই লামা নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে যিনি আছেন—তানজিন গিয়েৎসো, তিনি চতুর্দশ দালাইলামা।

৪. ঠিক নির্বাচন নয়, তিব্বতের অন্তর্গত বৌদ্ধধর্মের বিধান অনুযায়ী দালাইলামাকে খুঁজে বের করা হয়। মূলত তিনটি পদ্ধতিতে এই খুঁজে বের করার প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন হয়।
ক) একজন দালাইলামার মৃত্যুর পর তিব্বতের বৌদ্ধধর্মীয় আধ্যাত্মিক ব্যক্তিদের মধ্য থেকে কেউ একজন ইঙ্গিত পান, নতুন দালাইলামাকে খুঁজে পেতে হলে কী অনুসরণ করতে হবে। সেই ইঙ্গিত মোতাবেক নতুন দালাই লামাকে খুঁজে বের করা হয়।
খ) কেউ যদি এই ইঙ্গিত না পান তাহলে, প্রয়াত দালাইলামার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কালে যে ধোঁয়া নির্গত হয়, সেই ধোঁয়ার গতিপথ অনুসরণ করা হয়। এবং মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন শিশুদের মধ্য থেকে পরবর্তী দালাইলামাকে খুঁজে বের করা হয়।
গ) এই দুই প্রক্রিয়ার কোনোটিতেই যখন পরবর্তী দালাইলামাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না, তখন বৌদ্ধধর্মের জ্ঞানীরা লামও-লা-সো নামক একটি সরোবরে ধ্যান করতে আরম্ভ করেন। এই ধ্যানের ভিত্তিতেই তারা ইঙ্গিতপ্রাপ্ত হন, কে হবেন পরবর্তী দালাইলামা।

৫. ১৯৩৫ সালে ১৩তম দালাইলামার মৃত্যুর পর বর্তমান দালাইলামা তানজিন গিয়েৎসোকে খুঁজে পেতে চার বছর সময় লেগেছিল।

৬. ছয় বছর বয়সে তানজিন গিয়েৎসোর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। এবং ১৯৫৯ সালে বৌদ্ধদর্শনের ওপর তিনি সর্বোচ্চ শিক্ষালাভ করেন।

৭. ১৯৫০ সালে চীন কর্তৃক তিব্বত করায়ত্ব হলে, পরবর্তীতে তানজিন গিয়েৎসোর নেতৃত্বে তিব্বতের স্বাধীকার আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। কিন্তু ১৯৫৯ সালে আন্দোলনটি ব্যর্থ হয়। এবং তানজিন গিয়েৎসোকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। তখন চতুর্দশ দালাইলামা ভারতে নির্বাসন গ্রহণ করেন।

৮. তিব্বত থেকে ভারতে নির্বাসিত হয়েও তিনি পৃথিবীর কাছে অহিংসার বাণী পৌঁছে দেবার কাজ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করেননি। এজন্য তাকে ১৯৮৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/13/1563023926195.jpg

তানজিন গিয়েৎসোর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি—

• মানুষ টাকা কামাতে গিয়ে তার স্বাস্থ্যকে অগ্রাহ্য করে। অতঃপর স্বাস্থ্যকে উদ্ধার করতে গিয়ে সে টাকাকে অগ্রাহ্য করে। তারপরে সে ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, কেননা সে বর্তমান সময়কে ভোগ-উপভোগ কিছুই করতে পারছে না। এর অর্থ হলো সে আসলে বর্তমান কিংবা ভবিষ্যত কোনোখানেই বসবাস করছে না। সে এমন এক জীবন অতিবাহন করছে, যেন কোনোদিন সে মরবে না। আর এমনভাবে সে মারা যাচ্ছে, যেন ইতঃপূর্বে তার কোনো জীবন ছিল না।

• মনুষ্য সুখশান্তি আর মনুষ্য সন্তোষ এই দুটোই শেষপর্যন্ত আসে নিজের মধ্য থেকে। এরকম আশা করা নিতান্ত ভ্রান্ত চিন্তা যে, চূড়ান্ত সন্তোষ আসবে টাকা থেকে অথবা কম্পিউটার থেকে।

• মানুষ তৈরি হয়েছে ভালোবাসার জন্য। বস্তু তৈরি হয়েছে ব্যবহারের জন্য। পৃথিবীটা এত বিশৃঙ্খল কেননা বস্তু হয়ে যাচ্ছে ভালোবাসার ব্যাপার, আর মানুষ হয়ে যাচ্ছে ব্যবহার্য বিষয়।

• প্রতিটি ধর্মীয় আচারঅনুষ্ঠান মূলত একটাই বার্তা ধারণ করে। আর এটা হচ্ছে প্রেম, অনুকম্পা আর ক্ষমা। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তাদের উচিত আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে ওঠা।

• আপনি যদি অন্যকে আনন্দিত রাখতে চান, তাহলে সহানুভূতির চর্চা করুন। আপনি যদি নিজেকে আনন্দিত রাখতে চান, তাহলেও সহানুভূতির চর্চা করুন।

• যতটুকু সম্ভব ভালো আচরণ আর ভালো চিন্তাচেতনার ব্যাপারে আমাদের উৎপাদনশীল থাকাটা খুব জরুরি বিষয়। কেননা, সুখশান্তি-প্রসন্নতা একই সঙ্গে স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী। এটা যেমনভাবে আপনার জন্য তেমনভাবেই ভষ্যিতে যারা আসবেন আপনার জীবনে, তাদের জন্যও।

• ধর্মের একমাত্র অভীষ্টই হলো নিজের সত্তাকে নিয়ন্ত্রণ করা। অন্যদের নিন্দামন্দ করা নয়। বরং নিজের নিন্দামন্দ করতে পারা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। আমার অন্তর্গত রাগক্ষোভ, আসক্তি, ঘৃণা, ঔদ্ধত্ব আর পরশ্রীকাতরতা বিষয়ে আমি কতটুকু কাজ করেছি? এগুলো এমনসব বিষয়, যেগুলোকে দৈনিক একবার হলেও ভাবা উচিত।

• সহানুভূতি এবং পরমসহিষ্ণুতা কোনো দুর্বলতা নয়, এটা শক্তি।

• কঠিন অভিজ্ঞতাগুলোর কারণে জীবন অনেক সময়ই আরো অর্থবহ হয়ে ওঠে।

• আমি বিশ্বাস করি, সকলপ্রকার পীড়া আর কায়ক্লেশের কারণ হিসেবে আছে অজ্ঞতা।

• যদি বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারে, বুদ্ধিজমের ওপরে বিশ্বাস রাখা একটা ভ্রান্ত চিন্তা, তাহলে বুদ্ধিজমকে পরিবর্তন-পরিবর্ধনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আমার দৃষ্টিতে, বিজ্ঞান এবং বুদ্ধিজম উভয়েই সত্যের সন্ধান আর বাস্তবতা বোঝার পক্ষে সমাবস্থায়ী। বাস্তবতার বিষয়ে বিজ্ঞান যেই আনুমানিকতার শিক্ষা দেয়, সেখানে সম্ভবত আরো অগ্রসর বোঝাবুঝির বিষয় রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এখানেই বুদ্ধিজম সমৃদ্ধশালী তার নিজস্ব বিশ্বকে দেখার ভঙ্গি নিয়ে।

• সতর্কতার মধ্য দিয়ে আপনি একটি নির্দিষ্ট আচার-ব্যবহার রপ্ত করতে পারবেন। এটা একটা পথ, এই পথে আপনার আরো শান্তি, আরো সহানুভূতি এবং আরো বন্ধুত্ব সাধিত হবে।

• পৃথিবী আর কোনো সফল ব্যক্তিত্ব চায় না। মরিয়া পৃথিবী এখন শুধু তাদেরকে চায়, যারা শান্তি স্থাপন করবেন, আরোগ্য প্রদান করবেন, পৃথিবীকে পুনরুদ্ধার করবেন, এবং নতুন গল্প শোনাবেন। যারা কল্যাণকামী এবং পেয়ারি।

• সত্যিকার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে অনুরাগ থেকে। এটা ক্ষমতা কিংবা অর্থ নয়।

• অন্যের থেকে সেরা হওয়াটা কারো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হতে পারে না। লক্ষ্য হতে পারে, নিজেরই অতীতকাল থেকে আরো ভালো হয়ে ওঠা।

• সুখশান্তি কোনো রেডিমেড বিষয় নয়। এটা আপনারই কর্মকাণ্ড থেকে এসে থাকে।

• সংবেদনশীল থাকাটাই এই সময়ের আমূল সংস্কারবাদ।

• মানুষ অনেক ধরনের পথ দিয়েই পরিপূর্ণতা ও প্রশান্তির দিকে আগায়। কেউ আপনার পথে নেই মানে সে পথভ্রষ্ট, এমনটা নয়।

• এটা খুব বিরল অথবা প্রায় অসম্ভব এক ব্যাপার যে, একটা ঘটনা সকল দিক থেকেই নেগেটিভ সাব্যস্ত হবে।

• যতক্ষণ সম্ভব অনুগ্রহশীল থাকুন। এটা সবসময়ই সম্ভব।

• আশাবাদিতাকেই গ্রহণ করুন। ইট ফিলস বেটার।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;