ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কিছু অজানা তথ্য



মিলু হাসান, কন্ট্রিবিউটর
মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯২১ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জুলাই মাসের প্রথম দিনটি তাই ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্বান জানান। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এ বিলে সম্মতি দেন। এ আইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। এ আইন বাস্তবায়নের ফলেই ১৯২১ সালের ১ জুলাই প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে বার্তা২৪-এর পাঠকদের জন্য থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে জানা অজানা কিছু তথ্য।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/01/1561971004728.jpg
কার্জন হল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

১.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৬০০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র ২০০ একর জমি জুড়ে আছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।

 

২.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। এমনকি শিক্ষক, লাইব্রেরি এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সহায়তার কারণে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজ দুটির নামে নিজেদের দুটি হলের নামকরণ করে—জগন্নাথ হল, ঢাকা হল (যা বর্তমানে ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল)।

 

৩.
ঢাবিতে তৎকালীন সময়ে নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। ১৯২১ সালে লীলা নাগের মেধা ও আকাঙ্ক্ষার কারণে তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর ড. হার্টস তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিশেষ অনুমতি দেন। তিনি ইংরেজিতে এম.এ ক্লাসে ভর্তি হন। লীলা নাগ ছিলেন কলকাতার বিথুন কলেজ থেকে ইংরেজিতে বি.এ পাশ করা শিক্ষার্থী। নারীদের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফলে প্রথম হওয়ায় তিনি পদ্মভূষণ স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। লীলা নাগের পৈতৃক-নিবাস সিলেটে। জন্ম হয়েছিল আসামে। লীলা নাগ পরবর্তীতে বিপ্লবী অমিত রায়কে বিয়ে করেন এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

 

৪.
বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

৫.
স্বাধীনতার পর—১৯৬১ সালে স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের অর্ডিন্যান্স বাতিল করে জাতীয় সংসদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ১৯৭৩ পাশ হলে এ অর্ডিন্যান্স দ্বারা এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে।

 

৬.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে রয়েছে ছয় লাখ আশি হাজারেরও বেশি বই।

 

৭.
ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম লীগ। মিথ আছে যে মধুর ক্যান্টিন ছিল বাগান বাড়ির নাচঘর।

 

৮.
১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মধুদা, তাঁর স্ত্রী, তাঁর ছেলে ও নবপুত্রবধূ।

 

৯.
ঊনিশ শতকের শুরুতে বিক্রমপুরের শ্রীনগরের জমিদারের সাথে মধুদা’র দাদা নকরীচন্দ্রের ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাবি প্রতিষ্ঠিত হলে জমিদারী ব্যবসায় ঢাবি এলাকার দায়িত্ব পান নকরীচন্দ্র। নকরীচন্দ্রের মৃত্যুর পর মধুদা’র পিতা আদিত্য চন্দ্র মধুর ক্যান্টিন দেখাশোনার দায়িত্ব পান। ১৯৩৯ সালে পক্ষাঘাতে আদিত্য চন্দ্রের মৃত্যুর পর মধুদা ব্যবসা দেখার দায়িত্ব পান। এভাবেই বংশ পরম্পরায় চলে আসছে ঢাবির মধুর ক্যান্টিনের ব্যবসা।

 

১০.
১৯৭০ সালের ৮ মার্চ থেকে ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী সময়ে ঢাবিতে কোনো সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। স্বাধীনতার পর ঢাবির প্রথম সমাবর্তন ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। যা ছিল ৪০ তম সমাবর্তন। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরবেলা জাতির পিতা নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় সে সমাবর্তন আর অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর ৪০তম সমাবর্তন হয় ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর।

 

১১.
কিংবদন্তী শিক্ষক ড. আহমদ শরীফ তাঁর চাচা আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সংগৃহীত পুঁথি সম্ভার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিনামূল্যে দেওয়ার শর্তে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি পান। তাঁর পোস্ট ছিল সহকারী গবেষক। মূলত পুঁথি নিয়ে গবেষণার জন্যই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে তিনি বাঙলা বিভাগের অধ্যাপক হয়েছিলেন।

 

১২.
স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ঢাবি থেকে বের হওয়া বেশিরভাগ কবির স্নাতকে লেখাপড়া ছিল অসম্পূর্ণ। তাঁরা কেউ ঢাবি থেকে কোনো সনদপত্র পাননি যেহেতু স্নাতক সম্পূর্ণ করেননি। যেমন : শামসুর রাহমান, আবুল হাসান, সৈয়দ শামসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আহমদ ছফা।

 

১৩.
বুদ্ধিজীবী, লেখক আহমদ ছফা ঢাবির শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ দেয়নি।

 

১৪.
বাঙলাদেশের সব জাতীয় আন্দোলনে ঢাবির শিক্ষার্থীদের অবদান সবচেয়ে বেশি। তবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ঢাবির শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিলেও ভাষা শহীদদের কেউ যেমন : সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউর রহমান—ঢাবির শিক্ষার্থী ছিলেন না।

 

১৫.
ঢাকার নওয়াব পরিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে জমি দিয়েছিল বলে যে মিথটি চালু আছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারি খাস জমিতে।

 

১৬.
রবি ঠাকুরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতার যে মিথ চালু আছে তার দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেছেন, “কেউ কেউ কোনো প্রমাণ উপস্থিত না করেই লিখিতভাবে জানাচ্ছেন যে, ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ কলকাতায় গড়ের মাঠে রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে এক বিরাট জনসভা হয়। ওরকম একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল বটে, কিন্তু তাতে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি ছিল অসম্ভব, কেননা সেদিন তিনি কলকাতাতেই ছিলেন না। ১৯১২ সালের ১৯ মার্চ সিটি অব প্যারিস জাহাজযোগে রবীন্দ্রনাথের বিলাতযাত্রার কথা ছিল। তাঁর সফরসঙ্গী ডাক্তার দ্বিজেন্দ্রনাথ মিত্র জাহাজে উঠে পড়েছিলেন, কবির মালপত্রও তাতে তোলা হয়ে গিয়েছিল; কিন্তু আকস্মিকভাবে ওইদিন সকালে রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মাদ্রাজ থেকে তাঁর মালপত্র ফিরিয়ে আনা হয়। কলকাতায় কয়েক দিন বিশ্রাম করে ২৪ মার্চ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে চলে আসেন এবং ২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে সেখানে বসে ১৮টি গান ও কবিতা রচনা করেন।”

 

তথ্যসূত্র :
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ, সরদার ফজলুল করিম।
২. স্মৃতি-বিস্মৃতির নগরী ঢাকা / মুনতাসীর মামুন।
৩. উইকিপিডিয়া।

   

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা



মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

  • Font increase
  • Font Decrease

উদাল, সোনালি হলুদ সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো মাঝারি সাইজের বৃক্ষ। পত্রঝরা উদাম শরীরে পুরো গাছজুড়ে শুধুই সোনালি হলদে রঙের ফুল। বসন্তে হলদে পাপড়ি ঝরে রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা। প্রকৃতির এক অপর সৌন্দর্য উদাল বৃক্ষ ও তার ফুল।

উদাল আমাদের দেশীয় উদ্ভিদ। এদের প্রিয় আবাস পাহাড়ি এলাকা হলেও আগে সারাদেশেই কমবেশি দেখা যেত। নির্বিচারে গাছ উজাড় হতে থাকায় অন্য গাছের সাথে এ দেশী গাছটিও বিপন্ন। ঢাকার মিরপুর জাতীয় উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাংলা একাডেমি, ঢাকার রমনা পার্ক, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র তীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কসহ সমতলের অনেক স্থানে উদাল দেখা যায়। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিশ্র চিরসবুজ বন এবং গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পাতাঝরা শালবনের স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে উদাল গাছ দেখা যায়।


উদালের বৈজ্ঞানিক নাম স্টারকুলিয়া ভেলোসা। ইংরেজিতে এটিতে হেয়ারি স্টারকুলিয়া বা এলিফ্যান্ট রোপ ট্রি নামে ডাকা হয়। এ গাছের বাকল থেকে এক প্রকার উন্নতমানের তন্তু পাওয়া যায়। এ তন্তু দিয়ে হাতি বেঁধে রাখার দড়ি বানানো হতো বলেও ইংরেজিতে এমন নামকরণ। আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে এটি চান্দুল নামেও পরিচিত। এই উদ্ভিদ মগ ও মারমাদের কাছে ফিউ বান, গারোদের কাছে উমাক এবং ম্রোদের কাছে নাম সিং নামে পরিচিত।

উদাল ২০ মিটার বা ততোধিক লম্বা হয়। এদের বাকল সাদাটে রঙের। এদের পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক বড় ও পাতা খাঁজকাটা, পাতার প্রশাখার আগায় পাতা ঘনবদ্ধ। ফুলগুলি সোনালি হলুদ রঙের, ফুলের ভেতর বেগুনি। এর ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকলেও পাকলে গাঢ় লাল রঙের হয়। বীজের রং কালো। বীজ স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালীর প্রিয় খাবার। তবে মানুষও এর ফল খেয়ে থাকে। বাকল থেকে আঁশ পাওয়া যায়। এ আঁশ দিয়ে দড়ি তৈরি হয়। কাঠ বাদামি রঙের, সাধারণত নরম ও হালকা হয়। এই গাছের কাঠ দিয়ে চায়ের বাক্স বানানো হয়।

উদাল ফল খাচ্ছে ইরাবতী কাঠবিড়ালি। ছবি: তবিবুর রহমান

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, এ গাছ দেশের বন-জঙ্গলে প্রচুর হতো। এ গাছের পাতার বোঁটা দিয়ে শরবত বানানো হয়। উঁচু গাছ থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর এর গোড়া থেকে অনেক নতুন নতুন ডালপালা গজালে সেখান থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও উদাল গাছ থেকে স্বচ্ছ আঠা পাওয়া যায়। যা দিয়ে কনফেকশনারিসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ উদ্ভিদ বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির। গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ তিনশ উদাল গাছের চারা বিভিন্ন স্কুল কলেজে বিতরণ করেছে। এবারও প্রায় পাঁচশ চারা বিতরণ করা হবে।


ড. জসীম বলেন, উদলের বাকলের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে জলের সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়। তবে খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রাঙ্গামাটি বনবিভাগের এসিএফ তবিবুর রহমান জানান, উদালের বীজের স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালির খুব প্রিয়। তবে এ বীজ মানুষও খেয়ে থাকে।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী উদালকে বাংলাদেশের ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

;

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;