মেঘপাহাড়ের ডাক-৬

গ্র্যান্ড মদিনা মসজিদ



মাহমুদ হাফিজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

অন্ধকারের ঘোর কাটিয়ে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় শিলং পৌঁছে ভ্রামণিকদল পুলকিত। চারদিকের দৃশ্যে যেমন নয়ন জুড়ায়, তেমনি জলহাওয়ার শীতলতা অনুভূতিকে প্রশান্ত করে দেয়।

কবি নজরুল বলেছেন, ‘আমার নয়নে নয়ন রাখিয়া প্রাণ করিতে চাও কোন অমিয়...’ আমরা যেন প্রকৃতির এক অমিয়সুধা পান করছি। এই পরিভ্রমণরত মেঘদলে ঢেকে যাচ্ছে অদূরের পাহাড়, তো পরক্ষণেই রোদের ঝিলিক। সৃষ্টির এই অবারিত বৈভব দেখে অজান্তে এর স্থপতির প্রতি মাথা নুয়ে আসে। সেই মাথাকে আরও নত করে দিতে আমাদের অন্যতম ভ্রমণগাইড খাসিভাষার কবি ও কলেজশিক্ষক বাখিয়ামুন রিনজারে গাইডেন্সে গাড়ি ছুটে চলে লাবান এলাকায়। সেখানে শিলংয়ের নতুন বিস্ময় গ্র্যান্ড মদিনা মসজিদ বা গ্লাস মসজিদ। ভারতের একমাত্র গ্লাস এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম মসজিদ।

ব্লগ ও ভ্রমণ গাইডে শিলংয়ের প্রচুর দর্শনীয় স্থানের মধ্যে গ্লাস মসজিদের উল্লেখ পাওয়া যায় না বললেই চলে। আগ্রহ আকুল পর্যটকই কেবল পাহাড়ি সরু রাস্তা পেরিয়ে লাবানে ছুটে যায় মসজিদ পরিদর্শনে। আমাদের ভ্রমণ লিস্টের ওপরের দিকেই রয়েছে গ্র্যান্ড মদিনা মসজিদ। সেই আগ্রহের কারণও বাখিয়ামুন। কারণ ‘ভ্রমণগদ্য শিলং ট্রিপ’ গ্রুপে সে-ই একটা ভিডিও পোস্ট করেছিল, যা দেখার পর ভ্রমণসূচিতে সেটি না রেখে পারিনি। মনে হলো শিলং ভ্রমণটি নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হলে খুব খারাপ হবে না।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/13/1560440766978.jpg

ভ্রামণিকদলের সবাই উৎফুল্ল, খাসি গোস্টগণ আমাদের মসজিদ দেখাতে পেরে, আমরা দেখতে পেরে। তারা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হলেও অন্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম ও মুসলমিদের সঙ্গে সাজুয্যবোধ করে বলে আগেই জানিয়েছে।

বাখিয়ামুন বললো, ‘আই থিঙ্ক দ্য মস্ক অফার টু প্রেয়ার সার্ভিসেস এভরি ডে, মর্নিং অ্যান্ড ইভেনিং টাইম। ইউ উইল গেট ইভেনিং প্রেয়ার।’ বললাম, ‘ওহ নো, দেয়ার আর প্রেয়ারস ফর ফাইভ টাইমস অ্যা ডে।’

পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে গাড়ি লাবান এলাকা পৌঁছাল। একটি সরু গলি দিয়ে নিচে নামতেই ডানদিকে তিনতলা ভবন। ভবনের নিচ দিয়ে ভেতরে প্রবেশের রাস্তা। সামনে ঘাসে ছাওয়া প্রশস্ত প্রাঙ্গণ। প্রাঙ্গণে ঢুকলে চোখ জুড়ানো বহু বর্ণিল ফোয়ারা আগন্তুককে স্বাগত জানায়। সামনে তাকিয়ে দেখি, অপূর্ব স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত বহুতলবিশিষ্ট গ্র্যান্ড মসজিদ চোখের সামনে চকচক করছে। মসজিদের একটি গম্বুজ, চারটি মিনার। পুরো মসজিদ সবুজাভ কাঁচে মোড়ানো বলে এর আরেক নাম গ্লাস মসজিদ। পূর্ব প্রান্তের চত্বর দিয়ে ঢুকে মসজিদের ডানদিক বা উত্তরে মেয়েদের ওজুঘর।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/13/1560440839885.jpg

ভেতরে ডানদিকে ঘেরা জায়গায়তাদের নামাজের ব্যবস্থা। মসজিদ ও সংলগ্ন ঈদগাহ মিলে আট হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে। মসজিদের ধারণক্ষমতা দু্ই হাজার। উইকি তথ্য দিচ্ছে, শিলং শহরে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাংশ বা সাত হাজারের মতো।

বাম দিকে পুরুষ ওজুখানা। ভ্রমণদলের দু’দল দু’দিকে ওজুর জন্য ছুটলাম। ওজুখানায় বসার জায়গা থাকলেও বুঝতে পারলাম এ্রখানে সবাই দাঁড়িয়ে ওজু করে। আমি তসু ও কবি কামরুল হাসান ওজু করে নিলাম। ওজুখানার প্রবেশপথের বামদিকে একটি ব্ল্যাকবোর্ডে চক দিয়ে ৩১ মে জুম্মা কালেকশনের পরিমাণ লেখা। মনে হলো, গোটা মাসে জুম্মা নামাজের সময় মসজিদ তহবিলে যে অর্থ আদায় হয়, তার পরিমাণ লেখা হয় বোর্ডটিতে। ৩১ মে পর্যন্ত জুম্মা কালেকশনের পরিমাণ ১০ হাজার ১১০ টাকা। ভাবলাম, গ্লাস মসজিদের স্থাপত্যশৈলীর স্বচ্ছতার মতোই স্বচ্ছ এর হিসাব-নিকাশও।

ওজুখানা থেকে দক্ষিণ দিকের দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করে প্রাণ জুড়িয়ে গেল। দিনমানের ভ্রমণক্লান্তি নিমেষে উধাও। একটি পবিত্রতার বেষ্টনীর মধ্যে ঢুকে গেলাম। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের মেঘালয় রাজ্য গারো ও খাসি প্রধান। এদের প্রাচীন ধর্ম অনেকটাই লুপ্ত। বেশিরভাগ এখন খ্রিষ্ট ধর্মদীক্ষিত। এমন একটি রাজ্যের রাজধানীর প্রধান মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারায় ভিন্ন অনুভূতিতে তৃপ্ত হচ্ছে মন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/13/1560440882264.jpg

ঘড়িতে ছটার কিছু বেশি বাজে। আজান হয়ে গেছে। নামাজ শুরু হতে যাচ্ছে। দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম কোন নামাজের নিয়ত করবো? আকাশ তখনও পরিষ্কার। ভারতের সময় আধাঘণ্টা এগিয়ে। মাথার মধ্যে তখন মাগরিবের সময়টা আসেনি। মনে হলো, তাড়াতাড়ি মাগরিব? নামাজে দাঁড়ানোর পর দেখি, ইমাম সাহেব উচ্চস্বরে পড়া শুরু করেছেন-‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, আররাহমানির রাহিম’.... নিয়ত করলাম মাগরিবের।

নামাজ শেষ করে দেখি প্রশস্থ মসজিদের পেছনের একটি সারিতে কবি কামরুল হাসান নামাজে দাঁড়িয়েছেন। জামাতে ফরজ শেষ করে সুন্নত পড়ছেন। জানা মতে, ব্যবস্থাপনার এই প্রফেসরকে ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে আগ্রহাকুল দেখেছি বলে মনে পড়ে না। বরং ধর্ম-বিশ্বাস এসব নিয়ে আলাপচারিতায় তিনি বিজ্ঞানের প্রসঙ্গ তোলেন। এখানকার ভাবগাম্ভীর্যময় পরিবেশ ও পবিত্রতার বেষ্টনী সেই মানুষকেও নামাজিদের কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ব্যতিক্রমী মসজিদটি থেকে শুধু দেখার স্মৃতি নিয়েই তিনি ফিরতে চান না, নামাজের মধ্য দিয়ে নিজেকে সঙ্গে সংযুক্ত করার স্মৃতিটিও রেখে যেতে চান।

আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথের শৈল অবকাশ শিলং

নামাজ শেষে বাইরে বেরিয়ে দেখি সামনের চত্বরের ফোয়ারাটি ইতোমধ্যে বিদ্যুতের বহুবর্ণিল আলোয় ঝলমল করছে। গম্বুজ ও চারমিনার ও মুল মসজিদ থেকে সবুভ আলো ঠিকরে বের হচ্ছে। চত্বরে দাঁড়িয়ে আমরা নানা কৌণিকে মসজিদকে পেছনের রেখে ছবি তুলে যাচ্ছি। নামাজে শামিল হওয়া ত্রিশ জনের মতো মুসল্লি তখন চত্বর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।

কবি কামরুল হাসান আলাপী মানুষ, নিরন্তর নেটওয়ার্কিংয়ের বিশ্বাসী, দেখি একজনের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। শিক্ষিত, মার্জিত শ্রুশ্মমন্ডিত যুবক। আমিও যোগ দিই। জানা গেল তার নাম ডা. জামাল সিদ্দিক। ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ। মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি। তিনি জানালেন, বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজে মুসল্লি খুব বেশি হোক বা না হোক, শুক্রবার জুম্মার নামাজে পাঁচ শতাধিক মুসল্লির জমায়েত হয়। আলাপের সময় ইমাম সাহেব বের হয়ে যাচ্ছিলেন।

বেরিয়ে আসার সময় মনে হলো, এ অঞ্চলের ঝরনা, জাদুঘর, মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশনসহ বহু দর্শনীয় স্থানের কথা ভ্রামণিকদের লেখালেখিতে এন্তার পাওয়া যাচ্ছে। নয়ানাভিরাম মসজিদটি রয়েছে এখনো অনাবিষ্কৃত। এ রচনার ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টিতে পড়লে গ্র্যান্ড মদিনা মসজিদ হয়ে উঠতে পারে ধর্মীয় পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্র।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;