ভ্রমণগদ্য-মেঘের বাড়ি মেঘালয়-১

মেঘপাহাড়ের ডাক 



মাহমুদ হাফিজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মেঘপাহাড়ের ডাক অনেকদিনের। ঈদের ছুটিতে ফুরসত হবে বলে পরিকল্পনা ছিল মেঘের বাড়ি মেঘালয়ে যাব। শিলংবাসী কলকাতার কবি ফাল্গুণী চক্রবর্তী কয়েকবছর আগে নিমন্ত্রণ দিয়ে রেখেছেন। এই পরিকল্পনা পোক্ত করে দিলেন খাসি ভাষার অন্যতম প্রধান কবি ও শিক্ষাবিদ মিসেস স্ট্রিমলেট ডেখার। দুই লেখক সবান্ধব ঢাকা এলেন রোজার দু’মাস আগে। দলে খাসি ভাষার লেখক মিস বাখিয়া মন, শিল্পী ইভানিশা পাথাও। নিমন্ত্রণ দিলেন। ঢাকার আতিথেয়তায় মুগ্ধ স্ট্রিমলেট বললেন, তোমরা নেহু’র অতিথি হিসাবে আমাদের গেস্ট হাউজেই থাকতে পারো। পাহাড়ের ওপরে চমৎকার গেস্ট হাউজ, দৃষ্টিনন্দন, কাম এ্যান্ড কোয়াইট। এই লোভনীয় অফারে ঘি ঢাললো, লেখক দলের  কনিষ্ঠা সদস্য ইভানিশা, শিলং ইজ টাইনি সিটি, বাট ভেরি নাইস।

নেহু-নর্থ ইস্টার্ণ হিল ইউনিভার্সিটি। এ কথা আগে শুনেছিলাম কবি ফাল্গুণী চক্রবর্তীর কাছে। ফাল্গুণীর ফেসবুক প্রোফাইলে নেহু’তে পড়াশুনার তথ্যটি আছে। কলকাতায় জন্ম নেয়া ফাল্গুণী দীর্ঘদিন শিলংবাসী। লেখাপড়াও করেছেন সেখানে। নিখিলবঙ্গ ভারতে যতো কবি-লেখক সম্মেলন হয়, ফাল্গুণী নিমন্ত্রণ পান বাঙালি কবি হিসাবে, তাঁকে প্রোজেক্ট করা হয় মেঘালয়ের প্রতিনিধি হিসাবে। সম্মেলনে হাত উঁচু করার ঘোষণায় বিভিন্ন দেশ ও রাজ্যের বিপরীতে অসংখ্য হাত উঠলেও মেঘালয় নামের সঙ্গে একটি হাতই ওঠে, ফাল্গুণীর হাত। এই বিশেষত্ব লেখালেখির জগতে ফাল্গুণীকে বেশ পরিচিতি দিয়েছে। স্ট্রিমলেট ডেখার নেহু’র মানববিদ্যা ফ্যাকাল্টির ডীন। খাসি জাতিসত্তার লেখক ও শিক্ষাবিদ হিসাবে মেঘালয়ের বিদ্বজ্জন সমাজে তাঁর পরিচিতি ও সম্মান ওপরের দিকেই।

এমন দু’জন সজ্জন মানুষের ডাক আর নিজের ভ্রমণ-বোহেমিয়ানা স্বভাবের ভেতর লুকিয়ে থাকা মেঘপাহাড়ের ডাকে এই ভ্রমণ-যাত্রায় আমি রীতিমতো উজ্জীবিত। পঞ্চাশোর্ধ জীবনের অন্তত তিনদশক জুড়ে বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলে ছুটে চলেছি, কিন্তু মেঘের বাড়ি মেঘালয় ভ্রমণযাত্রার মতো এতোটা আগ্রহ-আকুল আর কোন ভ্রমণে হইনি। এই উজ্জীবনের অন্যতম কারণ হতে পারে হোস্টগণ ভিনদেশি, ভিন জাতিসত্তার। নয়ন জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিভ্রমণের সঙ্গে মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ভ্রমণের অনিবার্য অনুষঙ্গ। আর এই মিথস্ক্রিয়া যদি হয় ভিন্ন একটি দেশ, ভাষা ও জাতিসত্তার মানুষের সঙ্গে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা! এক্সাইটমেন্টের জন্য ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে যুক্ত করি গৃহবন্ধু জুলেখা ফেরদৌসী, আত্মার আত্মীয় তুসু মাহমুদকে। মেঘপাহাড়ের ডাক শুনে ট্রিপে যুক্ত হতে আমন্ত্রণ জানাই লেখকবন্ধু ভ্রামণিক কামরুল হাসানকে। সবে মিলে চারজনের ভ্রমণযাত্রা।  

শুরু হলো প্রস্তুতি। মেঘালয় যেতে সহজ সীমান্ত তামাবিল-ডাউকি। সিলেট শহর থেকে দুই সোয়া দুই ঘণ্টার ড্রাইভ তামাবিল। একমাস আগে থেকে ঠিক করে রাখা হয়েছে নোহা মাইক্রো আর দক্ষ চালক দীপককে। সীমান্ত পেরিয়ে ডাউকি। ‌উমগট নদী পেরিয়ে পাহাড়ি রাস্তায় আড়াই-তিনঘন্টার পথ শিলং। তামাবিল-ডাউকি অতিক্রম করতে হলে ভিসায় সীমান্তের নাম উল্লেখ থাকতে হবে। আমাদের ভিসায় আগে থেকেই বন্দর হিসাবে ডাউকি উল্লেখ ছিল। ভ্রামণিক কামরুল হাসানের পাসপোর্ট সীমান্ত বদলের জন্য জমা দেয়া হলো হাইকমিশনে। ঠিক হলো ঈদের উৎসবের পর ছুটির সদগতি করা হবে। মেঘপাহাড়ের ডাকে ছুট দিতে হবে। ৫ বা ৬ জুনে ঈদ যেদিনই হোক, আমাদের যাত্রা হবে ৭জুন ।

কি সর্বনাশ, সীমান্ত পর্যন্ত যাবো কি করে ? ঈদ সমাগত, লাখো মানুষ এ সময় রাজধানী ছেড়ে পাড়ি জমায় আপনজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে। ট্রেন, বাস, বিমানের আগাম টিকেট প্রায় শেষ! আমাদের প্রথম পছন্দ ট্রেনের আশা ছেড়ে দিতে হলো। বাসের টিকেটেরও হদিশ করা গেল না। আমরা নাছোড়, বাজেট বাড়িয়ে বিমানে বুকিংয়ের চেষ্টা করতেই সফল। ছয় হাজারের বাজেট ঠেকলো চব্বিশে। ঈদ উৎসবের সময় বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে তামাবিল পর্যন্ত যাওয়ার জন্য গাড়ি খোজাখুজি বেমানান। তাই রিজার্ভ করা হলো মাইক্রোবাস। শিলংয়ের নেহু গেস্ট হাউজ শহরকেন্দ্র করে থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে। ভ্রমণদলের কারও কারও পছন্দ সিটি সেন্টারের শপিং মল। পুরো ভ্রমণে শহরের ফ্লেভার পেতে একরাতের জন্য দৃষ্টিনন্দন হোটেলও বুকিং দেয়া হলো। এমন একটি হোটেল যার জানালা দিয়ে দূরে আর পাহাড় মিতালী করে থাকে। যাকে বলে মেঘপাহাড়ের হাতছানি!  

এদিকে হোস্ট লেখকবৃন্দ উৎসাহ-উদ্দীপনার দিক থেকে আরও এককাঠি সরেষ। ‘ভ্রমণগদ্যশিলংট্রিপ’ নামে তারা হোয়াটসআপে গ্রুপ খুলে আমাদের আগ্রহ-আকুল ভ্রমণযাত্রার এক্সাইটমেন্ট বহুগুণে বাড়িয়ে দিলেন। মেজবান-মেহমান উভয়পক্ষই এক্সাইটেড । যুক্ত করা হলো আমেরিকাবাসী আমাদের পরিবারের জৈষ্ঠ্য সদস্যকে। গ্রুপে আদান-প্রদান হতে থাকলো ভ্রমণ-অগ্রগতির নানাদিক। জানা গেল, মেজবানপক্ষ মেহমানদের মেঘরাজ্যে স্বাগত জানাত মেঘপাহাড় ডিঙিয়ে সীমান্তে ছুটে আসবেন। উভয়পক্ষের আগ্রহ-উত্তেজনা টান টান। ভ্রমণফিরিস্তি, মেঘকন্যা মেঘালয়ের আবহাওয়া, বৃষ্টি-মেঘের তথ্য, ভ্রামণিকের পোশাক পরিচ্ছদ, ভ্রমণটুলস সম্পর্কিত ছবি, ভিডিও, তথ্য পোস্ট হতে থাকলো। বাংলাদেশে বর্ষা সমাগত হলেও ভ্রমণের সময় মেঘের রাজ্যে ভরবর্ষা। এরওপর ভ্রমণনির্ঘন্টে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে আতিবৃষ্টির বিশ্বরাজধানী চেরাপুঞ্জি। গ্রুপে পরামর্শ আসলো বৃষ্টি আবাহনের পোশাক আর টুলসকে করতে হবে ভ্রমণসঙ্গী। ভরবর্ষায় মেঘের রাজ্যে বৃষ্টির বিশ্বরাজধানীতে যাবো, ভিজবো না, তা কি করে হয়! জনে জনে কেনা হলো ছাতা। কিনলাম রেইনকোট। বাসায় কাপড়চোপড়ের ওপর রেইনকোট চাপিয়ে ফ্যাশন শো হলো। সেই ছবি গেল গ্রুপে। লাইকের পর লাইক।

সব তো হলো, ‘হোয়াট এ্যাবাউট সু’?

গ্রুপে প্রশ্ন করতেই পরামর্শ এলো মেঘরাজ্যের দর্শনীয় পাহাড়ি ঝর্ণা, শিলং পিক বা শিলংশীর্ষ, উমিয়াম লেক ইত্যাদি পাহাড়-পর্ব্বতময়। চোখ জুড়াতে দ্রষ্টব্যের নিকটে যেতে গাড়ি থেকে নেমে ওপর-নিচে ওঠানামা করতে হয়। নিতে হবে এমন জুতো যা বৃষ্টি সহনক্ষম, গ্রিপযুক্ত। গৃহবন্ধু জলি সনাতনধারার কামিজ-পায়জামা পরবে বলে কেডসবেমানান, সে অভ্যস্থও না। পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে গ্রিপওলা স্যান্ডেল কিনলো। আমি ঈদ বাজারের উপচানো ভিঁড়ের মধ্যে খোজাখুজি শুরু করলাম। কি? পাঞ্জাবী না। গ্রিপওলা কেডস। শেষমেষ কেনা হলো চায়নিজ নাইকি। এতোসব আয়োজনে একটা স্পঞ্জের চটি না হলে চলবে কেন? তবে কোথায় সে চটি ? বাটা, এ্যাপেক্স, লোটো, জেনিস- জুতোর ব্রান্ডগুলো এখন আর স্পঞ্জ বাণিজ্যে মনোনিবেশ করে না। ছোটবেলায় সানডাক টানডাক নামের কতোরকমের  স্পঞ্জ চটি-স্যান্ডেল দেখেছি, এখন তা গোটা বাজার থেকেই তা উধাও। পরিশেষে চায়নিজ চটি খুজে পেলাম গুলিস্তানের ফুটপাতে। এক বৃষ্টির দিনে এগুলো পড়ে একদফা মহড়া করতেও পিছপা হলাম না। 

ভ্রমণ-নির্ঘণ্টে দিনওয়াইজ নানা ট্যুরিস্ট স্পটের নাম। ডে টু ফর সিটি এট্রাকশন্স। উমিয়াম লেক, ডন বস্কো মিউজিয়াম, শিলং ভিউপয়েন্ট, ওয়ার্ডস লেক, শিলং পিক, গ্র্যান্ড মদীনা মসজিদ, খাসি হেরিটেজ ভিলেজ, রবীন্দ্র স্মৃতিবজড়িত ব্রুকসাইড বাংলো, জিতভুম বা সিধলি হাউজ ইত্যাদি। ভ্রমণসূচীটি পোস্ট হলো গ্রুপে। স্ট্রিমলেট ডেখার নির্ঘন্ট দেখে ওয়াও সিম্বল দিয়ে লিখলেন, মেঘালয়বাসী ছাড়া এই নির্ঘণ্ট তৈরি অসম্ভব। উৎফুল্ল হয়ে আমার জবাব: আই এ্যাম এ্যা গ্রেট ট্রাভেলার, আই গুগলড এ লট, সো ওয়েব ট্রিপ হাজ ডান অলরেডি। কথা সেটাই, জাহাজে চড়ে কয়েক মাস ধরে পবিত্র মক্কায় হজ্জ করতে যাওযার দিন শেষ। যে কোন জায়গার ওয়েব ট্যুর আজ বড় সহজ। আধুনিক প্রযুক্তি সবকিছু হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে।

জীবনের দিনগুলির বহুটা সময় আকাশে উড়ে গেছে। ভারতীয় মহাসাগরের পূর্বতিমুরের দিলি থেকে উড়েছি আলাস্কা সংলগ্ন সেন্ট জন নগরী পর্যন্ত। উড়েছি জাপান সাগর বা নরওয়েজিয়ান সমুদ্রের ওপর। বাড়ির কাছে আরশিনগর শৈলসুন্দরী শিলং ট্রিপের মতো এতোটা উদ্দীপ্ত হয়েছি কি না, এতোটা প্রস্তুতি নিয়েছি কি না মনে পড়ে না। এই যাত্রার চিত্রকল্প হচ্ছে, উড়ছি দেশের আকাশেই। হেঁটে অতিক্রম করছি সীমান্ত। হাতে ছাতা, গায়ে রেইনকোট, পায়ে গ্রিপওলা স্যান্ডেল, চোখে রোদচশমা, পিঠে ব্যাকপ্যাক- অদ্ভূত এক পরিব্রাজকের চেহারায় পাহাড় বেয়ে ওপরে  উঠছি। পরিব্রাজকদলকে তাড়িয়ে নিচ্ছে বৃষ্টি। ঝাপসা মেঘের ভেতর দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছি। হারিয়ে যাচ্ছি মেঘের বাড়ি-মেঘালয়ে। 

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;