দেশের উন্নয়নে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক চাই হৃদ্যতাপূর্ণ



মো. আকতারুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আলোকবর্তিকা। “শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, উন্নয়নের শপথ করি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। শ্রমিকের আত্মমর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত করার ও ন্যায্য দাবি আদায়ের এক ঐতিহাসিক দিন। ১৮৮৬ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকেরা যে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন তাদের আত্মত্যাগের প্রতি একাত্মতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালিত হয়।

এখানে শ্রমিক এবং মালিকের চেতনার জায়গাটি প্রসারিত হয়, সর্ম্পকের উন্নয়ন ঘটে, পারস্পরিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়। শ্রমিক মালিকের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তথা ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এ বছর মে দিবসের প্রতিপাদ্য নির্বাচন করা হয়েছে। দেশের শিল্পোন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজিকে সামনে রেখে উন্নত কর্মপরিবেশ, শ্রমিক-মালিকের সুসম্পর্ক, শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষা, পেশাগত নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। এ প্রেক্ষাপটে এবারের প্রতিপাদ্য যথার্থ।

শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা, ন্যায়সংগত অধিকার ও কল্যাণের সাথে মহান মে দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত । শোষণ, বঞ্চনা, লাঞ্ছনা থেকে মুক্তির দীপ্ত শপথে বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হয়। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের দিনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ তার জন্মলগ্ন থেকেই আন্তর্জাতিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের পরেই ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আইএলসি সম্মেলনে ৬টি কোর-কনভেনশনসহ ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। বঙ্গবন্ধু শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে  এদিন ‘জাতীয় শ্রমিক দিবস’ এবং ‘সরকারি ছুটি’ ঘোষণা করেন।

 শিল্পায়ন, শিল্পের উৎপাদন তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রথম প্রয়োজন শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। শ্রমিক উৎপাদনের অপরিহার্য উপাদান, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে নিহিত থাকে দেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। দেশের সম্ভাবনা এবং শ্রমজীবী মানুষের  সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে  বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং ২০১৩ সালের সংশোধিত শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে  প্রথমবারের মতো ২০১৫ সালে শ্রমবিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা এবং গৃহকর্মীদের প্রতি লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।

 শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার জন্য সরকার ৪২টি খাতের নূন্যতম মজুরিবোর্ড গঠন করেছে। প্রতিটি কারখানায় অধিকার আদায়ে শ্রমিকরা যাতে সচেষ্ট থাকে, অধিকার বঞ্চিত না হয় সেজন্য ২০১৮ সালের সংশোধিত শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন সহজতর করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম অনলাইনের আওতায় আনা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৬০ দিন সময় নির্ধারণ করা ছিল তা এখন কমিয়ে ৫৫ দিন করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন সহজতর করার ইতিবাচক প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে সব সেক্টর মিলে ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা ৭,৭৭৫টি; এ সকল ট্রেড ইউনিয়নের সাথে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা ২৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৭৯ জন। শুধু গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বর্তমানে ৭৫৩টি। শ্রম আইন সংশোধনের ফলে কোনো শ্রমিক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে ঐ কারখানা মালিক ক্ষতিপূরণ দিতেন একলাখ টাকা, এখন ক্ষতিপূরণ দ্বিগুণ করে দুই লাখ টাকা হয়েছে।

 শ্রমিকদের স্বার্থ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সরকার প্রতিটি কারখানাকে পরিদর্শনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শ্রম পরিদপ্তরকেও অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। ২,২৬২টি কারখানায় সেইফটি কমিটি গঠন এবং যে কোনো প্রকার বিরোধ নিষ্পত্তিতে সামাজিক সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। সব শিল্পখাতে শ্রমিক-মালিক-সরকার ত্রিপক্ষীয় কমিটি কাজ করছে। এরপরেও বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক শিল্পের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ২০১৭ সালে শুধু গার্মেন্টস শিল্পের জন্য আলাদা ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। শ্রমিকের যে কোনো সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন-১৬৩৫৭ চালু করা হয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন। দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু হলে, কোনো শ্রমিক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে কিংবা তাদের ছেলেমেয়ের উচ্চশিক্ষা, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সহায়তা এ তহবিল থেকে প্রদান করা হচ্ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করলে এ সহায়তা পাওয়া যায়। এ তহবিলের এফডিআর ফান্ডের প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে এখন পর্যন্ত ছয় হাজার পাঁচ’শ জনকে ৩৭ কোটি ৭ হাজার টাকার বেশি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এরপরও এফডিআরসহ এ তহবিলে জমা রয়েছে তিন’শ ২৮ কোটি টাকা।

২.

সরকার শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য ভিন্ন একটি তহবিল গঠন করেছে যার নাম কেন্দ্রীয় তহবিল। গার্মেন্টসকর্মীদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, মাতৃত্বকালীন সহায়তা, তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা এমনকি তাদের বিমার দাবিও এ খাত থেকে পরিশোধ করা হচ্ছে। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ’র সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর সব শ্রমিককে কেন্দ্রীয় ডাটাবেইজের আওতায় আনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, প্রতিটি শ্রমিক ডাটাবেইজের আওতায় আসলে যে কোনো প্রয়োজনে অতি দ্রুত সহায়তা প্রদান করা যাবে, ফলে কোনো শ্রমিকই অসহায় থাকবে না। সুস্থ কর্মপরিবেশে কাজ করা শ্রমিকদের অধিকার। শ্রমিক অসুস্থ থাকলে উৎপাদনে দারুণভাবে ব্যাঘাত ঘটে। পেশাগত অনেক অসুখ শ্রমিকের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পেশাগত অসুখের চিকিৎসায় সরকার পিপিপি’র আওতায় নারায়ণগঞ্জে তিনশ’ শয্যার পেশাগত বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে সকল প্রকার শিশুশ্রম নিরসনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ২৮৪ কোটি টাকার ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের (চতুর্থ পর্যায়) কাজ শুরু হয়েছে।

দেশের বিশাল শ্রমজীবী মানুষের যথাযোগ্য মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শিশুশ্রম নিরসন, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ, শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং দ্রারিদ্র্যমুক্ত উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার শপথ হোক এবারের মে দিবসের অঙ্গীকার।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;