মাওলানা আজাদ: রাজনীতিতে ধর্মীয় সম্প্রীতির অগ্রদূত



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (১৮৮৮-১৯৫৮) দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম চিন্তাবিদদের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ধর্ম-গোত্র-সম্প্রদায়গত ঐক্যের প্রবক্তা তিনি। রবিবার (১১ অক্টোবর ছিল তাঁর ১৩০তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর মূল নাম মাওলানা সাইয়েদ আবুল কালাম গোলাম মুহিউদ্দিন আহমাদ বিন খায়রউদ্দিন আল হোসাইনি।

পবিত্র নগরী মক্কায় জন্মগ্রহণকারী আজাদের মাতা আরবীয়, পিতা মাওলানা খায়রউদ্দিন আফগান বংশোদ্ভূত বাঙালি মুসলমান, যিনি ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের বিরূপ পরিস্থিতিতে হিজরত করে ভারত ছেড়ে মক্কায় চলে যান এবং ১৮৯০ সালে আবার সপরিবার কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন।

আরবি মাতৃভাষা হওয়ায় এবং ধর্মের প্রতি একনিষ্ঠ ও দৃঢ় বিশ্বাসী পারিবারিক পটভূমির কারণে প্রচলিত ধারায় ইসলামী শিক্ষার চর্চা করা ছাড়া আজাদের অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। প্রাতিষ্ঠানিক আধুনিক শিক্ষা লাভ না করলেও ব্যক্তিগতভাবে অধ্যয়ন ও ব্যাপক পাঠাভ্যাসের মাধ্যমে তিনি উর্দু, ফারসি, হিন্দি ও ইংরেজিতে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তাঁর সময়ের অনেক যশস্বী ব্যক্তিদের মতো তিনিও নিজ চেষ্টায় শিক্ষিত হওয়ার পথ অনুসরণ করেন এবং বিশ্ব ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে বিপুল জ্ঞানের অধিকারী হন।

পবিত্র কুরআন, হাদিস, ফিকাহ্ ও কালামের নতুন ব্যাখ্যা প্রদান করে তিনি অনেক লেখা প্রকাশ করেন। তাঁর পান্ডিত্যই ‘তাকলিক’ (সাদৃশ্যের ঐতিহ্য) পরিহার এবং ‘তাজদিদ’ (নতুন প্রথা প্রবর্তন) গ্রহণের পথে তাঁকে পরিচালিত করে।

তাজদিদ সম্পর্কে তাঁর ধারণা তাঁকে এ বিশ্বাসের দিকে চালিত করে যে, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের কাঠামোর মধ্যে ভারতের সকল ধর্ম ও গোত্রের জনগণ তাদের ধর্মবিশ্বাস ও কৃষ্টির সুসমন্বয় ঘটাতে পারে এবং তিনি বিশ্বাস করতেন যে, তা একমাত্র তখনই সম্ভব যখন সে রাষ্ট্র গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়।

স্বাধীন রাষ্ট্র ভারতের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা ভিত্তিক গণতন্ত্রের ধারণাকে ভারতের যেসব রাজনৈতিক চিন্তাবিদ সর্বাগ্রে সংজ্ঞায়িত ও ব্যাখ্যা করেছেন আজাদ সম্ভবত তাঁদের অন্যতম। ধর্মীয় উদারতার মাধ্যমে রাজনৈতিক হিংসা প্রশমনে তিনি ছিলেন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব।

যে পারিবারিক পরিবেশে তিনি বেড়ে উঠেছেন এবং যে ধরনের শিক্ষা লাভ করেছেন, তাতে তাঁর ধর্মীয় নেতা হওয়ারই কথা। তাঁর পূর্বপুরুষদের অধিকাংশই ধর্মবেত্তা ছিলেন বলে তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তা হন নি। তবে রাজনীতির প্রতি আজাদের ঝোঁক ছিল। খুব অল্প বয়সেই তিনি রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিশ্রুত পণ্ডিত জামালউদ্দীন আফগানির প্যান ইসলামী মতবাদ ও স্যার সৈয়দ আহমদ খানের আলীগড় চিন্তাধারার প্রতি তিনি বিশেষভাবে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। প্যান ইসলামী চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি আফগানিস্তান, ইরাক, মিশর, সিরিয়া ও তুরস্ক সফর করেন। তারপর জীবন ও রাজনীতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ নতুন এক উপলব্ধি নিয়ে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন।

ইরানে সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রামরত নির্বাসিত বিপ্লবীদের সঙ্গে তিনি ইরাকে সাক্ষাৎ করেন। তিনি মিশরে শেখ মুহম্মদ আব্দুহ্ ও সাঈদ পাশা এবং আরব বিশ্বের অন্যান্য বিপ্লবী কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। কনস্টান্টিনোপলের তরুণ তুর্কিদের আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে তাঁর প্রাথমিক জ্ঞান ছিল। এসব গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ ও সংস্পর্শ তাঁকে একজন জাতীয়তাবাদী বিপ্লবীতে পরিণত করে। ধর্ম ও জীবনের সংকীর্ণ ধারণার শৃঙ্খলমুক্তির স্মারকস্বরূপ তিনি লেখক হিসেবে ‘আজাদ’ নাম গ্রহণ করেন।

বিদেশ থেকে ফিরে এসে আজাদ পূর্ব ভারতের দুজন নেতৃস্থানীয় বিপ্লবী শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ ও শ্রীশ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ব্রিটিশ শাসন বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেন। প্রকৃতপক্ষে একদিকে তিনি ছিলেন একজন গোপন বিপ্লবী এবং অন্য দিকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রকাশ্য কর্মী।

তিনি যুক্তি প্রদর্শন করেন যে, ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তি হবে হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য, আর সে ঐক্যের ভিত্তিমূল হবে রাজনীতি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ ধারণা। কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে তিনি তুরস্কের খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করেন, পুরানো শাসকদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে নয় বরং নবীন তুর্কিদের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য। তাঁর মতে, 'নবীন তুর্কিরাই ছিলেন খিলাফতের মূল বিধানের সত্যিকার প্রতিনিধি।'

১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত আজাদের উর্দু সাপ্তাহিক সংবাদপত্র 'আল-হেলাল' প্রকাশ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতে এর অপকর্মের আক্রমণাত্মক সমালোচনা করে। এ পত্রিকা কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী মতামত প্রকাশে একটি শক্তিশালী বিপ্লবী মুখপত্রে পরিণত হয়। সম্প্রদায় ভিত্তিক প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সৃষ্ট শত্রুতার পর হিন্দু-মুসলমান ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে 'আল-হেলাল' গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ব্রিটিশ সরকার আল-হেলাল সাপ্তাহিকীকে বিপজ্জনক মতামত প্রচারে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং সে কারণে ১৯১৪ সালে পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। আজাদ তখন এটির নাম পরিবর্তন করেন এবং 'আল-বালাগ' নামে অপর একটি সাপ্তাহিকী প্রকাশ করেন। এ পত্রিকারও উদ্দেশ্য ছিল অভিন্ন অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের ভিত্তিতে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ও বিপ্লবী ধ্যান-ধারণা প্রচার করা। কিন্তু ১৯১৬ সালে সরকার এ পত্রিকাও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং আজাদকে কলকাতা থেকে বহিষ্কার করে রাঁচিতে অন্তরীণ করে রাখে। সেখান থেকে তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯২০ সালে মুক্তি পান।

মওলানা আবুল কালাম আজাদ তখন নিখিল ভারত জাতীয় কংগ্রেসে মতিলাল নেহরু, জওহরলাল নেহরু এবং সি. আর. দাসের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অন্যতম সদস্য এবং গান্ধীর সবচেয়ে বিশ্বস্ত ঘনিষ্ঠ সহচরদের একজন হিসেবে স্বীকৃত। তিনি দিল্লি (১৯২৩) ও রামগড়ে (১৯৪০) কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। বিশ শতকের ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে ভারতীয় রাজনীতির উত্তাল দিনগুলিতে আজাদ মহাত্মা গান্ধীর সবচেয়ে অন্তরঙ্গ উপদেষ্টা হিসেবে আবির্ভূত হন। ক্রিপস মিশন (১৯৪২) থেকে শুরু করে কেবিনেট মিশন (১৯৪৬) পর্যন্ত সকল আলোচনায়, বিশেষত ভারতের সাংবিধানিক বিষয়ে ও সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে, আজাদের সঙ্গে গান্ধী ঘনিষ্ঠভাবে পরামর্শ করেছেন। ক্রিপস মিশন (১৯৪২) এবং কেবিনেট মিশন (১৯৪৬) এ উভয় সময়েই সমঝোতা-পূর্ব আলোচনা বৈঠকে আলোচকদের মধ্যে আজাদ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

কিন্তু পাকিস্তান আন্দোলন শক্তিশালী হওয়ায় এবং হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের অবনতি ঘটার ফলে আজাদের প্রভাব হ্রাস পায়। তাঁর লেখা চিঠিপত্র এবং আত্মজীবনীতে তিনি এ প্রসঙ্গে তাঁর হতাশার কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, 'ভারতের বিভক্তি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হতো যদি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব জিন্নাহ ও মুসলিম লীগের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আপসমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে তাঁর (আজাদের) মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেন।'

আজাদ নেহরুর অভিপ্রায়ের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতে, নেহরুর মনোভাব কেবিনেট মিশন পরিকল্পনাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে বিভক্তির দিকে চালিত করে। কিন্তু শেষের দিকে সৃষ্ট রাজনৈতিক মতপার্থক্য দুই নেতার বন্ধুত্বকে ম্লান করতে পারে নি। তিনি তাঁর বিখ্যাত আত্মজীবনী গ্রন্থ 'ইন্ডিয়া উইন্স ফ্রিডম' নেহরুর নামে উৎসর্গ করে তাঁর সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি। সর্বজনীন শিক্ষা এবং মানবিক মূল্যবোধ বিকাশের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় জীবনভর কাজ করেছেন তিনি।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;