খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা জহুরার জীবন



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
জহুরা খাতুন

জহুরা খাতুন

  • Font increase
  • Font Decrease

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা জহুরা খাতুনের শরীর চলতে চায় না, তবুও তিনি চালিয়ে যান। কখনও লাঠিতে ভর দিয়ে কখনও পা টেনে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ভিক্ষাবৃত্তি করতে ছুটে চলেন এ বাড়ি ও বাড়ি। হাঁটতে হাঁটতে হাঁপিয়ে ওঠেন জহুরা। একটু জিরিয়ে ফের শুরু করেন পথচলা।

গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের একটি ভাঙাচোরা ঘরে জহুরার বসবাস। বাবা মৃত উমর আলী। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে জহুরা তৃতীয়।

মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জহুরা খাতুনের দেখা মিলে নওগাঁও গ্রামে। তার এক হাতে লাঠি আরেক হাতে ব্যাগ। ভিক্ষাবৃত্তি করতে ছুটছেন বাড়ি বাড়ি। কোথাও সাহায্য মিলছে, কোথাও ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

ভিক্ষাবৃত্তি শেষে বাড়ি ফিরলে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় জহুরা খাতুনের। আলাপে উঠে আসে তার জীবনের পাওয়া না পাওয়ার নানা গল্প। তিনি বলেন, ‘আমি জন্ম থেইকা প্রতিবন্ধী না। ছোটবেলায় বাতাস লাইগা আমার বাম হাত ও বাম পা বেঁইকা যায়। হের পর থেইকা খুঁড়াইয়া চলি। অভাবের লেইগা বাপ-মায় চিকিৎসা করায় নাই। অহন গেরামের মাইনষে আমারে লুলি ফহিন্নি কইয়া ডাকে।’


স্বাধীনতার পর জহুরার বাবা-মা মারা যান। এরপর তার বিয়ে হয় গ্রামেরই এক ব্যক্তির সঙ্গে। কয়েকদিন সংসার করার পর স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর আর খোঁজ নেননি। অভাবের তাড়নায় ভাইয়েরাও মুখ ফিরিয়ে নেন। শুরু হয় নিঃসন্তান জহুরার জীবন সংগ্রাম। শেষ বয়সে বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলেও চাহিদার তুলনায় সেটা নিতান্তই অপ্রতুল।

জহুরা খাতুন বলেন, ‘প্রতিবন্ধী বইলা আমারে কেউ কামে নেয় না। তাই ভিক্ষা শুরু করি। কিন্ত গেরামের মানুষ চাল ভিক্ষা দেয়, টাকা দেয় না। তরিতরকারি কিনতে পারি না। শাকপাতা টুকাইয়া রাইন্ধা ভাতের লগে খাই।’

জহুরা খাতুনের বাম হাত অচল হওয়ায় ঘর-গৃহস্থালির সব কাজ তিনি ডান হাতে করেন। এক সময় গ্রামে গ্রামে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন জহুরা। কিন্তু বয়সের ভারে এখন তার ভিক্ষাবৃত্তি প্রতিবেশীদের বাড়িতেই সীমাবদ্ধ। রান্নার জ্বালানির জন্য তাকে ঝোপঝাড় থেকে পাতা কুড়াতে হয়।


জহুরা খাতুন বলেন, ‘আমি রোগ-পীড়ায় ভুগি, চিকিৎসা করাইতারি না। ঘরডাও ভাইঙা পড়তাছে। মেঘের পানিত সব ভিজা যায়। একটা কল নাই, ল্যাট্টিন নাই। একহাতে সব কাম করা লাগে। মাঝে মইধ্যে কাপড় ধুইতে গিয়া পুস্কুনিত পইড়া যাই। মাইনষে টাইনা তোলে। কোনদিন যে ডুইবা মরি কে জানে!’

জহুরার গল্প শুনতে শুনতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমন সময় আগমন ঘটে প্রতিবেশী রহিছা বেগমের। তিনি বলেন, ‘জহুরা তিনবেলা খাইতারে না, পড়তারে না। ঘরডাও ভাইঙা পড়তাছে, ঠিক করতারে না। বান-তুফানে যে কোনদিন ঘরডা ভাইঙা পড়ে আল্লায় জানে!’

রহিছার কথা টেনে নিয়ে জহুরা বলেন, ‘খাওয়া-পড়া লইয়া আমার কোন দাবি নাই। দাবি আমার একটাই নতুন একটা ঘর চাই।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;