ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা নেই পাটুরিয়া ফেরিঘাটে
ভোগান্তি আর দুর্ভোগের অপর নাম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুট। যেকোনো উৎসব আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘন্টার পর ঘন্টা ভোগান্তি পোহাতে হয় এই নৌ-রুটে আগত যাত্রী ও পরিবহন শ্রমকিদের।
রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার কয়েক লাখ মানুষের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুট। বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি মিলে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার যানবাহন পারাপার হয় এই নৌ-রুট দিয়ে।
তবে ঈদের মধ্যে বাড়তি যানবাহনের চাপ থাকায় যানবাহন পারাপারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ থেকে তিন গুণে। এ জন্য ঈদের তিনদিন আগে ও পরে বন্ধ থাকবে সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার। তবে জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার থাকবে স্বাভাবিক।
আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন। পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া নৌ-রুটে এখন যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে ছোট বড় মিলে মোট ১৬টি ফেরি। তবে খুব শীঘ্রই ওই বহরে যুক্ত হবে আরও চারটি ফেরি।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের বাণজ্যি বিভাগের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ছোট বড় মিলে মোট ২০টি ফেরি চলাচল করবে। কোনো ধরণরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারের ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে কোনো ধরণের ভোগান্তির আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে লক্কর-ঝক্কর ও পুরাতন ফেরিগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী মেরামত করে যানবাহন পারাপারের উপযোগী করা হয়েছে বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এনামুল হক।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) ফরিদুল ইসলাম জানান, ফেরির পাশাপাশি যাত্রী পারাপারে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে চলাচল করবে ছোট বড় মিলে মোট ৩৪টি লঞ্চ। যাত্রীর চাপ অনুযায়ী উভয় নৌ-রুট এলাকায় লঞ্চগুলো চলাচল করবে বলেও জানান তিনি।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদ জানান, যাত্রাপথে অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় কাজ করবে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম। এ ছাড়া যাত্রী ও পরবিহন চালকদরে সুবিধার্থে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় অস্থায়ীভাবে ২০টি শৈচাগার নির্মাণ করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, ফেরিঘাট এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা লাখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ জেলার প্রায় ৩৬ কিলোমিটার অংশে মোতায়েন থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ৫ শতাধিক সদস্য।
এ ছাড়া ফেরিঘাট এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি তদারকির জন্য মহাসড়ক ও ফেরিঘাট এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। সব মিলিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের কোনো কমতি নেই বলেও জানান তিনি।