টাঙ্গাইলে গণধর্ষণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন
টাঙ্গাইলে বাসে পোশাক শ্রমিক গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাসের চার শ্রমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২২ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-টাঙ্গাইলের বিনিময় পরিবহনের চালক হাবিবুর রহমান, হেলপার খালেক ভুট্টু, হেলপার আশরাফুল ও সুপারভাইজার রেজাউল করিম জুয়েল। তাদের মধ্যে জুয়েল পলাতক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, এক পোশাক শ্রমিক ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল ভোর ৫টার দিকে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ‘বিনিময় পরিবহনের’ একটি বাসে করে কর্মস্থল কালিয়াকৈরের উদ্দেশে রওনা হন। ওই সময় বাসে অন্য কোনো যাত্রী ছিলেন না। কিছুদূর যাওয়ার পর সুযোগ বুঝে সুপারভাইজার বাসের জানালা দরজা বন্ধ করে দেন। পরে গাড়ির চালক হাবিবুর রহমান নয়ন মেয়েটিকে পেছনের সিটে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর পালাক্রমে বাসের সুপারভাইজার ও দুই হেলপারও ধর্ষণ করেন। পরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ রোডের একটি ফাঁকা জায়গায় ওই পোশাক শ্রমিককে নামিয়ে দিয়ে তারা বাস নিয়ে পালিয়ে যান। ওই পোশাক শ্রমিক মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তার স্বামীকে বিষয়টি জানালে তার স্বামী তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ পেয়ে ওইদিনই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে নির্যাতিত নারীর স্বামী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় নয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর ওই নারী জবানবন্দিতে আরও একজনের নাম উল্লেখ করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে মোট ১০ আসামির মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। বাকিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকাররোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত এ মামলার বাদীসহ নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। মামলার সাক্ষ্য ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বুধবার এ রায় দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ।