‘ফকিরের মেয়ের পড়া লাগবো ক্যান, বিয়া দিয়া দেও’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
সানজিদা আক্তার। ছবি: বার্তা২৪.কম

সানজিদা আক্তার। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘জামাই আমার ভিক্ষা করে। আমি মাইনষ্যের বাড়িত কাম করি। ঘরে একটা মাইয়্যা আছে, মাদরাসায় পড়ে। অভাবের ঠেলায় পড়ালেহার খরচ দিতারি না। ভালা একটা কাপড় পরাইতারি না। তবু মাইয়্যাডা কষ্ট কইর‌্যা পড়ালেহা করে। তয় গেরামের মাইনষ্যে কয়, ফকিরের মেয়ের এতো পড়ালেহা করা লাগবো ক্যান, বিয়া দিয়া দেও।’

বার্তা২৪.কমের কাছে কথাগুলো বলার সময় বারবার চোখ ভিজে আসছিল ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মহিশ্বরণ গ্রামের হতদরিদ্র নূরবানুর। তার স্বামী প্রতিবন্ধী মোকসেদ আলী একজন ভিক্ষুক। আর একমাত্র মেয়ে সানজিদা আক্তার গৌরীপুর ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার আলিম প্রথম শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

গতকাল শনিবার (১১ মে) বিকেলে এ প্রতিবেদক যখন নূরবানুর বাড়িতে পা রাখেন তখন ভেতর থেকে মৃদু পড়াশোনার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় দরজার সামনে পাটি বিছিয়ে বই পড়ছেন সানজিদা। পড়া শেষে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা হয় তার।

বিকেল বেলা পড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছোট থাকতেই অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে বড় হয়েছি। কখনো প্রাইভেট পড়তে পারিনি। মাদরাসার এক বান্ধবীর কাছ থেকে বই ধার করে এনেছি। কাল ফেরত দিতে হবে। তাই পড়ছিলাম।’

মহিশ্বরণ হোসাইনিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে পিইসি, জেডিসি ও দাখিল পাশ করেছেন সানজিদা। বর্তমানে তিনি স্থানীয় মাদরাসায় আলিম প্রথম বর্ষে পড়ছেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে মাদরাসায় যান সানজিদা। আসা যাওয়ার জন্য পথে অটোরিকশার সুবিধা থাকলেও টাকার অভাবে কখনো গাড়িতে উঠতে পারেন না তিনি।

মহিশ্বরণ গ্রামের ছোট্ট একটি জরাজীর্ণ ঘরে সানজিদার পরিবারের বসবাস। বাবা, মা ও নানুকে নিয়ে তাদের চার সদস্যের সংসার। সানজিদার বাবা প্রতিবন্ধী ভাতা পান। কিন্তু ওই টাকায় তাদের সংসার চলে না। তাই সংসারের খরচ যোগাতে ভিক্ষা করেন তিনি। আর সানজিদার মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে সামান্য টাকা পান। এভাবেই চলছে তাদের সংসার।

সানজিদা আক্তার বলেন, ‘আমাদের জমি-বাড়ি নাই। ভবিষ্যতে আমি শিক্ষক হতে চাই। কিন্তু অভাবের জন্য পড়াশোনার খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আর গ্রামের লোকজন বলে বেড়ায় গরিবের মেয়েকে পড়ালেখা করিয়ে লাভ কী? ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দাও। এসব আচরণে আমি খুব কষ্ট পাই।’

সানজিদার সঙ্গে কথা বলতে বলতে বিকেলের বেলা সন্ধ্যায় গড়িয়েছে। ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে আসছে গ্রামের চারপাশ। এমন সময় বাড়িতে প্রবেশ করেন সানজিদার নানু বৃদ্ধা মরিয়ম নেছা। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। নাতিডারে ঠিকমতো পড়াইতারি না। সরকার যদি একটু সাহায্য করতো, তাইলে তো পড়ালেহাডা ঠিকমতো চলতো।’

কথার রেশ টেনে সানজিদা বলেন, ‘আমি কষ্ট করে পড়ালেখা করছি। আমার দুরবস্থার কথা জানতে পারলে কেউ না কেউ সাহায্য করবেই। কিন্তু তোমরা লোকের কথায় আমাকে বিয়ে দিও না। আমি কিন্তু পড়ালেখা করে শিক্ষক হতে চাই।’

ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ এমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা সানজিদার দুরবস্থার কথা জানতে পেরে তার উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছি। সে একজন মেধাবী ছাত্রী। সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি সহযোগিতা করে তাহলে সানজিদার অনেক উপকার হয়।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;