বেনাপোল বন্দরে রাজনৈতিক নেতাদের হাতে শোষিত শ্রমিকরা



আজিজুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বেনাপোল, বার্তা২৪.কম
বেনাপোল বন্দরে শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রম, ছবি: বার্তা২৪.কম

বেনাপোল বন্দরে শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রম, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বেনাপোল স্থলবন্দরে শ্রমিকদের অধিকার ও ন্যায্য মজুরি বাস্তবায়নের নামে এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতারা খেটে খাওয়া মানুষদের আজও শোষণ করে চলেছে। এই রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা আত্মসাৎকৃত শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো উপার্জনের তিন কোটি ৪১ লাখ টাকা এখনো তারা ফেরত পায়নি। ফলে নিদারুণ কষ্টে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

সাধারণ শ্রমিকেরা জানান, এখানে প্রভাব বিস্তার করে রাজনৈতিক নেতাদের ভাগ্য বদল হলেও যাদের রক্তঘাম ঝরিয়ে উপার্জন তাদের কোন পরিবর্তন ঘটে না। ন্যায্য অধিকারটুকু থেকেও সবসময় বঞ্চিত শ্রমিকরা। এমনকি এসব নেতারা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

তারা বলেন, 'সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর বিশ্রামস্থল না পেয়ে কখনো ফুটপাথে আবার কখনো গাছ তলায় শুয়ে-বসে সময় পার করতে হয়। আর আহত হয়ে সময় মতো চিকিৎসা না পেয়ে হারাতে হয় জীবন।'

তবে রাজনৈতিক নেতারা জানান, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি যেন বাস্তবায়ন হয়, তার জন্য তারা সব মহলে আলোচনা তুলবেন।

জানা যায়, দেশের সর্ববৃহত্তম এই বেনাপোল বন্দরের যাত্রা ১৯৭২ সাল থেকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব দুই দেশের ব্যবসায়ীদের কাছে অপরিসীম। এখানে রাজস্ব আদায় ও পণ্য ছাড় করানোর কাজে বন্দর ও কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক। এছাড়া বন্দর থেকে আমদানি পণ্য ছাড় করানোর কাজ করছে ৭৫০টি সিএন্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধিরা। রয়েছে সমপরিমাণের ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি। আরও রয়েছে ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

এ পথে আমদানি হওয়া পণ্য খালাস কাজে প্রায় দুই হাজার হ্যান্ডলিংক শ্রমিক করছে। সবকিছু মিলিয়ে এই বন্দরের এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান আর লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা রয়েছে। প্রতিবছর এ পথে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। সেখান থেকে সরকারের আয় হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা।

শ্রমিকরা বলেন, 'এক সময় এ বন্দরে সাধারণ শ্রমিকরা সংগঠনের নেতৃত্ব দিতেন। তখন শ্রমিকদের টাকা এমন লুটপাটের অভিযোগ শোনা যেত না। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে এ বন্দরে সাধারণ শ্রমিকদের কাতারে প্রভাব বিস্তার করে ঢুকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। যারা কেউই প্রকৃত শ্রমিক না।'

বন্দরের ৯২৫ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু আহমেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'বছর তিনেক আগে শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও আলী নেতা পৌর কমিশনার রাশেদ আলী বন্দর শ্রমিকদের তিন কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এতে ১১ জনের নামে মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত তারা কেউ আটক হয়নি আর টাকাও ফেরত দেয়নি।'

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য বন্দর অভ্যন্তরে রেস্ট হাউজ, খাওয়ার পানির ব্যবস্থা ও তাৎক্ষনিক দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। তাও পূরণ হয়নি। সবার ভাগ্য পরিবর্তন হলেও যাদের ঘামে, আয় তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে না। দাবি পূরণে রাজনৈতিক নেতারাও কথা দেয় কিন্তু এ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।'

৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি জানে আলম বার্তা২৪.কম-কে জানান, বন্দরে এসিডসহ ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য খালাসে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও তাদের সরবরাহ করা হয় না। কিছু দিন আগে তাদের একজন শ্রমিক বন্দরে এসিডের ড্রাম নামাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় শরীর ঝলসে মারা যায়। আরও মারা গেছেন চারজন। এছাড়া অনেক শ্রমিক আছে যারা কাজ করতে যেয়ে আহত হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়ে আছেন। শ্রমিকরাই তাদের খোঁজ খবর নেয়। কিন্তু যাদের জন্য কাজ করছে সেই বন্দর অথবা ঠিকাদারের লোকজন কেউ দেখেন না।

বেনাপোল স্থলবন্দর ইমপ্লোয়েজ ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির মজুমদার বলেন, 'আজ শ্রমিকরা পরিশ্রম করছে বলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই শ্রমিকদের ভাগ্য উন্নয়নে সবাইকে আন্তরিক হয়ে কাজ করতে হবে। বাণিজ্যের সাথে জড়িত বিশেষ বিশেষ মহলে এ নিয়ে কথা বলব।'

উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম অহিদ জানান, তিনি বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শ্রমিকেরা পূর্বের চেয়ে অনেক ভাল আছে। বন্দরে কাজের স্বার্থে শ্রমিকদের যে দাবি দাবা তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয় তাতে তিনি সবরকম যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এর আগে যারা শ্রমিকদের রক্ত ঘামের টাকা মেরে খেয়েছে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ বন্দরের খণ্ডকালীন মেম্বার জাহিদ হোসেন মোল্লা বার্তা২৪.কম-কে জানান, 'বেনাপোলে বন্দর আধুনিকায়নে নতুন জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে। সেখানে বাণিজ্যিক সুবিধাসহ শ্রমিকদের কল্যাণে সব ধরনের সুবিধা থাকবে।'

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;