২১ এপ্রিল ফরিদপুরের শ্রীঅঙ্গন গণহত্যা দিবস

কীর্তনরত সাধুদের হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা



রেজাউল করিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফরিদপুর, বার্তা২৪.কম
ফরিদপুরের শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন আশ্রম/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ফরিদপুরের শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন আশ্রম/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল। ফরিদপুরের শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন আশ্রমে ঘটেছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জঘণ্যতম নারকীয় গণহত্যার একটি। পাকিস্তানি সেনারা আশ্রমে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল কীর্তনরত আট সাধুকে।

সেদিন অলৌকিকভাবে বেঁচে যান শ্রী অঙ্গন প্রভু জগদ্বন্ধু ব্রহ্মচারী আশ্রমের সেবায়েত হরিপ্রিয় ব্রহ্মচারী। ঘাতকদের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমানে ৮৫ বছরের এই সাধু।

হরিপ্রিয় ব্রহ্মচারী সেদিনের ঘটনার বিবরণে বলেন, ‘আমার চোখের সামনেই গুলি করে মারল আট জন সন্ন্যাসীকে। ব্রাউনিয়া ফুল গাছ আর জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে বেঁচে গেলাম।’

শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে সেদিনের শহীদেরা হচ্ছেন- কীর্তনব্রত ব্রহ্মচারী, নিদান বন্ধু ব্রহ্মচারী, অন্ধকানাই ব্রহ্মচারী, বন্ধু দাস ব্রহ্মচারী, ক্ষিতি বন্ধু ব্রহ্মচারী, গৌঢ়বন্ধু ব্রহ্মচারী, চির বন্ধু ব্রহ্মচারী ও রবি বন্ধু ব্রহ্মচারী। মুক্তিযুদ্ধের পর শ্রী অঙ্গন মন্দিরের চালতে তলার নিচে আট শহীদ সাধুর স্মরণে আটটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।

ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায় অবস্থিত শ্রীধাম শ্রী অঙ্গন। অহোরাত্র নামকীর্তন হয় এখানে। এভাবে প্রভুর নাম জপতে জপতেই মানবমুক্তি ও জগতের কল্যাণ হবে- এ গভীর বিশ্বাসে অষ্টপ্রহরই কীর্তন করেন গৃহত্যাগী সন্ন্যাসীরা।

মানবমুক্তির অগ্রপথিক প্রভু শ্রী শ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের আরাধনা করে তারা দিনরাত জপেন ‘বলো জয় জগৎ বন্ধু বোল’। আর হানাদার পাকিস্তানী ঘাতকেরা এটাকেই রূপান্তর করে ‘ জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/21/1555826925342.gif
শ্রীঅঙ্গনে পাকিস্তানিদের হাতে নিহত আট সন্ন্যাসীর স্মরণে নির্মিত ফলক/ ছবি: বার্তা২৪.কম

সঙ্গী এ দেশীয় রাজাকার আর বিহারীরাও সেদিন হায়েনাদের এটাই বুঝিয়ে ছিল। ফলে দানবেরা ব্রাশফায়ার করে কীর্তনরত আট সাধুকে হত্যা করে।

ফরিদপুরে পাকিস্থানি সেনারা আসছে এ খবর পেয়ে প্রভু জগৎ বন্ধুর ভাবশিষ্য মহানাম সম্প্রদায় প্রধান মহানামব্রত ব্রহ্মচারী সহ অন্য সাধু-সন্ন্যাসীরা হামলার নির্ধারিত দিন ২১ এপ্রিল এর আগেই শ্রী অঙ্গন থেকে সরে গেলেও থেকে যান ৯ সাধু। এ ৯ জনের আট জনই সেদিন আত্মোৎসর্গ করেন।

শ্রীঅঙ্গনের সাধুরা জানান, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি মিলিটারি ২১ এপ্রিল ভোরে গোয়ালন্দঘাট হয়ে সন্ধ্যায় রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে অবস্থান নেয়। সেখান থেকেই শহরের দিকে গোলাবারুদ নিক্ষেপ করতে থাকে। সন্ধ্যার পরে শহরে ঢুকে প্রথমেই গোয়ালচামট শ্রী অঙ্গনে মহানাম সম্প্রদায়ের আট সাধুকে কীর্তনরত অবস্থায় হত্যা করে। এ সন্ন্যাসীরাই হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধে ফরিদপুরের প্রথম শহীদ।

শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন আশ্রমের বর্তমান প্রধান মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি শ্রীমত কান্তি বন্ধু ব্রহ্মচারী জানান, সেদিন পাকিস্তানি মিলেটারি কীর্তনরত সাধুদের বলে ‘বাহার মে আও’। কিন্তু সাধুরা সেদিকে ভ্রক্ষেপ না করে কীর্তন চালিয়ে যান। তখন পাকিস্তানি মিলিটারি প্রথমে মন্দিরে ঢুকে কীর্তনরত সাধুদের বের করে মন্দিরের পাশে চালতা তলায় নিয়ে আসে।

এ সময় পেছন দিক থেকে সাধু হরিপ্রিয় ব্রহ্মচারী পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এরপর মাঠে নিয়ে আট সাধুকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। সাধুরা তখন একমনে ‘জয় জগদ্বন্ধু’ জপছিলেন। পাকিস্তানি সেনারা তখন মনে করেছিল তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলছেন। তাই সাধুদের হত্যা করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/21/1555826856295.gif
হরিপ্রিয় ব্রহ্মচারী/ ছবি: বার্তা২৪.কম

পরদিন ২২ এপ্রিল ভোরে ফরিদপুর মিউনিসিপ্যালটির ট্রাক এসে লাশগুলো নিয়ে যায়। এদিন পাকিস্তানি সেনারা শ্রী অঙ্গনে বিহারী ও রাজাকারদের দিয়ে লুট চালায়। ২৬ এপ্রিল ডিনামাইট দিয়ে শ্রী অঙ্গনের মূল ভবনের একাংশ ও মন্দিরের চূড়া ধ্বংস করে দেয়।

বেঁচে যাওয়া হরিপ্রিয় ব্রহ্মচারী বলেন, ‘সেদিন সন্ধ্যার আগ মহূর্তে নিত্যদিনের মতো নামকীর্তন করছিলাম আমরা। হঠাৎ হামলা, কামান আর গুলির শব্দ। তারপরও কীর্তন বন্ধ করিনি। তারপর মিলিটারিরা ঢুকলো কীর্তনের আশ্রম ঘরে।’

‘তাদের সঙ্গে কয়েকজন বাঙালি, কয়েকজন বিহারি। আমি ঘরের থামের আড়ালে লুকিয়ে রইলাম। সেখান থেকে পেছনমুখো হয়ে পা টিপে টিপে কয়েক গজ পিছিয়ে লুকিয়ে পড়লাম জঙ্গলের আড়ালে।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;