হাওরে বোরো ধানে চিটা, দিশেহারা কৃষক



মো. জিয়াউর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নেত্রকোনা, বার্তা২৪.কম
ধানের চিটা দেখে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ, ছবি: বার্তা২৪.কম

ধানের চিটা দেখে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধানে চিটা ও টানা ঝড়-শিলাবৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন নেত্রকোনার হাওর পাড়ের কৃষক। উঠতি বোরো ধানের মৌসুমে এমন বিপর্যয়ে কৃষকরা এখন দিশেহারা।

মাত্র কয়েকদিন আগে যে কৃষক সোনার ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখতেন। তারা এখন হতাশায় নিমজ্জিত। মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছেন ধান ক্ষেতের আইলে বসেই।

৮ একর জমির ব্রিধান-২৮ মারাই করে মাত্র ৮০ মণ ধান পেয়েছেন জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার সরকারহাটি গ্রামের কৃষক কাচু মিয়া। অর্থাৎ একর প্রতি তিনি ফলন পেয়েছেন মাত্র ১০ মণ ধান। অথচ বরাবর তার এ জমিতে কমপক্ষে ৩৬০ মণ থেকে ৪০০ মণ ধান উৎপাদিত হতো।

শুধু কাচু মিয়াই নয়, এই হাওরের হাজার হাজার কৃষকের হয়েছে এমন অবস্থা। এই কৃষকরা সব সময় বৈরী প্রকৃতি ও আগাম বন্যার ঝুঁকিতে থাকেন। পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে প্রায় প্রতি বছর আগাম বন্যায় তলিয়ে যায় কৃষকের সোনালী ফসল।

এখন হাওর পাড়ের কৃষক পরিবারগুলোতে বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের ধুম লাগার কথা ছিল। কিন্তু এবার সেই আমেজ নেই। অনেকের ঘরে শোকের আবহ। ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তার আহাজারি। কোনো কোনো কৃষক ধান কাটছেন ঠিকই কিন্তু ধানের ছড়ায় ধান নেই বেশীর ভাগই চিটা (ফাঁকা ধান)।

এসব দেখে কৃষি বিভাগও রীতিমত কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কৃষি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা এ সমস্যাটির নাম দিয়েছেন কোল্ড ইনজুরি।

খালিয়াজুরী কৃষি অফিসের সূত্রমতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এবার ১৯ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়। এর মধ্যে কৃষি বিভাগের হিসেব অনুযায়ী চিটায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার হেক্টর জমি। তবে বেসরকারি সূত্র ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রকৃত আক্রান্ত জমির সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

বিশেষ করে, খালিয়াজুরীর পাংগাসিয়া, কীর্তনখোলা, কটিচাপরা, সেনের বিল, জালর বন, সোনাতোলা, বল্লীর চৌতরা, জগন্নাথপুরের বড় হাওর, বাজজোয়াইল, পাঁচহাট, নগর, বোয়ালী, চাকুয়ার হাওরের হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল চিটায় পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, খালিয়াজুরীর সদরের মো. রাজু মিয়া ২০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেন। এর মধ্যে চিটা হয়েছে ১১ একর জমিতে। বহিরাগত কৃষক (জিরাতি) মো. হারুন-অর-রশিদ আবাদ করেছেন ৭০ একর। তার আক্রান্ত হয়েছে ৩০ একর। অনল মিয়ার ৫ একরের মধ্যে সম্পূর্ণ জমিতে চিটা হয়েছে।

একইভাবে বল্লী গ্রামের বাবুল মিয়া ১৫ একর জমি চাষ করেন। এর মধ্যে চিটা হয়েছে ১৩ একর। ওই গ্রামের নেহের মিয়া ৭ একর জমি চাষ করে এক মুঠো ধানও পাননি। একইভাবে খালিয়াজুরীর রফিকুল ইসলাম ছোটনের ৬ একরের মধ্যে ৩ একর, জাহের মিয়ার ৩ একরের মধ্যে ২ একর এবং গছিখাই গ্রামের শফিকুলের ১৫ একরের মধ্যে ১০ একর চিটায় আক্রান্ত হয়েছে। হাওরের গ্রামগুলোতে এরকম কৃষকের সংখ্যা আরও বহু।

আক্রান্ত কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা যায়, এসব জমির ধানের ছড়া সোজা হয়ে উপরের দিকে দাঁড়িয়ে আছে। স্বাভাবিক অবস্থায় ধানের ভারে ছড়া নিচের দিকে নুয়ে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানায় বিগত বছরগুলোতে ১ একর (১০ কাঠা) জমিতে কম করে হলেও ৬০ মণ ধান উৎপন্ন হয়েছে। এবার একরে ১০ মণ ধানও হয়নি। এতে করে অনেকের উৎপাদন খরচও উঠবে না।

কেনো হল এমন অবস্থা? এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, জমির ফ্লাউয়ারিং স্টেজের পর ধানের ছড়ায় দানা গঠন (চাল) হয়। এজন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রার প্রয়োজন পরে। কিন্তু এবার তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম থাকায় ধানের মধ্যে ঠিকমত দানা গঠন হয়নি। এর ফলে অনেক জমিতে চিটা (ফাঁকা ধান) হয়। এ সমস্যাটিকে বলা হয় কোল্ড ইনজুরি বা ঠাণ্ডাজনিত কারণ।

কয়েকজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, যে সমস্ত কৃষক জমিতে আগাম (ডিসেম্বরের শুরুতে) চারা রোপণ করেছেন তাদের জমি আক্রান্ত হয়েছে বেশি। এর মধ্যে বিশেষ করে ব্রিধান-২৮ ধানের জমিই বেশি আক্রান্ত হয়েছে।

তবে কৃষকরা জানান, অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা হওয়ায় এবং আগাম পানি চলে যাওয়ায় তাড়াতাড়ি চারা রোপণ করা হয়। অতীতে এমন সমস্যা হয়নি।

এ ব্যাপারে খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হেকিম বলেন, 'সমস্যা যেন কৃষকের পিছু ছাড়ছে না। সাধারণত এনজিও, ব্যাংক ও মহাজনি ঋণ নিয়ে হাওরের কৃষকরা জমি চাষাবাদ করে। কিন্তু এবার ফসল বিপর্যয় হওয়ায় অনেক কৃষকের পক্ষে গরু, বাছুর, বাড়িঘর বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।'

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;