চৈত্রেই ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন



কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, হবিগঞ্জ, বার্তা২৪.কম
চৈত্রেই ডুবেছে ধান, ছবি: বার্তা২৪.কম

চৈত্রেই ডুবেছে ধান, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চৈত্র মাস এখনো শেষ হয়নি। সবেমাত্র বৈশাখ হাতছানি দিয়ে ডাকছে। যে বৈশাখকে ঘিরে সোনালী স্বপ্নে বিভোর থাকেন কৃষকরা। যে মাসকে বলা হয় কৃষকের স্বপ্নের মাস, সাধনার মাস। সে বৈশাখ যেন কৃষকের দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে চলেছে।

গেল দুই বছর কৃষকরা সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি। আগাম বন্যায় বিস্তীর্ণ হাওরের আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে যায়। এখনও সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি হাওরের কৃষকরা। এর মধ্যে এ বছর দেখা দিয়েছে আরও বড় বিপত্তি। অতি আগাম বন্যা যেন কৃষককে বুক দাপিয়ে ডাকছে। মেঘে ঢাকা কালো আকাশ আর মেঘের গর্জন শুনে কৃষকের মন আঁতকে উঠে।

ইতোমধ্যে হাওর এলাকার নিচু জমিগুলো ডুবতে শুরু করেছে। কৃষকদের তথ্য মতে বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রায় কয়েকশ একর জমির কাঁচা ও আধপাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আর কয়েক হাজার একর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম। গলা পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেগুলোও তলিয়ে যাবে।

এদিকে, প্রতিদিন যেন ত্রি-রূপে সেজেছে ধরা। মেঘ-বৃষ্টি আর ঝড়ের খেলা চলছে দিনরাত। যে রূপ ফলছে আকাশে, তা হৃদয় পটেও নাড়া দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত অস্থিরতায় ভরে উঠছে কৃষকের মন। আহার-নিদ্রাবিহীন কৃষক আকাঙ্ক্ষিত দৃষ্টিতে থাকিয়ে আছেন হাওরের পানে।

জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওরে পানি উঠতে শুরু করেছে। আবার কোথাও কোথাও ছোট ছোট বাঁধগুলোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে বিভিন্ন নদ-নদী থেকে ধানি জমিতে হাওরে পানি ঢুকছে। ইতোমধ্যে নিচু এলাকার জমিগুলোর কাঁচা ও আধা পাকা ধান তলিয়ে গেছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/08/1554740476091.gif

কৃষকদের তথ্যমতে, জেলার তিন উপজেলায় প্রায় কয়েকশ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক। অল্প জমি চাষ করা কয়েকজন কৃষক ইতোমধ্যে পথে বসেছেন বলেও দাবি করছেন অনেকে।

কৃষকরা বলছেন, গত কয়েকদিন বৃষ্টিতে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। আর এসব নদ-নদীর পানি বিভিন্ন খাল বিলের মাধ্যমে হাওরে প্রবেশ করছে। এছাড়া বৃষ্টির পানিও হাওরে জমা হচ্ছে। ফলে হাওরের নিচু জমিগুলো ডুবতে চলেছে। তবে ইতোমধ্যে অনেকগুলো জমি ডুবেও গেছে।

তারা বলছেন, অনান্য বছর বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে এসে বন্যা দেখা দেয়। এ সময় জমির ধানগুলো অধিকাংশই পেকে যায়। ফলে পানিতে ডুবে যাওয়া কিছু ধান কেটে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু এ বছর যে জমিগুলো পানিতে ডুবে গেছে সেগুলো সম্পূর্ণ কাঁচা। ফলে কাটার কোন উপায় নেই। এছাড়া কয়েক হাজার জমির ধান এখন পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে।

এদিকে, উঁচু জমির ধান নিয়েও দুশ্চিন্তায় দিন-রাত কাটছে কৃষকের। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলে কাঁচা ধানই পানিতে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলার হারুনী গ্রামের কৃষক সুদাংশু দাস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমার অনেক জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম। গত দুই বছর চাষ করেও কোন ধান ঘরে তুলতে পারিনি। এ বছরও যদি একই অবস্থা হয় তাহলে আমাদের না খেয়ে মরা ছাড়া কিছু করার নাই।'

একই এলাকার কৃষক দ্বিজেন্দ্র দাস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'গত দুই বছরের ঋণই এখনও পরিশোধ করতে পারিনি। এ বছর আবার একই বিপত্তি। আমরা হাওরের মানুষদের মরা ছাড়া আর কোন উপায় না। এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন পানি বেড়ে চলেছে। উঁচু জমির ধানগুলো তুলতে পারব তারও কোন ভরসা পাচ্ছি না।'

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা মোতাহের মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'অন্য বছর বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে বন্যার দেখা দেয়। এতেও সব ধান পানিতে তলিয়ে যায়। এ বছর চৈত্র মাসেই যেখানে অনেক ধান তলিয়ে গেছে সেখানে ধান ঘরে তুলার স্বপ্নতো স্বপ্নই থাকবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এখন চৈত্রের খরায় ঘর থেকে বের হওয়া দায় দুষ্কর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ বছর বৃষ্টির কারণে বের হওয়া যাচ্ছে না। কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।'

যদিও বিষয়টি অনেকটা এড়িয়ে গেলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী। বার্তা২৪.কম-কে তিনি বলেন, 'গতকালও আমরা বানিয়াচং উপজেলার বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করে এসেছি। আমাদের কাছে এমন কোন তথ্য নেই। তাছাড়া উপজেলা অফিসসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।'

এ বক্তব্যের ঘণ্টাখানেক পর তিনি আবার মোবাইল ফোন করে বার্তা২৪.কম-কে জানান, সামান্য কিছু জমি তলিয়েছে। তবে সেগুলো একদম নিচু এলাকার জমি। তাছাড়া কোন বাঁধ ভাঙেনি। কয়েকটি নদী পারাপারের রাস্তা ভেঙেছে। তবে এতে হাওরের ধানের কোন ক্ষতি হবে না।'

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;