নেপালে প্লেন দুর্ঘটনা

শিক্ষকতায় ফিরতে চান সেদিন বেঁচে যাওয়া হাসি



অভিজিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, টাঙ্গাইল
নেপালে প্লেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ইমরানা কবির হাসি / ছবি: বার্তা২৪

নেপালে প্লেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ইমরানা কবির হাসি / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আঘাতের চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন টাঙ্গাইলের পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের এনায়েতপুর দক্ষিণ পাড়ায় সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা হুমায়ূন কবিরের মেয়ে ইমরানা কবির হাসি। তিনি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

২০১৮ সালের ১২ মার্চ ইমরানা কবির হাসি ও তার স্বামী মো. রকিবুল হাসান নেপালে ঘুরতে যাওয়ার সময় ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে দুর্ঘটনার শিকার হন। সে সময় সেখানেই তার স্বামী রকিবুলের মৃত্যু হয়। বেঁচে যান তিনি। কিন্তু হাসি বেঁচে থেকেও যেন সেই বিভীষিকা স্মৃতি আজও ভুলতে পারছেন না।

তবে তিনি জানিয়েছেন, যতদিন বেঁচে থাকবেন এই দুঃসহ স্মৃতি নিয়েই বেঁচে থাকবেন। দীর্ঘ ১১ মাস পর শুধু বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাসায় আসেন তিনি। আরও কয়েকটি অপারেশন বাকি আছে তার। এখনো চিকিৎসাধীন আছেন ইউএস বাংলার তত্ত্বাবধানে।

তার বাবা হুমায়ন কবির জানান, গত বছরের ১২ মার্চ তার মেয়ে ও মেয়ের জামাই সাত দিনের ভ্রমণে ঢাকা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ইউএস বাংলা বিমান যোগে নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়। তাদের বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার পর তিনি বাড়ি চলে আসেন। ট্রেনে আসার সময় হাসির মামাতো ভাই তাকে ফোন করে জানতে চায় হাসি ও তার স্বামী নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে কিনা। হুমায়ন কবির রওনা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলে ওই মামাতো ভাই জানান তাদের বিমানটি দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে। টেলিভিশনে খবরে হাসিকে দেখার পর তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার স্বীকার যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের নেপালে নেওয়া হবে এমন সংবাদ পাওয়ার পর ওইদিন রাত ১২টায় তিনি ইউএস বাংলার অফিসে গিয়ে পৌঁছান। তার পাসপোর্ট না থাকায় হাসির বান্ধবীর স্বামীকে নেপাল পাঠান। নেপাল থেকে হাসিকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে এমন খবর পাওয়ার পর হুমায়ন কবির দ্রুত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট করে ১৫ মার্চ নেপাল গিয়ে পৌঁছান। সমস্ত শরীরে ব্যান্ডেজ থাকায় নিজের মেয়েকে চিনতে পারছিলেন না। কম্পিউটারে মুখ দেখে তিনি নিশ্চিত হন।

হুমায়ন কবির জানান, ১৬ মার্চ ইউএস বাংলার কর্মকর্তা ও বাংলাদেশের মেডিকেল টিম বৈঠক করে হাসিকে সিঙ্গাপুরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। ১৭ মার্চ রাত ১২টার ফ্লাইটে তিনি ও তার মেয়ে হাসিকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। পরদিন সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে হাসিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে নয় দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর হাসি সুস্থ হন।

হাসির এক জায়গার চামড়া কেটে আরেক জায়গায় লাগানো হয়েছে। সে ব্যাথায় অনেক কান্না করেছে। এতো কষ্টের পরও হাসি বেঁচে থাকায় আল্লাহ তালার কাছে শুকরিয়া কামনা করি।

প্লেন দুর্ঘটনা নিয়ে ইমরানা কবির হাসি বার্তা২৪.কমকে জানান, ১২ মার্চ সবকিছু স্বাভাবিক থাকায় দুপুরের দিকে তাদের বহনকৃত প্লেনটি ফ্লাই করে। ঘণ্টাখানেক যাওয়ার পরই একটি পাহাড় দেখে হাসি বুঝতে পারেন তারা নেপাল পৌঁছে গেছেন। বিমানটি ল্যান্ড করবে এমন ভেবে হাসি ও তার স্বামী কথা বলছিলেনি এবং ছবি তুলছিলেন। কিছুক্ষণ পর অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি লেগে বিমানটি মাটিতে পড়ে যায়। হাসি বুঝতে পারেনি প্লেনটি দুর্ঘটনা কবলিত। ততক্ষণে তার স্বামী উল্টে সিটের তলায় গিয়ে পড়েন। স্বামীকে একাধিকবার ডাকার পরও কোনো সাড়া শব্দ পাচ্ছিলেন না। প্লেনটি দুই ভাগ হয়ে গিয়েছিল। অনেকেই বের হচ্ছে। কিন্তু বাম হাত দিয়ে সিট বেল খোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন হাসি। হাসি ভেবেছিলেন প্লেন দুর্ঘটনায় কেউ বাঁচে না, হয়তো তিনিও বাঁচবেন না। মারা যাবেন ভেবে কালেমা পড়ছিলেন। তার সামনেও এক নারী কালেমা পড়ছিলেন। প্লেনের পেছন দিক থেকে ভয়াবহ আগুন আসা শুরু করেছে। প্লেনে যারা ছিলেন তারাও আগুনে পুড়তে লাগল। ততক্ষণে হাসির পিঠে, মাথায়, চুলে এবং হাতেও আগুন ধরে যায়। আগুনে পুড়তে থাকায় নিরুপায় হয়ে তার স্বামীকে ডাকতে লাগলেন। কিন্তু তখনও কথা বলছিলো না স্বামী মো. রকিবুল হাসান। প্রচণ্ড আগুন ও অধিক পরিমাণে ধোয়া থাকায় মুখে ওড়না নিয়ে নিশ্বাস নিচ্ছিলেন হাসি। তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কেউ একজন তার পাশে আছে।

তিনি আরও জানান, সেভ মি, সেভ মি বলে ডাকার পর ফায়ার সার্ভিস অথবা সেনাবাহিনীর কেউ একজন এসে হাসিকে উদ্ধার করেন। সামনে থাকা মহিলা ও তার স্বামী এবং তাকে সেভ করতে বলেন। তার হাত ভাঙা থাকায় খুব যত্মে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। তিনি মারা যাবেন এমনটাই ভাবছিলেন। খাবারের পানি চাচ্ছিলেন। তার পর কী হয়েছিল হাসি আর কিছুই বলতে পারেননি। নয় দিন পর তার জ্ঞান ফেরার পর স্বামীর কথা জানতে চাইলে নেপালে আছেন বলে জানান তার বাবা। আড়াই মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর দেশে ও ১১ মাস পর বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। এখনো আরও কিছু চিকিৎসা বাকি আছে তার।

হাসি বলেন, ‘আল্লাহ পাক চেয়েছেন বলে আমি বেঁচে আছি। আইসিইউতে চিকিৎসা নেওয়া অবস্থায়ও আমার চোখে আগুন ভাসতো। শারীরিক ট্রিটমেন্ট সবাই করতে পারে, কিন্তু মানসিক ট্রিটমেন্ট কেউ করতে পারে না। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব পালন করতে চাই। সেখানে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সাথে থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে থেকে সুস্থ থাকতে চাই।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;