নারীদের ইটভাঙা শ্রমে বদলে গেছে জীবন



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর, বার্তা২৪
ইট ভেঙে সুরকি করছেন গ্রামের নারীরা, ছবি: সংগৃহীত

ইট ভেঙে সুরকি করছেন গ্রামের নারীরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘২৫ বৎস্যর (বছর) আগের কথা। তহন আমার বয়স ৯ বৎস্যর। অভাবের লেইগ্যা ইশকুলে যাই নাই। তয় অভাব দূর করনের লেইগ্যা রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি থেইক্যা ইট টুক্কাইয়্যা আনতাম। হেরপর হেই ইট ভাইঙ্গা সুরকি করতাম। তহন এক টিন সুরকির দাম আছিন পাঁচ শিকা (১টাকা ২৫ পয়সা)। পরে ওই সুরকি বেচার টেকা জমাইয়্যা নিজেই ইট ভাঙার কারখানা দেই। ইট টুক্কানি বাদ দিয়া ইটভাটা থেইক্যা নয়া ইট কিইন্যা আনি। গেরামের মহিলারা কারখানায় ইট ভাঙে। অহন এক টিন সুরকির দাম ৫৫ টেকা। প্রতি মাসে আমার সুরকি বেইচ্যা ২০ হাজার টেকার মতো লাভ অয়। অহন আর অভাব নাই। স্বামী-সন্তান লইয়্যা আমরা অহন সুখেই আছি।’

বার্তা২৪.কমের কাছে নিজের ইট ভাঙার শ্রমে দিন বদলের গল্পটা এভাবেই তুলে ধরেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের বালুয়াপাড়া গ্রামের সুরকি ব্যবসায়ী আম্বিয়া খাতুন (৩৪)।

তবে দিন বদলের গল্প এই গল্প শুধু আম্বিয়া খাতুনের নয়। বালুয়াপাড়া গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক নারীর পরিবার সংসারের সব কাজ করার পাশাপাশি ইট ভেঙে পরিবারের অভাব দূর করেছেন। নিজেরা উপার্জনক্ষম হয়ে বদলে দিয়েছেন বালুয়াপাড়া গ্রামের জীবন যাত্রা।

গ্রামের প্রবীণ নারী শ্রমিকরা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে অভাবের তাড়নায় গ্রামের ৮/১০টি দরিদ্র পরিবারের নারীরা ইট কুঁড়িয়ে এনে সুরকি তৈরি করে বিক্রি করত। এরপর তাদের দেখাদেখি আরও অনেকই জড়িয়ে পড়ে। তবে এখন কেউ ইট কুঁড়ায় না, ইট ভাটা থেকে ইট কিনে আনে। এখন গ্রামের ২০/২৫ টি কারখানায় ২ শতাধিক নারী ইট ভাঙার কাজ করে। ইট ভাঙার কাজ করা নারীদের অনেকেরই এখন আধা-পাকা বাড়ি রয়েছে। অনেকের ঘরে ঘরে আছে, খাট, খাবার টেবিল ও রঙিন টেলিভিশনসহ নানা আসবাবপত্র।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বালুয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ইট ভাঙা হচ্ছে বাড়ির আঙ্গিনায় বসে। কোথাও আবার ঘরের বারান্দা কিংবা রান্নাঘরের ভেতরেই চলছে ইট ভাঙার কাজ। বিভিন্ন বয়সী নারীরা ইট ভাঙার কাজ করছেন। কোনো স্থানে একা একা, কোনো স্থানে আবার দলবদ্ধ ভাবে। ইট ভাঙার কাজের জন্য নারী শ্রমিকদের ধরাবাঁধা কোন সময় মানতে হয় না। সংসারের অন্য কাজের ফাঁকে ফাঁকে দিনে-রাতে যখন ইচ্ছা তখন ইট ভাঙে। ইট ভেঙে এক টিন সুরকি করলে পায় ৫ টাকা। প্রতিদিন ১ জন নারী শ্রমিক ইট ভেঙে ২০ থেকে ৩০ টিন পর্যন্ত সুরকি করে।

ইট ভাঙা কারখানার মালিক রাজিয়া খাতুন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘কারখানার মালিকরা ইট ভাটা থেইক্যা ইট আইন্যা সুরকি বানায়। নারী শ্রমিকরা কারখানায় ১ টিন সুরকি বানাইলে ৫ টেকা পায়। আর আমরা ১ টিন সুরকি ৫০ থেকে ৫৫ টেকা দরে বিক্রি করি। এই ব্যবসা কইর‌্যা অহন আমার মাসে ২০ হাজার টেকার উফরে লাভ অয়।’

গ্রামের স্থানীয়রা জানান, পুরুষেরা ইজিবাইক চালানো, মুদি দোকান করাসহ নানা পেশায় আছেন। সাথে পুরুষদের রোজগারের পাশাপাশি নারীদের ইট ভাঙা কাজের রোজগার এখন জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করছে। গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারের ছেলে-মেয়েরা এখন স্কুলে যায়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন গৌরীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ রইছ উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বালুয়াপাড়া থেকে গৌরীপুর সহ ময়মনসিংহ জেলার আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থাপনা, পাকা ভবন, সড়ক ও বাড়ি নির্মাণের জন্য সুরকি সরবরাহ করা হয়। নারীদের ইট ভাঙার শ্রমে এখন গ্রামের অর্থনৈতিক চিত্রটাই পাল্টে গেছে।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;