বরাদ্দের চেয়ে জেলে বেশি, মানবেতর জীবন



হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লক্ষ্মীপুর, বার্তা২৪.কম
কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকায় ভাসমান জেলেদের বসবাস। ছবি: বার্তা২৪.কম

কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকায় ভাসমান জেলেদের বসবাস। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'আঙ্গোরে কেউ কোনো দিন কিছু দেয় না। বেকে সরকারি চাইল (চাল) হাইলেও (পেলেও) আমরা হাই (পাই) না। আঙ্গো কার্ড থাইকলেও বোর্ড অফিসে গেলে চাইল দেয় না। চাইল আইনতে গেলে কয় আঙ্গোর লাই আইয়ো (আসে) নো।’

এভাবেই বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট এলাকার জেলে রশিদ মাঝি ও তার স্ত্রী। নৌকায় তাদের বসবাস।

এদিকে উপকূলীয় এ জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৪৯ হাজার ৫৫৮ জন। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৯৪৭ জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন। এর থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ২৩ হাজার ৬১১ জন জেলে।

জানা গেছে, মেঘনা নদীতে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। এই দুইমাস মাছ ধরা থেকে জেলেদের বিরত রাখতে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে এখানকার জেলেরা মাছ শিকার থেকে বিরত রয়েছে। নৌকায় বসবাসকারী জেলেরা নদীর কূলে অবস্থান নিয়েছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৪৯ হাজার ৫৫৮ জন। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৯৪৭ জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন।

সদর উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে ৭ হাজার ৭১৭ জন, রায়পুরে ৭ হাজার ৩২৩ জন, কমলনগরে ১৪ হাজার ২০০ জন, রামগতিতে ২০ হাজার ৩১৮ জন।

খাদ্য সহায়তা পান সদরের ৩ হাজার ২৯৫ জন, রায়পুরে ৪ হাজার ২২৬ জন, কমলনগরে ৭ হাজার ১৫১ জন ও রামগতিতে ১১ হাজার ২৭৫ জন জেলে। বাকি ২৩ হাজার ৬১১ জন জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। তারা বিগত বছরগুলোতেও কোনো সহযোগিতা পাননি। যার কারণে এসব জেলেরা গত বছর খাদ্য সহায়তার দাবিতে বিক্ষোভও করেছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মেঘনা নদী থেকে মাছ শিকার করে প্রায় ৬২ হাজার জেলে জীবিকা নির্বাহ করছে। এর মধ্যে অধিকাংশই সরকারি খাদ্য সহায়তা পাওয়া থেকে বঞ্চিত। অভিজ্ঞতা না থাকায় অন্য কোনো কাজও তারা করতে পারে না। এজন্য একদিন মাছ শিকারে যেতে না পারলে তিনবেলা খাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। মানবেতর জীবনযাপন করেন তারা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/05/1551781598470.jpg

মতিরহাট, মজু চৌধুরীর হাট ও করাতির হাট এলাকার কয়েকজন জেলে জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে তারা নদীতে যান না। খাদ্য সহযোগিতা থেকেও তারা বঞ্চিত। এতে নিষেধাজ্ঞার সময় তাদের ধারদেনা করে চলতে হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের কষ্টে দিন কাটে। আর এজন্যই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রশাসনের অগোচরে অনেক জেলে মাছ শিকারে যায়। ধরা পড়লে মাছ, নৌকা ও জাল সব আটকা পড়ে প্রশাসনের হাতে। এছাড়া জরিমানা-জেলও খাটতে হয়।

কমলনগর উপজেলার পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম নুরুল আমিন রাজু জানান, ৩ হাজার ৬২৬ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন তার এলাকায়। এরমধ্যে ১ হাজার ৪৬২ জন জেলের জন্য চাল বরাদ্দ হয়। অন্যরা এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বরাদ্দের চেয়েও জেলে বেশি হওয়ায় জনপ্রতিনিধিরা নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হন। তিনি সরকারের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ বরাদ্দ চান।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্লাহ জানান, নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ২৫ হাজার ৯৪৭ জন খাদ্য সহায়তা পাবেন। ফেব্রুয়ারি থেকে চার মাস তাদেরকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। নিবন্ধিত বাকি জেলেদেরকেও খাদ্য সহায়তা আওতায় আনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারে না যাওয়ার জন্য জেলেদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রতিদিন নদীতে তাদের অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, জাটকা রক্ষা ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে জেল, জরিমানা ও উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;