উপজেলা ভোট
সাত চেয়ারম্যান, ৯ ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৭ চেয়ারম্যান, ৯ ভাইস চেয়ারম্যান, ১০ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চূড়ান্ত তালিকা আসলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইসি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
ইসি জানায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন- বালিয়াডাঙ্গী(ঠাঁকুরগাও) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। হাকিমপুর (দিনাজপুর)- উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) উপজেলা চেয়ারম্যান, বেড়া (পাবনা) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সিংড়া (নাটোর) উপজেলা চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত।
বাগেরহাট সদরে ৩টি পদ, মুন্সীগঞ্জ সদর- ৩টি পদ, শিবচর (মাদারীপুর)-৩টি পদে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। বড়লেখা (মৌলভীবাজার) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পরশুরাম (ফেনী)- ৩টি পদ, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সদরের ভাইস চেয়ারম্যান, রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) উপজেলা চেয়ারম্যান, কাউখালী (রাঙামাটি) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
তীব্র গরমে পানি বিতরণ করছে শাহবাগ থানা পুলিশ
দেশজুড়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র দাবদাহ। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। তীব্র তাপপ্রবাহে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মানুষ। হাসপাতালেও বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। এরকম তাপপ্রবাহের মধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে পানি এবং স্যালাইন বিতরণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে রাজধানীর ঢাকার শাহবাগ থানার পুলিশ সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তাজির রহমানের নেতৃত্বে রিকশা চালক, বাসের হেলপার, বাসের যাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে পানি এবং স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে।
তীব্র দাবদাহের মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে পানি এবং স্যালাইন পেয়ে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সাধারণ মানুষ বলেন, এই তীব্র গরমের মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে পানি এবং স্যালাইন বিতরণ অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি কাজ।
সাধারণ মানুষ আরও বলেন, আমরা চাই পুরো দেশজুড়ে এভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে পানি এবং স্যালাইন বিতরণ করা হোক।
এসময় শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তাজির রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তীব্র দাবদাহের কারণে হিট স্ট্রোক করে মানুষ মারা যাচ্ছে। এজন্য আমরা মানুষের মধ্যে পানি বিতরণ করছি। আমরা চাই মানুষের ভিতরে পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠুক। আমাদের ডিএমপি কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশে আমরা সবার মধ্যে পানি বিতরণ করছি।
শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর সরদার বুলবুল আহমেদ বলেন, আমরা বিনামূল্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে পানি এবং স্যালাইন বিতরণ করছি। মানুষের বিপদে পুলিশ সবসময় ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা ক্ষুদ্র সামর্থ্যের ভিতর থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রচন্ড দাবদাহে মানুষ যাতে পানি পান করে সেজন্য আমরা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছি। যতদিন পর্যন্ত দাবদাহ থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের পক্ষ থেকে পানি এবং স্যালাইন বিতরণ চলমান থাকবে।
সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা পথচারী আছেন; অসহায় ও দরিদ্র মানুষ আছেন, আমরা যেন সবাই তাদের পাশে দাঁড়াই।
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) কাতারের বিনিয়োগকারীদের প্রতি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গভবনে ঢাকায় সফররত কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, খাদ্য সরবরাহের চেইনগুলো উৎপাদন থেকে ব্যবহার পর্যন্ত যেমন—কৃষি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, খাদ্য প্যাকেজিং, স্মার্ট এগ্রিকালচার, সার উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।
উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতারকে বাংলাদেশের একটি মূল্যবান উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমিরের সফর এবং দু’দেশের মধ্যে সম্পাদিত ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত ও গভীরতর করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল স্থাপন করেছে। কাতারের বিনিয়োগকারীরা পেট্রো-কেমিক্যাল, জ্বালানি, মেশিনারিজ, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, কৃষি ব্যবসা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রণোদনা পেতে এবং সহায়তা করতে পারে।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রায় ৩ দশমিক ৭৫ লাখ বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য কাতার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই জনবল কাতার ও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রতিনিয়তই অবদান রাখছে।
কাতারের আমিরকে আরও তরুণ, দক্ষ ও আধা-দক্ষ জনশক্তি, আইটি বিশেষজ্ঞ, পেশাদার প্রযুক্তিবিদ নিয়োগের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দেওয়ার জন্য কাতার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান কাতারের কাছে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উভয় পক্ষকে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রপতি চলমান ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনার সুবিধার্থে কাতারের (মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। কাতার ও বাংলাদেশ স্বাক্ষরিত বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরো কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
সাক্ষাতকালে উভয় নেতা তাদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন এবং আনন্দ প্রকাশ করেন, এই সফর বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করার উপায় নির্ধারণ করবে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, পররাষ্ট্র সচিব এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কাতারের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আমিরি দেওয়ান প্রধান শেখ সৌদ বিন আবদুল রহমান আল থানি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরায়া বিন আলী আল কাহতানি ।
বৈঠক শেষে কাতারের আমির ফটোসেশনে অংশ নেন এবং দর্শনার্থী বইতে স্বাক্ষর করেন।
সার্টিফিকেট বাণিজ্যের দায় স্বীকার কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানের
‘কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের প্রধান হিসেবে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের দায় অবশ্যই আমি এড়াতে পারি না’ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী আকবর খান বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এক্ষেত্রে আমরা লজ্জিত ও দুঃখিত’!
স্ত্রীকে গ্রেফতারের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। গোয়েন্দা সংস্থা কী তথ্য পেয়েছে, তাও কিছুই জানি না’।
তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থা বের করেছে, এর বেশি কিছু জানি না। সার্টিফিকেটের কাগজ ওয়েবসাইটে পাইনি’।
২০ লাখ টাকা ঘুষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এটির তদন্ত চলছে’।
কত সংখ্যক সার্টিফিকেট বাণিজ্য হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আলী আকবর খান বলেন, ‘মিডিয়াতে শুনতে পেয়েছি, পাঁচ কী সাড়ে পাঁচ হাজার। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই, কতগুলো হয়েছে’।
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের প্রধান হিসেবে আপনার দায় আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অবশ্যই এর দায় আমি এড়াতে পারি না’।
আপনার স্ত্রী বিনা অপরাধে জেল খাটছে বলে মনে করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বিনা অপরাধেই জেল খাটছেন’।
আপনাকে ওএসডি করা হয়েছে কেন, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় একটি সংবাদ চলে আসছে এবং ডিবির কাছে তথ্য আছে, সেজন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে’।
এর আগে সনদ ও নম্বরপত্র জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে স্ত্রী সেহেলা পারভীন গ্রেফতারের পর আকবর আলী খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে গোয়েন্দা পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পেলে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সাবেক এই চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছেন গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ।
প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সনদ জালিয়াতির অভিযোগে প্রথমে গ্রেফতার হন সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে একে একে উঠে আসে এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বোর্ড সংশ্লিষ্ট অনেক ছোট-বড় কর্মকর্তা ও দেশের কয়েকটি কারিগরি স্কুল ও কলেজের প্রধান আর অধ্যক্ষদের নাম।