দিল্লির করুণা ভিক্ষা করছে সরকার অভিযোগ রিজভী
ঢাকা: জনবিচ্ছিন্ন সরকার আবারও ক্ষমতায় থাকতে ভারতীয় 'থিংক ট্যাংক' নীতিনির্ধারকদের মাধ্যমে করুণা ভিক্ষা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের স্বীকারোক্তিতেই বলেছেন, তিনি ভারতকে সবকিছু দিয়েছেন, প্রতিদান চান নি।' কিন্তু এখন প্রতিদান পেতে একের পর এক প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বিবেক, আত্মমর্যাদা, জাতীয়তাবাদী অহংকার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অপমানিত করে দিল্লীর দরবারে করুণা ভিক্ষা করছেন।
রোববার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের প্রতিনিধিরা ভারত সফরে গিয়ে বিএনপির যে সমালোচনা করেছেন সে প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ বলেন, অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আরেকজন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ভারত সফরে গিয়ে সেখানে একটি শীর্ষস্থানীয় ‘থিংক ট্যাংক’ এর আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘বিএনপি ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে, বিএনপি হচ্ছে চীন ও পাকিস্তানপন্থী।’এইচ টি ইমাম এর উদ্ভট বেহায়াপনায় বাংলাদেশী জনগণ হতবাক ও স্তম্ভিত।
'ভারত বিএনপি-কে সুযোগ দেবে না' প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের এ ধরনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এইচ টি ইমাম সাহেবকে বলতে চাই, ভারত সুযোগ দেওয়ার কে ? বাংলাদেশের মালিক বাংলাদেশের জনগণ। সুযোগও দেবে বাংলাদেশের জনগণ। আপনার বক্তব্যে বোঝা যায় 'বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনের চাবিকাঠি ভারত'। সেজন্যই প্রভুদের কাছে দেনদরবার শুরু করেছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রভুদের কাছে তাই এতো আকুতি মিনতি করছেন।
বাংলাদেশের জনগণ ষড়যন্ত্রমূলক ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের আর সুযোগ দেবে না জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন দল ক্ষমতায় আসবে তা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ। জনগণকে পাশ কাটিয়ে এদেশে আর কোন ষড়যন্ত্রমূলক ভোটারবিহীন জাতীয় নির্বাচন জনগণ হতে দেবে না।
'বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনী পরামর্শক লর্ড কার্লাইলকে ভারতে ঢোকার অনুমতি না দিতে নয়াদিল্লীতে জোরালো সুপারিশ পাঠিয়েছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন' একটি দৈনিক পত্রিকায় নয়াদিল্লীর উচ্চ পর্যায়ের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে রিজভী আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা জনাব সজিব ওয়াজেদ জয় এর নিকট আমাদের জিজ্ঞাসা, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন বাংলাদেশের এখন কোন দলের মুখপাত্র ?
'খালেদা জিয়ার আইনি পরামর্শক ও ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইল চলতি সপ্তাহে নয়াদিল্লী সফরে গিয়ে ১৩ জুলাই ফরেন ক্লাবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও কারাদন্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার কথা রয়েছে।'
এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, যদি ঢাকাস্থ হাই কমিশনের জোরালো সুপারিশের কারণে লর্ড কার্লাইলের ভিসা দেয়া না হয় তাহলে এটা প্রমানিত হবে যে, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাদন্ড দিতে হাই কমিশনের নেপথ্য ভূমিকা রয়েছে।
ভারতীয় হাই কমিশনের এই ধরনের ভূমিকাকে দু:খজনক এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আগ্রাসী হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি ভোটারবিহীন সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতীয় হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের ভূমিকা ঔপনিবেশিক শাসকদের ন্যায়। যেন তারা বাংলাদেশে তাদের প্রতিভুদের টিকিয়ে রাখতে উঠে পড়ে লেগেছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন যদি ঔপনিবেশিক শাসনের গভর্নর হাউজে পরিণত হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন ও সার্বভৌমত্ব অতি দুর্বল।