ভূমি কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান
নড়াইল: কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউপি চেয়ারম্যান জারজিদ মোল্যার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, সরকারি নথিপত্র বিনষ্ট ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তা সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কালিয়া থানায় মামলাটি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পেড়লী ইউনিয়ন উপ-সহকারী পদে যোগদানের পর সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমানের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদাদাবি করে এসেছেন ইউপি চেয়ারম্যান জারজিদ মোল্যা। মুস্তাফিজুর রহমান তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে গত ২৬ মে বিকেল ৪টায় জারজিদ তার দলবল নিয়ে পেড়লী ভূমি কার্যালয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে মুস্তাফিজুর রহমানকে কিল, ঘুষি, লাথি ও চড় মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান কাঠ দিয়ে মুস্তাফিজুরের মাথায় এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে হত্যার হুমকি দেন।
মুস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি কালিয়া সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেন। এতে জারজিদ মোল্যা মুস্তাফিজুর রহমানের ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে ৬ থেকে ৭ জনের একটি পেটোয়া বাহিনী নিয়ে ৩ জুলাই দুপুরে দিকে পেড়লী ভূমি কার্যালয়ে ফের অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও নথিপত্রসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি করেন। এভাবে সরকারি কাজে বাধা দেওয়াসহ অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ করে পরবর্তীতে ওই কর্মকর্তাকে অফিসে আসতে নিষেধ করেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান জারজিদ মোল্যার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
পেড়লী ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিরাপত্তাজনিত কারণে এসব অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি ঘটনার বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ চেয়ারম্যান জারজিদ এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। থানায় মামলা হওয়ায় পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
পেড়লী ইউপি চেয়ারম্যান জারজিদ মোল্যা বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে।’
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শমসের আলী মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আসামি গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।