রোহিঙ্গাদের মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শুনে ‘হতভম্ব’ গুতেরেস-কিম
কক্সবাজার: কক্সবাজারের কুতুপালং ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মুখে মিয়ানমারে সেনাদের সেই নিদরুণ নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা শুনে ‘হতভম্ব’ হয়েছে পড়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
সোমবার (২জুলাই) দিনের টানা ৯ ঘন্টা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাটিয়েছেন তারা। নিজের চোখে দেখেছেন রোহিঙ্গাদের করুণ জীবন যাপন। শুনেছেন বীভৎস হত্যা আর নির্যাতনের করুণ কাহিনী।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন পর নিজেরদের আবেগ ধরে রাখছে পারেনি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়া ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন তারা।
কক্সবাজারের কতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের কাছে মিয়ানমার সেনাদের নিষ্ঠুর নিপীড়নের বর্ণনা শুনে হৃদয় ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে নিজ সন্তান ও নাতিদের মুখছবি ভাসতে দেখেছেন বলেও জানান তিনি।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ সন্তোষজনক নয় মন্তব্য করে তিনি।
তিনি বলেন, ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আরো জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।’
আর রোহিঙ্গাদের করুণ অবস্থা দেখে নিজেকে তাদের অবস্থানে দাঁড় করিয়ে কষ্ট বোঝার চেষ্টা করেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। জীবনের সবচেয়ে ‘ভয়াবহ দৃশ্যের’ সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানান বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট।
চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় স্বল্প সুদে বাংলাদেশকে আরো তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন বিশ্বব্যংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
রোববার (১ জুলাই) বাংলাদেশের আসে জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট। সোমবার (২ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজারের যান তারা।
কক্সবাজারের সায়মন বীচ রিসোর্ট হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের ব্রিফিং করেন।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক পথে উখিয়ার বালুখালী ট্রানজিট পয়েন্ট ও কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের খোঁজ খবর নেন।
সোয়া ১১টা থেকে ইউএনএইচসিআরের বালুখালী ট্রানজিট ক্যাম্প, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং মহিলাদের আলাদা জায়গা পরিদর্শন করেন গুতেরেস ও কিম।
তাদের সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এবং জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া খানেমসহ জাতিসংঘের অধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ডজন খানেক কর্মকর্তা।
এরপরে বিকালে কক্সবাজারে বৈশ্বিক সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিমান যোগে কক্সবাজার ত্যাগ করেন।