‘সৌদি আরবে আসার আগে বুঝেশুনে আসুন’



জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরব (মক্কা) থেকে: ভাগ্য অন্বেষণে তিন যুগ আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। প্রথম বেতন ছিলো বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র ৬ হাজার টাকা। বেতন কম হলেও টাকার মান আর জীবনযাত্রার ব্যয়ে ছিলো স্বস্তি। পরে চাকরি ছেড়ে শুরু করেন ব্যবসা। মেধা আর পরিশ্রমে আজ তিনি পবিত্র মক্কা নগরীর মসজিদ আল হারাম সংলগ্ন তারকাখচিত ব্যস্ততম তিনটি হোটেলের ব্যবসায়িক অংশীদার। রয়েছে আরও অনেক ব্যবসা।

তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার ভাওরকোট ভূঁইয়াবাড়ি গ্রামের নূর মোহাম্মাদ ভূঁইয়া (৫৮)।

এতকিছুর পরেও মনে সুখ নেই তার। দুচিন্তায় কপালে ভাঁজ। পড়ে যাচ্ছে মাথার চুল। হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে দিন দিন গুটিয়ে আনছেন নিজের ব্যবসা- বাণিজ্য। স্বেচ্ছায় তো নয়ই, বরং বাধ্য হচ্ছেন। এক সময়ের রমরমা আর চালু ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন তিনি। তার মতো প্রভাবশালী ব্যবসায়ির এত হতাশার কারণ কি?

অকপট জবাব, ‘আমাকে অংশীদার বা প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, দয়া করে কোনোটাই বলবেন না। কারণ কাগজে কলমে আমি নিজেও এখানে একজন কর্মি মাত্র। এটাই এখানকার বাস্তবতা। যত যাই করেন, সব ব্যবসার মালিকানা এখানকার সৌদি নাগরিকদের। তাদের কর্মি, এই পরিচয়েই আমরা এখানে আছি। তবে কতদিন টিকে থাকতে পারবো- তা বলতে পারছি না। কারণ পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে তাতে করে অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে এখানকার ব্যবসার পরিবেশ।’

নূর মোহাম্মাদ ভূইয়া বলেন, ‘২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের শ্রমবাজারের দরজা বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। রিয়াদে ক্যাবল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দূর্যোগ নেমে আসে শ্রমিকদের ওপর। সব কিছু বৈধ থাকার পর দলে দলে বাংলাদেশিদের ধরে জোর করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমার মতো ব্যক্তিও বাদ পড়েনি। আমাকেও তালিকাভুক্ত করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। কারণ আমি এখানে ভালো ছিলাম। ভালো ব্যবসা করছিলাম। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই।’

নূর মোহাম্মাদ ভূইয়া বার্তা২৪.কমকে আরও বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে এখানে কোনো কাজ নেই। সৌদি সরকারের শ্রম বাজার সংস্কার নীতির মুখে বিপাকে পড়েছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। এখনকার নতুন নিয়মে পরিবার নিয়ে কাউকে থাকলে হলে সন্তান জন্ম নেওয়া মাত্রই মাসে সরকারকে দিতে হবে ৩শ' রিয়াল। যে কারণে অনেকেই পরিবার দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। জেদ্দায় পরিচালিত বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এক ধাক্কায় নেমে গেছে অর্ধেকে।

আরেক আপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিক নিয়োগে নতুন নীতিমালা। এখন থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানে ৪ জন অভিবাসী শ্রমিক থাকলে তার বিপরীতে একজন সৌদি নাগরিক নিতে হবে। যার হতে বেতন হতে হবে ন্যূনতম সাড়ে তিন হাজার রিয়াল। এ ছাড়াও ফি বছর অভিবাসী শ্রমিকদের আকামা নবায়ন করতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।

এমনিতেই কাজ নেই। তার ওপর এত কড়াকড়ির মুখে বিদেশি শ্রমিকদের বাদ দিতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই চাপটা পড়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর।’

দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার পর ২০১৭ সালে বাংলাদেশের জন্যে শ্রমের বাজার খুলে দেবার পর দেড় লাখ নারী শ্রমিকসহ এ দেশে ঢুকেছে সাত লাখের মতো শ্রমিক। যাদের অর্ধিকাংশের হাতে এ মুহুর্তে তেমন কাজ নেই।

একজন শ্রমিক গড়ে ৬ লাখ টাকা খরচ করে এসে অবশিষ্ট জীবনে অভিবাসন ব্যয় তো তুলতেই পারবে না, বরং নিজের জীবনটাকেই সে নষ্ট করছে এখানে। মোটা অংকের টাকা খরচ করেও এখান থেকে দেশে টাকা পাঠাতে পারছে না। তাহলে হিসাবটা কি দাঁড়ালো? সাত লাখ শ্রমিকের মাধ্যমে দেশ থেকে ৩০/৪০ হাজার কোটি টাকা বের হলো ঠিকই- কিন্তু দেশে ঢুকলো না তার সিকিভাগ।

সুতরাং আর্থিক ও শ্রম। দু’দিকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ। সরকারের মন্ত্রণালয় শ্রমিক পাঠিয়ে বাহবা নিতে পারে, কিন্তু শেষ বিচারে অভিবাসী প্রত্যাশী শ্রমিক গরীব থেকে আরও নিঃস্ব হচ্ছে। এখনই উচিৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা।

আমার আহবান, প্লিজ! সৌদি আরবে আসার আগে বুঝেশুনে আসুন। দয়া করে কারো প্রলোভন বা মিথ্যা আশ্বাসে আসবেন না। এলেই ফাঁদে পড়লে সেই ক্ষতি থেকে জীবনে আর বের হতে পারবেন না। আমি দেশে গেলে বিভিন্ন ফোরাম এমনকি টেলিভিশন টক শো’তে এটাই বলার চেষ্টা করি। মানুষকে সচেতন করতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হবে।

আমার কথাই যদি বলি, গত এক বছরে কেবল আমি নিজে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি ১০ কোটি টাকার বেশি। আর পারছি না। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তিনটির মধ্যে দু’টি হোটেল ছেড়ে দেবো।

পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে সৌদি আরবে অভিবাসী ২০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে অর্ধেকেই টিকতে না পেরে চলতি বছরই দেশে ফিরতে হবে। কোনো উপায় নেই। এই বিপর্যয় কিভাবে সামাল দেওয়া হবে, আমাদের দেশের সামর্থ্য কতটুকু তা ভাবনার সময় এসেছে- যোগ করেন নূর মোহাম্মাদ ভূইয়া।

   

ফুডগ্রেডবিহীন ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাত বন্ধে মানববন্ধন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ ও ফুডগ্রেড বিহীন ড্রামে ভোজ্যতেল ব্যবহারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা জানি, ভোজ্যতেল সংরক্ষণ বা সরবরাহের ক্ষেত্রে নীল রঙের কেমিক্যালের ড্রাম ব্যবহার করা হয়। যার ফলে ভোজ্যতেল বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো উপকরণ দিয়ে তৈরি প্যাকেট বা পাত্রে ভোজ্যতেল বাজারজাত করা যাবে না।’

তারা আরও বলেন, ‘ড্রামে বাজারজাতকৃত ৫৯ শতাংশ ভোজ্যতেলই সঠিকমাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ নেই। ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে-অপরিণত শিশুর জন্ম, মহিলাদের গর্ভধারণে সমস্যা, শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, জন্মগত ত্রুটি, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, রাতকানা, চোখ শুষ্ক হয়ে অন্ধত্বের সৃষ্টি হয়, শিশু মৃত্যু বৃদ্ধি এবং চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া সহ নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে হৃদরোগ, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। ড্রামের অস্বাস্থ্যকর এসব তেল গ্রহণের কারণে এই পরিস্থিতি আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।’

তারা জানান, সরকার ১৬ মার্চ ২০২২ তারিখের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর ননফুড গ্রেডেড ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাত ও পরিবহন বন্ধ করার জন্য নির্দেশ জারি করেন। কিন্তু কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং অন্যান্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সময়সীমা আরো বাড়ানো হয়। সয়াবিন তেল বাজারজাতকরণের সময়সীমা ৩১ জুলাই ২০২২ এবং খোলা পাম অয়েল বাজারজাতকরণের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এই সময় সীমার পর অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ ও ফুডগ্রেড বিহীন ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাত বন্ধকরণ শতভাগ নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও সরকার এটি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।’’

ক্যাব’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও গ্রীন ভয়েস'র কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক যুগ্ম সচিব ও ক্যাব কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহা: শওকত আলী খান, ক্যাবের সম্মানিত সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ নাগরিক সমাজের আহবায়ক ও মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

;

বৃষ্টির জন্য পটুয়াখালীতে ইস্তিসকার নামাজ আদায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্রখড়া আর তাপদাহ থেকে বাচঁতে বৃষ্টির জন্য সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেছে মুসুল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে ওয়ালামা মাশায়েক পরিষদের উদ্যোগে পটুয়াখালী শহরের ঝাউবন এলাকার ফোরলেন সড়কে এ নাজাম আদায় করা হয়। এতে খোলা আকাশের নিচে তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নেয়।

নামাজের ইমামতি করেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজ মসজিদের ইমমি ও খতিব মাওলানা মহতাসিন বিল্লা জুনায়েত।

নামাজ শেষে তীব্র তাপদাহ থেকে বাচঁতে দেশ ও জাতিসহ সকল প্রাণীকূলের শান্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে মুসুল্লিরা অশ্রুসিক্ত চোখে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন। গোটা দেশবাসী তাপদাহ থেকে বাচঁতে এ নামাজ আদায় করা হয়েছে বলে জানান নামাজের খতিব।

;

প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁস; ঢাবি শিক্ষার্থীসহ চক্রের সদস্যরা গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তিন ঢাবি শিক্ষার্থী ও কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

;

পলাশে নামাজ পড়ে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহের কারণে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও রহমতের বৃষ্টির চেয়ে নরসিংদীর পলাশে বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকার) আদায় করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় পলাশ উপজেলার পলাশ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ও বেলা ১১টায় ঘোড়াশালের করতেতৈল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মুসল্লিদের উদ্যোগে এই নামাজ আদায় করা হয়।

পলাশ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মাসুদ করিম ও করতেতৈল আদর্য় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মোহাম্মদ নাঈম।

নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লি এম এ কাইয়ুম জানান, আমরা এই তাপদাহ থেকে বাঁচতে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করে বিশেষ নামাজ সালাতুল ইসতিসকার আদায় করেছি।

নামাজ শেষে মুসল্লিরা দুই হাত উপরে তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। এসময় দোয়াতে অঝোরে কান্না করে মুসল্লিরা নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা চেয়ে তীব্র গরম থেকে মুক্তি চেয়েছেন।

;