রোহিঙ্গা ভোটার: নেপথ্যের চক্র ধরতে বিশেষ অভিযান



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা | ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা | ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যাতে কোনভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কাজের সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে ইসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে এ কাজে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি চট্টগ্রামে লাকী নামে একজন রোহিঙ্গা নারী স্মার্টকার্ড আনতে গেলে সার্ভার থেকে জানা যায় তার এনআইডি সঠিক নয়। এরপর সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তিনি রোহিঙ্গা। এরপর তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। এর কয়েক দিন পর সার্ভারে আরও ৪৬ জনের অসম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কারও ফিঙ্গার প্রিন্ট ঠিক নেই, কারও ফরম সঠিকভাবে আপলোড করা হয়নি। তাই সেগুলো চিহ্নিত করে ব্লক করে রাখা হয়েছে। পরে এ ঘটনা তদন্তের জন্য ইসি সচিবালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

একই সঙ্গে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) একটি বিশেষ টিম গঠন করে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে সেই টিম কাজ শুরু করে এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজনকে শনাক্ত করে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় দুই জনকে আটক করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ইসির চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা কার্যালয়ের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীনকে আটক করা হয়। আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চলছে, সেখানে নেপথ্যে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধানও মিলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আটকের সংখ্যা ও তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি প্রভাবশালী চক্র রোহিঙ্গাদের ভোটার করার জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করছে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই চক্রকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সার্বিক সহযোগিতা করছেন ইসির কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা।

এনআইডি উইং সূত্র জানায়, তথ্য সংগ্রহকারী দ্বারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও কাগজপত্র সুপারভাইজার দ্বারা যাচাই করা হয়। সেসব তথ্য শনাক্তকারী দ্বারা শনাক্ত এবং যাচাইয়ের পর প্রুফ রিডিং, অ্যাডজুডিকেট, বায়োমেট্রিকসের দ্বৈততা পরীক্ষা করে খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর বায়োমেট্রিকস প্রদানের সময় ছবি ও চার আঙুলের পরিবর্তে চোখের আইরিশ ও দশ আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়।

তবে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ৩২টি বিশেষ এলাকার নাগরিকদের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রতিটি এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এছাড়াও বিশেষ এলাকার নাগরিকদের নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত নিবন্ধন ফরমের অতিরিক্ত বিশেষ ফরম রয়েছে। সেখানে পিতা-মাতার পাশাপাশি চাচা-চাচি, মামা-মামি, ফুফা-ফুফুসহ আত্মীয়স্বজনের নাম দিতে হয়।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক নিবন্ধন কার্যক্রমের পর ভোটার নিবন্ধনের আগে ইসির কাছে রক্ষিত ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার ডাটাবেজের সঙ্গে বায়োমেট্রিকসের দ্বৈততা পরীক্ষা সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ডাটাবেজ পরীক্ষার পর কমিশনের নিজস্ব ডাটাবেজ পরীক্ষা করা হয়, এরপর সব ঠিক থাকলে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চূড়ান্ত হয়। ফলে এসব ধাপ পেরিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকে না। তবে প্রভাবশালীদের সহায়তায় অনেক অসাধু চক্র এটি করার চেষ্টা করে, কিন্তু যখন রোহিঙ্গা ডাটাবেজে এটি পরীক্ষা করা হয় তখন সেটি অবশ্যই ধরা পড়বে। সেক্ষেত্রে ধরা পড়লে সেই ভোটার তথ্যটি সঙ্গে সঙ্গে ব্লক করে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানেও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে অভিযান চলছে।

এদিকে নতুন করে যাতে কোন রোহিঙ্গার নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে পারে না পারে সেজন্য ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সাতদিন সার্ভারে নতুন ভোটারদের তথ্য আপলোড করার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তিতে সতর্কতা জারি করে সব আঞ্চলিক, জেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের চিঠি দেবে কমিশন।

এ বিষয়ে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় ঢোকানোর সুযোগ নেই। তবে যারা এটি করার চেষ্টা করেছে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে ওই তিনজনের বাইরে কে বা কারা আটক আছে, তার পরিচয় ও সংখ্যা তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করতে চাই না। আমরা পুরো চক্রকে ধরতে বদ্ধপরিকর। যেহেতু কমিশনের একজন অফিস সহকারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তার পরিচয় আমরা সবাইকে জানিয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহায়তা করছে, পুরো চক্রটিকে ধরতে প্রতিদিনই বিশেষ অভিযান চলছে।

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের আশপাশের ৩২টি উপজেলাকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করেছি। সেখানে গঠিত বিশেষ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে বার বার সতর্ক করেছি, যাতে বিদেশি বা রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় আসতে না পারে। অভিযুক্ত যাদের আটক করা হয়েছে তারা রোহিঙ্গাদের ভোটার করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কাউকে ভোটার করতে পারেননি এবং আইডি কার্ডও দিতে পারেননি। শুধু তারা উদ্যোগ নিয়েছে, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও কেউ এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে কি না, সেটাও আমরা দেখছি।

বিদ্যমান আইন অনুসারে বর্তমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০১৯ এর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা, যার ভিত্তিতে বাংলাদেশি নাগরিক ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হবেন।

   

জোরপূর্বক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ: টিআইবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক একীভূতকরণকে ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ বলে মন্তব্য করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি মনে করে, প্রস্তাবিত একীভূতরকরণের মাধ্যমে খেলাপি ঋণে জর্জরিত দুর্বল ব্যাংকের মন্দ ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহি সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে যে ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি করা হয়েছে, তা সংকটের মূল সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে ঋণখেলাপি ও জালিয়াতির জন্য দায়ী মহলকে ‘দায়মুক্তি’ প্রদানের নামান্তর।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মতামত প্রকাশ করেছে টিআইবি।

টিআইবি জানায়, ব্যাংকিং খাতের দুর্বল ব্যাংকগুলো রক্ষার নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূতকরণের পথে হাঁটতে শুরু করেছে, যা আর্থিক খাতে সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবেচিত হওয়ার কথা। কিন্তু সংবেদনশীল ও জটিল এই কাজটি করতে আর্ন্তজাতিকভাবে অনুসৃত মানদণ্ড ও রীতিনীতি, এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজের ঘোষিত নীতিমালা না মেনে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাচারীভাবে চাপিয়ে দেওয়া কয়েকটি ব্যাংক একীভূতকরণের ঘোষণা এবং এ প্রক্রিয়ায় থাকা ভালো ব্যাংকগুলোর অস্বস্তি, একীভূত হতে কোনো কোনো দুর্বল ব্যাংকের অনীহা, সব মিলিয়ে ব্যাংকিং খাতে শঙ্কা, অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা গভীরতর করেছে। যা একীভূতকরণের পুরো প্রক্রিয়াটিকে শুরুর আগেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত একীভূতকরণ নীতিমালা অনুযায়ী, যে কোনো দুর্বল ব্যাংক চলতি বছরের মধ্যে স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশপূর্বক নিজস্ব সম্পদ ও দায়-দেনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকাভুক্ত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে মূল্যায়ন করে প্রকাশ করার কথা। যা বিবেচনায় নিয়ে সবল কোনো ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকটিকে স্বেচ্ছায় একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ রাখা রয়েছে।

প্রাথমিক এই প্রক্রিয়াটি ব্যর্থ হলেই কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক জোরপূর্বক একীভূতকরণের উদ্যোগ নেওয়ার কথা- মনে করিয়ে দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একটি দুর্বল ব্যাংক ছাড়া কোনো ব্যাংকই নিজ উদ্যোগে একীভূত হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি, আবার এ প্রক্রিয়ায় নাম আসা সবল ব্যাংকগুলো স্বীয় উদ্যোগে স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে এতে যুক্ত হতে সম্মত হয়েছে তাও নয়। অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়াটি প্রথম থেকেই স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা ঘোষিত নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাছাড়া, দুর্বল ব্যাংকের সম্পদ ও দায়-দেনার পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন ছাড়া আপাত সবল ব্যাংকের ঘাড়ে একীভূতকরণের নামে ঋণখেলাপি ও জালিয়াতির বোঝা চাপিয়ে দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, যা ঘটছে তা ক্যান্সার চিকিৎসায় প্যারাসিটামল প্রয়োগের নামান্তর। একীভূতকরণের নামে একদিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও জালিয়াতির জন্য যারা দায়ী তাদের যেমন সুরক্ষা দিয়ে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতিকে গভীরতর করা হচ্ছে, অন্যদিকে সবল ব্যাংকগুলোর সাফল্যের পরিণামে খারাপ ব্যাংক হজম করিয়ে দেওয়ার জোর প্রচেষ্টা চলছে। যা অস্বস্তি ও শঙ্কার নতুন বাতাবরণ ছড়িয়ে দিয়েছে পুরো খাতে।

দুর্বল ব্যাংককে বাঁচানোর এই প্রক্রিয়া হিতে বিপরীত হবে কি-না আশঙ্কা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, একীভূতকরণের আলোচনায় সরকারি-সরকারি, বেসরকারি-সরকারি এবং বেসরকারি-বেসরকারি তিন ধরনের ব্যাংকই রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন বিবেচনায় এই ব্যাংকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একীভূত করার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে, কিংবা কোন সবল ব্যাংকের সঙ্গে কোন দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে, তা কিভাবে ঠিক করা হয়েছে- তাও স্পষ্ট নয়। আবার, একীভূত হওয়ার আলোচনার বাইরে থাকা বেশ কয়েকটি ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়ছে। অন্যদিকে, দুর্বল দুটি ব্যাংকের দায়িত্ব নিতে যাওয়া সবল বলে পরিচিত সরকারি দুটি ব্যাংকের নিজেদের খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেশ বড়। এমন বাস্তবতায় ব্যাংকিং খাতের মূল সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকর জবাবদিহি-ভিত্তিক সুশাসন নিশ্চিত করা ছাড়া, শুধু একীভূত করলেই সংকট মোকাবিলা করা যাবে বা গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা পাবে কিংবা খেলাপি ঋণ কমে আসবে- এমন ভাবনা সত্যিই অলীক।

একীভূতকরণ নীতিমালায় দুর্বল ব্যাংকের পরিচালকদের পাঁচ বছর পর পুনরায় একীভূত হওয়া ব্যাংকের পর্ষদে ফেরত আসা ও ব্যবস্থাপনায় জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তাদের পুনঃনিয়োগের সুযোগ রাখার বিধানের সমালোচনা করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এ বিধান দুর্বল ব্যাংকের সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির বদলে পুরস্কৃত করা এবং এক ধরনের দায়মুক্তি দেবার বিধান। পাশাপাশি, দুর্বল ব্যাংকের নিরীক্ষাকালে নতুন কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির চিত্র উঠে এলে সে বিষয় গোপন রাখার যে বিধান নীতিমালায় রাখা হয়েছে, তা শুধু আর্থিক অনিয়মের চিত্রকেই ধামাচাপা দেবে না, একই সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির মুখোমুখি করার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হবে। যা এক কথায় অন্যায়কে সুরক্ষা দেওয়ার শামিল। একীভূতকরণের নামে যা ঘটছে, তা হতাশাজনক এবং ঋণ খেলাপিদের হাতে ব্যাংকিং খাতের অব্যাহত জিম্মিদশার পরিচায়ক।

নীতিমালা অনুযায়ী, একীভূত দুর্বল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রাষ্ট্রীয় মালিকানার একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কিনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে জনগণের অর্থে ঋণ খেলাপিদের আরও এক দফা দায়মুক্তি দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ব্যাংক খাতের বিশাল ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা ও জন অস্বস্তি বিবেচনায় টিআইবি মনে করে, প্রত্যাশিত ফল পেতে সংশ্লিষ্ট খাতে সুখ্যাতিসম্পন্ন নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাংক একীভূতকরণ নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি, ইতোমধ্যে একীভূতকরণের নামে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন স্থগিত করার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

;

রাঙামাটিতে ইয়াবা পাচারকালে আটক ৩



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

পান ব্যবসায়ের আড়ালে মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িয়ে মাদক পাচারকালে ইয়াবাসহ আটক হয়েছে সাবেক ইউপি সদস্যসহ তিন মাদক ব্যবসায়ী।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ভোর রাত ৪টার সময় চট্রগ্রামের হাটহাজারী থেকে পান বোঝাই একটি মিনি ট্রাক রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার আর্মি ক্যাম্পের চেকপোস্টে আসলে চেক করার জন্য গাড়ি দাড় করায় সেনাবাহিনী। এর মধ্যই সন্দেহজনক হলে লংগদু থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তল্লাশি করে ইয়াবাসহ তাদের আটক করে।

লংগদু থানার এসআই রফিকুল ইসলাম ও এসআই আল আমিন সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে গাড়িতে থাকা পানের খাঁচাগুলো তল্লাশি করে খাঁচা থেকে একটি প্যাকেট পায়। যার মধ্যে ৫১ পিস ইয়াবা (মাদক) ছিলো। যা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসময় গাড়ির ড্রাইভার মারুফ ও হেলপার ইউনুছ এবং পান ব্যবসায়ী সাবেক কালাপাকুজ্জা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহ আলম ও রফিকুল ইসলমাকে আটক করে পান বহনকারী গাড়ি সহ থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাদক নিয়ন্ত্রন আইন-২০১৮ এর ৩৬(১) সারনির ১০(ক)/৩৮/৪১ ধারায় অপরাধে, আসামিদের দুপুর ২টায় লঞ্চে রাঙ্গামাটি আদালতে প্রেরণ করে। 

লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, আমদের কাছে খবর আসলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায় এবং মাদকসহ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।

;

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৩ দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পঞ্চগড়
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট উপলক্ষে আবারও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশনসহ আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে।

ভারতের দার্জিলিং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা কালেক্টর এবং নির্বাচন অফিসার ডা. প্রীতি গোয়েল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে টানা তিনদিন পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশনসহ সব ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা ও বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তারা জানান, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা গেছে, ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোটের কারণে দার্জিলিংয়ের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ডা. প্রীতি গোয়াল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আগামী বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত তিন দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকবে। তবে এসময়ে ভারত ও বাংলাদেশে অবস্থানরত যাত্রীরা নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারবেন এবং জরুরি মেডিকেল ভিসা যাত্রীরা প্রবেশ করতে পারবেন জানিয়েছেন তারা।

;

বগুড়ায় বটির উপর পড়ে শিশুর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ার কাহালুতে তরকারি কাটার বটির উপর পড়ে রাহি মনি (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সাঘাটিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত রাহি মনি ওই গ্রামের আব্দুর রহিমের মেয়ে।

জানাগেছে, শিশুটি মা আমেনা বেগম বাড়ির উঠানে বসে বটিতে তরকারি কাটছিলেন। শিশুটি উঠানে খেলাধুলা করার সময় দৌড়ে বটির উপর পড়ে যায়। এতে বটির সামনের অংশ শিশুটির বুকে ঢুকে যায়। তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, নিহত শিশুর পরিবারের কারো কোন অভিযোগ নাই। এটি একটি দুর্ঘটনা। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

;