ওয়াটার ট্যাক্সি ৬টি,  চলে ১টি তাও অনিয়মিত



নাজমুল হাসান সাগর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: সংগৃৃহীত

ছবি: সংগৃৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৩ সালে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান গাবতলী ওয়াটার ট্যাক্সি ল্যান্ডিং স্টেশনে ‘গাবতলী টু সদরঘাট’র নতুন চারটি ওয়াটার ট্যাক্সির উদ্বোধন করেন। মোট ছয়টি ওয়াটার ট্যাক্সি এই রোডে চলাচল করার কথা থাকলেও চলছে মাত্র একটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই একটি ওয়াটার ট্যাক্সিও চলে অনিয়মিত।

প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা পর পর গাবতলী ও সদরঘাট থেকে একটি করে ওয়াটার ট্যাক্সি যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টা পঞ্চান্ন মিনিটে গাবতলী ওয়াটার ট্যাক্সি ল্যান্ডিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ল্যান্ডিং স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ও বসার আসনগুলোতে বাস্তুহীন মানুষ ও পথ শিশুরা ঘুমাচ্ছে।

তখনও ল্যান্ডিং স্টেশনে ওয়াটার ট্যাক্সি সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারির দেখা মেলেনি কোথাও। ল্যান্ডিং স্টেশনের নিরাপত্তারক্ষী ঘুম থেকে উঠলেন সাতটা ত্রিশ মিনিটে। তার সাথে কথা বলে জানা গেল, ওয়াটার ট্যাক্সি সদরঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় সকাল নয়টা দশ মিনিটে। যাত্রী না হওয়ার কারণে এই অবস্থা জানান তিনি।

এদিকে আটটার ওয়াটার ট্যাক্সি ধরে ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য গাবতলী ওয়াটার ট্যাক্সি ল্যান্ডিং স্টেশনে এসেছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্মান দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া রিথিলা তন্বী। দূর থেকে প্ল্যাটফর্মের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ফিরে যাচ্ছিলেন। ওই সময় রিথিলার সঙ্গে কথা হয়।

তিনি জানান, আসলে ওয়াটার ট্যাক্সি করে যাওয়াটা আমার জন্য সহজ। বিগত দুই বছর ধরে নিয়মিত ওয়াটার ট্যাক্সি করে যাওয়ার চেষ্টা করি কিন্তু ট্যাক্সিই তো ঘাটে আসে না।

ট্যাক্সি ঘাটের পরিবেশ নিয়ে এই যাত্রী বলেন, ‘দেখছেন একবার এখানকার পরিবেশটা? কোথাকার কারা এখানে শুয়ে আছে, কে জানে! এমন অবস্থা দেখলে খুব ইনসিকিউর ফিল করি। তাই চলে যাচ্ছি।’

সাতটা ৫৮ মিনিটে তাড়াহুড়ো করে একজনকে স্টেশনে আসতে দেখা গেল। তিনি এসেই নিরাপত্তারক্ষীকে নির্দেশ দিলেন ঘুমন্ত মানুষগুলোকে ডেকে তুলে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিতে। নির্দেশ শুনে তৎপর নিরাপত্তারক্ষী। একে একে সবাইকে ডেকে তুলে প্ল্যাটফর্ম থেকে বিদায় করে দিলেন। কেনো তাদের সড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এমনটা জানতে চাওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীকে নির্দেশকারী জানালেন, ‘বড় স্যার (সচিব) আসবেন’।

এই বলেই হন্তদন্ত হয়ে তিনি চলে গেলেন ল্যান্ডিং স্টেশনের একটি কক্ষে। সেখান থেকে ঝাড়ু হাতে ফিরে, নিজেই পরিষ্কার করলেন সমস্ত স্টেশনসহ প্ল্যাটফর্মে বসার আসনগুলো। অবস্থা দেখে মনে হলো, গত দুই দিন থেকে এই স্টেশন পরিষ্কার করা হয় না। সিমেন্ট দিয়ে বাধানো বসার আসনগুলোতে ছারপোকার অভাব নেই। ছারপোকার কামড়ে এক জায়গায় পাঁচ মিনিটের বেশি বসে থাকা অসাধ্য।

নয়টা বাজার কিছুক্ষণ আগে চার থেকে পাঁচজন যাত্রী এসে হাজির হলেন স্টেশনে। উদ্দেশ্য ওয়াটার ট্যাক্সি ধরে সদরঘাট যাবে। তাদেরই একজন আজীবুল মোল্লা, পেশায় ক্ষুদে কাপড় ব্যবসায়ী। তিনি নয়টার সময় এসেও ওয়াটার ট্যাক্সি ঘাটে না দেখে স্টেশনে লঞ্চ-স্টিমার শাখায় কর্মরত একজন কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করলেন ‘এখনো ঘাটে ওয়াটার বাস নাই কেন?’ প্রত্যুত্তরে ওই কর্মকর্তা বললেন, ‘এইডা আর নতুন কি? ওরা তো শুরু থাইকাই মন-মর্জি মতো চলে। যেদিন পকেট ফাহা (খালি) থাকে হেইদিন আয় যাত্রি লইতে।’

আজ আসবে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মচারী বলেন, ‘আইলে এতক্ষণে আইসা পড়তো। আইজ আর আইবো না।’

পাশে থেকে আরেক অপেক্ষমান যাত্রী বললেন, ‘খবরে দেখায় এত এত ট্যাক্সি ছাড়ছে,তাহলে এগুলা দিয়া লাভ কি?’

প্রত্যুত্তরে ল্যান্ডিং স্টেশনের নিরাপত্তারক্ষী বললেন, ‘আরে ভাই সাংবাদিকরা আর কি জানে। তারা আহে ফটো তুলে আর ভিডিও কইরা যায়। টিভিতে যা দেহায় তার সবই কি সত্যি না কি! আগের দুইডায় সরকার লোকশানে আছিলো। এহন যেডি ছাড়ছে হেডিতে সরকার ভর্তুকি দেয়। হের লেইগা সকাল-সন্ধ্যা না চইলা, দিনে একটা ট্রিপ দেয় ট্যাক্সি। খবরের কতা বাদ দেন। আমরা যা কই হেইডাই সত্যি।’

ওয়াটার ট্যাক্সির এমন বেহাল দশা নিয়ে যোগাযোগ করা হয় বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ তাজুল ইসলামের সাথে। তিনি না থাকায় তার ব্যাক্তিগত সহকারি কল রিসিভ করে প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘কেন চলবে না? এটা তো প্রতিদিন চলার কথা। কেন চলছে না সেটার কোনো কারণ এখনও আমরা জানি না। আমরা চট্টগ্রাম আছি। আপনি দুই দিন পর যোগাযোগ করুন, তখন জানানো হবে’।

উল্লেখ্য, গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত চলাচল করা এসব ওয়াটার ট্যাক্সির ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। যাত্রাপথে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনের ভাড়া ১৫ টাকা। ২০১৩ সালে উদ্বোধন করা ট্যাক্সিগুলোতে যাত্রী আকর্ষণে ভর্তুকি দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের ওয়াটার ট্যাক্সিগুলোর যাত্রী ধারণক্ষমতা ৩৫ জন। কেরানীগঞ্জের ‘ঢাকা ডকইয়ার্ডে’ নবনির্মিত চারটি ওয়াটার ট্যাক্সির প্রতিটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮১ জন। সদরঘাট থেকে যাত্রা করে ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো পথে খোলামোড়া, সোয়ারিঘাট, বছিলা ও রায়েরবাজারে যাত্রী ওঠানামা করাবে।

বলে রাখা ভালো, ২০০৪ সালে একটি ওয়াটার ট্যাক্সি নামানো হয়েছিল। এরপর ২০১০ সালের ২৮ আগস্ট দুটি নৌযান দিয়ে দ্বিতীয় ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হয়। তবে গত দুইবারই যাত্রীর অভাব, নৌযানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এসব সেবা বন্ধ হয়ে যায়। তৃতীয়বারের মতো ওয়াটার ট্যাক্সি সেবা চালু হলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনেকেই বলছেন, এই সেবাও বন্ধ হয়ে যাবে খুব দ্রুত। নানা সমস্যার কারণে এসব সরকারি সেবার ধার ধারে না যাত্রীরা। নদীর নোংরা পানির দুর্গন্ধ ও অনিয়মিত যাত্রী সেবার কারণে এমন অবস্থা বলে মনে করেন অনেকেই।

 

   

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৩৭



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩৭ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫০৮ পিস ইয়াবা, ৮৬ কেজি ৭৯৩ গ্রাম ৮০ পুরিয়া গাঁজা, ৭৪ গ্রাম ৫১ পুরিয়া হেরোইন, ৮২ বোতল ফেনসিডিল ও ৪০০টি ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৬টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

;

বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত?



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি। এদিকে ষোলতম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী ঢাকার অবস্থান ১৬।

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৩৪৪ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভারতের দিল্লি শহর। এছাড়া ১৮১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো সিটি, ১৭৮ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে নেপালের কাঠমান্ডু। ১৬০ স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার শহর মিদান। এছাড়া চীনের বেইজিং ১৫৯ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।

আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৩৫ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ষোলতম অবস্থানে রয়েছে মেগাসিটি ঢাকা।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

;

বার্তা২৪.কম-কে ড. এম. মুশতাক হোসেন

‘তাপদাহে সাধারণের জন্য উপদেশ নয়, প্রয়োজন সহায়তা’



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এ অবস্থায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য শুধুমাত্র উপদেশ নয়, প্রয়োজন সহায়তা কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসা। বলেছেন বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন।

বুধবার বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। চলমান তাপদাহে শ্রমজীবী মানুষের অসহায়ত্বের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মতো সেবাদানকারী সরকারি কর্মচারীদের জন্য স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষের কর্তব্যের কথা তুলে ধরে ড. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের তো কষ্ট হচ্ছেই। তারা বাইরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। খোলা আকাশের নীচে তাদের কাজ করতে হচ্ছে। তাদের জন্য উপদেশের পরিবর্তে করণীয় হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ ও কমিউনিটি-যাঁরা সরকারের হয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য পানি, ছায়া ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। আর যাঁরা বেসরকারি মালিকের অধীনে কাজ করছেন, মালিককেই তা এনশিওর করতে হবে।’

‘মালিক যদি একা না পারেন তবে কয়েকজন মালিক মিলে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে ছায়া ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে হবে। খাবারের ব্যবস্থাও করতে হবে, কেননা দাবদাহে তো শুধু পানিশূন্য হয় না পুষ্টিঘাটতিও তৈরি হয়। ভারী খাবার না হোক, চিড়া-বিস্কুট, স্যালাইন পানি ইত্যাদির আয়োজন কর্তৃপক্ষকেই করতে হবে। মনে রাখতে হবে যাদের সক্ষমতা আছে, উপদেশে তাদের কাজ হবে, তারা তো চাইলে ঘরেও থাকতে পারছে, কিন্তু শ্রমজীবী মানুষ বা যাদের কাজ না করলে ভাত জুটবে না তাদের জন্য সহায়তামূলক কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। এসব বাদ দিয়ে শুধু উপদেশ দিলে কাজ হবে না,’ বলেন ড. হোসেন।

দাবদাহে খোদ ঢাকাতেই মানুষের মৃত্যুকে ‘খুবই দুঃখজনক’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘এত প্রচারণার পরেও তাদের ঘরে বসে থাকলে চলছে না। সুতরাং সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের সহায়তায় সমাজের সক্ষমদের এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ বক্সগুলোকে সহায়তা কার্যক্রমের কেন্দ্র করা যেতে পারে। ট্রাফিক পুলিশ যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের কথাও ভাবতে হবে।’

রাজধানী ঢাকার দূষণ ও বায়ু নিম্নমানের প্রসঙ্গ টেনে জনস্বাস্থ্যের জন্য সৃষ্ট সংকটে করণীয় বিষয়ে ড.  মুশতাক হোসেন বলেন, ‘সকালে রাস্তার পাশের মাটিতে ও গাছে পানি দিতে হবে, যাতে তারা পানি শুষে নিয়ে অক্সিজেনটা দিতে পারে। পানিটা দিতে হবে যখন রোদ থাকে না তখন, অন্য সময় দিলে তো তা বাষ্প হয়ে যাবে।’

চলমান এই তাপপ্রবাহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব তাতে কোন সন্দেহ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা তো বৈজ্ঞানিক তথ্য। এবারের এই তাপপ্রবাহ পরিবর্তিত জলবায়ুর অভিঘাতের ভয়াবহতাকেই স্পষ্ট করে তুলেছে।’  

চলমান তাপদাহের ফলে কি ধরণের রোগবালাই বাড়তে পারে, বা রোগতত্ত্ব বিভাগে সাম্প্রতিকতম মূল্যায়ন কি? -এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এই তাপপ্রবাহে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ, পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধি পাবে। সেইসঙ্গে নানা পুরনো জটিল রোগে যাঁরা আক্রান্ত তাদেরও ঝুঁকি বাড়বে। শিশু ও বয়স্কদের অবস্থা আরও খারাপ হবে। এসব অজানা বিষয় নয়, সবই জানা বিষয়।’

কোভিড বা অন্য সংক্রামক রোগব্যাধির প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘কোভিডের সঙ্গে আবহাওয়া পরিবর্তনের কোন সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারচেয়েও বড় সমস্যা হবে শ্বাসতন্ত্র ও পানিবাহিত রোগ নিয়ে। ত্বক সংক্রান্ত সমস্যাও বাড়বে। হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ছে।’         

জলবায়ু তহবিল ব্যয়ে জনস্বাস্থ্য কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখানে তো সরকারের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার ও অঙ্গীকার থাকতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের শিকার তো সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নারী ও বয়স্কদের ওপর বেশি পড়ে। তাদের সহায়তা করতে হবে। যেমন ধরুন তাপপ্রবাহ নিয়ে করণীয় প্রচার করাই যথেষ্ট নয়। উপকূলে লবনাক্ততা প্রকট। আমরা দেখি সহযোগিতা জায়গা মত পৌছায় না। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। তাপদাহ-সহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব মোকাবেলায় সরাসরি কবলিত মানুষদের জন্য যদি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো তথা কমিউনিটিকে আমরা এনগেজ করতে পারি-তাতে দ্রুত সুফল আসবে।’

সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপি) এর ভিত্তিতে অনেক কর্মসূচি থাকলেও জনস্বাস্থের জন্য তা কেন নয়?-এ নিয়েও কথা বলেন এই বিশেষজ্ঞ। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার ও অঙ্গীকারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ড. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘বিদেশিদের মুখাপেক্ষী হয়ে এটা করা যাবে না। আমরা যদি শিক্ষা ও স্বাস্থের মত খাতে বেশি টাকা খরচ করি তবে ততো রিটার্ন আসবে। যদিও সরকার তো নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সেভাবে ওন করে না। যদি করতো তবে তারা চিন্তা করতেন তাহলে ভাবতেন শহরটাকে ক্লিন রাখা যায়, এতে ওষুধের খরচ বেঁচে যেত।’

‘উন্নয়ন অগ্রাধিকার নেওয়ার পূর্বে চিন্তা করা উচিত, কিছু অর্থ খরচ করে যদি শহরের বাতাসটা পরিষ্কার রাখা যায়, পানি ও মাটিটা নিরাপদ রাখা যায়-তবে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ওষুধ কিনতে হবে না। যেহেতু আমরা সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবারসব্যবস্থা এখনও করতে পারিনি। বাংলাদেশের মানুষ আজ চিকিৎসার জন্য ভিটেমাটি বিক্রি করে উদ্বাস্তু হয়ে যাচ্ছে। সামিগ্রক বিবেচনায় এটিও সম্পর্কিত। সুতরাং পলিটিক্যাল কমিটমেন্টটা আসতে হবে। নাগরিকদের পকেট থেকে টাকাটা গেলেও তা জাতীয়ভাবেলঅপচয়ই হচ্ছে। যদি রোগ প্রতিরোধের জন্য কাজগুলো করা যেত তবে অনেকগুন উৎপাদনশীলতা বাড়তো। নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলে তারা জাতীয় আয়ে আরও বেশি অবদান রাখতে পারতো,’ বলেন ড. হোসেন।

সম্পাদনা: মাহমুদ মেনন, এডিটর-অ্যাট্-লার্জ, বার্তা২৪.কম

;

মেহেরপুরে কমছে না তাপমাত্রা, বাড়ছে রোদের তেজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। যার প্রভাবে অতিষ্ঠ এই জনপদের জনজীবন। বিরূপ প্রভাব পড়েছে শ্রমজীবী মানুষের আয় রোজগারে।

সকাল থেকে শুরু হচ্ছে রোদের তেজ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ আর গরমের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। গরম সহ্য করতে না পেরে গাছের ছায়ায় বসে শীতল হওয়ার চেষ্টা করছেন ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা। আবার গরমের ক্লান্তি নিয়ে ইজিবাইকেই ঘুমিয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। দিনের সর্বোচ্চ সময়টুকু ইজিবাইক চালাতে না পারায় আয় রোজগার কমে যাচ্ছে এসব খেটে খাওয়া মানুষের।

এদিকে তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে ঘর থেকে বেরও হলেও স্বস্তি নেই কর্মজীবী মানুষের। চলার পথে ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেওয়া আর শরবত পান করে শীতল হওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালের সূর্যের তেজই বলে দেয় গরম আর রোদের তীব্রতা কমেনি। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় দিনের সর্বোচ্চ ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

;