টিকইল: দ্যা আলপনা ভিলেজ



মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের গ্রাম টিকইল, গ্রামের প্রতি বাড়ির দেয়ালে আলপনার ছাপ/ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের গ্রাম টিকইল, গ্রামের প্রতি বাড়ির দেয়ালে আলপনার ছাপ/ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী, নাচোলের রাণী খ্যাত ইলা মিত্রের স্মৃতিবিজড়িত উত্তরাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি উপজেলা নাচোল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম টিকইল।

হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামটিতে প্রায় ৮০টি হিন্দু পরিবার বাস করেন। তাদের সবাই বর্মন গোত্রীয়। এ গ্রামের সব বেশীর ভাগ বাড়িই মাটির তৈরি। আর এর প্রতিটি দেয়াল যেন এক একটি ক্যানভাস। বিভিন্ন পূজা পার্বণে হিন্দু মহিলারা বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে রঙ-বেরঙের আলপনা আঁকেন।

বিশেষ করে শারদীয় দুর্গোৎসবে এ গ্রামের হিন্দু বাড়িগুলো নানান রকম আলপনায় ভরে যায়। গ্রামটির নাম টিকইল হলেও পর্যটকদের কাছে এটি আলপনা গ্রাম হিসাবেই সমধিক পরিচিত।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566711129396.jpg

গ্রামের মানুষ খুবই অতিথি পরায়ণ। হিন্দু বাড়ি হলেও সংস্কারের তেমন বালাই নেই। পর্যটক বাড়ির ভেতর যেতে চাইলে বাড়ির লোকদের বললেই তারা নিয়ে আলপনা দেখান।

টিকইল যাওয়ার পথে দেখা যায় অসংখ্য মাটির তৈরি বাড়ি। এসব বাড়ি দোতলাও হয়ে থাকে। যুগ যুগ ঘরে মাটির ঘরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে নাচোল উপজেলা। দৃষ্টিনন্দন এসব বাড়ির প্রতিবছরই যত্ন নিতে হয়।

হিন্দু বাড়ির প্রতিটি মহিলাই শিল্পী। আগে মাটির ঘরে আলপনা আঁকতে লাল মাটি, সাদা মাটি ভিজিয়ে সেখান থেকে রং নিয়ে আলপনা আঁকা হতো। কিন্তু এসব রং স্থায়ী হতো না। বর্তমানে চক পাওডার, আমের পুরাতন শাঁস চুর্ণ, বিভিন্ন রং, মানকচু, কলাগাছের কস দিয়ে রং স্থায়ী করা হয়। তবু বৃষ্টিতে এসব রং ধুয়ে যায়। তাই কোন কোন বাড়িতে সিনথেটিক রং ব্যবহার করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566711189385.jpg

হিন্দু মহিলারা যুগ যুগ ধরে তাদের মাটির ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে আলপনা আঁকেন। এতে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নেই। বংশ পরম্পরায় তারা এ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।

টিকইল গ্রামের আলপনা বাড়ির কর্তী দেখন বর্মন। তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোরকে জানান, প্রতিদিন অনেক লোক আসেন এ গ্রাম দেখতে। শীতকালে তারা অনেক দিন রান্না বান্না পর্যন্ত করার সময় পান না। বাড়িতে পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকে।

কবে থেকে এসব আলপনা আঁকা শুরু করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাড়িতে আলপনা আঁকা হিন্দু বাড়ির ঐতিহ্য। তবে আগে পুরো বাড়িতে আঁকা হতো না। তিনিই প্রথম তার বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য পুরো বাড়িতে আলপনা আঁকেন। পরবর্তীতে গ্রামের অন্য হিন্দু পরিবারও তাদের বাড়িতে আলপনা আঁকা শুরু করেন।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566711235775.jpg

আগে অল্প পরিসরে উঠান থেকে ঘরের বারান্দা পর্যন্ত দেয়ালে কিংবা বারান্দায় আলপনা করা হতো। কিন্তু বর্তমানে ঘরের ভেতর ও বাইরের পুরো দেয়ালে আল্পনা আঁকা হয়। শুধু শোবার বা বৈঠক ঘর নয়. পূজার ঘর, রান্না ঘর, সীমানা প্রাচীর, বাথরুমের দেয়াল, গরুর গোহাইল কোন জায়গায় বাদ যায় না।

মাটির তৈরি এসব ক্যানভাসে প্রকৃতির রূপ তুলে ধরা হয়। তাছাড়া তাদের দেবদেবীর ছবিও দেয়ালে স্থান পায়। মনের মাধুরী মিশিয়ে তারা এ আলপনা আঁকেন।

মুখে মুখে আলপনা গ্রামের কথা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়া আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে এর খ্যাতি দেশ বিদেশেও ছড়িয়েছে। গ্রামটি দেখতে দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য পর্যটক।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566711286891.jpg

কখন যাবেন:

শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় টিকইল সাজে নতুন সাজে। এ সময় প্রতিটি বাড়িতে নতুন আলপনা করা হয়। শুধু গ্রামটি দেখতে হলে এ সময় যাওয়া ভালো। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেহেতু আমের জন্য বিখ্যাত সেহেতু আম পাকা শুরু হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়া উত্তম হবে। এতে একই সাথে আম, লিচু খাওয়া, আলপনা গ্রাম, সোনা মসজিদসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক স্থানগুলোও দেখা হয়ে যাবে।

যেভাবে যাবেন:

ঢাকার কল্যাণপুর থেকে অনেকগুলো পরিবহনের বেশ কয়েকটি প্রতি পনের মিনিট পরপর বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া বনলতা নামক একটি বিরতিহীন ট্রেনও দুপুর সোয়া একটায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সিএনজিতে টিকইল গ্রামে যাওয়া যায়। বাসে আমনুরা হয়ে ভেঙে ভেঙেও যাওয়া যায়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566711351174.jpg

কোথায় থাকবেন:

টিকইল কিংবা নেজামপুরে রাতে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। আপনাকে দিনে দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফিরে আসতে হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভালো মানের বেশ কয়েকটি হোটেল আছে। বাজেট হোটেলও আছে অনেকগুলো।

কোথায় খাবেন:

টিকইল কিংবা নেজামপুরে তেমন ভালো কোন হোটেল নেই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সকালে নাস্তা করে দুপুরের জন্য হালকা খাবার সাথে নিতে পারেন। সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে রাতের খাবার খেতে পারেন।

   

বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

  • Font increase
  • Font Decrease

জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশকে ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।

ক্লাইমেট রেজিলেন্ট ইন্টিগ্রেটেড সাউথওয়েস্ট প্রজেক্ট ফর ওয়াটার রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এডিবি এ ঋণ দেবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। 

শনিবার ( ২০ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ঋণচুক্তি ও প্রকল্পচুক্তিটি ঢাকায় স্বাক্ষরিত হয় বলে জানা গেছে।

এ সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং উভয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির আবাসিক মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঋণটি এডিবির Ordinary Operations (Concessional) বা নমনীয় শর্তে পাওয়া গিয়েছে যার সুদের হার ২ শতাংশ এবং ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ২৫ বছরে পরিশোধযোগ্য। এছাড়া অন্য কোনো চার্জ নেই।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, প্রকল্পটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে। আলোচ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করে কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, আনুষঙ্গিক উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আনয়ন, সমন্বিত পানি সম্পদ ও অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং উন্নত অবকাঠামো নির্মাণ ও সমন্বিত সহায়তার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হবে।

এছাড়া প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত সুবিধাদির দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব বজায় রাখার নিমিত্ত পানি ব্যবস্থাপনা সংঘ গঠন করা হবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল জানুয়ারি ২০২৪ হতে ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত।

এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে সদস্যলাভের পর থেকে এডিবি থেকে এর অর্থনীতির অগ্রাধিকারভুক্ত বিভিন্ন খাতসমূহে ধারাবাহিকভাবে আর্থিক সহায়তা পেয়ে আসছে। এডিবি এ যাবত বাংলাদেশ সরকারকে ৩১ হাজার ৫৪৭.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা ও ৫৭১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে। বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি সাধারণত বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, কৃষি, পানিসম্পদ ও সুশাসনকে প্রাধান্য দেয়।

;

হিট স্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র এই দাবদাহে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ।পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

চুয়াডাঙ্গায় আজ সকালে মাঠে কাজ করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক কৃষক হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

জাকির হোসেনের বাবা আমির হোসেন ও দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জাকিরের বাবা আমির হোসেন বলেন, তীব্র গরমে মাঠের ধান মরার মতো অবস্থা। তাই জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সকাল ৮টার দিকে মাঠে যায় জাকির হোসেন। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই ছেলে স্ট্রোক করেছে। মাঠের অন্য কৃষকরা ছেলেকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই সে মারা যায়।

এদিকে, দুপুরে পাবনায় তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে সুকুমার দাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।

জানা গেছে, পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন সুকুমার দাস। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, কয়েক দিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

;

হাজারীবাগে ১০ তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাজারীবাগে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে রফিকুল (৩৫) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে হাজারীবাগ বায়তাল মহারম মসজিদের পাশে ঘটনাটি ঘটে।

রফিকের সহকর্মী মো. শাহিন জানান, রফিকের বাড়ি ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলায়। বর্তমানে মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকায় থাকতেন তিনি। হাজারীবাগের ওই ভবনে রড মিস্ত্রীর কাজ করতেন।

তিনি আরও জানান, সকালে ওই ১০তলা ভবনের ছাদে সেন্টারিংয়ের টিনের সিট খুলছিলেন রফিক। এ সময় অসাবধানতাবসত ১০তলা থেকে নিচে পরে গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মীরা ওই শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

;

গৌরীপুরে শসার মণ ১শ টাকা, লোকসানে চাষিরা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রতি মণ শসা বিক্রি হচ্ছে, ৮০-১০০ টাকা দরে। শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন আবার অনেক কৃষক লোকসানের ভয়ে ক্ষেতের শসা ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে ক্ষেতেই ফেলে দিচ্ছেন অথবা কেউ ক্ষেত থেকে শসা তুলছেনই না!

উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে ৮০-৯০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলেও এখন তো ক্ষেতেই যাই না। কারণ, শসা ৮০-১০০ টাকা মণ দরে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নেই। ক্ষেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে। ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে।

মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ দরে বিক্রি করেছি। বাজার দরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা, খরচ তোলাই তো দায় হয়ে পড়েছে!

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর থেকে বস্তায় করে শসা সিলেটে পাঠানো হচ্ছে, ছবি- বার্তা২৪.কম

ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ১শ টাকা মণ দরে কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণে। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণপ্রতি আড়ৎদারকে দিতে হয় ২০ টাকা। লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা। বস্তা কিনতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না। লোকসান গুণতে হচ্ছে।

ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২/৩ লাখ টাকা করে লস হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরের কৃষকেরা বেশি পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছেন এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। সে কারণে দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।

 

;