‘রাত্রির চেয়েও অন্ধকার ছিল সেই অভিশপ্ত দিন’



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

যাপিত জীবনে কোনো কোনো দিন অমাবস্যার রাতের চেয়েও অন্ধকার হয়ে আসে। তেমনি একটি প্রভাত এসেছিল বাঙালি জাতির জীবনে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে জাতির ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের সূচনা করেছিল মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি।

ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত রাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে কবি মহাদেব সাহা তাঁর ‘সেই দিনটি কেমন ছিলো’ কবিতায় লিখেছেন-

সেদিন কেমন ছিলো- ১৫ই আগস্টের সেই ভোর

সেই রাত্রির বুকচেরা আমাদের প্রথম সকাল

সেদিন কিছুই ঠিক এমন ছিলো না

সেই প্রত্যুষের সূর্যোদয় গিয়েছিলো

সহস্র যুগের কালো অন্ধকারে ঢেকে

কোটি কোটি চন্দ্রভুক অমাবস্যা তাকে গ্রাস করেছিলো

রাত্রির চেয়েও অন্ধকার ছিলো সেই অভিশপ্ত দিন।’

ঠিক যেন তাই!

রাত্রির চেয়েও অন্ধকার সেই দিনের ভোরে ঘটেছিল ইতিহাসের সেই কলঙ্কজনক ঘটনা। শুধু বঙ্গবন্ধুই নয় সে রাতে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী মহীয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মনি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির জনকের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুইকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/15/1565808211757.jpg

পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে বসবাসকারী প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বেরিয়ে আসে ভয়াল রাতের বর্বরোচিত ঘটনার ভয়াবহতার চিত্র।

শিশুপুত্র রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ঘুমাচ্ছিলেন দোতলায় তাঁর বেডরুমে। শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল তিনতলায়, দোতলায় একটি কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন শেখ আবু নাসের,অন্যটিতে শেখ জামাল ও রোজি জামাল। বাড়ির নিচতলায় নিরাপত্তারক্ষী, কাজের ছেলেসহ সবাই ডিউটিতে ছিল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খুনিরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ভোর ৫টার মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে।

আরও পড়ুন: এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে

আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর ফারুক যখন রক্ষীবাহিনীকে ঠেকাতে ব্যস্ত, ততক্ষণে সব টার্গেটে বিভিন্ন গ্রুপের ঝটিকা অপারেশন শুরু হয়ে যায়। ১২টি ট্রাক ও কয়েকটি জিপে করে আক্রমণকারী ল্যান্সার ও আর্টিলারির প্রায় ৫০০ জন রাইফেলস ট্রুপস আশপাশে অবস্থান নেয়। খুনিদের প্রধান টার্গেটই ছিল, ৩২ নম্বর রোডের বঙ্গবন্ধুর বাড়ি।

খুনি মেজর মহিউদ্দিন, মেজর হুদা, মেজর পাশা, মেজর নূরের নেতৃত্বে আউটার ও ইনার দুটি বৃত্তে ঘেরাও করে ফেলে ওই বাড়িটি। আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে রাষ্ট্রপতির বাসভবনে আক্রমণ শুরু হয়ে যায়। প্রথমে গেটে ঢুকতে গিয়েই গুলি বিনিময়ের সূত্রপাত। তারপর তা প্রবল আকার ধারণ করে। প্রহরারত পুলিশ গার্ডরা অবিরাম গুলি চালিয়ে সেনাদের আক্রমণে বাধা দিতে থাকে।

গুলির শব্দে বঙ্গবন্ধু নিচের বারান্দায় বেরিয়ে আসেন এবং পুলিশদের ফায়ার বন্ধ করতে বলেন। এতে আক্রমণকারী সৈন্যরা বিনা বাধায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে প্রবেশের সহজ সুযোগ পেয়ে যান।

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু চিরকালের, সব মানুষের অনন্ত অনুপ্রেরণা

ওই সময় সামরিক বাহিনীতে ঊর্ধ্বতন পদে থাকা লে. কর্নেল (অব.) এম এ হামিদ পিএসসির লেখা ‘তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা’ বইয়ে লিখেছেন, বঙ্গবন্ধু যখন গুলি বিনিময়ের মধ্যে আক্রান্ত ছিলেন, তখন তিনি বাসা থেকে বিভিন্ন দিকে ফোন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কেউ ফোন ধরছিল না। তিনি তার মিলিটারি সেক্রেটারি কর্নেল জামিল উদ্দিনকে ফোনে পেয়েছিলেন।

তাকে বলেন, ‘জামিল তুমি তাড়াতাড়ি আসো। আর্মির লোক আমার বাসায় আক্রমণ করেছে। শফিউল্লাকে ফোর্স পাঠাতে বলো।’

জামিল ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে তার লাল রঙের প্রাইভেট কার হাঁকিয়ে ছুটে যান ৩২ নম্বরে, কিন্তু সৈন্যদের গুলিতে বাসার কাছেই পথে নিহত হন তিনি।

অনেক চেষ্টার পর সেনাপ্রধান জেনারেল শফিউল্লাকে পেয়ে যান বঙ্গবন্ধু। তাকে বলেন, ‘শফিউল্লাহ, আমার বাসা তোমার ফোর্স অ্যাটাক করেছে। কামালকে হয়তো মেরেই ফেলেছে। তুমি তাড়াতাড়ি ফোর্স পাঠাও।’

জবাবে শফিউল্লাহ বলেন, ‘স্যার, ক্যান ইউ গেট আউট, আই অ্যাম ডুয়িং সামথিং।’

এরপর ফোনে আর তার সাড়া পাওয়া যায়নি। শফিউল্লাহ ফোনে গুলির শব্দ শুনতে পান। তখন ভোর আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিট। কিন্তু শফিউল্লাহ রাষ্ট্রপতির সাহায্যার্থে একটি সৈন্যও মুভ করাতে পারলেন না। ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর রেডিওতে ভেসে আসল খুনি মেজর ডালিমের পৈশাচিক ঘোষণা-‘শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে’।

এমন ঘোষণা শুনে হতভম্ব বাংলাদেশ, শোকে মুহ্যমান বাঙালি জাতি।

বঙ্গবন্ধুকে গুলি করেন ক্যাপ্টেন হুদা ও মেজর নূর। বঙ্গবন্ধুর পরনে একটা লুঙ্গি, গায়ে পাঞ্জাবি, এক হাতে সিগারেটের পাইপ, অন্য হাতে দিয়াশলাই ছিল। প্রথম তলার সিঁড়ির মাঝখানে যে সমতল জায়গাটা তার তিন-চার ধাপ ওপরে একেবারে কাছ থেকে গুলি করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। ২৪টি বুলেটে তার তলপেট ও বুক ছিল বুলেটে ঝাঁঝরা। একটি বুলেট তার ডান হাতের তর্জনীতে গিয়ে লাগে এবং আঙ্গুলটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের খুনিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ৭৫ পরবর্তী সরকার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশের বিভিন্ন দূতাবাসের মিশনে পাঠিয়ে পুরষ্কৃত করেন।

সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে হত্যা করে। এই হত্যার মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়।

দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। ইতিহাসের পথ পরিক্রমায়, জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করা হয়। তবে দায়মুক্তি এখনো বাকি আছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের অনেকেই এখনো বিদেশে পলাতক।

এদিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি।

জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

   

গ্যাস-বিদ্যুৎ-সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ আইএমএফ’র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ভারসাম্য ঠিক রাখতে ও ভর্তুকি সহনীয় পর্যায়ে রেখে সার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সমন্বয়ের (বাড়ানো) সুপারিশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল।

অর্থবিভাগের বাজেট অনুবিভাগের সঙ্গে এক বৈঠকে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ সুপারিশ করেছে ঋণ কর্মসূচির আওতায় শর্ত বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণে আসা আইএমএফ’র প্রতিনিধিদল।

প্রতিনিধিদলটি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাও জানতে চেয়েছে। এছাড়া লক্ষ্যভিত্তিক খেলাপিঋণ কমানো বিশেষ করে সরকারি মালিকানার ব্যাংকগুলোর খেলাপিঋণ কমিয়ে আনা এবং প্রক্রিয়াধীন থাকা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত আইনগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অর্থবিভাগের বাজেট অনুবিভাগের সঙ্গে ভর্তুকি নিয়ে বৈঠক করে মিশনের একটি অংশ, ভর্তুকি কমিয়ে আনেত পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য একটি পর্যায়ক্রমিক সূত্র-ভিত্তিক মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সরকারকে স্বাগত জানায়।

তবে সার্বিক বাজেট ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে অন্যান্য খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার জন্য বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। এ প্রসঙ্গে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আপাতত কৃষিতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে যাবে সরকার। তবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি কমাতে পর্যায়ক্রমে এসবের দাম বাড়ানো হবে।

আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট মাইক্রোইকোমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউ–এর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে।

বৈঠকে সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। এ সময় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারাসহ সোনালী ব্যাংকের এমডি মো. আফজাল করিমসহ জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের এমডিরাও উপস্থিত ছিলেন।

;

রাতের আঁধারে শিক্ষার্থীদের ক্লাস, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৬



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আফাজ উদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল ও কলেজ নামে বেসরকারি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাতের আঁধারে ক্লাস করাতে গিয়ে ছয় শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিষয়টি গোপন রেখে অসুস্থ ওই শিক্ষার্থীদের কালিয়াকৈর সদরের রুমাইসা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাদের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার টান কালিয়াকৈর এলাকার আফাজ উদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল ও কলেজের একটি ক্লাস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের পরিবার সূত্র জানায়, সারাদেশে তীব্র তাপদাহের কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতে এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের রাতের আঁধারে ক্লাস করানো হচ্ছিল। এসময় তীব্র গরমে ৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মাইক্রোবাসে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ছুটে এসে তাদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যায়।

অন্যদিকে কিছু শিক্ষার্থীর অবস্থা বেশি খারাপ থাকায় তাদের পার্শ্ববর্তী জেলা টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী সরকারি কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে জানতে আফাজ উদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল ও কলেজের পরিচালক মো. সোহাগ রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নৈশপ্রহরী নাম প্রকাশ না করে বলেন, ভেতরে ক্লাস চলছিল। কিছুক্ষণ পর গরমে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে যায়। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।

;

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় লাটাহাম্বারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে টুটুল হোসেন (১৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অপর দুই আরোহী মিলন হোসেন (২৫) ও জাব্বারুল (১৭)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া সড়কের খোরদ কবরস্থানের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশে নিহত টুটুলের মরদেহ উদ্ধার করে ও আহত দুজনকে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়।

নিহত টুটুল আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে টাইলস কিনে চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে মহেশপুর গ্রামে ফিরছিলেন টুটুলের পিতা ইলিয়াস। পথে ভালাইপুর বাজারের অদূরে টাইলসবাহী গাড়িটি বিকল হয়ে পড়লে ইলিয়াস ছেলে টুটুলকে ফোন দিয়ে ডাকেন। টুটুল মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে মিলন ও জাব্বারুলকে নিয়ে ভালাইপুরের উদ্দেশে বের হন। পথে হাটবোয়ালিয়া সড়কের খোরদ কবরস্থানের সামনে পৌঁছালে সামনে থেকে আসা একটি লাটাহাম্বারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই টুটুলের মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুজ্জামান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মিলন হোসেন ও জাব্বারুল নামের দুই যুবক জরুরি বিভাগে আসে। আহতদের মধ্যে মিলনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এবং জাব্বারুলকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া বলেন, ঘটনাস্থলেই টুটুলের মৃত্যু হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ

দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ

  • Font increase
  • Font Decrease

সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় নিহত রাকিব হোসেন (২৪) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ দেশে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নিহতের মরদেহ বেনাপোলে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।

নিহত রাকিব বেনাপোল বন্দর থানার ঘিবা গ্রামের মমিনুর রহমানের ছেলে।

এর আগে, গত ৩ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত রডের নিচে চাপা পড়ে মারাত্মক আহত হয় রাকিব। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে তিন সিঙ্গাপুরে মারা যান।

নিহত রাকিবের চাচা মিলন হোসেন জানান, গত ৩ এপ্রিল রাকিব কনস্ট্রাকশনের কাজ করার সময় রড চাপায় গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাকিবের বাবা মমিনুর রহমান জানান, সংসারের হাল ধরতে এক বছর হলো রাকিব সিঙ্গাপুর গিয়েছিল। সে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতো। গত ৩ এপ্রিল প্রতিদিনের মতো সে কাজে যায়। এক পর্যায়ে ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে ভবনের উপরে তোলার সময় তার ছিঁড়ে রডের নিচে চাপা পড়ে রাকিব। পরে তাকে সিঙ্গাপুর সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের উদ্ধারকারীরা এবং সহকর্মীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ২০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সে মারা যায়।

বেনাপোল পোর্ট থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মফিজ বলেন, সিঙ্গাপুরে নিহত রাকিব আমার ইউনিয়নের ঘিবা গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি সে সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় মারা গেছে। তার মৃতদেহ বৃহস্পতিবার রাতে দেশে আনা হয়েছে।

;