পশু জবাই করতে গিয়ে হাসপাতালে ৫ শতাধিক মানুষ
ঈদের নামাজ শেষে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হয় কোরবানির পশু জবাই। এই পশু জবাই করতে গিয়ে দা, চাকু, ছুরি এবং পশুর লাথি ও শিংয়ের আঘাতে আহত পাঁচ শতাধিক মানুষ রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সোমবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত আহতরা রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল, বাড্ডা জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই মৌসুমি কসাই। এছাড়াও রয়েছেন মাদরাসাছাত্র ও কোরবানি দাতা ব্যক্তিরা।
হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৩২০ জন, বাড্ডা জেনারেল হাসপাতালে ৮২ জন ও মুগদা মেডিকেল থেকে ১৭৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে বাস্তবে এই চিত্র আরও বেশি হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
তারা বলছেন, গ্রাম থেকে আসা আনাড়ি, অপেশাদার কসাইয়ের পাশাপাশি অসাবধানতা কিংবা অসচেতনতার কারণে গতবারের মতোই এবারও কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর তাতে কারো হাত, কারো পা এমনকি কারো শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে গেছে। এগুলোর পাশাপাশি কোরবানি দিতে গিয়ে গরুর শিংয়ের আঘাতে আহত হয়েছেন অনেকে।
গুলশান-১ এলাকায় গরু জবাই করতে আসা তেজগাঁওয়ের রহমত এ আলম মিশন মাদরাসার শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কোরবানির গরু জবাই করতে গিয়ে আমার দুই বন্ধুর হাত কেটে গেছে। তাদের মহাখালীর লাইফ লাইন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে মাদরাসায় রেখে এসেছি।’
আমিনুল বলেন, ‘গত চার বছর ধরে কোরবানির ঈদে এই এলাকার গরুগুলো জবাই করে দিই। তার বিনিময়ে চামড়াগুলো নিয়ে যাই। আর এই অর্থদিয়ে আমাদের মাদরাসার এতিম ও গরিব শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো হয়।’
মুগদা মেডিকেলে চিকিৎসা নেওয়া শিক্ষার্থী হুমায়ুন আহমেদ বলেন, ‘গরু জবাইয়ের আগে রশি পেচিয়ে শুয়ানোর সময় শিংয়ের আঘাতে আহত হই।’ তিনি বনশ্রীর হিফজুল উম্মাহ মাদরাসার শিক্ষার্থী বলে জানান।
ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন আলাউদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কোরবানির দিন হাত ও পাসহ বিভিন্ন স্থানে কাটা নিয়ে অনেকে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। যারা বেশি আহত তাদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
মাংস ব্যবসায়ী সমিতি বলছে, রাজধানীতে ৯০ শতাংশ কোরবানির পশু জবাই ও মাংস বানানোর কাজ করেন ‘অপেশাদার’ বা ‘মৌসুমি’ কসাইরা।