মুসল্লিদের নিরাপত্তা দেওয়াতেই ঈদ আনন্দ
ত্যাগের মহিমায় সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার আনন্দই অন্যরকম। কিন্তু সেই সুযোগ হয় না বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। যারা প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন দেশ ও জাতির জন্য। যখন সবাই মহান আল্লাহর সান্নিধ্য কামনায় ঈদ জামাতে ইবাদতে মশগুল, তখন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত। অনেকের সুযোগ হয় না, ঈদের নামাজ আদায় করার।
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পালন করতে হয় পরিবার-পরিজন ছাড়া। পুলিশ সদস্যরা বললেন, 'পরিবারের সদস্যদের ছাড়া ঈদ করলেও মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ পালনে নিরাপত্তা দিতে পারছি, তাতেই ঈদের আনন্দ।'
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে কথা হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই হাফিজের সঙ্গে। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে তিনি বলেন, 'মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান ছাড়া ঈদ করতে খারাপতো একটু লাগেই। তবে চাকরিটা করি দেশের স্বার্থে। দেশের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাটাও দায়িত্ব। সেক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে গেলে মন খারাপ করলেতো চলবে না। সেবা নেওয়া নয়, সেবা দিয়েই বেঁচে থাকতে চাই। এভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।'
তিনি বলেন, 'ঈদের প্রধান জামাতের নিরাপত্তা দিলেও জামাতে নামাজ পড়তে পারিনি। পুলিশ লাইনে প্রথম জামাত হবে, সেখানে নামাজ আদায় করব। সবাইকে ঈদ মোবারক।'
ঈদ জামাতের প্রধান ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল মো. হাসান। বরিশাল পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় তার বাড়ি।
বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমরা পরিবার-পরিজন ছাড়া বাইরে ঈদ করি। মানুষের সেবা করাই আমাদের ধর্ম। পুলিশ বাহিনী গর্ব করে অন্যেদের সেবা দানের মাধ্যমেই। এটাই আমাদের গর্ব।'
গত ঈদেও বাড়িতে যেতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, 'গত ঈদের বাড়ি যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি, এবারও যাইনি। গত ঈদেও এখানেই ডিউটি করেছি। জনগণের সেবা করেছি।'
পাশ থেকেই আরেক কনস্টেবল মো. নূর ইসলাম বললেন, 'সাধারণত দুই ঈদে আমরা ছুটি পাই না। এক ঈদে ছুটি পেলে অন্য ঈদে ছুটি হয় না। যার কারণে একটা ঈদ পরিবারের সঙ্গে করলে, আরকটি ঈদে বাড়ি যেতে পারি না। আমি গত ঈদ বাসায় পরিবার-পরিজনের সঙ্গে করেছি। কিন্তু এই ঈদে বাড়িতে যেতে পারিনি। ডিউটিতে থাকায় নামাজও পড়তে পারিনি। তারপরেও ভালো লাগে, নিজে নামাজ পড়তে না পারলেও হাজার মুসল্লি ঈদগাহ ময়দানে নামাজ পড়ল, তাদের নিরাপত্তা দিলাম আমরা। কাজ করেছি দেশ ও জনগণের স্বার্থ, তখন ভাবতেই অনেক ভালোই লাগে। গর্ব বোধ করি পুলিশ সদস্য হিসেবে।'