রাজধানীতে একে-২২ রাইফেল!
রাজধানীতে চলতি মাসেই দুই বার উদ্ধার হলো স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র একে-২২ রাইফেল। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই রাইফেলটি তিন বছর আগে গুলশানে হোলি আর্টিজান হামলায় জঙ্গিদের কাছে থেকে ৫ টি উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের আর্মস এনফোর্সমেন্ট টিম ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম একে-২২ দুইটি রাইফেল উদ্ধার করেছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট বলছে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলোপাতাড়ি গুলি বের হওয়া এই অত্যাধুনিক অস্ত্র জঙ্গিরা অবৈধভাবে ব্যবহার করে থাকে। সর্বশেষ উদ্ধার হওয়া এই অস্ত্র দুইটির ব্যবহারের সঙ্গে জঙ্গিদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তবে (২ জুলাই) উদ্ধার অস্ত্রটির সঙ্গে গ্রেফতারকৃত ৬ আসামিরই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন তথ্য আছে। আর (২৭ জুলাই) উদ্ধার হওয়া অস্ত্র দিয়ে টাকার বিনিময়ে চুক্তি ভিত্তিক খুনের কাজে ব্যবহার করা হত বলে জানা গেছে।
কিন্তু তাদের যেরকমই উদ্দ্যেশ হোক না কেন, হঠাৎ রাজধানীতে এমন ভারী অস্ত্র উদ্ধারের পর চিন্তায় পড়েছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ।
পুলিশের এই বিশেষ ইউনিট বলছে, হোলি আর্টিজানের ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি একে-২২ উদ্ধারের পরে, নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় একটি একে-২২ পাওয়া যায়। এ ছাড়া বগুড়ায় একটি মসজিদে জঙ্গি হামলার সময়েও একে-২২ ব্যবহারের দৃশ্য মেলে। এর আগে রেলওয়ে থানা পুলিশ আরও দুটি একে-২২ রাইফেল উদ্ধার করে।
সর্বশেষ শুক্রবার (২৭ জুলাই) রাতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি একে-২২ রাইফেল, চারটি বিদেশি পিস্তল, একটি বিদেশি রিভলবার ও ৪৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ সময় তিনজনকে গ্রেফতারও করে ডিবি পুলিশ।
সদ্য উদ্ধার হওয়া এই অস্ত্রটি উৎস ও ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গ্রেফতার তিনজনই পেশাদার খুনি। টাকার বিনিময়ে চুক্তিতে খুন করাই ছিল তাদের পেশা। আর এসব খুনের নির্দেশনা আসত দুবাই থেকে। সেখানে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাত তারা। এছাড়াও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অস্ত্র সম্পর্কে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।
অন্যদিকে মাসের শুরুতে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার উদ্দেশে যাচ্ছিল। তবে নজরদারি এড়াতে ঢাকায় হাতবদল হচ্ছিল।
এই অস্ত্র গুলোর মূল উৎস কোথায় গন্তব্যই বা কোথায় জানতে চাইলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের আর্মস এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রধান অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এই ভারী অস্ত্রের শেকড়ের খোঁজ করছি। কোথায় থেকে এসেছিল বা কোথায় যাচ্ছিল, জানার চেষ্টা চলছে।
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিআইজি ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এ মাসের শুরুতে যে একে ২২ রাইফেল উদ্ধার হয়েছে। তা বড় ধরনের নাশকতার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হওয়ার ঘটনায় বেশ কয়েকজন জামায়াত নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এর প্রতিশোধ নিতে বড় ধরনের নাশকতার জন্য এ ধরনের ভারী অস্ত্র সংগ্রহ করা হতে পারে।
আর যেটা কয়েক আগে দিন উদ্ধার হয়েছে যেটার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত ও অনুসন্ধান করা হচ্ছে।