চায়না-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ বিপদমুক্ত নয়
চায়না-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ বিপদমুক্ত নয়। শুধু চীন নয় বিশ্বের সকল দেশ এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিআইআইএস)-এর নির্বাহী সহ-সভাপতি ড. রুয়ান জংজি (Dr Ruan Zongze) বুধবার (২৬ জুন) রাজধানীর কসমস সেন্টারে ‘সমসমায়িক বিশ্বে চীনের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক কীভাবে আরো দৃঢ় হবে তার দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এ সফরে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি যা চীনের দিকে ঝুঁকে রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তাছাড়া রোহিঙ্গা সংকট নিরুপণে এ সফর একটি ভূমিকা রাখবে।
ড. রুয়ান জংজি সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি চারটি বিষয়ে তার চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেন। বেল্ট এন্ড ইনিশিয়েটিভ রোড, চায়না- মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এবং এশিয়া প্যাসিফিকে পররাষ্ট্র নীতি।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (আইএসএএস)-এর প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন।
কসমস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন কসমস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান।
সেমিনারে অলোচনায় বাংলাদেশ ও চীনের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মেরুকরণ সংক্রান্ত বিষয়াবলী, অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন, সামাজিক আধুনিকায়ন ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উঠে আসে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান। চীনের প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এ বাংলাদেশ অন্যতম অংশীদার। তাছাড়া, বাংলাদেশের অবস্থান, বিশাল জনগোষ্ঠী, বাজার সম্ভাবনা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং-এর ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফরে বংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদার’ পর্যায়ে উন্নীত করেন।
চীনের প্রেসিডেন্টের ওই সফরে, ২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এর উচ্চাভিলাসী অবকাঠামো ও বিনিয়োগ কৌশল বিআরআই-তে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয়।
ঢাকা ইতোমধ্যে পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, চীনের বিআরআই বাংলাদেশের জাতীয় অগ্রাধিকার খাতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং প্রতিবেশী অন্যান্য দেশগুলোর সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না।
জাতিসংঘের সংস্থা ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) হিসাবে, ২০১৮ সালে দেশে ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ এসেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৬৮ শতাংশ বেশি। আর বিনিয়োগের ২৮ শতাংশ বা ১০৩ কোটি ডলারই চীনের। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগই সর্বোচ্চ।