তীব্র খরতাপে স্বস্তি খুঁজতে হাতিরঝিলে ভিড়
রাজধানীর দর্শনীয় স্থানগুলোর অন্যতম হাতিরঝিল। শুধু দর্শনীয় স্থান হয়ে থেমে থাকেনি বহুল আলোচিত হাতিরঝিল। হাতিরঝিলের চক্রাকার বাস সার্ভিস আর নৌ-পরিবহন এ এলাকার মানুষের চলাচলকে করেছে সহজ। এসবের সঙ্গে চলমান খরতাপে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাতিরঝিল। চারদিকের সবুজ ঘাস, বাহারি গাছের সজিব লতাপাতা তাপদাহে পোড়া মানুষকে ছাঁয়া দিয়ে চলছে নিঃস্বার্থভাবে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রচণ্ড রোদে ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিতে আশা মানুষের সঙ্গে আলাপকালে এ স্থানের স্বস্তির কথা শুনালেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো হাতিরঝিল এলাকার চারপাশে আড্ডা দিচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা, কোথাও গল্পে মজেছে নানা পেশার নানান বয়সী মানুষ। আবার কোথাও রাস্তার পাশে প্রাইভেট গাড়ি থামিয়ে জিরিয়ে নিতে দেখা গেলো অনেককে। এভাবেই দিনভর নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার স্বস্তির ঠিকানায় পরিণত হয়েছে হাতিরঝিল।
এখানকার আশপাশের বাসিন্দারা বলছেন, বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ঝিলপাড়জুড়ে বেড়ে যায় মানুষের আনাগোনা। বাড়তে থাকে মানুষের চাপ। মানুষের ভিড় থাকে রাত অবধি।
শেখ সুফিয়ান, নেওয়াজ মুর্শেদ ও মাহমুদুল হাসান নামের মধ্যবয়সী তিন বন্ধু জমেছেন আড্ডায়। তাদের সঙ্গে কথা হয় বার্তা২৪.কম-এর এই প্রতিবেদকের।
আলাপকালে হাতিরঝিলে আসার কারণ বলতে গিয়ে নেওয়াজ মুর্শেদ বলেন, যে পরিমাণ তাপদাহ চলছে; বাসায় ফ্যানের বাতাসও গরম হয়ে উঠেছে। বাইরে যত রোদ থাকুক ঝিলপাড়ে ছাঁয়া থাকে, সঙ্গে বাতাসও। তাই জোহরের নামাজ পড়ে বসে আছি এখানে।
এ সময় পাশে থেকে সুফিয়ান বলেন, এখানকার সবই ঠিক আছে; শুধু পানির গন্ধটা ঠিক করতে পারলে হাতিরঝিল হবে রাজধানীর বুকে নগরবাসীর অন্যতম স্বস্তির জায়গা।
হাতিরঝিলের ভাসমান চা বিক্রেতা নজরুল বলেন, প্রতিদিন এখানে কয়েক শ্রেণির মানুষ দেখি। কেউ সকালের দিকে হাঁটতে আসে। কেউ সন্ধ্যায় হাঁটতে আসে। আবার এক শ্রেণির মানুষ যারা দুপুরে শুধুমাত্র বিশ্রামের জন্য আসে। তবে বেশি মানুষ থাকে চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। আমি আগে অন্য জায়গায় হকারি করতাম। কিন্তু এখানে ২০-২৫ দিন ধরে চা বিক্রি করছি। দেখি আরামও আছে, সারাদিন টুকটাক বেচাবিক্রিও চলে।
হাওয়া খেতে এসে রিক্সাচালক জসিম বলেন, সকালে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়েছিলাম। দুপুর পর্যন্ত চালানোর পর প্রচণ্ড গরমে আর টিকতে পারছিলাম না। পরে গাড়ি রেখে বের হয়ে আসলাম এখানে। একটু বাতাসে থাকলে আরাম পাবো।
এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমান বলেন, ক্লাস শেষ করে বন্ধুরা মিলে আসছি ঘুরতে। এখানের পরিবেশটা আড্ডা দেওয়ার মতোই। ঘন্টাখানেক ঘুরে ফিরে যাবো বাসায়।