অফিস আওয়ারে হিমশিম খাচ্ছে হাতিরঝিল পরিবহন
রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে যোগাযোগ সহজ এবং হাতিরঝিলে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে চালু রাখা হয়েছে চক্রাকার বাস সার্ভিস ও ওয়াটার বোট (ইঞ্জিন চালিত নৌকা)। পরিবহগুলো দিনের পুরোটা জুড়ে চালু থাকলেও দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে যাত্রী সেবা দিতে হিমশিম খায় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) হাতিঝিলে চক্রাকার বাস সার্ভিস ও ওয়াটার বোটের বিভিন্ন কাউন্টার থেকে এ অভিযোগ উঠে আসে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এই রুটে অফিস আওয়ারে যাত্রীদের চাপটা বেশি পড়ে। এতে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে বেশ কিছু পরিবহন বাড়ানোর দাবি জানান তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাতিরঝিলে মোট ১৫টি ওয়াটার বোট রয়েছে। এই বোটগুলো পাঁচটি স্টপেজ ধরে দৈনিক দুই থেকে আড়াই হাজার যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এছাড়া ১৪টি চক্রাকার বাসেও প্রায় সমপরিমাণ যাত্রী চলাচল করে। এর মধ্যে আটটি বাস পুরো হাতিরঝিল পরিক্রমণ করে আর ছয়টি বাস মধুবাগ হয়ে পুলিশ প্লাজা, রামপুরা দিয়ে পরিভ্রমণ করে।
হাতিরঝিলে বাস স্টপেজগুলোর মধ্যে রয়েছে- রামপুরা, মহানগর প্রজেক্ট, মধুবাগ, এফডিসি, পুলিশ প্লাজা, মেরুল বাড্ডা। এছাড়াও মগবাজার ও আড়ং এ দুটি স্টপেজে শুধু যাত্রী নামানো হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর তিন বছর প্রকল্প এলাকার দুপাশে কোন পাবলিক পরিবহন ছিল না। প্রকল্পটিতে ১৬ কিলোমিটারের রাস্তায় কোনো বাস অথবা মিনি বাস চলাচলের অনুমতি না থাকায় হাতিরঝিলের সুবিধা ভোগ করতে পারতে না সাধারণ মানুষ। পরে দর্শনার্থীদের সেবা দিতে এখানে প্রাথমিকভাবে চারটি চক্রাকার বাস চালু করা হয়।
এদিকে, ওয়াটার বোটের ঘাটগুলো হলো- এফডিসি, পুলিশ প্লাজা, গুলশান, বাড্ডা ও রামপুরায়।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দিনের দুইটা সময় সকাল সাড়ে ৮ট থেকে ১১টা আর বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যাত্রীদের প্রচুর চাপ থাকে। তখন যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। নৌ পথে ও সড়ক পথে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। সার্ভিস চালু করার ফলে বনশ্রী, আফতাবনগর, রামপুরা, উলন, বাড্ডা, মধুবাগ, মগবাজার, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, বেগুনবাড়ি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা ও গুলশানসহ আরও বেশ কিছু এলাকার বসবাসরত মানুষের বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। যেখানে সময় ও খরচ দুটো বাঁচে বলে জানান সুবিধাভোগীরা। বাসে করে পুরো হাতিঝিল পরিভ্রমণে নির্ধারিত ভাড়া হলো ৩০ টাকা।
চক্রাকার বাস সার্ভিসের সুপারভাইজার নুরুল করিম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'দিনের সব সময় যাত্রী চাপ একই থাকে না। অফিস আওয়ারে যাত্রীদের সংখ্যা থাকে প্রচুর। এখানে মূলত চাকরিজীবি ও ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত যাতায়াত থাকে। যখন যাত্রী আসা শুরু করে তখন আমরা হিমশিম পড়ে যাই। এ সময়ের যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে আরও অন্তত চারটা বাস প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'সরকারি ছুটির দিনগুলোতে চাপটা কম থাকে। তারপরও আমাদের কোম্পানি গাড়ি নামাতে প্রস্তুত আছে। কিন্তু রাজউক ও সেনাবাহিনী মিলে যদি অনুমোদন দেয় তাহলে কোম্পানি গাড়ি নামাতে পারে বলে আমি জানি।
হাতিরঝিল ওয়াটার বোট ইনচার্জ হাদিয়ার রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমাদের পাঁচটা ওয়াটার বোটেই হয়ে যায়। তবে অফিস সময়ে যাত্রীর চাপ থাকে প্রচুর। কিন্তু বোটে চলাচলকারী যাত্রী ও আমাদের একটা কমন সমস্যা হাতিরঝিলের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি। তাছাড়া বোটে কোন ট্রাফিক জ্যাম নাই, পানির গভীরতা কম থাকায় জীবননাশেরও কোনো হুমকি নেই।'
এই বিষয়ে কথা বলতে রাজউক চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।