ত্রাণ নয়, প্রয়োজন বাঁধ সংস্কার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ৩য় বারের মতো খুলনার দাকোপ উপজেলার পশুর নদীর তীরবর্তী বানীশান্তা ইউনিয়নের ওয়াপদার ভেড়িবাঁধে ভাঙ্গন হয়েছে। এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গোটা খুলনায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও দাকোপের বানীশান্তা এলাকাবাসীর বিপদ যেনো লেগেই আছে।


রোববার (৫ মে) দুপুরের দিকে পশুর নদীর জোয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে অতিরিক্ত চাপে বানীশান্তা বাজারের উত্তর পাশের এলাকায় পাশাপাশি পৃথক ২টি স্থানে প্রায় ১০০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ার ঘটনায় পানিবন্দী হয়ে পরে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরে রাতে আরো ২টি পৃথক স্থানে প্রায় ৫০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/06/1557102378026.jpg
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। 

 

বেড়িবাঁধের ভাঙ্গণে ক্ষতিগ্রস্ত বিমল কৃষ্ণ বার্তা২৪.কম কে বলেন, ‘আমাদের এহানের বাঁধ খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এ ঝড়ের গোণে ৩ বার বাঁধ ভাঙলো। আগে দুইবার বাঁধ ভাঙ্গার পরে আমরাই আবার বালি আর বস্তা ফেলছি, কিন্তু এহন জোয়ারের জন্যি দেয়া যাচ্ছেনা’। 

দাকোপের সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল ওয়াদুদ রাতে বার্তা২৪. কম কে বলেন, ‘দুপুরের দিকে দাকোপ বাণীশান্তা বাজারের পাশের বাঁধে ৩য় বারের মতো ভাঙ্গন হয়েছে। তবে মূল সমস্যা হলো, আগের দু’বারের ভাঙ্গনের পরেই গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দ্রুত বাঁধের সংস্কার করেছিলো। কিন্তু এবার জোয়ারের পানির প্রবল স্রোতের কারণে গভীর রাত পর্যন্তও বাঁধের সংস্কার বা পানি আটকানো সম্ভব হয়নি। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিয়মিত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। এ পর্যন্ত বাঁধের ভাঙ্গনের কারণে ৫’শ পরিবারের মাঝে ৫ কেজি চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। প্রয়োজনে আরো ত্রাণ বিতরণ করা হবে। তবে এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার। দিনের আলো ফুটলেই বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হবে’।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/06/1557102450388.jpg
উপায়ন্তর না থাকায় পানিতেই চলাচল।

 

এদিকে ত্রাণসামগ্রীর পরিবর্তে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে দাকোপের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী। বারবার বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সংগ্রামী উপকূলবাসীরা ত্রাণের চেয়ে বাঁধ সংস্কারের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে গত ৪দিনের ভেতরে দাকোপে এ নিয়ে ৩ বার বাঁধ ভাঙ্গলো। এতে স্থানীয় ৯টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার প্রায় সহস্রাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দাকোপের বাণীশান্তা বাজার এলাকার অধিকাংশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কাঁচা ও আধাঁপাকা ঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

   

বঙ্গোপসাগরে জাহাজ ডুবি, ১১ নাবিক উদ্ধার, নিখোঁজ ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালী হাতিয়ার ভাসানচর সংলগ্ন পূর্ব পাশে বঙ্গোপসাগরে এমভি মৌমনি নামে একটি কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনায় ১১ নাবিককে উদ্ধার করেছেন মাছ ধরার ট্রলারের মাঝি-মাল্লারা। তবে এখনো ১ নাবিক নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে হাতিয়ার ইসলাম চরের কাছে জাহাজডুবির এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দা কালা মিয়া জানায়, এমভি মৌমনি নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে মালামাল নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পথে ভাসানচরের পূর্ব অংশে ইসলাম চর এলাকায় পৌঁছালে দুপুর ১২টার দিকে ১২ নাবিক ও মালামালসহ জাহাজটি বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ডুবে যায়। এ সময় জাহাজে থাকা ১২ নাবিক ডুবে যাওয়া জাহাজের উপরের অংশ ধরে ভাসতে থাকে। এ সময় নাবিকরা ৯৯৯-এ কল দিয়ে সহযোগিতা চান।

পরে হাতিয়া নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড সহযোগিতার জন্য ঘটনাস্থলে রওয়ানা হয়। এরমধ্যে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যাওয়া জাহাজের নাবিকদের দেখতে পেয়ে তাদের মধ্যে ১১ জনকে উদ্ধার করে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিসান আহমেদ জানান, কোস্টগার্ড ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই জেলেদের একটি বোর্ড নাবিকদের উদ্ধার করে। তাদেরকে নিরাপদে পৌঁছানোর সব ব্যবস্থা করছে কোস্টগার্ড। তবে এখনো এক নাবিক নিখোঁজ রয়েছে।

;

যুবলীগ নেতার লাথিতে গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ, জীবন-শঙ্কায় প্রসূতি



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
যুবলীগ নেতার লাথিতে গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ, জীবন-শঙ্কায় প্রসূতি

যুবলীগ নেতার লাথিতে গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ, জীবন-শঙ্কায় প্রসূতি

  • Font increase
  • Font Decrease

 

রাজধানীর মিরপুরে এক গর্ভবতী নারীকে মারধর এবং এর অব্যবহিত পর সন্তান ভূমিষ্ঠের ঘটনা ঘটেছে। নির্ধারিত সময়ের আগে সন্তান ভূমিষ্ঠের ঘটনায় নবজাতক ও মা রয়েছেন জীবন-শঙ্কায়। জ্ঞান ফেরেনি চার দিনেও। অভিযোগ ওঠেছে, এই মারধরের নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা। তবে ভয়ে মামলায় নাম আসেনি তার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দাবি তিনি নিজে অসুস্থ, তাই তদন্তের কাজ শুরু করতে পারেননি।

ঘটনাটি গত ২১ এপ্রিলের। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মিরপুরের পল্লবী থানার সেকশন ১২ নম্বরের বালুরমাঠ এলাকার বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অহিদুজ্জামান। তার পাশেই নির্মাণ শ্রমিক স্বামী আব্দুল মালেক ও ৭ বছরের সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন বড় মেয়ে মোসা. মুক্তা (২৫)।‍ মালেক-মুক্তা দম্পতি দ্বিতীয় সন্তানের অপেক্ষায় ছিলেন। সন্তানসম্ভবা মুক্তা গত ২১ এপ্রিল বিকালে শিশুপুত্র মোক্তাদিরকে নিয়ে বাসার সামনে হাঁটতে বের হন। আর এই হাঁটতে যাওয়াই যেন কাল হলো তার।

একই সময়ে বাসার সামনে ফুটবল খেলছিল স্থানীয় কয়েকটা ছেলে। হাঁটাহাঁটির এক পর্যায়ে রাস্তার পাশে প্রস্রাব করে মুক্তার শিশুপুত্র মোক্তাদির। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে খেলতে থাকা তরুণেরা। অবুঝ শিশু প্রস্রাব করে দিয়েছে, বিষয়টি ভুল হয়েছে জানিয়ে বাসায় ফিরতে যান মুক্তা। কিন্তু তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে থাকে ওই তরুণেরা। গালাগালির প্রতিবাদ করায় গর্ভবতী মুক্তাকে মারধর শুরু করে তারা। মেয়েকে বাঁচাতে মুক্তার মা এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর মা ও বোনকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে মুক্তার ভাই মেহেদী শেখও মারধর করে তরুণেরা।

সাত থেকে আটজনের মারধরে আহত হন মুক্তা। এই মারধরে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. আনোয়ার। মারধরে অংশ নেয় আনোয়ারের ছেলে, স্ত্রী ও নাঈমসহ স্থানীয় কয়েকজন। আনোয়ারের কিল, ঘুষি ও লাথিতে ঘটনাস্থলেই রক্তপাত শুরু হয় মুক্তার। পরবর্তীতে মুক্তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা অহিদুজ্জামান। কুর্মিটোলা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালেও রাস্তায় অবস্থার অবনতি হতে থাকলে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান অহিদুজ্জামান। সেখানেই নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান প্রসব করেন মুক্তা।

যুবলীগ নেতা আনোয়ারের মারধরের কারণে পেটের সন্তানও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের কারণে ঘটনার চার দিনেও জ্ঞান ফেরেনি মুক্তার। বেসরকারি হাসপাতালে সন্তান প্রসব হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তাকে বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল পাঠিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

মুক্তার বাবা অহিদুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘটনার সময়ে আমি বাসায় ছিলাম না। ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে আমার মেয়ে, স্ত্রী ও ছেলেকে রাস্তা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার স্ত্রীর মাথা ফেটেছে। আমার ছেলেকে আহত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমার গর্ভবতী মেয়েটার। মারধর ও পেটে আঘাতের কারণে সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতের কারণে এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। ওর সন্তান জন্মদানের তারিখ ছিল ২৯ মে।

তিনি বলেন, মেয়ের সন্তান জন্মের আনন্দ আমাদের নেই। আমরা মেয়ের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি।

বৃহস্পতিবার মুক্তার শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাক্তার সিটি স্ক্যানসহ বেশ কিছু টেস্ট দিয়েছেন। এছাড়া মেয়ের মাথার পাশাপাশি পেট ও গোপনাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেছে।

কারা কী কারণে হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে বাসার সামনে হাঁটতে বের হয়েছিল। এই সময়ে কয়েকজন খেলতে ছিল। রাস্তার পাশে আমার নাতি প্রস্রাব করে। সেই প্রস্রাব তাদের বলে লাগায় আমার মেয়েকে গালাগালি করে। ভুল হয়েছে, জানিয়ে মেয়ে বাসায় যেতে চাইলে মারধর শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে আনোয়ার পেটে লাথি মারলে আমার মেয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। সেখানেই তার রক্তপাত শুরু হয়। রক্তপাত হওয়া আমার মেয়ে বাঁচার আকুতি জানালেও হামলাকারীরা তাকে আরও মারধর করে। এতে সে মাথায়ও আঘাত পায়। বারবার বাঁচার আকুতি জানালেও মেয়েকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। আমার মেয়েকে বাঁচাতে আসলে আমার স্ত্রী ও সন্তানকেও মারধর করা হয়। পরে খবর পেয়ে আমি দ্রুত ছুটে এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

মারধরের নেতৃত্ব দেওয়া যুবলীগ নেতা আনোয়ারকে মামলায় আসামি করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অহিদুজ্জামান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জীবনের ভয়ে আনোয়ারকে আসামি করিনি। সে ভয়ংকর। তার ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। তাকে আসামি করলে আমরা বাঁচতে পারব না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করলে কেউ এলাকায় থাকতে পারবে? আমিও ভয়ে আনোয়ারের নাম মামলায় দিইনি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউই ভয়ে মুখ খুলতে চান না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শিশুর রাস্তায় প্রস্রাবের মতো তুচ্ছ কারণে মুক্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন আনোয়ার, তার স্ত্রী, সন্তান ও সহযোগীরা। তাদের মারধরের কারণে গর্ভবতী মুক্তার প্রসবের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়। মুক্তার রক্তে রাস্তা লাল হয়ে যায় কিন্তু আহত মুক্তাকে হাসপাতালে নিতে দিচ্ছিলেন না আনোয়ার ও তার সহযোগীরা। তিনি বারবার মুক্তার পেটে লাথি মারার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। এমনকি রাস্তায় ফেলে মুক্তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিলেন আনোয়ার।

জানা গেছে, বালুরমাঠ এক সময়ে বস্তি ছিল। সেই সময়ে কিশোর বয়স থেকেই নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন আনোয়ার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। নাম লেখান ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন যুবলীগে। থানা পর্যায়ের এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে বাগিয়ে নেন পল্লবীর ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র সহসভাপতির পদ। আর এই পদই হয়ে ওঠে আনোয়ারের ক্ষমতার হাতিয়ার। যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় কিশোর গ্যাং, মাদকের স্পট, চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ করেন। এলাকার কেউ অবাধ্য হলেই চলে নির্যাতন। আনোয়ারের হাতে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীর তালিকা দীর্ঘ। এই তালিকায় মুক্তা ছাড়াও আরও এক গর্ভবতী নারী রয়েছেন, স্থানীয় বাড়ির মালিক, দোকানদারসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছেন। তবে কেউই আনোয়ারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস দেখায় না। বর্তমানে কোনো কমিটিতে পদ না থাকলেও নিজেকে পদধারী নেতা পরিচয় দিয়ে পল্লবী জুড়ে নানা অপরাধের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন আনোয়ার। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে যুবলীগ নেতা আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বাসাও তালাবন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। মোবাইল ফোনেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

মামলায় যুবলীগ নেতা আনোয়ারের নাম না থাকা প্রসঙ্গে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান বলেন, ভুক্তভোগী মামলায় নাম না দিলে আমরা কী করব। আমাদের তো কিছু করার নেই।

আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজ আকন বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ আছি। তাই এই মামলায় এখনো কাজ করতে পারিনি। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

;

বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে ‘বান্দরবান’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বান্দরবান
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ২৫ এপ্রিল বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৫ শতাংশই পার্বত্য চট্টগ্রামে। বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে ম্যালেরিয়া রোগী বাড়ার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি সরকারের লক্ষ্য পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে, পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বান্দরবানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ ম্যালেরিয়া রোগী বান্দরবানে। বান্দরবানে ২০২৩ সালে এ রোগীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কম হলেও এই সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় বেশি।

যদি কোনো এলাকায় এক বছরে প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে একজনের বেশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, তবে তা উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ হিসেবে পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বর্তমানে বান্দরবান সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তার পরপরই অবস্থান রাঙ্গামাটির। খাগড়াছড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কিছুটা কম হলেও ঝুঁকিতে রয়েছে ।

দেশের ১৩টি জেলা ম্যালেরিয়া প্রবণ। এর মধ্যে পার্বত্য দুই জেলা বান্দরবান ও রাঙামাটিতে ৯০ শতাংশ সংক্রমণ ঘটছে। যা ১০ বছর ধরে একই হারে চলছে।

সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে ১৬ হাজার ৫৬৭ জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হন। তার মধ্যে ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বান্দরবানের। ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ রাঙামাটি, ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ কক্সবাজারে, ২ দশমিক ৫২ শতাংশ খাগড়াছড়িতে।

২০২২ সালে ১৮ হাজার ১৯৫ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। তার মধ্যে বান্দরবানে ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ। রাঙামাটির ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ আর কক্সবাজারে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

২০২১ সালে সারা দেশে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয় ৭ হাজার ২৯৪ জনের। তার মধ্যে বান্দরবানের ৭১ দশমিক ৭ শতাংশ। রাঙামাটির ২১ দশমিক ৩ শতাংশ। কক্সবাজারের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ আর খাগড়াছড়িতে ১ দশমিক ৪ শতাংশ।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এক হাজার ১৫৮ জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ ৫০৩ জন। বান্দরবানে ৪৬০ জন এবং কক্সবাজারে ১৩৮ জন। এ ছাড়া খাগড়াছড়িতে ৪০, চট্টগ্রামে ১৩, হবিগঞ্জে দুই এবং সিলেট ও নেত্রকোনায় একজন করে রোগী শনাক্ত হন। এ সময় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে এ রোগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা এবং সীমান্ত এলাকার মোট ১৩টি জেলার ৭২টি উপজেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এর মধ্যে বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়িতে ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। এ তিনটি জেলার মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বান্দরবান। বান্দরবানের লামা, আলীকদম ও থানছি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ রয়েছে-এমন ১৩ জেলার মধ্যে ১২টি জেলার ৩৬ উপজেলার সঙ্গে ভারতের আন্তঃসীমান্ত রয়েছে। আর কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সঙ্গে প্রতিবেশী মিয়ানমারের আন্তঃসীমান্ত রয়েছে।

ইনক্রিমিনেশন অব ম্যালেরিয়া ভেক্টর মসকিউটোস ইন বাংলাদেশ: সিজনাল প্রিভিলেন্স অব অ্যানোফিলিস মসকিউটোস অ্যান্ড দেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপস' শীর্ষক পিএইচডি গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার।

তিনি তার গবেষণায় জানিয়েছেন, লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারিত সময়ে ম্যালেরিয়া নির্মূল খুবই কঠিন কাজ। পার্বত্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কীটনাশক যুক্ত যে মশারি বিতরণ করা হয়, তাতে ডেলটামেট্রিন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে এটি মশা প্রতিরোধ করতে পারছে না। কীটনাশক পরীক্ষা করলেও আমরা মশারি পরীক্ষা করিনি। কারণ, কীটনাশকই যেখানে কাজ করছে না, সেখানে মশারির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

তিনি জানান, পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন-যারা বনে গাছ কাটেন, জুম বাগান রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং সীমান্তে চোরাচালানে জড়িত। তারা বাইরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়া কাজ ও ঘোরাঘুরি করেন।

তিনি আরো জানান, আমাদের দেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে। এই দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষকে নিয়ে ম্যালেরিয়া নির্মূলে একযোগে কাজ করতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পার্বত্য অঞ্চলের যেসব জায়গায় যাওয়া খুব কঠিন, যেসব এলাকার স্থানীয় মানুষদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাহলে পার্বত্য অঞ্চলের ম্যালেরিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করা সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও প্রধান গবেষক অধ্যাপক (ডা:) মো. আবুল ফয়েজ জানান, পরীক্ষামূলকভাবে লামা ও আলীকদম উপজেলায় ম্যালেরিয়ায় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১০০টি পাড়ার ১০ হাজার মানুষকে নির্বাচিত করে চার বছরে ধাপে ধাপে এ ম্যালেরিয়া টিকা ও ওষুধ প্রদান করা হবে। ম্যালেরিয়া নির্মূলের চলমান সেবার পাশাপাশি সবার জন্য ম্যালেরিয়ার টিকা এবং ওষুধ প্রয়োগ হতে পারে যুগোপযোগী পদক্ষেপ। সে লক্ষ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূলের নতুন টিকার কার্যকারিতা নিয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে লামা-আলীকদমে। এই গবেষণায় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ম্যালেরিয়ার টিকা ব্যবহার করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত এই টিকা ইতিমধ্যে ৭৭% উচ্চ কার্যক্ষমতা আছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলাদেশে মশাবাহিত রোগের মধ্যে অন্যতম হল ম্যালেরিয়া। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু ছড়ায়। বাংলাদেশে মোট ৩৬ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশার উপস্থিতি রয়েছে, এদের মধ্যে সাতটি প্রজাতি বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায়।

আফ্রিকায় ২০০১ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথমবারের মতো ম্যালেরিয়া দিবস পালন করা হয়। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির ৬০তম অধিবেশনে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রস্তাবনা করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন সচেতনতা মূলক কর্মসূচি পালন করা হয়য়।

;

রাজশাহীর বাড়ির কাছের নদী কেড়ে নিয়েছে ৯ প্রাণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র দাবদাহের মধ্যে নদীতে স্বস্তি খোঁজার মর্মান্তিক পরিণামে এপ্রিল মাসে রাজশাহীতে অন্তত ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু ও কিশোর। দাবদাহের তীব্রতা থেকে স্বস্তি পেতে গিয়ে অনবধানবশত এই দুর্ঘটনাগুলি ঘটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তারা বলছেন, রাজশাহীর নদীপাড়ের এলাকায় শিশু ও কিশোরদের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে নদী। তবে এই নদী এখন তাদের জন্য বিপদসঙ্কুল হয়ে উঠেছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) একটি মর্মান্তিক ঘটনায় তিন কিশোর পানিতে ডুবে মারা যায়, যা এ মাসের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। এতে স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

অনেকের মতে, নদীর তীরে যথেষ্ট নিরাপত্তার অভাব এবং সাঁতার শেখানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যে নদী তীরে সতর্কতা সংকেত ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

অভিভাবকরা এখন আরো সচেতন হয়ে তাদের সন্তানদের নদীর কাছে একা যেতে দিচ্ছেন না। শিশুদের সাঁতার শেখানোর গুরুত্ব বুঝতে পারছেন তারা। তাদের মতে, একটি শিশুকে সাঁতার শেখানো তাকে বাঁচানোর একটি উপায়।

জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে চলতি মাসে পানিতে ডুবে প্রাণ গেছে ৯ জনের। এদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর। সবশেষ, গত ২৩ এপ্রিল পানিতে ডুবে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। এরা হলো- কাঁটাখালী বাখরাবাজ এলাকার রেন্টুর ছেলে যুবরাজ (১২), লিটনের ছেলে আরিফ (১৩) ও নুর ইসলামের ছেলে জামাল (১২)।

এর আগে ১৪ এপ্রিল রাজশাহীর বাঘায় বিয়ে বাড়িতে এসে পানিতে ডুবে মারা যায় জান্নাত খাতুন (৮) নামে এক শিশু। তবে এখনো ঝিলিক খাতুন (১২) নামে আরেক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

১৯ এপ্রিল পদ্মানদীর মুর্শিদপুর এলাকার খেয়াহাটের ডুবে মারা যায়, উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ১০ বছরের ছেলে সিয়াম হোসেন সজিব। ২০ এপ্রিল বাঘা উপজেলায় পদ্মানদীতে নৌকায় করে গোসল করতে গিয়ে মারা যান আসাদ হোসেন (১৮) নামে এক তরুণ।

২১ এপ্রিল পবায় পদ্মানদীতে গোসল করতে নামেন বাপ্পি হোসেন (১৬) ও মনির হোসেন (২০) নামে দুই তরুণ। পরে ডুবে মারা যান তারাও।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আবু সামা বলেন, রাজশাহীতে গত কয়েকদিন ধরে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। আমরা ধারণা করছি, গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে কিশোররা নদীতে গোসল করতে গিয়ে মারা যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের অনেকেই সাঁতার জানতেন না। আবার অনেকেই সাঁতার জানতেন। কিন্তু একজন ডুবে যাচ্ছে দেখে আরেকজন তাকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনই ডুবে মারা যাচ্ছেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।

শিশু-কিশোর যারা সাঁতার জানে না, তারা যাতে নদীতে গোসলে না যায়, সেদিকে নজর দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।

তিনি জানান, এটি করা গেলে মৃত্যু অনেকটাই কমে আসবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২২’ প্রতিবেদন অনুসারে, পাঁচ বছরের কম বয়েসি শিশু মৃত্যুর ৭ শতাংশের বেশি ঘটে পানিতে ডুবে।

গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগবিষয়ক বেসরকারি সংগঠন ‘সমষ্টি’র প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পানিতে ডুবে ৮শ ৮০টি মৃত্যুর ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৮৭ শতাংশ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বয়স ছিল ৯ বছরের নিচে। এ হার ২০২২ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। মোট মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশের বেশি ঘটেছে, সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে।

রাজশাহীর স্থানীয় প্রশাসন ও সামাজিক সংগঠনগুলো এই বিষয়ে আরো সক্রিয় হতে চাইছে। তারা শিশুদের জন্য নিরাপদ সাঁতার শেখানোর ক্যাম্প চালু করার পরিকল্পনা করছে, যাতে তারা এই ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেদের বাঁচাতে পারে।

বাংলাদেশ জাতীয় সাঁতার দলের সাবেক কোচ আলমগীর হোসেন বলেন, সাঁতার না জানার কারণে দেশে প্রতিবছরই বহু মানুষ মারা যায়। শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের সাঁতারও শেখাতে হবে। কোনো শিশু ডুবে মারা গেলে তার শিক্ষার কোনো দাম থাকবে না। জীবন বাঁচাতে তাই সাঁতার শেখাতে হবে। মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। তাহলে এমন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

;