ঐতিহ্যবাহী খুলনার ১৩৭তম জন্মদিন



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
খুলনা শহর, ছবি: বার্তা২৪

খুলনা শহর, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্প ও বন্দরনগরী খুলনার ১৩৭তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বঙ্গোপসাগরের কূলজুড়ে খুলনার অবস্থান। নদ-নদী বিধৌত হযরত খানজাহান আলীর (রহ.) -এর স্মৃতি বিজড়িত শহর, সুন্দরবনের কোল ঘেষা অপরূপ এ জেলাটি লম্বা আকৃতির ও চৌকা ধরনের।

খুলনার ইতিহাস: ১৮৪২ সালে ভৈরব-রূপসা বিধৌত পুণ্যভূমি নয়াবাদ থানা ও কিসমত খুলনাকে কেন্দ্র করে নতুন জেলার সদর দপ্তর স্থাপিত হয় খুলনায়। খুলনা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ব্রিটিশদের প্রশাসনিক এলাকা বৃদ্ধি এবং ভৌগলিক অবস্থার কারণে খুলনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাত্র ৪০ বছরের ব্যবধানে ৪ হাজার ৬৩০ বর্গমাইল এলাকা, ৪৩ হাজার ৫০০ জনসংখ্যা অধ্যুষিত খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাকে নিয়ে ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। আর সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী খুলনার ১৩৭তম শুভ জন্মদিন আজ। এর আগে খুলনা ছিল যশোর জেলার মহকুমা। ব্রিটিশ শাসক ডাব্লিউ এম ক্লে জেলার প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/25/1556148552356.jpg
খুলনা শহর



খুলনার নামকরণ: কোনো স্থানের ইতিহাস ঐতিহ্য-অনুধাবনের ক্ষেত্রে নামকরণের তাৎপর্য নির্ণয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খুলনাও তার ব্যতিক্রম নয়। 

বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. সুকুমার সেনের মতে খুলনা এসেছে ‘খুল্লনা’ শব্দ থেকে যার অর্থ ক্ষুদ্র নৌকা ভাসে এমন স্থান। এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন মতে অনেক কিংবদন্তির কথাও প্রচলিত আছে। 

কেউ বলেন, খুলনা নামের উৎস খুল্লনেশ্বরী দেবী, যিনি ধনপতি সওদাগরের স্ত্রী খুল্লনার স্মৃতিরক্ষার্থে ভৈরব নদ তীরের এক মন্দিরে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন।

আবার কেউ বলেন, মুসলিম আমলের প্রথমদিকে আরব বণিকেরা এখানে প্রবেশ করে বলতো ‘আদ খোলনা’। এই ‘আদ খোলনা’ শব্দ থেকে খুলনা শব্দের উৎপত্তি।

এছাড়া বিপদাশংকা টের পেলে বনের দেবী বনবিবি বাওয়ালিদের বনে যেতে নিষেধ করে বলতেন ‘নৌকা খুলোনা’। এ ‘খুলোনা’ থেকেই খুলনা শব্দটা এসেছে। এসব কিংবদন্তির সত্যাসত্য আজ আর যাচাই করার উপায় নেই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/25/1556148601318.jpg
খুলনা শহর



খুলনা শব্দের উৎপত্তির বিষয়ে আরও একটা সূত্র পাওয়া যায় ১৭৬৬ সালে পশুর নদীর দক্ষিণভাগে নিমজ্জিত ‘ফল মাউথ’ নামক জাহাজের নাবিকদের রেকর্ডপত্র থেকে, যেখানে খুলনাকে ‘কুলনিয়া’ বা ‘কলনিয়া’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

খুলনার আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ ড. শেখ গাউস মিয়ার মতে, বর্তমানে খুলনা একটা জনবহুল জেলা হলেও এক সময় তা ছিল সুন্দরবনের অংশ। বন কেটে আবাদ করা হয়েছে এ অঞ্চলে। যে কারণে বন জঙ্গল সরে গেছে। নতুন আবাদ বলেই খুলনার আর এক নাম নয়াবাদ। এ অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য সুদূর অতীতে প্রসারিত। সমুদ্রগর্ভ থেকে অপেক্ষাকৃত পরে উত্থিত হলেও উপমহাদেশের অনেক স্থানের মতো এখানেও প্রাচীনকালে জনবসতি স্থাপিত হয়েছিল বলে জানা যায়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/25/1556148636142.jpg
খুলনা শহর



ইতিহাস: পাল আমলে পূর্ববঙ্গে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মতো খুলনার জনসমাজও বৌদ্ধধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হয়। সেন আমলে তাদের প্রতিনিধি এ অঞ্চল তথা বুড়নদ্বীপ শাসন করতো।

মুসলিম আমলে আসেন হযরত উলুঘ খান, এ আজম খানজাহান তথা খানজাহান আলী (রহ.)। এ অঞ্চল আবাদ ও ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে যার কৃতিত্ব সুবিদিত। এরপর নানা রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্য দিয়ে শাসনক্ষমতা চলে যায় বিদেশিদের হাতে। তাদের দ্বারাই সারা দেশের মতো এখানেও আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার প্রচলন ঘটে। খুলনা জেলার কেন্দ্রবিন্দু খুলনা। এখন যেখানে মূল শহর এক সময় সে স্থান ছিল ক্ষুদ্র একটি নৌবন্দর মাত্র।

পূর্ববঙ্গ ও আসাম থেকে কলকাতার মধ্যে যাতায়াতের একটা সহজ পথ ছিল খুলনা। ১৮০১ সালে মি. চার্লস নামে শ্বেতাঙ্গ নীলকর কর্তৃক এখানে একটা নীলকুঠি স্থাপিত হয়। তিনি তার কুঠির পাশে একটা বাজার বসান যা বর্তমানে ‘বড়বাজার’ নামে পরিচিত। ১৭৮১ সালে তা একটা থানায় রূপান্তরিত করা হয় নয়াবাদ থানা। এ নয়াবাদ অবস্থিত ছিল রূপসা নদীর ওপার। ১৭৮৬ সালে টিলম্যান হেঙ্কেলের সুপারিশ অনুসারে যশোরকে একটা জেলায় রূপান্তরিত করা হয়। এটিই বাংলাদেশের প্রথম জেলা। তখন খুলনা ছিল এ জেলার অন্যতম থানা। ১৮৪২ সালে খুলনা মহকুমায় রূপ লাভ করে। বলা হয় শ্বেতাঙ্গ অত্যাচারি জমিদার রেণীকে ইংরেজ শাসনাধীনে আনাই ছিল এ মহকুমা স্থাপনের উদ্দেশ্য।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/25/1556148666019.jpg
খুলনা শহর



কর্মসূচি: ইতিহাস ও ঐতিহ্যের খুলনার ১৩৭ বছর পূর্তিতে দিবসটি পালনে চার দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) উন্নয়ন ভবন মাঠে চার দিনব্যাপী ‘খুলনা দিবস মেলা-২০১৯’ -এর উদ্বোধন, ২৭ এপ্রিল সকাল ৯টায় বর্ণিল আয়োজনে খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিত বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং সন্ধ্যায় নগরীর শহিদ হাদিস পার্কে আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, জন্মলগ্ন থেকেই এ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা খুলনা উন্নয়নের দিক থেকে অনেক অনেক গুণ পিছিয়ে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনার উন্নয়ন কর্মীরা। সম্প্রতি খুলনায় গ্যাস সরবরাহ করার জন্য যে পাইপ লাইন বসানো হয়েছিল, সে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়াও খুলনায় বিমানবন্দর দ্রুত বাস্তবায়ন, খুলনা মেডিকেল কলেজকে ১০০০ বেডে উন্নীতকরণসহ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা, শহর রক্ষা বাঁধসহ রূপসা ও ভৈরব নদীর তীর ঘেঁষে রিভারভিউ রোড ও পার্ক নির্মাণ, খুলনায় স্টেডিয়ামগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মেরিন একাডেমী, ক্যাডেট কলেজ, বয়রা মেইন রোড সম্প্রসারণসহ খুলনা টেক্সটাইল পল্লী দ্রুত বাস্তবায়ন, মংলা সমুদ্রবন্দর ও ভোমরা স্থল বন্দরের আধুনিকায়ন, ভৈরব নদীতে আধুনিক ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ এবং ভৈরব নদীর তলদেশে ট্যানেল নির্মাণ, আধুনিক পাবলিক হল নির্মাণ, খুলনায় শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন, সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের প্রসারসহ খুলনার ১৩৭ তম জন্মদিনে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন খুলনার উন্নয়ন কর্মীরা।

   

নরসিংদীর "ছন্দা" সিনেমা হল এখন মাদরাসা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর পূর্বাচল অধ্যুষিত হাসনাবাদ আমিরগঞ্জ স্টেশনে আশির দশকের নামকরা সিনেমা হল ছন্দা হলটি এখন মাদ্রাসা। একটি সিনেমা হল যেখানে পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি প্রচারিত হতো সেখানে আজ দ্বীনি শিক্ষার জন্য মাদ্রাসা তৈরি হওয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, কালের পরিক্রমায় নরসিংদীর বৃহত্তর রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ আমিরগঞ্জ বাজারে অবস্থিত সন্ধ্যা সিনেমা হলটি। যা অত্র অঞ্চলের বিনোদনের খোরাক ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে হলের ব্যবসায়িক অবস্থা মন্দা ভাব হাওয়ায় হলটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সিনেমা হলটি পাশ্ববর্তী একটি এতিমখানার মাদ্রাসা মালিকের কাছে বিক্রি হয়। এখন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এ সিনেমা হলটিকে মাদ্রাসায় পরিণত করতে যাচ্ছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রায়পুরা উপজেলার হাসনাবাদ আমিরগঞ্জ বাজারে হলটিতে গিয়ে দেখা যায়, হলটির সামনে ঝুলছে "রাজকুমার" ছবির পোস্টার। ভিতরে শো চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, এই হলটি অঞ্চলের বিনোদনের কেন্দ্রের একমাত্র সিনেমা হল ছিল। নানা কারনে ৫/৭ বছর ধরে আগের মত আর জৌলস নেই। এতিমখানা ঘেঁষে সিনেমা হলটি। এখানে বড় দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর সহযোগীতা চান।


মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা মো: মোকাররম হোসাইন জানান, জানতে পারি মালিক পক্ষ হলটি বিক্রি করে দিবে। স্থানীয়রা চিন্তা করে হলটি মাদরাসার জন্য ক্রয় করার পরিকল্পনা নেন। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ধরে ২০ লাখ টাকায় বায়না দলিল করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৩ লাখ টাকা জমা পরেছে। সকলের সহযোগীতা নিয়ে মাদরাসাটির নামে ওই স্থাবর সম্পত্তি ৩৩ শতক জমি ওয়াকফ দলিল করা হবে। আশা করি স্থানীয় বিত্তবানদের সহযোগীতায় দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, আগে সিনেমা হলে পরিবার পরিজন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে কত যে সিনেমা দেখতাম। এখন নানা কারণে হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে ইচ্ছা করে না। ভাল ছবি হলে মাঝে মধ্যে আসি। শুনলাম ছন্দা হলটি মাদরাসার কাছে বিক্রি করা হয়েছে। হয়তো সামনে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই শেষবারের মতো 'রাজকুমার' ছবিটি দেখতে এলাম।’

হলটি ভাড়ায় চালাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা মো সুলতান মিয়া। তিনি জানান, আসল মালিক সামসুল ইসলাম মানিকের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি। ৪'শ টাকা হাজিরায় চারজন কর্মচারী নিয়ে পরিচালনা করে আসছি। করোনার পর থেকে দীর্ঘদিন লোকসান গুনে গুনে এতদিন হল চালাচ্ছি। ফিল্মের জগত আগে ছিল টাটকা টাকা। সম্প্রতি প্রিয়তমা ছবিটিতে বেশ ব্যবসা হয়েছিলো। এখন নানা কারনে এ ব্যবসা মন্দা। সিনেমা মুক্তির দুই মাসের মধ্যে নেট গুলোতে তারা টাকায় বিক্রি করে দেয়। হাতে মোবাইল ফোনে দেখে ফেলে কেউ হলে এসে সিনেমা দেখতে আসেনা। বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হল মালিকরা। ফলে মালিক পক্ষ যদি হল বিক্রি করে দিতে চায় তাহলে করার কিছুই নাই। মাদরাসার কাছে হল বিক্রি হওয়ার কথা শুনেছি। মাদরাসার নিকট বিক্রি হলে আরও ভালো হয়। আমি মুসলিম এই ব্যবসা করতে আর মন চায় না, আল্লাহ চাইলে এই ব্যবসা ত্যাগ করে অন্য কিছু করবো।

ছন্দা হলের কর্মচারী আবুল কালাম জানান, এই হলটিতে সবসময় দর্শকদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ অপেক্ষা করে টিকিট সংগ্রহ করে উপচে পড়া ভিড় থাকত।

চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর ছবিগুলো এখান থেকে দর্শক প্রিয়তায় বাদ যায়নি। বর্তমানে সিনেমা ব্যবসায় মন্দা হওয়ায় আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয়। ব্যবসা মন্দা হওয়ায় মালিকপক্ষ আমাদের ঠিকমত বেতনও দিতে পারেনা। ঈদ উপলক্ষে শো চলছে। হল বন্ধ থাকলে আমাদের বেকার জীবন চলে। কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছি।

নরসিংদীতে বন্ধ হওয়া অপর একটি হলের মালিক সাদ্দাম হোসেন জানান, এক সময় নরসিংদীতে ১৯টি সিনেমা হল ছিল। আগে ভাল মানের একটি সিনেমা প্রায় তিন থেকে চার সপ্তাহ এক টানা চলতো। ভরপুর দর্শক হতো। ব্যবসায় নেমেছে ধস। দু'একটি ব্যতিত সবগুলো হল বন্ধ। শুনলাম জনপ্রিয় ছন্দা সিনেমা হলটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

;

'নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধর সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রজন্ম ’৭০ বাংলাদেশের প্রজন্ম সম্মেলন ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৪৮-’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র এগারো দফা ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠে। ’৭০’র সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্রপাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে দেয়নি।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা অনুধাবন করেন, স্বাধীনতা অর্জন ছাড়া বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও বঞ্চনার অবসান হবে না। তাই তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন, চলতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

মন্ত্রী বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর থেমে যায় বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা। শুরু হয় হত্যা, ক্যু আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে আজ তিনি উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে।

প্রজন্ম ৭০ বাংলাদেশ-এর সভাপতি আশরাফুল করিম ভূঁইয়া সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন খান, বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহব্বাহক ফসিহ উদ্দিন মাহতাব, সদস্য সচিব এস এম মাহাবুবুর রহমান, আলোক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন বক্তৃতা করেন।

;

মঙ্গলের বার্তা দিয়ে ফেনীতে শেষ হলো বর্ষবরণ উৎসব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

উৎসব আনন্দের মধ্যে দিয়ে ফেনীতে শেষ হয়েছে বর্ষবরণ উৎসব। বাংলা নতুন বছরকে বরণ করতে পান্তা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ ৭দিন ব্যাপী লোকজ মেলাসহ নানা আয়োজন করে জেলাপ্রশাসন। নতুন বছরে মঙ্গলের বার্তা দিয়ে শেষ হয়েছে ৭ দিনের আনুষ্ঠানিকতা।

১৪৩১ বঙ্গাব্দ বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে ৭ দিনব্যাপী বর্ণিল উৎসবে মেতে ছিল ফেনী। জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এ আহ্বান জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করেছে ফেনীর সাধারণ মানুষ।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে লোকজ মেলার সমাপনী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।অনুষ্ঠানে ফেনীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলাপ্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। বর্ষবরণ উৎসব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ায় ফেনীবাসীকে অভিনন্দন জানান তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতির দেশ। এখানে সব ধর্মের স্বাধীনতা আছে। উৎসব মুখর পরিবেশে লোকজ মেলা সুন্দর ভাবে শেষ হয়েছে। বাঙালীর সংস্কৃতি ধারন করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরতে এমন মেলার বিকল্প নেই।

তিনি বলেন,শোভাযাত্রার মাধ্যমে বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়েছিল, লোকজ মেলার মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে। স্টলগুলোতে গ্রামীণ ঐতিহ্য ফুটে উঠেছে এটি তরূণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা। ফেনীকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে এবং দেশের শিল্প সাহিত্যকে তরুণদের কাছে তুলে ধরতে বৈশাখী মেলার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ফেনী পৌরসভা মেয়র মোঃ নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ফেনীতে ৪ বছর পরে বৈশাখী মেলা হয়েছে। করোনার কারনে এটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফেনীবাসী এ মেলার মাধ্যমে ঈদ পরবর্তী আনন্দে সামিল হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ভবিষ্যতে এমন সব ধরনের আয়োজনে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।

জেলা কালচার অফিসার কামরান হাসানের সঞ্চালনায় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ বাতেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোক্তার হোসেইন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া, জেলা পিপি এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ, জিপি প্রিয়রঞ্জন দত্ত, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন রশিদ, জেলাপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্টলকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয় এবং বৈশাখী মেলা উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন,বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা গণগ্রন্থাগার কর্তৃক আয়োজিত আলপনা অঙ্কন, ঘুঁড়ি তৈরীসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিরা।

;

সাভারে ভাঙ্গারীর গোডাউনে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকায় একটি ভাঙ্গারীর গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আধ ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর বাড়ির সামনের কামালের ভাঙ্গারী গোডাউনে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, সন্ধায় আগুনের খবর পেয়ে সাভার ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ শুরু করে। পরে ট্যানারী ফায়ার স্টেশনের আরও ২টি ইউনিট এসে যোগ দেয়। মোট ৪টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে।

সাভার ফায়ার স্টেশনের ওয়ারহাউজ পরিদর্শক মেহেরুল ইসলাম বার্তা ২৪.কমকে বলেন, গোডাউনটিতে থাকা ভাঙ্গারীর মালামাল, প্লাস্টিক পন্য, কাগজপত্র ছিল যা পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহত ঘটেনি। আগুন লাগার কারন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।

;