চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা বৃহস্পতিবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম, বার্তা২৪.কম
বলীখেলার মঞ্চ / ছবি: বার্তা২৪

বলীখেলার মঞ্চ / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঐতিহ্য আর লোকজ সংস্কৃতির শেকড়ের টানে বছর ঘুরে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে শত বছরের লোকক্রীড়ার আসর জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা। তিন দিনব্যাপী এ মেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে। তবে বুধবার (২৪এপ্রিল) সকাল থেকে হরেক রকম পণ্যের পসরায় বিক্রেতা আর সংস্কৃতিপ্রাণ দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে।

ঐতিহ্যবাহী এ খেলায় প্রতিবছর সারা দেশ থেকে নামকরা বলীরা অংশ নেন। নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয় বিজয়ীদের। আর এ বলী খেলা দেখতে লাখো মানুষের ভিড় জমে লালদিঘী ময়দানে।

১৯০৯ সালে বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনকে তরান্বিত করতে চট্টগ্রামের যুব সমাজকে রণপ্রস্তুতির লক্ষ্যে বলীখেলার প্রচলন করেছিলেন প্রয়াত আব্দুল জব্বার। তাঁর মৃত্যুর পরেও এমন দৃপ্ত শপথ আর বাঙালির সংস্কৃতির টানে প্রতিবছর এ আয়োজন হয়ে আসছে। বাংলা বছরের ১২ বৈশাখে এই মেলারও রেওয়াজ হয়ে আসছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099189565.jpg

নগরীর আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ থেকে শুরু করে লালদিঘী হয়ে এক বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্রেতারা। সার্বজনীনভাবে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্য বজায় রেখে মেলায় গৃহস্থালি পণ্য, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম, আসবাবপত্র, নকশিকাঁথার কাপড়, হরেক রকমের নাড়ু, জিলাপি, মিষ্টান্ন, বিভিন্ন স্বাদের আচার, প্লাস্টিকের জিনিসপত্র নার্সারির গাছের চারা, তবলা, একতারা, বাঁশি থেকে শুরু করে কাপড়ের সুই সুতো হরদম কেনা-বেচা হয়।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, আন্দারকিল্লা সড়কের দু’পাশ থেকে শুরু হওয়া মেলায় দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়েছেন। আবার অনেক দোকানি গোছানোর কাজ সারছেন। কেউবা মাটির তৈজসপত্র আরও আর্কষণীয় করে তোলার জন্য ধুয়ে মুছে রাখছেন।

মেলার মূল আর্কষণ লালদিঘী মাঠে বলীখেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারছেন আয়োজকরা। সেখানে প্রস্তুতির কাজ দেখতে ভিড় করছেন দর্শকরা। এরপাশে নাগরদোলায় চড়ছে কিশোর-কিশোরী আর স্কুল শিক্ষার্থীরা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099281000.jpg

ঘর গোছানোর জন্য মাটির তৈজসপত্র কিনতে বান্ধবীসহ মেলায় আসেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারিয়া মিম। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতিবছর বলীখেলা আর এমন একটি মেলার জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা সংস্কৃতির গন্ধ পাই। তাই প্রথমদিনই মাটির হাড়ি পাতিল কেনার জন্য এসেছি।’

একই ভিড় দেখা যায় বিভিন্ন নাড়ু, মিষ্টান্নে আর নকশিকাঁথার স্টল এবং মহিলাদের স্টলে।

বংশ পরপম্পরায় ৪০ বছর ধরে চট্টগ্রামের বলীখেলার মেলায় বসছেন ঢাকার শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মুসলিম ব্যাপারী। প্রথমদিকে কেবল মাটির তৈজসপত্র নিয়ে মেলায় আসলেও সময়ের পরিক্রমায় দশ বছর ধরে নার্সারির ব্যবসায় সংযুক্ত রয়েছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে সময়ের কথা বলতে গিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। কিছুক্ষণ পর সাল হিসেব করে জানালেন ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে মেলায় আসছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099231752.jpg

তিনি জানান, মেলা বৈশাখে হলেও ফাল্গুন মাস থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়। ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় তৈরি হয় এসব তৈজসপত্র সামগ্রী। বড় আর ছোট ছেলেও এই ব্যবসা তাকে সহায়তা করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ তেমন বেচা বিক্রি না হলেও মেলার সময় বাড়া সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি বাড়বে।’

বাদল সরকার নামে আরেক ব্যবসায়ী ২০ বছর ধরে বিভিন্ন নাড়ু, মোয়া, জিলাপিসহ বিভিন্ন মিষ্টান্ন খাবার নিয়ে মেলায় বসেন।

আয়োকজ সূত্রে জানা গেছে, এবারের ১১০তম আসরে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মাদককে না বলুন’। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বলির খেলোয়াড়রা অংশ নেন। এবারের ১৫০ জন খেলোয়াড় তালিকাভুক্ত করা হলেও এর মধ্যে ৫০ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবেন মেলা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বলিখেলার উদ্বোধন করবেন সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান। এছাড়া বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্তার বিতরণ করেবেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099315096.jpg

এ বিষয়ে বলিখেলা ও বৈশাখী মেলার সভাপতি কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে মেলার ৭০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মেলার সার্বিক ব্যবস্থা নিরাপত্তা মনিটরিংয়ের জন্য বেশ কিছু জায়গায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বলিখেলায় অংশ নেওয়াদের পুরস্কার ও সম্মানিও এবার বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি মেলা সার্বজনীন উৎসবে রূপ নেবে।’

দীর্ঘদিন ধরে চলা আসা এমন আয়োজনকে বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান দেওয়ার চেষ্টা করছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। গত বছর এমন একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এ বিষয়ে প্রয়াত আব্দুল জব্বারের নাতি ও মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এটি যদিও আমার নানার নামে হয় কিন্তু এটি সবার প্রাণের উৎসব। বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনের সময় এমন একটি আয়োজন তরুণদের মাঝে সাহসের উদ্দীপনা নিয়ে এসেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের জন্য গতবছর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলাম। এরপর আমরা কোনো অগ্রগতি দেখিনি। আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।’

   

গাইবান্ধা কারাগারের অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীকে বদলি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধা কারাগারের অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীকে বদলি

গাইবান্ধা কারাগারের অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীকে বদলি

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নারী হাজতিকে বিবস্ত্র করে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ও কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামসহ দুই কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ওই ঘটনায় তাদেরকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে বদলি করা হয়।

বদলি হওয়া অপর কারারক্ষীর নাম সাবানা খাতুন। তাদের মধ্যে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর কারাগার এবং নারী কারারক্ষী সাবানা খাতুনকে ঠাঁকুরগাও কারাগারে বদলি করা হয়েছে।

এর আগে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভিতরে কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামের সাথে মেঘনা খাতুন নামের এক নারী কয়েদির অবৈধ কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় মোর্শেদা খাতুন সীমা (৩৪), হাজতী নম্বর-৫০৮) নামের এক নারী হাজতিকে বিবস্ত্র করে, হাত-পা বেধে নির্যাতন করে অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীসহ অন্যরা। শুধু তাই নয়, ওই নারী হাজতি সীমাকে কারাগারের নারী-পুরুষ উভয়ই মিলে বিবস্ত্র করে স্পর্শকাতর স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত, এমনকি কামড় দিয়ে ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে শরীরের গোশত।

এখানেই শেষ নয়, ঘটনা গোপন রাখতে দেখানো হয় জীবনণাশসহ সম্ভ্রমহানীর হুমকিও। অন্যথায় হত্যা করে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার আল্টিমেটামও দেয় সুবেদারসহ অভিযুক্তরা।

পরে এ ঘটনায় গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভিতরে নারী হাজতীর সাথে এমন লোমহর্ষক ঘটনার বণর্না তুলে ধরে অসুস্থ ওই নারী হাজতির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা, জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গত ১৬ এপ্রিল গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী হাজতির মা করিমন নেছা।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা প্রায় ৫ বছর যাবৎ গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আবদ্ধ রয়েছেন। কারাগারে অবস্থানকালে কিছুদিন পূর্বে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কর্মরত সুবেদার আশরাফুল ইসলাম এবং মহিলা কয়েদি (রাইটার) মেঘলা খাতুনের মধ্যে চলমান অবৈধ কার্যকলাপ দেখে ফেলে নারী হাজতি সীমা।

এতেই সুবেদার আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন তার (সীমার) উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তারা প্রতিনিয়ত ঘটনার বিষয়ে কাউকে বললে কারাগারের ভিতরেই সীমাকে খুন-জখমে হত্যা করে আত্মহত্যা করে মৃত্য হয়েছে কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্য হয়েছে মর্মে ভয়-ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করতে থাকে। হাজতি সীমা খাতুন বারবার তাদেরকে (সুবেদার আশরাফুল-মেঘলা) ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বলবেনা মর্মে জানানোর পরেও সুবেদার আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন আতঙ্কিত হয়ে কারাগারের ভিতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া এসবের একপর্যায়ে সুবেদার আশরাফুল সীমাকে জিম্মি করতে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে কু-প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্তসহ হাত এবং পড়নের কাপড় ধরে টানা-হেচড়াসহ একাধিকবার শ্লীলতাহানী ঘটায়। পরে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দিয়েও আশরাফুলের মনোবাসনা পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়ে সুবেদার আশরাফুলসহ তার সহযোগীরা হাজতী সীমার স্বামী খোকন মিয়াকে গাইবান্ধা কারাগারে ডেকে নেয়। অভিযুক্তরা সীমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ও আপত্তিকর তথ্য দিয়ে সীমার সংসার নষ্ট করে ভেঙ্গে দেয়।

এতসবের পরে যখন হাজতি সীমা এসব ঘটনা জেল সুপার সাহেবকে বিচার দিবে মর্মে জানায়, তখন সুবেদার আশরাফুল প্রকাশ্যভাবে জেলার সাহেব তার লোক, সে (সুবেদার) নিজের টাকা খরচ করে জেলারকে এই কারাগারে বদলি করে এনেছেন বলে জানিয়ে জেলার তার (সুবেদারের) কোন বিচার করতে পারবেনা বলে ভয়-ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করে। এসবের এক পর্যায়ে চলতি বছরের গত ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা, আলেফা এবং কারারক্ষী তহমিনা ও সাবানা পরিকল্পিতভাবে জেলা কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভিতরের বারান্দায় লাঠি দিয়ে অতর্কিত সীমার মাথায়, কোমড়ে বুকে, পিঠে, দুইপায়ের হাটুসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারী ভাবে মারধর করে। মহিলা কয়েদি মেঘলা ভুক্তভোগী সীমার ডানহাতের দাপনায় কামড় দিয়ে মাংস ছিড়ে নেয়।

শুধু তাই নয়, সুবেদার আশরাফুল, সিআইডি আনিছ ও হাবিলদার মোস্তফাগণ কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভিতরে প্রবেশ করে সীমাকে টেনে-হেচড়ে বের করে মহিলা ইউনিটের বারান্দা হতে সেলের ভিতরে নিয়ে হাজতি সীমার দুইহাতে হ্যান্ডকাপ ও দুই পা রশি দিয়ে বেধে বিবস্ত্র করে লাঠি দিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থান (দুই উরু), পায়ের পাতায় পেটাতে থাকে। এ সময় নির্যাতনকারীরা এসবের কোনও ঘটনা কারাগারের বাহিরে প্রকাশ হলে সীমাকে মারপিটে হত্যা করে হৃদরোগ মৃত্যু হয়েছে বলে চালাবে মর্মে আবারো হুমকি দেয়।

এছাড়া অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্যাতিতা হাজতির মা ও অভিযোগকারী করিমন নেছা একাধিকবার হাজতি মেয়ের সাথে দেখা করতে গাইবান্ধা কারাগারে আসলেও মেয়ের সাথে সাক্ষাত করতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে হাজতী সীমা খাতুনের গাইবান্ধা আদালতে হাজিরার তারিখে আদালতে মেয়ের সাক্ষাত পান মা করিমন নেছা। এদিন সীমা মায়ের কাছে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের চিহ্ন দেখায়।

পরে অভিযোগ দায়েরের প্রেক্ষিতে গত ১৬ এপ্রিল জেলা কারাগারে ঘটনা তদন্তে যান গাইবান্ধা জেলা প্রশাসাকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) মো: মশিউর রহমান।

জানতে চাইলে এদিন তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে গতকাল বিষয়টি তদন্ত করেছি। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেব। এর পরেই জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, অভিযুক্তদের মধ্যে দুই কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর এবং নারী কারারক্ষী সাবানা খাতুনকে ঠাকুরগাঁও কারাগারে বদলি করেছে কারা প্রশাসন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা হবে।

;

ইউএস-বাংলা ইতিহাস স্থাপন করে আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ইউএস-বাংলা ইতিহাস স্থাপন করে আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে

ইউএস-বাংলা ইতিহাস স্থাপন করে আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বেসরকারি বিমানসংস্থা হিসেবে প্রথমবারের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করে ইতিহাস স্থাপন করেছে। আজ ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার বাংলাদেশ এভিয়েশন তথা বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ইতিহাসের এক অনন্য নজির স্খাপন করেছে। বর্তমানে দুবাই, শারজাহ এর পর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের তৃতীয় গন্তব্য আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে ইউএস-বাংলা।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদার কারনে দেশের অন্যতম এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা আবুধাবীতে ঢাকা থেকে সোম, বুধ, বৃহস্পতি ও শনিবার এবং চট্টগ্রাম থেকে মঙ্গল, শুক্র ও রবিবার বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে আবুধাবীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। আবুধাবীর স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে অবতরণ করবে।


আবুধাবী থেকে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০মিনিটে ছেড়ে মঙ্গল, বুধ, শুক্র ও রবিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সোম, বৃহস্পতি ও শনিবার চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে অবতরন করবে।

আজ ইউএস-বাংলার উদ্বোধনী ফ্লাইট হিসেবে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবীর উদ্দেশ্যে বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে ১৭৪ জন যাত্রী নিয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ যাত্রা করে। চট্টগ্রাম থেকে যাত্রার পূর্বে ঢাকা থেকে বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ আবুধাবীতে স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে পৌঁছাবে। এবং আবুধাবী থেকে স্থানীয় সময় আজ রাত ১০টা ১০মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করবে এবং ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।


বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত দু’দেশের বন্ধনকে আরো বেশী সুদৃঢ় করবে। আবুধাবী ফ্লাইট যাত্রার পূর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ যাত্রীদের বিদায় জানান।

দুবাই, শারজাহ ছাড়া বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য মাস্কাট, দোহা, প্রবাসী বাংলাদেশী অধ্যুষিত কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, মালে, পর্যটক বান্ধব অন্যতম গন্তব্য ব্যাংকক ও চীনের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর গুয়াংজু, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা ও চেন্নাইতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। আন্তর্জাতিক রুট ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে বিশেষ করে ঢাকা থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, সৈয়দপুর, যশোর ও রাজশাহী ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

এখানে উল্লেখ্য আজ ১৯ এপ্রিল থেকে ঢাকা থেকে চেন্নাই রুটে অতিরিক্ত চারটি ফ্লাইটসহ সপ্তাহে মোট ১১ টি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।

;

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ঋণ আর নয়, এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেবার পালা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ঋণ আর নয়, এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেবার পালা

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ঋণ আর নয়, এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেবার পালা

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে চলমান বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনের প্রাক্কালে সারাবিশ্বে নাগরিক সমাজ তাদের ঋণ ব্যবস্থার সমালোচনায় প্রতিবাদ সমাবেশ করছে আজ ১৯ এপ্রিল। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এছাড়াও আজ বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় সারাবিশ্বে একযোগে টুইটারে প্রতিবাদ বার্তা প্রকাশ করবে বৈশ্বিক নাগরিক সমাজ। তাদের মূল দাবি, জনগণের ওপর আরোপিত অনৈতিক ঋণ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কারণ, বিশ্বের দরিদ্রদের প্রতি বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের দেনা রয়েছে।

এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট এন্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, কোস্ট ফাউন্ডেশন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও সিপিআরডি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান এবং সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ। সভায় বক্তব্য রাখেন, জয় বাংলা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লাভলি ইয়াসমিন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনত কুমার ভৌমিক, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের ইকবাল ফারুক, বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আরা রুমি, সিপিআরপি’র শেখ নূর আতাইয়া রাব্বি, এবং বাংলাদেশ ভুমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি: ফয়েজ আহমেদ খান।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনত কুমার ভৌমিক তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীর আগমনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ঋণ প্রস্তাব করা হচ্ছে। এসমস্ত সমস্যার জন্য আমরা কোনো অংশে দায়ী নই। তাহলে এর জন্য আমরা কেন ঋণ গ্রহন করব? এর জন্য যারা দায়ী, তাদের উচিত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।

বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আরা রুমি বলেন, উন্নত দেশ জার্মানি যেখানে ঋণের সুদ দেয় গড়ে মাত্র ১.৫%, আমেরিকা দেয় ৩.১%,  সেখানে আফ্রিকার দেশগুলো গড়ে সুদ দেয় ১১.৬%, এশিয়ার দেশগুলো ৬.৫%। যত দরিদ্র দেশ, তাদের সুদের হার তত বেশি। এর কারণ, পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আর ঋণ না দেয়ায় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থেকে তারা উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ করছে।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো ঋণ শোধ করে মূলত তাদের রপ্তানী আয় থেকে। গত এক দশকে তাদের সেই সক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছে। ২০১০ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ ছিল তাদের রপ্তানীর ৭১%, যা ২০২২ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১১২%। অর্থাৎ, ইতিমধ্যে আয়ের তুলনায় অনেক বেশি ঋণ তারা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে এবং ঋণ করেই যাচ্ছে।

সভা সঞ্চালনাকালে কোস্ট ফাউন্ডেশনের মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের ঋণের সুদ পরিশোধ করতেই তাদের সম্পদ শেষ করে ফেলছে। বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা ১৩৯টি দেশ তাদের রাজস্ব বাজেটের ৩৫% ব্যয় করে এই ঋণ পরিশোধ খাতে। নিম্ন আয়ের দেশ ও নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের ব্যয় হয় যথাক্রমে ৫৭.৫% এবং ৪৪.৫%। তিনি বলেন, আমরা দরিদ্র জনগণের উপর আরোপিত এই গণঋণ প্রত্যাখ্যান করছি, কারণ দারিদ্রের পেছনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের দায় রয়েছে। ঋণ নয়, তাদের উচিত ঐতিহাসিক দেনা পরিশোধ করা।

আজ সকাল দশটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে, আজ সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় এক যোগে টুইটারের মাধ্যমে যে প্রতিবাদের ঝড় তোলা হবে, তাতে সর্বস্তরের সকল মানুষকে অংশগ্রহনের আহ্বান জানানো হয়।

;

‘২৮৫ বিজিপি ও সেনাসদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত পাঠানো হবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ঢাকা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৫ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর সদস্যকে ২২ এপ্রিল নৌপথে ফেরত পাঠানো হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ব জোড়া শেখ হাসিনার আসন খানি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ সদস্যকে ফেরত নিতে আশ্বস্ত হয়েছে দেশটি। আগামী ২২ এপ্রিল আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্য ও সেনা বাহিনীর সদস্যদের জাহাজ যোগে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে। এবিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। যে জাহাজটি তাদের নিতে আসবে। সে জাহাজে মিয়ানমারে আটকে থাকা ১৫০ জন বাঙালিকে নিয়ে আসা হবে।

;