‘হজে অনিয়ম বন্ধে তৃতীয় পক্ষ নয়, এজেন্সির সঙ্গে লেনদেন করুন’



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম, বার্তা২৪.কম
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম/ ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৭ সালের হজ মৌসুমে হজযাত্রার শেষ দিকে ‘প্রশিক্ষণের নামে ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের কাছ থেকে ৩০০ করে টাকা নিয়ে তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে’ বলে মন্তব্য করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম। সেবারই প্রথম হাবের মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি।

 

তিনি হিসাব করে দেখান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণের নামে প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ৩০০ করে সর্বমোট ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায় করেছে। কিন্তু এর বিনিময়ে হজযাত্রীদের কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তার এই প্রতিবাদ দারুণভাবে কাজে লাগে। হজ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয় আশকোনা হজক্যাম্পসহ দেশের জেলাগুলোতে। এমনকি কোনো হজযাত্রী ওই প্রশিক্ষণে অংশ নিলে তাকে ৩০০ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

এভাবে হজের মতো পবিত্র বিষয় নিয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কথা প্রায়ই শোনা যায়। বিষয়টি বেশ উদ্বেগ সৃষ্টির মতো। হজ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অফিসভিত্তিক সক্রিয় সিন্ডিকেটের পাশাপাশি একশ্রেণির বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতার মুখে মক্কা-মদিনায় হাজীদের নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।

শুধুমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য এবং বেশিরভাগ মুসলমান বছরে একবার যান বলে এজেন্সিগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন না। নীরবে সহ্য করেন।

আল্লাহপ্রেমী মানুষদের এ সরলতাকে পুঁজি করে অনৈতিক ব্যবসা ও দুর্নীতি বন্ধ করতে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

বার্তা২৪.কম এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলছিলেন হাব-এর মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।

হজযাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘হজে অনিয়ম বন্ধে কোনো তৃতীয় পক্ষ নয়, সরাসরি এজেন্সির সঙ্গে লেনদেন করুন। দেখবেন হজ ব্যবস্থাপনায় কোনো ত্রুটি থাকবে না।’

মক্কা-মদিনায় হাজীদের জন্য ভাড়া করা বাড়ির মান, খাবারের মান এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘তারপরও আরও ভালো করার চেষ্টা করতে হবে এজেন্সি কর্তৃপক্ষের। সেই সঙ্গে হজে যাওয়ার উদ্যোগের শুরু থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত হাজীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন তা নিশ্চিত করার জন্য হাব কাজ করছে।’

একদিকে চলছে হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন, অন্য দিকে আগামী ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হাব-এর দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য হাবের বর্তমান কমিটির মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমকে একটি প্যানেলের প্রধান হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

হজ এজেন্সি, হজযাত্রী ও হজ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে সোচ্চার এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম কুমিল্লা সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মরহুম মাওলানা রশিদ আহমেদের ছেলে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার বড় তসলিম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে উচ্চ শিক্ষার্থে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে।

সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইর্য়ক থেকে পড়াশোনা শেষ করে নিজেকে গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা হিসেবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ডাইনেস্টি ট্রাভেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসাইন তসলিম হাবের নেতৃত্বে আসেন ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল।

হাব নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। বিভিন্ন এজেন্সির মালিক ভোটারদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আসন্ন হাব নির্বাচনে একটি প্যানেলের প্রধান অর্থাৎ সভাপতি হিসেবে ঘোষিত শাহাদাত হোসেন তসলিম ‘অপ্রতিদ্বন্দ্বী’ প্রার্থী।

হাব মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে শাহাদাত হোসেন তসলিম হজ এজেন্সি ও হাজীদের কল্যাণে নানামুখি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ও তা বাস্তবায়ন করেছেন। তার শক্ত অবস্থানের কারণে হাজীদের ট্রলি ব্যাগ নিয়ে বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। বন্ধ হয়েছে কোটা ও রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে অনৈতিক বাণিজ্য।

হাবের যুক্তির প্রেক্ষিতে এবার বিমান ভাড়া ১০ হাজার টাকা কমানো হয়েছে, হাজীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রথা বাতিল করা হয়েছে। হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন সার্ভার সব সময় খোলা রাখা ও সর্বশেষ এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর সংখ্যা দেড়শ জনের স্থলে ১০০ জন করার সিদ্ধান্তে সৌদি আরবের অনুমোদনও তার অন্যতম সফলতা।

বিগত দুই হজ মৌসুমে হজ কার্যক্রমে নিজে দায়িত্ব নিয়ে সৌদি দূতাবাসে ছুটোছুটি করে হাজীদের ভিসা করিয়ে শেষ ফ্লাইটে তিনি হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার ঘটনাও সর্বমহলে প্রশংসিত হয়।

সর্বশেষ ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদি আরব থেকে ঘুরে এসেছেন গতমাসে। সৌদি সফরের প্রাপ্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আশা করছি চলতি হজ মৌসুমেই বাংলাদেশ অতিরিক্ত হজ কোটা পাবেন। এ বিষয়ে সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে মিনায় হাজীদের দ্বিতল খাটে থাকার বাধ্যবাধকতা থেকে বাংলাদেশি হাজীদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রী আমাদের বলেছেন, অতীতে যা হওয়ার হয়েছে, ভবিষ্যতে মক্কার মুয়াসসাসা ও মদিনার আদিল্লা অফিসে বাংলাদেশি হজ এজেন্সি কর্তৃপক্ষকে আর কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হতে হবে না।

প্রথা অনুযায়ী হাব নির্বাচনে শুধুমাত্র প্যানেল প্রধানের (সভাপতি) নাম ঘোষণা করা হয়। তার নেতৃত্বে অন্যরা সদস্য হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনে বিজয়ীরা পরে মহাসচিব নির্বাচিত করাসহ কেবিনেট গঠন করেন।

আসন্ন হাব নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হলে তিনি আর কী কী করতে চান জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মহাসচিব পদে দায়িত্বপালনকালে হজ এজেন্সি ও হাজীদের কল্যাণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছি। সব ধরনের অন্যায়-অপকর্মের ঘোর বিরোধী ছিলাম। কোনো লোভ করিনি, নিজে সৎ ছিলাম; ভবিষ্যতেও সৎ থাকবো- ইনশাআল্লাহ

সভাপতি নির্বাচিত হলে শাহাদাত হোসেন তসলিম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি কাজ করতে চান। এসব কাজের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে তিনি সৌদি সরকারের সঙ্গে শুরু করেছেন এবং আলোচনা অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়েছে। কাজগুলো হলো-

এক. বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশনের সব কাজ সৌদি আরবে না করে বাংলাদেশেই সম্পন্ন করা। ফলে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে হজযাত্রীদের আর সৌদি বিমানবন্দর যেয়ে ইমিগ্রেশনের জন্য কষ্ট করতে হবে না।

দুই. হজ ও ওমরাহ দু’বার করলে পরের বছর হজযাত্রীদের অতিরিক্ত দুই হাজার রিয়াল পরিশোধ করতে হয়। এক্ষেত্রে দুই হাজার রিয়াল যেন না দিতে হয় সেই ব্যপারে আলোচনা চলছে।

তিন. এজেন্সির মালিকরা সাধারণত মোনাজ্জেম (হজ ব্যবস্থাপক) হয়ে থাকেন। তাদের সৌদি আরবে বাড়িভাড়াসহ আনুষঙ্গিক কাজ করতে যে স্বল্প মেয়াদে ভিসা দেওয়া হয় তাতে তারা কাজ শেষ করতে করতে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে তারা হাজিদের সেবায় মনোযোগ দিতে পারেন না। তাদের ভিসা ছয় মাস করার জন্য তিনি প্রচেষ্টা চালাবেন।

চার. হজযাত্রী পরিবহনে থার্ড ক্যারিয়ার যুক্ত করা।

ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ ও হজ এজেন্সির মালিকদের সহযোগিতায় হজ কার্যক্রম যেভাবে সুষ্ঠু ও সুন্দর হয় তার সব প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। তার প্রত্যাশা, হজের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ও হজফ্লাইট নিয়ে জটিলতাসহ হজ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এবার আর কোনো ঝামেলা হবে না।

   

ময়মনসিংহে পিকআপ চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় আতিক রহমান (৬০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আবুল মুনসুর নামে এক শিক্ষক আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ -ফুলবাড়িয়া সড়কের উপজেলার দশমাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত আতিক রহমান উপজেলার বালিয়ান ইউনিয়নের বৈদ্যবাড়ী গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।

ফুলবাড়িয়া থানার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়মনসিংহ থেকে মোটরসাইকেল করে দুইজন ফুলবাড়িয়া ফিরছিলেন।
এসময় ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কের দশমাইল এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ময়মনসিংহগামী মাছের পোনাবাহী একটি দ্রুতগতির পিকআপ ভ্যান মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী আতিক রহমান মারা যান। মোটরসাইকেল চালক আবুল মুনসুর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

ওসি রাশেদুজ্জামান আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক পিকআপ জব্দ করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

;

কেসিএমসিএইচ'র সঙ্গে বেক্সিমকো এলপিজির অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কর্মীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছে বেক্সিমকো এলপিজি।

এই চুক্তির অধীনে, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বেক্সিমকো এলপিজির সব কর্মীর জন্য বিশেষ ছাড়ে তাদের অন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে। এছাড়া অফিসের পরিচয় পত্র দেখিয়ে কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরাও বিশেষ ছাড়ে চিকিৎসা সেবার সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মোস্তফা কামাল ও ডা. এম এ আলী। আর বেক্সিমকো এলপিজির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বেক্সিমকো এলপিজির মংলা প্ল্যান্টের প্ল্যান্ট ম্যনেজার আবু তাহের মোহাম্মদ ফারুক, সিসিও এম মুনতাসির আলম এবং অ্যাডমিন জিএম আসাদ-উজ-জামান।

;

ভাইয়ের কাঁধে চড়ে বলীখেলা দেখল ছোট্ট দুর্জয়!



সীরাত মঞ্জুর, স্টাফ করেপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চতুর্দিকে হাজার হাজার মানুষ। চলছে ঢোলের মাতম। মাঝখানে উঁচু মঞ্চের দিকে সবার চোখ। বিপরীতে দর্শক সারিতে দেখা মিললো ভিন্ন কিছুর! ছোট্ট এক শিশুকে নিজের কাঁধে চড়িয়ে বলীখেলা দেখাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারায়ন। মূলত ছোট্ট মামাতো ভাই দুর্জয়ের ইচ্ছে পূরণ করতে তাকে কাঁধে করে বলীখেলা দেখাতে নিয়ে আসেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বরের বলীখেলার ১১৫তম আসরে।

দুর্জয়ের বয়স ৭ বছর। এবার প্রথম নয়, আগেও সে বেশ কয়েকবার এই নারায়নের কাঁধে চড়েই বলীখেলা দেখতে আসে। দুর্জয় বার্তা২৪.কমকে বলে, ‘আমি বলীখেলা দেখতে এসেছি। ভাইয়ার কাঁধে চড়ে দেখেছি। গতবারও ভাইয়া আমাকে নিয়ে এসেছেন। খুব ভাল লাগছে।’

নগরীর হাজারী গলি থেকে দুর্জয় দত্তকে নিয়ে এসেছেন ফুতাতো ভাই নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘ও ছোট হওয়ায় একলা দেখতে আসতে পারে না। তাই, আমি ছোট ভাইকে আনন্দ দিতে এবং তার ইচ্ছে পূরণ করতে এবারও নিজের কাঁধে চড়িয়ে বলীখেলা দেখাতে নিয়ে এসেছি। আমি প্রতিবছর দুর্জয়কে নিয়ে আসি। অন্যান্য বার মঞ্চ এলাকায় ঢুকতে কষ্ট হত। পুলিশকে বলে এবার কোনো রকম অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তবে, এবার মঞ্চ আরেকটু উঁচু হলে দূর থেকে দেখতে সুবিধা হত।’

এবারের বলীখেলার ফাইনালে ১১ মিনিট শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর স্বেচ্ছায় হার মানেন রাশেদ। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বাঘা শরীফকে। তাঁদের দুজনই কুমিল্লার। আর সীতাকুণ্ডের রাসেলকে হারেয়ে এবারও তৃতীয় হন খাগড়াছড়ির সৃজন বলী।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরীর লালদীঘি বলীখেলা প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নবীন-প্রবীন মিলে প্রায় ৮৪ জন বলী অংশ নেন। এর আগে বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার ১১৫ তম আসর উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। উদ্বোধক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর।

মূলত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশীর হাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। এরপর, ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি ১২ বৈশাখ চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে জব্বারের বলীখেলা। যদিও করোনা মহামারীর কারণে ২০২০-২০২১ সালে বলীখেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। পরের বছর ২০২২ সাল থেকে আবার নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে জব্বারের বলীখেলা। এ বছর জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসর বসেছে।

;

সাজেকে সড়কে নিহত ৬ জনের বাড়ি ময়মনসিংহে, এলাকায় শোকের মাতম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটির সাজেকের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের বাড়িই ময়মনসিংহে। এদের মাঝে ৫ জন ঈশ্বরগঞ্জের ও একজন গৌরীপুর উপজেলার। নিহতরা হওয়া সবাই নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন বলে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাজেকের নব্বই ডিগ্রি এলাকায় সাজেক-উদয়পুর সীমান্ত সড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার সময় শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ১০০ ফুট খাদে পড়ে ৯ জন নিহত হন। আহত হন আরো ৮ জন। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের খবর পরিবারে এসে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

নিহতরা হলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের রিয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে এরশাদুল (৪২), তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গিরিধরপুর গ্রামের শহীদুল্লাহ'র ছেলে শাহ আলম (২৮), একই ইউনিয়নের শ্রীফুরজিথর গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (২১), মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে নয়ন মিয়া (২০), মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মোহন মিয়া (১৭)। গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে তপু হাসান (১৭)।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মরদেহ বাড়িতে না পৌঁছালেও পরিবারে শোকের মাতম চলছে। শুধু তা-ই নয়, এমন মর্মান্তিক খবরে এলাকাতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতের খবর শুনে গত রাত থেকেই আশেপাশের লোকজনসহ দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষজন।

তারুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রানা বলেন, সাজেকের দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি আমার ইউনিয়নে। এই ঘটনায় আমি নিজেও খুবই মর্মাহত।

বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুল হক ভুইয়া মিলন বলেন, আমার ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের রিয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে এরশাদুল সাজেক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। শুনেছি মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরছে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে থেকে প্রতি পরিবারে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড় পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক নিহতদের পরিবারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে'।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় মইলাকান্দা ইউনিয়নের একজন মারা গেছেন। আরেকজন আহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন।

;