বুকে পাথর বেঁধে মেয়েকে খাঁচায় বন্দী করে রাখি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, দিনাজপুর, বার্তা২৪.কম
খাঁচায় বন্দী নুর-এ-জান্নাত। ছবি: বার্তা২৪.কম

খাঁচায় বন্দী নুর-এ-জান্নাত। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শিশুটির নাম নুর-এ-জান্নাত। বয়স ৭ বছর। এই বয়সে তার অন্য শিশুদের মতো বাড়ির আঙিনায় হেসে খেলে বড় হওয়ার কথা। কিন্তু জান্নাতের ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম। এই অল্প বয়সেই সে এক জটিল রোগে ভুগছে। এ কারণে সব সময় তাকে মায়ের কোল অথবা বাঁশের খাঁচায় বন্দী হয়ে থাকতে হয়।

বলছিলাম দিনাজপুর শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ১০ নং কমলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়দেবপুর সালিম পাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিন মজুর সিদ্দিক আলী ও ফেন্সিয়ারা বেগমের একমাত্র মেয়ে নুর-এ-জান্নাতের কথা।

জান্নাত সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। এ কারণে কিছুক্ষণ পরপর বিচলিত হয়ে নিজের শরীরে নিজে আঘাত করে সে। কখনো নখ দিয়ে আঘাত করে নিজের মুখমণ্ডল ও শরীর রক্তাক্ত করে, কখনো আবার দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে অচেতন হয়ে পড়ে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত তৈরি হয়েছে। তবে টাকার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছে না দরিদ্র বাবা সিদ্দিক আলী।

জানা গেছে, জন্মের ১ বছর বয়সের মাথায় শিশুটির মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করে তার বাবা-মা। কিছুক্ষণ পরপর নিজের শরীরে আঁচড় কাটে। সবচেয়ে বেশি ক্ষত করে মুখমণ্ডলে। কোল থেকে নামতে চায় না, খেতে চায় না। এভাবে দিন যেতে থাকে। পরে ডাক্তার, কবিরাজের দ্বারে দ্বারে ছোটাছুটি করতে থাকে তার বাবা-মা। শিশুটির বর্তমান বয়স ৭ বছর দুই মাস।

এদিকে মেয়ের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে রীতিমতো পথে বসেছে তার বাবা-মা। অর্থাভাবে বর্তমানে জান্নাতের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে।

জান্নাতের মা ফেন্সিয়ারা বলেন, ‘একটু পর পর জান্নাত গাছ কিংবা শক্ত কিছুর সঙ্গে মাথা ঠুকিয়ে রক্ত বের করে। মাঝে মাঝে নখ দিয়ে নিজের শরীর কিংবা মুখে আঘাত করে। এমনকি চুলার মধ্যেও হাত ঢুকিয়ে দেয়। তাই আমি যখন সংসারের কাজ করি তখন বাধ্য হয়েই হাত বেঁধে জান্নাতকে একটি বাঁশের খাঁচার মধ্যে রাখি।’

তিনি বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসার জন্য আমার ইউনিয়নের দাইনুর এলাকার সোহেল ও খাজি হোসেন কবিরাজকে ইতোমধ্যে সমিতি থেকে লোন করে টাকা দিয়েছি। আমার স্বর্ণের বানানো হাতের চুড়ি ও কানের দুল পর্যন্ত নিয়ে গেছে তারা। এখন ফোন ধরে না। বাচ্চাটাকে দেখতেও আসে না।’

ফেন্সিয়ারা বলেন, ‘বুকে পাথর বেঁধে আমার একমাত্র সন্তানকে বাঁশের খাঁচায় বন্দি করে রাখি। আমি মা, ওর কী পরিমাণ কষ্ট হয় সেটা তো শুধু আমিই বুঝি।’ এ সময় মেয়ের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন তিনি।

জান্নাতের বাবা সিদ্দিক আলী জানান, ‘দিনাজপুর, রংপুর, পার্বতীপুরের কত বড় বড় ডাক্তার কবিরাজ শেষ করি ফেলাইছি। কিন্তু ছাওয়া হামার ভালো হয় নাই। ডাক্তার খালি কহেছে ভালো হয়্যা যাইবে। গাই-বাছুর, ছাগল বেচি (বিক্রি) শেষ করি ফেলাইছি। টাকার অভাবে আর চিকিৎসা করির পারছিনা। আপনারা হামারে একটু সাহায্য করেন ভাই।’

   

কুয়াকাটায় জেলের জালে ২৬ কেজির কোরাল



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, (কলাপাড়া-পটুয়াখালী)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালির কুয়াকাটায় বঙ্গোপসাগরে রাসেল মাঝি (৩৫) নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১.৩০ মিনিটে কুয়াকাটা মেয়র মৎস্য মার্কেটের মনি ফিস আড়তে মাছটি নিয়ে আসা হয়। এসময় মাছটি এক নজর দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। পরে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী বিক্রম চন্দ্র নিলামের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বঙ্গোপসাগরের বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় মাছটি ধরা পড়ে।

মাছ পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেল মাঝি বলেন, প্রতিদিনের মত গত সোমবার (২২ এপ্রিল) ধুলাস্বার ইউনিয়নের বাবলাতলা বাজার থেকে (মায়ের দোয়া) নামের ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে যাই। পরে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় জাল ফেলার পর অন্যান্য মাছের সঙ্গে এ কোরাল মাছটি ধরা পড়ে। মাছটির ওজন বেশি হওয়ায় আমাদের ট্রলারে তুলতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগেও আমার জালে ১০ থেকে ১৫ কেজি ওজনের কোরাল মাছ ধরা পড়েছিলো। তবে আমার জালে ধরা এটিই সবচেয়ে বেশি ওজনের কোরাল। মাছটি খুব ভাল দামে বিক্রি করেছি। এত বড় মাছ পেয়ে আমার ট্রলারে থাকা জেলেসহ আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।

মাছটি ক্রয় করা ব্যবসায়ী বিক্রম চন্দ্র বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মাছের ব্যবসা করি, এত বড় কোরাল আসলে সব সময় পাওয়া যায় না। মাছটি দেখেই আমার পছন্দ হয়েছে। তাই নিলামে আমিই বেশি দাম হেঁকে এ মাছটি ক্রয় করেছি। মাছটি বিক্রির জন্য আজই ঢাকায় পাঠাবো। আশা করছি আমি ভালো মানের লাভ করতে পারব।

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, কোরাল মাছ খুবই সুস্বাদু। শিশুদের মানসিক বিকাশে কোরাল মাছ গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি বৃষ্টি হলে জেলেদের জালে ইলিশের পাশাপাশি আরও বড় বড় মাছ ধরা পড়বে।

;

বিশ্বনাথে নারী কাউন্সিলরের মামলায় ৭ জনের জামিন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়রের গাড়ি চাপায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগে নারী কাউন্সিলরের দায়ের করা মামলায় ৮ জনের মধ্যে দুই কাউন্সিরসহ ৭ জনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট প্রথম আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মামলার প্রধান আসামি মেয়র মুহিবুর রহমান আদালতে জামিন আবেদন করেননি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুমন পারভেজভ

জামিন প্রাপ্তরা হলেন - কাউন্সিলর ফজর আলী, কাউন্সিলর বারাম উদ্দিন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও পৌরসভার উদ্যোক্তা সুরমান আলী, দক্ষিণ মীরেরচর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে মিতাব আলী, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত তবারক আলীর ছেলে আনোয়ার আলী, রহমাননগর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে মেয়রের গাড়ি চালক হেলাল মিয়া ও জানাইয়া গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে আব্দুস শহিদ।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্বনাথ থানায় বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করে নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগম। মামলা নং-(৫)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি রাখা হয় আরও ৪/৫ জন।

এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট সুমন পারভেজ বলেন, এই মামলার প্রধান আসামি মেয়র মুহিবুর রহমান জামিন আবেদন করেননি। তবে মেয়র ছাড়া বাকি ৭ জন আসামি জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

;

নারী চিকিৎসককে ইভটিজিং করায় যুবকের কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী চিকিৎসককে হয়রানি করার অপরাধে সাগর হোসেন (২৬) নামে এক যুবককে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত সাগর হোসেন দৌলতপুর থানা বাজার এলাকার বিপ্লব হোসেনের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওবায়দুল্লাহ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তোহিদুল ইসলাম জানান, ওই যুবক বেশ কিছু দিন ধরে আমাদের এক নারী চিকিৎসককে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে হাসপাতালে এসে একইভাবে তাকে হয়রানি করতে গেলে আমরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করি।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওবায়দুল্লাহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বখাটে সাগর হোসেনকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

;

কটিয়াদীতে চেয়ারম্যান-মেম্বারের দ্বন্দ্ব, এমপির সামনেই চেয়ার ছোড়াছুড়ি



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কিশোরগঞ্জ-২, কটিয়াদী পাকুন্দিয়া আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এড. সোহরাব উদ্দিনের সামনেই করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ও এক মেম্বারের সমর্থকদের চেয়ার ছুড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লা ও একই ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার মাহবুবুর রহমান পানুর মধ্যে সৃষ্ট পূর্ব বিরোধ মীমাংসার লক্ষ্যে করগাঁও হাইস্কুল মাঠে এক শালিস দরবার আয়োজন করা হয়। পরে শালিস দরবারের এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় সাবেক সাংসদ মেজর অব. আখতারুজ্জান রঞ্জন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. এম এ আফজল, কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লায়ন মো. আলী আকবর, এড. মাহমুদুল ইসলাম জানু ও স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তি বর্গসহ কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শালিসের এক পর্যায়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লাকে কটাক্ষ করে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠি চার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভাট্টা এলাকায় এক ব্যক্তির নিকট পাওনা টাকা আদায় ও ভিজিডি চাল বরাদ্দের বিষয় নিয়ে গত রমজান মাসে করগাঁও ইউনিয়নের ভাট্টা ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার মাহাবুবুর রহমান পানুকে পরিষদ থেকে ধরে নিয়ে করগাঁও এলাকার কিছু লোক অপমান অপদস্ত করে।

তাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদ ও উক্ত ঘটনার কোনো বিচারও করে নাই। বিষয়টি অন্যান্য মেম্বারসহ একাট্টা হলে করগাঁও ও ভাট্টা এলাকায় অচলাবস্থাসহ উত্তেজনা বিরাজ করে। সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে এমপিসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গ্রামবাসী শালিস দরবারে বসে। কিন্তু চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে আক্রমনাত্মক কথার কারণে শালিস দরবার পন্ড হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান নাদিম মোল্লার সাথে কথা বলতে চাইলে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তবে করগাঁও এলাকায় বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

;