জাল টাকা দিয়ে অভিনব কায়দায় পণ্যক্রয়, ধরে ফেললো পুলিশ
অনলাইন শপিং সাইটে পণ্য বিক্রি করতে গিতে প্রতারণার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিক্রেতার সম্পর্কে জেনে ক্রেতা সেজে প্রতারণা করছে এক দল প্রতারক। পণ্য হাতে নিয়ে টাকা না দিয়েই চলে হচ্ছে। আবার কখনো কৌশলে জাল ও ছেঁড়া টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে তারা।
সম্প্রতি তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মাদপুর থানা, শেরেবাংলা নগর থানা এবং তেজগাঁও থানাতে এমন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এসেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সর্বশেষ আনিমা আফরিন নামের এক জন নারী। তার ব্যবহৃত আই ফোন ৭+ মোবাইলটি ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যে বিক্রয় ডট কম ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন পোস্ট করে। ৪৫ হাজার টাকা দিয়েই পণ্যটি কিনতে সন্ধ্যার রাজধানীর শ্যামলী ক্রসিংয়ে দেখা করে দুই তরুণ। ৪০ হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে ফোনটি হাতে নেয় এই প্রতারক চক্র। আনিমা টাকাটা বুঝে পাবার পর প্রতারক চক্রের একজন জন টাকাগুলো ব্যান্ডিল করে দেবার জন্য হাতে নেয়।
অন্যজন ফোনের ক্যামেরা রেজ্যুলেশন, সাউন্ড কোয়ালিটি নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। এসময় প্রতারকটি টাকার ব্যান্ডিলটা পরিবর্তন করে ফেলে।
পরে এ গুলো টাকা রাস্তার মানুষ দেখে ফেলবে বলে আনিমাকে দ্রুত টাকা গুলো ব্যাগে ভরে ফেলতে বলে।
এবার মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বাকি ৫ হাজার টাকার জন্য দুই তরুণ আনিমাকে রেখে চলে যায়। বিশ্বাস অর্জনের জন্য মোবাইলের চার্জার ও হেডফোন রেখে যায়। ঘণ্টা পর হবার পর ঐ দুই তরুণ ফিরে না আসায় আনিমার সন্দেহ হয়। এবার টাকার বান্ডেলটা দেখতে গিয়ে, প্রথমে আর শেষে দুইটা ৫০০ টাকার নোট ছাড়া বাকিসব কাগজ ও ছেঁড়া ফাটা টাকা দেখতে পায় অনিমা।
এদিকে নানা অভিযোগ পাওয়ার পর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সালমান হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে। তারা বিক্রয়ডট.কমের ক্রেতা সেজে দীর্ঘদিন ধরে এই ভাবে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেফতার কালে আনিমার ফোন সহ আরও বিভিন্ন মোবাইল ফোন পেয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা।
এবিষয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সালমান হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই প্রতারক চক্রকে ধরার জন্য ৭ দিন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি, মোবাইল ক্রয়ের নামে অনেক দিন ধরে এই ভাবে মানুষকে ঠকিয়ে আসছে তারা। প্রথমে আসল টাকা দেখালেও সুকৌশলে টাকার ব্যান্ডিল পরিবর্তন করে ছেঁড়া, জাল ও অচল টাকা দিয়ে ফোন হাতিয়ে নিত চক্রটি।