কক্সবাজারে বিদেশি পিস্তল-ইয়াবাসহ আটক ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

 

কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকা থেকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ।

এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলি, ৬টি ছুরি ও ১৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। 

সোমবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে প্রেস বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান কক্সবাজার সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার।

আটকরা হলেন, শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে আশিকুর রহমান আশিক ও তার সহযোগী একই এলাকার আবুল বশরের ছেলে সাজ্জাদ রহমান।

কক্সবাজার সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার জানান, আটক আশিকের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১২টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা করে আসছিল। আজ ভোরে আশিকের অবস্থান নির্ণয় করে এসব অস্ত্রসহ তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

   

ভাইয়ের কাঁধে চড়ে বলীখেলা দেখল ছোট্ট দুর্জয়!



সীরাত মঞ্জুর, স্টাফ করেপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চতুর্দিকে হাজার হাজার মানুষ। চলছে ঢোলের মাতম। মাঝখানে উঁচু মঞ্চের দিকে সবার চোখ। বিপরীতে দর্শক সারিতে দেখা মিললো ভিন্ন কিছুর! ছোট্ট এক শিশুকে নিজের কাঁধে চড়িয়ে বলীখেলা দেখাচ্ছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারায়ন। মূলত ছোট্ট মামাতো ভাই দুর্জয়ের ইচ্ছে পূরণ করতে তাকে কাঁধে করে বলীখেলা দেখাতে নিয়ে আসেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বরের বলীখেলার ১১৫তম আসরে।

দুর্জয়ের বয়স ৭ বছর। এবার প্রথম নয়, আগেও সে বেশ কয়েকবার এই নারায়নের কাঁধে চড়েই বলীখেলা দেখতে আসে। দুর্জয় বার্তা২৪.কমকে বলে, ‘আমি বলীখেলা দেখতে এসেছি। ভাইয়ার কাঁধে চড়ে দেখেছি। গতবারও ভাইয়া আমাকে নিয়ে এসেছেন। খুব ভাল লাগছে।’

নগরীর হাজারী গলি থেকে দুর্জয় দত্তকে নিয়ে এসেছেন ফুতাতো ভাই নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘ও ছোট হওয়ায় একলা দেখতে আসতে পারে না। তাই, আমি ছোট ভাইকে আনন্দ দিতে এবং তার ইচ্ছে পূরণ করতে এবারও নিজের কাঁধে চড়িয়ে বলীখেলা দেখাতে নিয়ে এসেছি। আমি প্রতিবছর দুর্জয়কে নিয়ে আসি। অন্যান্য বার মঞ্চ এলাকায় ঢুকতে কষ্ট হত। পুলিশকে বলে এবার কোনো রকম অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তবে, এবার মঞ্চ আরেকটু উঁচু হলে দূর থেকে দেখতে সুবিধা হত।’

এবারের বলীখেলার ফাইনালে ১১ মিনিট শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর স্বেচ্ছায় হার মানেন রাশেদ। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বাঘা শরীফকে। তাঁদের দুজনই কুমিল্লার। আর সীতাকুণ্ডের রাসেলকে হারেয়ে এবারও তৃতীয় হন খাগড়াছড়ির সৃজন বলী।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরীর লালদীঘি বলীখেলা প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নবীন-প্রবীন মিলে প্রায় ৮৪ জন বলী অংশ নেন। এর আগে বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার ১১৫ তম আসর উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। উদ্বোধক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর।

মূলত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশীর হাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। এরপর, ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি ১২ বৈশাখ চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে জব্বারের বলীখেলা। যদিও করোনা মহামারীর কারণে ২০২০-২০২১ সালে বলীখেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। পরের বছর ২০২২ সাল থেকে আবার নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে জব্বারের বলীখেলা। এ বছর জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসর বসেছে।

;

সাজেকে সড়কে নিহত ৬ জনের বাড়ি ময়মনসিংহে, এলাকায় শোকের মাতম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটির সাজেকের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের বাড়িই ময়মনসিংহে। এদের মাঝে ৫ জন ঈশ্বরগঞ্জের ও একজন গৌরীপুর উপজেলার। নিহতরা হওয়া সবাই নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন বলে জানা গেছে।

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাজেকের নব্বই ডিগ্রি এলাকায় সাজেক-উদয়পুর সীমান্ত সড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার সময় শ্রমিকবাহী মিনি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ১০০ ফুট খাদে পড়ে ৯ জন নিহত হন। আহত হন আরো ৮ জন। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের খবর পরিবারে এসে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

নিহতরা হলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের রিয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে এরশাদুল (৪২), তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গিরিধরপুর গ্রামের শহীদুল্লাহ'র ছেলে শাহ আলম (২৮), একই ইউনিয়নের শ্রীফুরজিথর গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (২১), মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে নয়ন মিয়া (২০), মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মোহন মিয়া (১৭)। গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দা এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে তপু হাসান (১৭)।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মরদেহ বাড়িতে না পৌঁছালেও পরিবারে শোকের মাতম চলছে। শুধু তা-ই নয়, এমন মর্মান্তিক খবরে এলাকাতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতের খবর শুনে গত রাত থেকেই আশেপাশের লোকজনসহ দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষজন।

তারুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রানা বলেন, সাজেকের দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি আমার ইউনিয়নে। এই ঘটনায় আমি নিজেও খুবই মর্মাহত।

বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুল হক ভুইয়া মিলন বলেন, আমার ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের রিয়াছত আলী ভূইয়ার ছেলে এরশাদুল সাজেক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। শুনেছি মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরছে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে থেকে প্রতি পরিবারে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড় পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক নিহতদের পরিবারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে'।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনায় মইলাকান্দা ইউনিয়নের একজন মারা গেছেন। আরেকজন আহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন।

;

বন বিভাগের গেটের দেওয়ালে চাপা পড়ে শিশুর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় বন বিভাগের গেটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে জুরাইন আহমেদ (৪) নামে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলা বন বিভাগের গেটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে এ ঘটনা ঘটে।

জুরাইন আহমেদ খোকসা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মাঠপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী উজ্জলের ছেলে।

নিহত শিশুর চাচা আজিজুল ইসলাম জানান, শিশুরা খেলছিলো আবার কেউ ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলো। এসময় অসাবধানতাবশত গেটের গেটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে নিহত হয়।

বন কর্মকর্তার অফিসটি সব সময় অরক্ষিত থাকে। কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায় জুবায়েরের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

উপজেলা বন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, এক বছর আগে কুষ্টিয়ার এক ঠিকাদার গেট নির্মাণ করেছে।

খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা বলেন, এটি একটি দুর্ঘটনা। গেট নির্মাণে ত্রুটি থাকতে পারে। ঠিকাদার গেটের পিলার এমনভাবে তৈরি করেছেন, মনে হচ্ছে পিলার দুটি মাটির ওপরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। নাড়া দিলেই নড়ছে। বন কর্মকর্তার গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

বাঘা শরীফের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে দুই গুরুর ত্যাগ!



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাবা-মায়ের দেওয়া নাম মোহাম্মদ শরীফ। কিন্তু বলীখেলার রিংয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপের কারণে সেই আসল নামটিই এখন বলতে গেলে হাওয়া। সবার মুখে মুখে রটে তাঁর নামটাই হয়ে গেছে ‘বাঘা শরীফ’। কুমিল্লার হোমনার এই ডানপিটে হৃষ্টপুষ্ট শরীরের তরুণ এবার প্রথমবার অংশ নিয়েছিলেন ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলায়। পরেরটাতো ইতিহাস। একে একে চ্যালেঞ্জ রাউন্ড, সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল জিতে ইতিহাসের পাতায় যেন নিজের নামটা খুঁদাই করে গেলেন কুমিল্লার মানুষের ‘প্রিয় বলী’ বাঘা শরীফ। গল্পটা যেন সেই পুরনো প্রবাদের মতো-আসিলাম, দেখিলাম, জয় করিলাম!

অথচ বাঘা শরীফের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথাও ছিল না। বলীখেলায় অংশ নিতে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে এলেও চ্যালেঞ্জ রাউন্ডে তাঁকে রাখেনি আয়োজক কমিটি। তাতে মন খারাপ হয়ে যায় শরীফের। সেটি দেখে বাঘা শরীফকে সুযোগ দিতে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী নিজের নামও প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু তাতেও আয়োজকদের মন গলেনি। শেষ পর্যন্ত গত আসরের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীও বাঘা শরীফকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রত্যাহার করে নেন নিজের নাম। অবশেষে এক প্রকার বাধ্য হয়ে শাহজালালের অনুরোধ রাখে আয়োজক কমিটি। আর এতেই ভাগ্য খুলে যায় বাঘা শরীফের। চ্যালেঞ্জ রাউন্ডে খেলতে নেমেই কক্সবাজারের নুর মোহাম্মদ বলীকে হারিয়ে বাঘা শরীফ উঠে যান সেমিফাইনালে। আর সেমিফাইনালে একইভাবে হারান সীতাকুণ্ডের রাসেল বলীকে।

ফাইনাল শুরু হতেই রিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বাঘা শরীফকে নানা দিক নির্দেশনা দিতে থাকেন শাহজালাল বলী। অদূরে দাঁড়িয়ে জীবন বলীও সমর্থন জানান শরীফকে। আর এতেই কিনা দ্বিগুণ উৎসাহে রাশেদকে চাপে রাখেন শরীফ। অবশ্য রাশেদও কয়েকবার চেষ্টা করেন ‘মরণকামড়’ দেওয়ার। কিন্তু শরীফের বলের কাছে পরাস্থ হন বারবার। এভাবে ১১ মিনিট ধরে চলতে থাকে ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’। কিন্তু থামতে যে হবেই! শেষ পর্যন্ত রাশেদ পারলেন না আর, মেনে নেন হার। এর মধ্যে দিয়ে ঐতিহাসিক এই বলীখেলা পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

শরীফ বলী জিততেই আনন্দে ফেটে পড়েন শাহজালাল ও জীবন বলী। জানতে চাইলে জীবন বলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বাড়ি থেকে আসার আগে শরীফ আমাকে ফোন করেছিলেন। তার খেলার খুব আগ্রহ ছিল, সেটি জানিয়ে সহযোগিতা চেয়েছিল। আর সে খুব ভালো বলীও। কুমিল্লায় তাঁকে এক নামে চেনেন সবাই। কিন্তু তাঁকে সুযোগ দিচ্ছিল না আয়োজক কমিটি। মূলত তাঁকে সুযোগ করে দিতে আমি নিজের নাম প্রত্যাহার করি নিই। কিন্তু এরপরও সুযোগ না দেওয়ায় শাহজালাল বলীও তাঁর জন্য নাম প্রত্যাহার করে নেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের মুখ উজ্জ্বল করল শরীফ। আর আয়োজক কমিটিকেও দেখিয়ে দিল সে কত বড় বলী।’

ছবি: জীবন বলী ও শাহজালাল বলী

প্রায় একই কথা বললেন শাহাজালাল বলীও। তিনি বলেন, ‘বাঘা শরীফ আমার ছোট ভাইয়ের মতো। সে খুব আশা নিয়ে খেলতে এসেছিল। কিন্তু আয়োজক কমিটি সুযোগ দিচ্ছিল না। সেজন্য আমি নিজে না খেলে তাঁকে খেলাতে অনুরোধ জানাই। ভাগ্যিস কমিটি সেই অনুরোধ মেনে নিয়েছিল।’

দুই সিনিয়র বলীর কাছে শ্রদ্ধায় যেন নুইয়ে পড়লেন বাঘা শরীফ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শাহজালাল ভাই আমার কাছে বড় ভাইয়ের মতো। বলীখেলায় তিনি আমার গুরুতুল্য। জীবন ভাইও তেমন। তাঁদের দুইজনের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।’

বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় বাঘা শরীফ ট্রফির সঙ্গে পেয়েছেন ৩০ হাজার টাকার সম্মানীও। এই টাকায় কি করবেন এমন প্রশ্নে বাঘা শরীফ বললেন, ‘স্মৃতি হিসেবে রেখে দেবে বেশিরভাগ টাকা। আর কিছু টাকায় আমার দুই বছরের মেয়ে মিমের জন্য কাপড় কিনে নিয়ে যাব। মেয়েকে বলে এসেছিলাম চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরব। সে বুঝতে না পারলেও হেসেছিল। এখন নিশ্চয় আরও বেশি খুশি হবে।’

এবারের বলীখেলাটি হয়তো স্মরণীয় হয়ে থাকবে দুই বলীর ‘ত্যাগের’ জন্যও। খেলায় অংশ নিলে শাহজালাল আর জীবন বলীর মধ্যেই হয়তো হতো ফাইনালের লড়াই, যেটা হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। কিন্তু একজন জুনিয়রকে সুযোগ করে দিতে দুজন যেভাবে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন, সেটি ছুঁয়ে গেছে সবাইকে। দর্শকেরা তাই বললেন, এমন ত্যাগও হয়!

আর বাঘা শরীফ তো বলেই দিলেন, ‘এই ট্রফি, এই সম্মানি আমার একার নয়, এই অর্জনের পেছনে পুরো কৃতীত্ব শাহাজালাল ভাই আর জীবন ভাই। তাদের ত্যাগই আমাকে এনে দিল চ্যাম্পিয়নের সম্মান।’

নাম প্রত্যাহার করে শুধু বাঘা শরীফকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগটাই করে দিলেন না জীবন আর শাহজালাল। জানিয়ে গেলেন-লড়াই না করেও জেতা যায়!

;