ইমরান খানের বিয়ের তিন ইনিংস ও দুটি ‘রাজনৈতিক ডিভোর্স’!



এম. এম. কায়সার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সময়টা আশির দশকের মাঝামাঝি। বিশ্বসুন্দরীরা কে কেমন বর পছন্দ করেন- সেই গল্পের মাঝে হঠাৎ করে মিস অস্ট্রেলিয়ার কাছে একটা প্রশ্ন গেল; ‘‘তা আপনি এবারের ক্রিসমাসে কি উপহার পেলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন।’’

জমাট সেই আড্ডায় বেশি সময় না নিয়ে মিস অস্ট্রেলিয়ার উত্তর -‘ইমরান খান’!

ব্যস সেই তখন থেকেই ক্রিকেট আড্ডায় হ্যান্ডসাম বিষয়ক গল্পে এটা খুবই জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত একটা উক্তি হয়ে গেল।

ইমরান খান-এই নামের মধ্যেই এটা জাদুকরী আকর্ষণ। খেলার মাঠে। মাঠের বাইরে। চলাফেরায়। কথাবার্তা। হাসিতে। ব্যাটে- বলে। ব্যক্তিত্বের ছটায়-তার সবকিছু জুড়ে নায়কোচিত এক আর্কষণ!

একটু অন্যভাবে বললে-এক সময় ক্রিকেট দুনিয়ায় হ্যামিলেনের বাঁশিওয়ালা হয়ে হেঁটেছেন ইমরান খান। আর তার পেছনে বিশ্বের তাবৎ সুন্দরীদের ম্যালা ভিড়। আহা যদি একবার তাকে ছোঁয়া যায়! সেইসময় এই দৌঁড়ে জানা শোনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের নামগুলো একটু শুনি আজ আরেকবার; কলকাতায় মুনমুন সেন। মুম্বাইয়ে জিনাত আমান। আমেরিকায় সিটা হোয়াইট। ইংল্যান্ডে সুসানা কনস্টানটাইন, লেডি ক্যামম্পেল, বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এমা সার্জেট।

/uploads/files/PsONtP9hZIc6mO584Jv74NYbjIyLTBCoyY6pcSjX.jpeg

ভাবছেন ব্যাস এটুকুই! মুলত ইমরানের জীবনে প্রেমের সংখ্যা  অসংখ্য, তবে কোন প্রেমের ইনিংসই লম্বা হয়নি। এক ইনিংস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরের প্রেমের ইনিংস শুরু। কে প্রথম আর কে মাঝের জন সম্ভত সেই নামগুলোও ভুলে গেছেন ইমরান!

আমরা তাই সেই নামগুলো মনে রাখি কি করে?

এমনসব ক্ষেত্রে সাধারণত যা হয় ইমরান খানও সেই পথেই হাঁটা শুরু করলেন। বয়স ত্রিশ পেরিয়ে গেল, কিন্তু বিয়ের কথা মুখেই আনছেন না। পয়ত্রিশও হয়ে গেল। তারপরও বিয়ের প্রসঙ্গ উঠলেই জবাব কেবল রহস্য ছড়ানো মুচকি হাসি!

কারো আশা না ভেঙ্গে সবাইকে আশায় রাখা-রাসপুটিনীয় এই প্রেমের সূত্র ঠিক রেখে চল্লিশের পরও নিজেকে মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলার’-এর তালিকায় রাখেন ইমরান। অবশেষে একসময় সেই ইনিংসও শেষ হয় তার।

বিশ্বের সব গোলার্ধের তরুণী হৃদয়ে ঝড় তোলা ইমরান বউ হিসেবে বেছে নেন বৃটিশ ধনকুবেরের মেয়ে জেমিমা গোল্ডস্মিথকে। প্রথম যৌবন ইংল্যান্ডে কাটানো। অক্সফোর্ডে পড়াশোনা। কাউন্টিতে খেলা-সবকিছু মিলেই ইংল্যান্ড ছিল ইমরানের সেকেন্ড হোম। ‘প্রথম’ বিয়ের জন্যও সঙ্গী বেছে নিলেন সেখান থেকেই। ধারণা করা হচ্ছে, ইমরানের প্রেমে তার আকর্ষণেই একপ্রকার অন্ধ হয়েই জেমিমা সব ছেড়ে তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই বিয়ের সময় ইমরানের বয়স ছিল ৪২। কনে জেমিমা মোটে ২১!

/uploads/files/LURWjfIu8WamSsRteEaNmA0PzBBfJIpnk1APrRvo.jpeg

বিয়ের আগে ইমরানের দেয়া সব শর্তই কবুল করেন জেমিমা। ইহুদি ধর্ম ছেড়ে মুসলমান হোন। মুসলিম নাম হয় তার হাইকা। ১৯৯৫ সালে রিচমন্ডে পুরোদুস্তর ইমলামি কায়দায় ইমরান ও জেমিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর জেমিমা পাকিস্তানে চলে আসেন। অপরিচিত পাকিস্তানি সংস্কৃতি ও বোলচালের সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিজেকে পুরোপুরি পাল্টে ফেলেন জেমিমা। পাশ্চ্যাতের পোষাক ও চালচলনে অভ্যস্ত জেমিমা পাকিস্তানি স্টাইলের সালোয়ার-কামিজ পরা শুরু করেন। মাথায় উঠে ওড়না। ইসলামি অনুশাসন মেনে চলতে শুরু করেন, এমনকি উর্দূও শেখেন।

এরই মধ্যে ইমরান খান পাকিস্তানে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও শুরু করেন। ইমরানের রাজনৈতিক মিছিলে ওড়না মাথায় নিয়মিত জেমিমাকেও দেখা যেতে লাগল। দারুণ সুখে ভরা তাদের সংসারে দুই শিশুপুত্র জন্ম নিল-সুলায়মান ও কাশিম। বিয়ের পরও ইংল্যান্ডে যান জেমিমা। তবে বছরের বেশিরভাগ সময় তার কাটে পাকিস্তানে। ইমরান খান এই সময় রাজনীতিতে বেশি ব্যস্ত হয়ে যান। তেহরিকে ইনসাফ নামের একটি রাজনৈতিক দলও গড়ে তোলেন তিনি। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নির্বাচিতও হন। কিন্তু তার রাজনৈতিক দল শুরুতে তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। পাকিস্তানের সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফের রোষানলে পড়ে ইমরানকে জেলেও যেতে হয়। সেসময় প্রায় বছর খানেক জেমিমা ও তার সন্তানদের নিরাপত্তায় ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। ইমরান জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ফেরেন। কিন্তু সেই তখন থেকেই এই জুটির মধ্যে ভাঙ্গনের সুর শোনা যেতে লাগল।

পুর্ব-পশ্চিমের সাংস্কৃতিক বিরোধ। দ্বন্দ্ব-জীবনবোধ হঠাৎ করে তাদের দাম্পত্য জীবনে ছন্দপতন ঘটায়। সংসার জীবন নাকি রাজনীতি; এই দুইয়ের মধ্যে একটা পছন্দ বেছে নেয়ার সময় এসে দাড়ায় ইমরানের সামনে। যখন মাঠে ক্রিকেট খেলতেন তখনো এমন অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত তাকে নিতে হয়েছে। শেষমেষ রাজনীতিকেই বেছে নিলেন ইমরান। বউ বাদ। বিয়ে করার জন্য জেমিমা যেভাবে পাগলপারা হয়েছিলেন এবার ডিভোর্সের জন্যও ঠিক তেমনই ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠলেন। ইমরান- জেমিমা জুটির নবম বিয়ে বার্ষিকীর সময়টা কাটল ডিভোর্সের ফাইল নিয়ে আদালতে দৌঁড়েদৌঁড়িতে।

অবশেষে ২০০৪ সালের ২২ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এই জুটির ডিভোর্স সম্পন্ন। ইমরান ‘পরাজয়’ মেনে নিয়ে তখন জানান- জেমিমা পাকিস্তানে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার সব চেষ্টাই করেছে। কিন্তু আমার রাজনৈতিক জীবনের জন্য তার এখানে টিকে থাকাটা কঠিন হয়ে দাড়ায়। তাই আমরা সবঝোতার মাধ্যমে এই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেই। এটা আমাদের দুজনের জন্যই অত্যন্ত দুঃখজনক একটা অধ্যায়। ঘটনা। আমার ভবিষ্যৎ এবং চিন্তাভাবনা সবকিছুই জুড়েই শুধু পাকিস্তান এবং রাজনীতি।’

-তো জনগণ, কি বুঝলেন?

কেবল নিজের রাজনৈতিক জীবনকে সফল করতেই ইমরান সেই সময় নিজের প্রথম বউকে ছেড়ে দেয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সন্দেহ নেই আলোচিত এই ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের দায়ভার সেসময় পুরোটাই ইরমানের ঘাড়েই চেপেছিল। নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে সফেদ করতেই ইমরান এই ডির্ভোসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে পাকিস্তানের বিশ্লেষকদের বিশ্বাস।

/uploads/files/7M019338mI7MQiqd4XhJPxcnMk1KoKhUSGQFdEbR.jpeg

রাজনীতির ময়দানে ইমরানের পাশে স্ত্রী হিসেবে জেমিমার উপস্থিতি জনগণের মনে আস্থা জাগাতে পারেনি। তার বিয়ে এবং হঠাৎ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া-এই দুইয়ের মধ্যে পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিমাদের একটা ষড়যন্ত্র আবিস্কার করে বসে সেসময়। পাকিস্তান জুড়ে একটা প্রচলিত ধারণা ছড়িয়ে পড়ে ইহুদি ধর্মের মেয়েকে ইমরানের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব পাকিস্তানে নতুন ফর্মূলায় নিজেদের কৃর্তত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। আর এই কাজে ইমরানকে স্রেফ ঘুঁটির মতো ব্যবহার করছে পশ্চিমা শাসকরা। মুলত এই ধারণা একসময় পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় বিশ্বাসে পরিণত হয়। আর এই কারণে শুরুতে ইমরানের রাজনৈতিক দল তেহরিকে ইনসাফ পাকিস্তানে মোটেও জনপ্রিয়তা পায়নি। এই দলটি পশ্চিমাদের দালাল-এই ব্র্র্যাকেটেই তাদের উত্তরণ আটকে যায়। ইমরানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও নিশ্চিত অপমৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

সেই রাজনৈতিক ধস ঠেকাতেই ইমরান-জেমিমার ডিভোর্স!

বহুল আলোচিত সেই ডিভোর্সের পরের এক দশকের পুরোটাই ইমরান খান ব্যয় করেন তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে শক্তপোক্ত করতে। হঠাৎ করেই ২০১৫ সালে পাকিস্তানের জিও টিভির সাংবাদিক, উপস্থাপিকা ও সিনেমা প্রযোজক রেহাম খানকে বিয়ে করেন। তবে সেই বিয়ের ইনিংস বছরখানেকও টিকলো না। রেহামের আগের বিয়ে, তার স্টাইলিস্ট বাহারি এবং উদারনৈতিক জীবনযাপন ইমরান খানের রাজনীতিক পুচ্ছদের ধাঁতের সঙ্গে যায়নি। ইমরান আরেকবার আপোষ করলেন রাজনীতির সঙ্গে। রেহামের সঙ্গে তার সংসার ধর্ম টিকে মাত্র ৯ মাস। পাকিস্তানের ক্রিকেটার কাম এই রাজনীতিবিদ প্রকাশ্যে স্বীকারও করেন-‘রেহামকে বিয়ে করাটা ছিল তার জীবনের  বড় একটা ভুল সিদ্ধান্ত।’

সেই ভুল থেকেই বেরিয়ে আসতেই ‘দ্বিতীয় ডিভোর্স!’

তিন নম্বর বিয়ে ইমরান খান করেছেন চলতি বছরেই। তৃতীয় বিবির নাম বুশরা মানেকা। ভীষন পর্দানশীন, ধার্মিক। ইমরানের রাজনৈতিক দল, দর্শন এবং পাকিস্তানি ভাবধারার সঙ্গে পুরোপুরি মিল তার। বিয়ের ‘তৃতীয় ইনিংস’ ইমরানের জন্য তাহলে সৌভাগ্যই বয়ে এনেছে।

পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে ইমরান খানের বসে পড়াটা এখন নেহাৎ একটা সময়ের অপেক্ষা!

   

লক্ষ্ণৌয়ের কাছে পাত্তাই পেল না মুস্তাফিজের চেন্নাই



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘরের মাঠে চেন্নাই সুপার কিংসকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করল লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। চেন্নাইকে ১৭৬ রানে আটকে দিয়ে কুইন্টন ডি কক আর কেএল রাহুলের জোড়া ফিফটিতে এক ওভার এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা।

লক্ষ্ণৌয়ের একানা স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে টসভাগ্য স্বাগতিকদের পক্ষে ছিল। টস জিতে আগে অতিথিদের ব্যাটিংয়ে পাঠান লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক কেএল রাহুল। আইপিএলের চলতি আসরে দুইশ রানকে মামুলি বানিয়ে ফেলেছে বেশ কয়েকটি দল। তবে লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও তাদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না চেন্নাই। আইপিএলে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে এসেও সে 'ম্যাজিক ফিগার' ছোঁয়া হয়নি তাদের।

রবীন্দ্র জাদেজার ৪০ বলে অপরাজিত ৫৭ রানের সঙ্গে রাহানে (৩৬) আর মঈনের (৩০) ছোট দুটি ইনিংসে লড়াকু সংগ্রহ পায় চেন্নাই। শেষদিকে মহেন্দ্র সিং ধোনির ৯ বলে ২৮ রানের জাদুকরী ক্যামিও'র কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাতে ২০ ওভারে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৭৬।

লক্ষ্ণৌয়ের পক্ষে ৩ ওভার বল করে ১৬ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন ক্রুনাল পান্ডিয়া।

জবাব দিতে নেমে মুস্তাফিজ-তুষারদের তুলোধুনো করে ওপেনিং জুটিতেই ডি কক-রাহুল মিলে তুলে ফেলেন ১৩৪ রান। ১৫তম ওভারের শেষ বলে মুস্তাফিজ যখন ডি কককে ধোনির ক্যাচ বানিয়ে ফেরান, ম্যাচ তখন লক্ষ্ণৌয়ের করতলে। তাই তো সেই উইকেটের উদযাপনও তেমন হল না বললেই চলে। ফেরার আগে ৫৪ রান করে দিয়ে গেছেন ডি কক।

লক্ষ্ণৌকে জয়ের দোরগোড়ায় রেখে মাতিশা পাতিরানার বলে আউট হয়েছেন ৮১ রান করা লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক রাহুল। বাকি কাজটা নির্ঝঞ্ঝাটে সেরেছেন নিকোলাস পুরান (২৩*) ও মার্কাস স্টয়নিস (৮*)।

বল হাতে আরও একবার চেন্নাইয়ের সবচেয়ে খরুচে বোলার মুস্তাফিজ। একটি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৪৩ রান।

এই জয়ে লক্ষ্ণৌয়ের পয়েন্ট হয়েছে চেন্নাইয়ের সমান ৮। তবে নেট রানরেটের ব্যবধানে চেন্নাই এখন টেবিলের তিনে, আর লক্ষ্ণৌয়ের অবস্থান ৫ নম্বরে।

;

মাঠ ছাড়ল মোহামেডান, পিছিয়ে থেকেও জয়ী আবাহনী



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অঘোষিত ফাইনাল! প্রিমিয়ার হকি লিগে আবাহনী-মোহামেডানের হাইভোল্টেজ ম্যাচ নিয়ে উত্তাপ কম ছিল না। ম্যাচের আগেই রাসেল মাহমুদ জিমির তিন হলুদ কার্ডে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একচোট বিতর্ক হয়ে গেছে। অন্তত মাঠের খেলা বিতর্ক মুক্ত থাকুক, সংশ্লিষ্টদের সেটাই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু মাঠের খেলাতেও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রইল বিতর্ক। তাতে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১৭ মিনিট ২৭ সেকেন্ড আগেই শেষ হল আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ। ২-৩ গোলে পিছিয়ে থেকেও জিতল আবাহনী। এগিয়ে থেকেও শিরোপা হাতছাড়া মোহামেডানের।

মওলানা ভাসানি হকি স্টেডিয়ামে প্রথম দুই কোয়ার্টারে দুই গোল করে অনেকটা এগিয়ে যায় আবাহনী। তিন মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে আফফান ইউসুফ এবং দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আবার সেই পেনাল্টি কর্নার থেকেই পুস্কর খিসা মিমোর গোলে এগিয়ে যায় তারা।

এর মাঝে দ্বিতীয় কোয়ার্টারে পেনাল্টি কর্নার নিয়ে আম্পায়ারদের সঙ্গে মোহামেডান খেলোয়াড়দের বচসায় খেলা বন্ধ ছিল কিছুক্ষণ।

তৃতীয় কোয়ার্টারে রাজসিকভাবে ম্যাচে ফেরে মোহামেডান। ফয়সাল বিন সারির হ্যাটট্রিকে ম্যাচে এগিয়ে যায় সাদাকালোরা। প্রথমে রিভার্স হিটে ফিল্ড গোল এবং পরে পেনাল্টি কর্নার থেকে আরও দুই গোল করে মোহামেডানকে চালকের আসনে নিয়ে আসেন তিনি।

তবে তৃতীয় কোয়ার্টারে যখন ঘড়ির কাটায় আর কেবল ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ড বাকি, তখন দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হঠাৎ একপ্রকার হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। দুই আম্পায়ার দীর্ঘ আলোচনার পর মোহামেডানের মালয়েশিয়ান খেলোয়াড় মিজুন এবং আবাহনীর আফফান ইউসুফকে হলুদ কার্ড দেখান। আর মোহামেডানের সিয়াম, দ্বীন ইসলাম এবং আবাহনীর নাইমউদ্দিনকে সরাসরি লাল কার্ড দেখতে হয়।

কার্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক মাঠ ছেড়ে ডাগআউটে চলে যায় মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। সেখান থেকে মোহামেডানের কর্মকর্তা এবং খেলোয়াড়দের সঙ্গে আম্পায়ারদের অনেক আলোচনা হয়। তবে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত মানতে না পারায় শেষ পর্যন্ত আর মাঠে নামেনি তারা।  উপায়ান্তর না দেখে আম্পায়াররা শেষ বাঁশি বাজিয়ে এক কোয়ার্টার এবং আরেক কোয়ার্টারের ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ড বাকি থাকতেই শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন।

২-৩ গোলে পিছিয়ে থেকেও জয় পেয়ে যায় আবাহনী। এতে মেরিনার্সের সমান ৩৭ পয়েন্ট এখন আকাশি-হলুদদেরও। এখন এই দুই দলের মধ্যে প্লে-অফের মাধ্যমে শিরোপা নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। আর যে মোহামেডানের এই ম্যাচ জিতলেই শিরোপা উৎসব করার কথা, ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে এখন তারা শিরোপার দৌড়েই আর নেই।

;

দারুণ প্রত্যাবর্তনে আবাহনীর দাপুটে জয়



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে জয় পেয়েছে আবাহনী। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও দুই বিদেশির গোল ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নিয়েছে আকাশি-হলুদরা।

গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে আবাহনী। আবু তোরের পাস ধরে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের মাটি কামড়ানো শট নেন আব্দুল্লাহ। আবাহনীর গোলকিপার শহিদুল আলম সোহেল ঝাঁপিয়ে পড়েও সে শট প্রতিহত করতে পারেননি।

২৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল শেখ জামাল। দলটির অধিনায়ক ইগর লেইতে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিলেও তা শেষ পর্যন্ত অল্পের জন্য লক্ষ্যচ্যুত হয়।

মিনিট দুয়েক পরই এই মিসের মূল্য চুকাতে হয় শেখ জামালকে। বাম প্রান্ত থেকে আবাহনীর কর্নেলিয়াসের শেখ জামালের শট শাখজদ শেমানভ ব্লক করলেও ফিরতি শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন জোনাথান ফার্নান্দেস।

সমতায় ফেরার পর দাপট বাড়ে আবাহনীর। ৩৩ মিনিটে আবাহনীকে এগিয়ে নেয়ার সুবর্ণ সুযোগ পান প্রথম গোলের নায়ক জোনাথান। কিন্তু শেখ জামাল গোলকিপারকে এক পেয়েও পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন।

তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আর কোনো ভুল করেনি আবাহনী। মধ্যমাঠ থেকে জোনাথানের থ্রু বল ধরে কর্নেলিয়াসের দিকে পাস বাড়ান ওয়াশিংটন। আলতো শটে বল জালে জড়িয়ে আবাহনীর হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন সেই কর্নেলিয়াস। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আকাশি-হলদুরা।

এই জয়ে ১২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে তিনেই রইল আবাহনী। তবে হেরে যাওয়ার ফলে পাঁচে নেমে গেছে সমানসংখ্যক ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট পাওয়া জামাল। দিনের অন্য ম্যাচে শেখ রাসেলকে ১-০ গোলে হারিয়ে চারে উঠে এসেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তাদের পয়েন্ট ১৭।

;

‘হকির স্বার্থে’ অঘোষিত ফাইনালে খেলছে মোহামেডান



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রীন ডেল্টা প্রিমিয়ার হকি লিগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। ম্যাচ অফিসিয়ালদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তসহ নানা ইস্যুতে বিতর্ক লেগেই রয়েছে। আজ (শুক্রবার) আবাহনী-মোহামেডানের অঘোষিত ফাইনালের আগেও ডালপালা মেলেছে বিতর্ক। তিন হলুদ কার্ড দেখা মোহামেডানের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমির নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরগরম হকির মাঠ।

জানা গেছে, কোনো খেলোয়াড় দুই হলুদ কার্ড দেখলে বাইলজ অনুযায়ী সেই দলকে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কার কথা তার দলকে ফেডারেশনের জানানোর কথা। তবে এক্ষেত্রে হকি ফেডারেশন সেটা না করে বরং তিন হলুদ কার্ড দেখার পর জিমিকে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যার ফলে আবাহনীর বিপক্ষে আজ তার মাঠে নামার সুযোগ নেই।

এই বিষয়টি নিয়েই মুখোমুখি অবস্থানে  চলে এসেছিল মোহামেডান এবং হকি ফেডারেশন। আজ আবাহনীর বিরুদ্ধে ম্যাচটি জিতলেই শিরোপা উঠবে সাদাকালোদের হাতে। অথচ এমন একটা ম্যাচ তারা না খেলার হুমকি দিয়েছিল জিমির নিষেধাজ্ঞার ইস্যুতে।

শেহস পর্যন্ত অবশ্য তারা সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। ‘হকির স্বার্থে’ তারা ম্যাচটি খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সঙ্গে এও জানিয়ে রেখেছে, ম্যাচ চলাকালে কোনো অনিয়ম হলে তৎক্ষণাৎ মাঠ ছাড়তে পিছপা হবেন না তারা।

উল্লেখ্য, এই ম্যাচের আগে মোহামেডানের পয়েন্ট ১৪ ম্যাচে ৩৫। অন্যদিকে আবাহনীর ৩৪ ও মেরিনার্সের ঝুলিতে ৩৭ পয়েন্ট। মোহামেডানকে আবাহনী হারিয়ে দিলে মেরিনার্সের মতো তাদের পয়েন্টও হবে ৩৭। বাইলজ অনুযায়ী তখন আবাহনী-মেরিনার্স প্লে-অফ ম্যাচের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে শিরোপা। মোহামেডানের জন্য হিসেব সহজ, জিতলেই চ্যাম্পিয়ন। মোহামেডান-আবাহনী ড্র করলে শিরোপা উৎসব করবে মেরিনার্স।

;