বৃষ্টি থেমেছে, রোদ উঠেছে, খেলা শুরু হচ্ছে তাহলে?
পঞ্চম দিন। বৃষ্টির কারণে খেলা বিলম্ব!
স্টেডিয়াম গ্যালারির পশ্চিম পাশের ঠিক মাঝ বরাবর বিগ স্ক্রিন। কালো সেই স্ক্রিনে গোটা গোটা সাদা অক্ষরে লেখা বৃষ্টির আগমনী বার্তা। প্রেসবক্সে বসে বৃষ্টিভেজা মাঠের দিকে যতবারই তাকান আফগানিস্তানের মিডিয়া ম্যানেজার সাদাত ততবারই তার চেহারায় হতাশা ও কষ্টের ছাপ স্পষ্ঠ!
এমন বৃষ্টি তো চায়নি আফগানিস্তান!
মাঠের আকাশে সকাল সোয়া ১১টার দিকে বেশ ঝলমলে রোদের ঝিলিকই দেখা গেলো স্টেডিয়ামে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির কান্নার শব্দও বন্ধ হলো সকালে প্রথমবারের মতো। এই মাঠের প্রধান পিচ কিউরেটর প্রবীন হিঙ্গানিকার তার সঙ্গীদের নিয়ে মাঠ পরিদর্শনে নামলেন।
উইকেটের চারধারের কাভারে তখন বেশ পানি জমেছে। কিন্তু আকাশে রোদের ঝলক দেখে ড্রেসিংরুমে বসে থাকা আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের মুখেও হাসির ঝিলিক!
দিনের বাকি সময়ে যদি বৃষ্টি না হয় তবে ঘন্টায় কয়েকের খেলা হয়তো সম্ভব হবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা খুবই আধুনিক। আউটফিল্ডের পানি দ্রæত এখানে শুকিয়ে যায়।
এই ম্যাচ জয় থেকে আফগানিস্তান এখন ৪ উইকেট দুরে। আর ম্যাচ জিততে হলে বাংলাদেশকে বাকি ৪ উইকেটে করতে হবে আরো ২৬২ রান।
এর আগে আগের রাতে বেশ জোরে বৃষ্টি নামে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এলাকায়। সেই বৃষ্টির তোড় কিছুটা কমলেও ভোরবেলা থেকে শুরু হয় ঝিরি ঝিরি ঝরে পড়া। সকাল ১১টায় পর্যন্ত প্রেসবক্সের সঙ্গে লাগোয়া টিনের চালে বৃষ্টির সেই রিনিঝিনি চলছেই।
ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী চট্টগ্রাম টেস্টে এখন বৃষ্টির এই শব্দ বাংলাদেশ দলের জন্য রিনিঝিনি ও সুমধুরই মনে হবে। আর আফগানিস্তানের কাছে সম্ভবত এই শব্দ এখন সবচেয়ে কুৎসিত!
বৃষ্টির তোড় দেখে সকালে হোটেল থেকেই বেরই হলো না বাংলাদেশ দল। হোটেল বন্দি হয়েই সময় কাটছে তাদের। জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের বৃষ্টির আনন্দ সুখ উপভোগ করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
আর বেচারা আফগানিস্তান দল সকাল সকাল নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মাঠে চলে আসে। বৃষ্টি ভেজা মাঠে খেলা নির্ধারিত সময়ে শুরু হবে না জেনেও আফগানিস্তান ঠিকই মাঠে এসে হাজির।
বৃষ্টিতে মাঠের অবস্থা কেমন- সেটা বোঝার জন্য মাঠে নামার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তাও মাঠে নেমে গেলেন আফগান অধিনায়ক। এক হাতে চায়ের কাপ। অন্য হাতে ছাতা। চোখ আকাশের দিকে। মুখে মৃদু হাসি। তবে সেই হাসির আড়ালে হতাশা স্পষ্ঠ!
বৃষ্টি থামার যদি কোনো প্রার্থনা থাকে তবে সেটাই করছে এখন সম্ভবত আফগানিস্তান।
বৃষ্টিতে মাঠ এমনই সিক্ত যে আম্পায়ারদের মাঠে নেমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনের প্রয়োজনই পড়েনি। দুর থেকে বসেই বোঝা যাচ্ছে সবুজ মাঠের পুরো চত্বর বৃষ্টিতে ভিজে সারা! তবে আফগানিস্তানের কোচিং প্যানেলের দুজন সদস্য ঠিকই হালকা বৃষ্টির মধ্যেও মাঠের বাউন্ডারি লাইনের চারধারে হাঁটলেন।
পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা আর কি!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: আফগানিস্তান ৩৪২/১০ (১১৭ ওভারে, রহমত শাহ ১০২, আসগর আফগান ৯২, আফসার ৪১, রশিদ খান ৫১, তাইজুল ৪/১১৬) ও ২৬০/১০ (৯০.১ ওভারে। বাংলাদেশ ২০৫/১০ ও ১৩৬/৬ ( ৯০.১ ওভারে, ইব্রাহিম জাদরান ৮৭, আসগর আফগান ৫০, আফসার ৪৮, রশিদ খান ২৪, সাকিব ৩/৫৮) বাংলাদেশ ২০৫/১০ (৭০.৪ ওভারে, লিটন ৩৩, মমিনুল ৫২, মোসাদ্দেক ৪৮*, রশিদ খান ৫/৫৫, নবী ৩/৫৬) ও ১৩৬/৬ (৪৪.২ ওভারে, সাদমান ৪১, মুশফিক ২৩, সাকিব ৩৯*, সৌম্য ০*, রশিদ ৩/৪৬)
#চতুর্থদিন পর্যন্ত।