ট্রেন্টব্রিজে অস্ট্রেলিয়ার ৩৮১ রানের পাহাড়!
একেই বলে ইচ্ছাপূরণের ব্যাটিং!
ট্রেন্টব্রিজে ঠিক যা করতে চেয়েছিলো তাই করলো। নাকি আরেকটু বেশি পেলো? স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেটে ৩৮১ রানের আয়েশি সঞ্চয় তো সেই কথাই জানাচ্ছে। টসে জয়ী অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং তাদের রান পাহাড়ে তুলে দিলো।
রান পাহাড়টা কিন্তু ছোটখাটো কোনকিছু নয়! বিশাল, একেবারে এভারেস্ট শ্রেণীর! বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার এটি সর্বোচ্চ স্কোর। আগের স্কোরটি ছিলো ৩৬১ রানের। অবাক করার ব্যাপার হলো সেই ৩৬১ রান করেছিলো অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে গড়ানো সর্বশেষ ওয়ানডেতে। সেই ম্যাচের পর মাঝে আরো ম্যাচ ছিলো অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের। কিন্তু বৃষ্টিতে সেই দুই ম্যাচ বাতিল হয়েছিলো।
তাহলে হিসেব কি দাড়ালো ৪ উইকেটে ৩৬১ রানের পর এবার ৫ উইকেটে ৩৮১ রান।
চলতি বিশ্বকাপে এটি অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান। দলীয় এই কৃতিত্বের দিনে ব্যক্তিগত সাফল্যকে এই ম্যাচে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন অস্ট্রেলীয় ওপেনার ডেডিভ ওয়ার্নার। তার ১৪৭ বলে ১৬৬ রানের ইনিংস বিশ্বকাপের মাঠে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের রান যা করার তার প্রায় পুরোটাই করেছেন শুরুর তিন ব্যাটম্যান। ওয়ার্নার ১৬৬। সঙ্গী ওপেনার অ্যারেন ফিঞ্চ ৫১ বলে ৫৩। ওয়ান ডাউনে ওসমান খাজা ৭১ বলে ৮৯। শেষের দিকে ম্যাক্সওয়েল পুরোদুস্তর টি-টুয়েন্টি স্টাইলে ব্যাট চালিয়ে ১০ বলে ৩২ রানের জমা তুলে রান আউট হন।
১৬৬ রান তোলা ওয়ার্নারকে ফেরাতে পারতো বাংলাদেশ তার মাত্র ১০ রানেই। মাশরাফির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাব্বির তার ক্যাচটা যে হাতে নিলে পারলেন না! ১০ রানে জীবন পেয়ে ওয়ার্নার করলেন ১৬৬ রান।
প্রথম উইকেট জুটিতে অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার তুলেন ১২১ রান। দ্বিতীয় উইকেটেও সেঞ্চুরির জুটি। ওয়ার্নার ও খাজার এই জুটিতে যোগ ১৯২ রান! লম্বা সময় বাংলাদেশের বোলাররা কোনো সাফল্য পাননি এই ম্যাচে। ৩৮১ রান খরচার ম্যাচে বোলারদের পারফরমেন্স কেমন হতে পারে সেটা জানতে গবেষণার প্রয়োজন নেই। প্রায় সব বোলারই বেসুমার রান ব্যয় করেন। তবে বোলারদের এই ‘বেচারা দিনে’ সবাইকে চমকে দিয়ে পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকার তুলে নিলেন ৩ উইকেট। এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। আগের ৪৮টি ওয়ানডেতে তার উইকেটই ছিলো মাত্র ১টি! আর এই ম্যাচে তার শিকারের নাম ফিঞ্চ, ওয়ার্নার এবং খাজা। যে তিনজন আবার অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের বড়ো স্কোরার।
ইংল্যান্ডের এই মাঠ রানের জন্য বেশ বিখ্যাত। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৪৮১ ও ৪৪৪ রানের দুটি দলীয় স্কোরই এই মাঠে হয়েছে। বাংলাদেশও এখানে ওয়ানডে ক্রিকেটে দেদারসে রান বিলিয়ে দেয়ার জন্য পরিচিত। এখানে ২০০৫ সালে এই মাঠে ইংল্যান্ড ৩৯১ রানের ইনিংস গড়েছিলো বাংলাদেশের বিপক্ষে।
সেই ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছিলো। কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাট থেকে এসেছিলো ৫২ বলে ৯৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ট্রেন্টব্রিজে বাংলাদেশ যদি বিশ্বকে আরেকবার চমকে দিতে চায় তবে ব্যাট হাতে শুরুর কয়েকজন ব্যাটসম্যানকে তেমন দাপুটে কিছু করে দেখাতে হবে!
নইলে এই ম্যাচে ২০ ওভারের আগে আরেকবার বৃষ্টির আশ্রয় খুঁজতে হবে!