জাবির শৃঙ্খলা বিধিতে নতুন ধারা: স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা৪.কম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ছবি: বার্তা২৪.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছাত্র-ছাত্রীদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ হালনাগাদ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন। সংশোধিত অধ্যাদেশে যুক্ত হওয়া নতুন দুটি ধারা, যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। নতুন এই ধারা দুটিকে ‘নিবর্তনমূলক’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি শিগগিরই এ ধারা বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

নতুন দুটি ধারা হলো- অধ্যাদেশের ৫ এর (ঞ) উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/জাতীয়/আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।

এছাড়া ৫ এর (থ) উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্যক্ত করবে না।

অধ্যাদেশ মতে, ধারা দুটির ব্যতয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ‘অসদাচরণ’ বলে গণ্য হবে। এজন্য লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরুতর শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার বেশি জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশে হস্তক্ষেপ করতেই ধারা দুটি যুক্ত করা হয়েছে। ধারা দুটিতে উল্লেখিত ‘অসত্য, তথ্য বিকৃত’ এবং `অশ্লীল’ বা ‘অসৌজন্যমূলক’ বার্তা প্রেরণ অথবা উত্যক্ত করার’ সংজ্ঞা নির্ধারণ করবেন কে? ফলে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাঁধার মুখে পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে উচ্চ আদালত এক রায়ের পর্যবেক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা বিধিকে ‘দুর্বল ও সেকেলে’ উল্লেখ করে তা হালনাগাদের পরামর্শ দেয়। শৃঙ্খলা বিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করতে ওই বছরের ১৬ মে তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেনকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটির হালনাগাদ করা শৃঙ্খলা বিধি বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাদেশ হিসেবে অনুমোদন করা হয়।

এ বিষয়ে জাবি সিনেট সদস্য ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ধারা ৫(ঞ) এবং (থ) উপধারা দুটি বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা) এবং অনুচ্ছেদ ৪০ (পেশা বৃত্তির স্বাধীনতা) এর পরিপন্থী । বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত চিন্তার বিকাশ এবং লালন-পালনের যথাযথ স্থান। এই উপধারা দুটি ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে ভীতি ও শঙ্কার তৈরি করবে, যা শুভকর নয় । এছাড়া ক্যাম্পাসে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত করবে এবং সাংবাদিকরা নিগ্রহের স্বীকার হতে পারেন।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মাহমুদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে বিধি দুটি যুক্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি, দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা সবসময় সোচ্চার। সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করতেই এই উদ্যোগ। অবিলম্বে এটি বাতিল করতে হবে।’

অন্যদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার দফতর সম্পাদক হাসান জামিল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি শিক্ষার্থীর স্বার্থ বিরোধী ও নিবর্তনমূলক ধারা বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো আইন তৈরি করা হলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের সাবেক সভাপতি সহকারী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যেখানে রাষ্ট্রের বিধিমালা রয়েছে সেখানে আবার নতুন করে আইন তৈরি করার প্রয়োজন হয় না। এটা কারা করেছে জানি না, এটা করা ঠিক হয়নি। তাছাড়া ধারা দুটির কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, ফলে যে যার মতো করে অপব্যবহার করতে পারে। এমন ধারা তৈরি করার আগে সংশ্লিষ্ঠদের সাথে আলোচনা করা উচিৎ ছিল।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সাথে যোগাগের চেষ্টা করা হলে তিনি অসুস্থ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে বিশ্ব উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নতুন বছরের প্রবেশিকা অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে তাড়াহুড়া করে শৃঙ্খলা বিধি পাস করা হয়েছে। তবে যদি এ বিষয়ে কারও কোনো বক্তব্য থাকে তবে সেটা অবশ্যই বিবেচনা করা হবে।’

   

চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ



রেদ্ওয়ান আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ

চবিতে সমাবর্তন করতে না পারার গ্লানি নিয়েই বিদায় নিচ্ছেন ভিসি শিরীণ

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ছয় ছয়বার ঘোষণা দিয়েও একবারও সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেননি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এরই মধ্যে নতুন ভিসি নিয়োগের মধ্য় দিয়ে পাঁচ বছরের ’শিরীণ শাসন’র ইতে ঘটতে যাচ্ছে। যে কারণে সমাবর্তনের আয়োজন করতে না পারার গ্লানি কাঁধে নিয়েই বিদায় নিতে হচ্ছে তাকে!

চবিতে নতুন ভিসি নিযুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে ডেপুটেশনে কর্মরত চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১২(২) ধারা অনুযায়ী এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য তাকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। যোগদানের তারিখ থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের আয়োজন করতে হলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু ড. শিরীণ আখতার প্রশাসন সে পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। যতবারই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, প্রায় প্রতিবারই কোন না কোন অস্থিরতা দেখা গেছে। তাছাড়া, এ প্রশাসনের সময়ে পুরো বছরই কোন না কোন ঝামেলা লেগেই ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১৯৯৪ সালে তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম প্রথম সমাবর্তনের আয়োজন করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ সমাবর্তন। এই সমাবর্তনটি আয়োজন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এরপরে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিভিন্ন সময়ে ৬ বার সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও তা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে পারেননি। সবশেষ তিনি গত বছর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধনের সময় ৬ষ্ঠ বারের মতো সমাবর্তনের ঘোষণা দেন। এছাড়া একই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময়ে সমাবর্তনের ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

পরিসংখ্যান বলছে, ৭৩-এর অধ্যাদেশে পরিচালিত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে প্রায় দুই বছরে ১ বার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে প্রায় ৬ বছরে ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১০ বছরে একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ১৪ বছরে একবার সমাবর্তন হচ্ছে।

চবিতে সর্বশেষ এবং সর্ববৃহৎ সমাবর্তন হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রায় ৭ বছর আগে। এতে ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএইচডি -এমফিলসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেয়। মোট ৭ হাজার ১৯৪ জন গ্রাজুয়েট। সর্বশেষ সমাবর্তনটি করেছিলেন চবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

এদিকে ৮ বছর ধরে পঞ্চম সমাবর্তনের অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেছে। প্রতিবছর সমাবর্তনের জন্য বাজেট থাকার পরেও সমাবর্তন আয়োজনের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী।

পঞ্চম সমাবর্তনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চবির বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার সমাবর্তনের ঘোষণা দেন ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায়। একই বছর ১৬ই নভেম্বর চবির ৫৬তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ২য় বারের মতো ঘোষণা দেন। এরপর ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ৩৪তম সিনেট সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে ৩য় বারের মতো আবারো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। সেই বছরই ১৭ই নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ৫৭ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থবারের মতো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। পরপর ছয়বার সমাবর্তনের ঘোষণা দেওয়ার পরেও চূড়ান্ত কোনো তারিখ বেঁধে দিতে পারেননি।

শিক্ষকরা বলছেন, সমাবর্তন আয়োজনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু প্রায় প্রতিবারই কোনো না কোনো ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করেছে, বিভিন্ন ব্যাচে সেশন জটের কারণে অনেক শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের স্নাতক শেষ করতে পারছে না। সেশন জটের সম্মুখীন শিক্ষার্থীদের জন্য বার্ষিক সমাবর্তন আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাবর্তনের জন্য বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ করলেও সেই অর্থ অন্য খাতে ব্যয় হয়। তবে গত বাজেট অধিবেশনে সমাবর্তন খাতে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।

ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কারণে অনুষদ সদস্যদের মধ্যে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে উদাসীনতা রয়েছে। ফলে অধিকাংশ বিভাগে শিক্ষকরা সময়মতো ক্লাস নেন না। সেশন গ্যাপ বাড়ছে। নিয়মিত সমাবর্তন হলে শিক্ষকরা আরও দায়িত্বশীল হবেন। দর্শন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাই অনিয়মিত সমাবর্তনের কারণ। তবে প্রশাসনের একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা থাকা উচিত।

এ বিষয়ে চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, যেহেতু সমাবর্তন হওয়ার একটা রেওয়াজ রয়েছে, তাই এটা সময়মত হওয়া উচিত। সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের একটা স্বপ্ন। অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, আমি বলব যে, সমাবর্তন নিয়মিত হওয়া উচিত। এটা একটা রুটিন কাজ। এর জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগের দরকার হয়। কিন্তু শিরীণ প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেননি। আমি মনে করি, এই না পারাটা এ প্রশাসনের অনেক বড় একটি ব্যর্থতা।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল কেরলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, প্রশ্ন থেকেই যায়, চবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ হওয়া অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের কি পারবেন শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের এই প্রাণের দাবি মেটাতে?

;

অবন্তিকার মৃত্যু: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লালকার্ড প্রদর্শন



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার বিচার ও যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করার দাবিতে প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ‘নিপীড়ন বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে আয়োজিত প্রতীকী সমাবেশে এ লাল কার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, জগন্নাথে যেকোন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নেব। এখানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল থাকলেও তার কেন কার্যক্রম নেই। এটি কার্যকর করতে হবে। এটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে। যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু কিছু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না। যখন একটা ঘটনা সামনে আসছে, তখন তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হচ্ছে, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আমরা এভাবে আর এগোতে চাইনা, আমরা আরেকটি অবন্তিকাকে দেখতে চাইনা, আরেকটি অংকনকে দেখতে চাই না। আমাদের আন্দোলন ততদিন পর্যন্ত জারি থাকবে, যতদিন পর্যন্ত এটার একটা স্থায়ী সমাধান না হচ্ছে।

মহিউদ্দিন আল আরাবি বলেন, উপাচার্যকে নিয়ে মসজিদে গিয়ে শোক সভা করে ঘটনাটিকে হালকা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের সহপাঠীর মৃত্যু হয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমাদের কথা শুনতে হবে।

সমাবেশে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ সাকিব সোবহান বলেন, প্রক্টরিয়াল বডি করোনার সময় কুকুরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া বরাদ্দ টাকা মেরে খেয়েছে। আজকে সেই প্রক্টরিয়ার বডি নিপীড়ন বিরোধী সেলের নামে ডামি সেল গঠন করে রেখেছে। প্রক্টরিয়াল বডি যখন তখন ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে মুচলেকা সংগ্রহ করত। এখন থেকে সেই খেলা আর চলবে না। যৌন নিপীড়ন সেলে ছাত্র-শিক্ষকসহ বাহির থেকে ম্যাজিস্ট্রেট এনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নিপীড়ক বিরোধী সেলের নামে যে টর্চার সেল যারা তৈরি করে রেখেছে, সেই প্রক্টর অফিসে আমরা সাতদিনের মধ্যে তালা ঝুলিয়ে দেব।

;

চবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আবু তাহের



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের

অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য জানা যায়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর ১২ (২) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও চবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে ভাইস-চ্যান্সেলর (উপাচার্য) পদে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করা হলো।

আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো সময়ে এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। ভাইস- চ্যান্সলর পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি পাবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ৪ বছরের জন্য ইউজিসিতে যোগদান করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ছিলেন।

এর আগে, তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাউথইস্টের উপ-উপাচার্য এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের জীবন বিমা করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশ-বিদেশে তার শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত ব্যবসায় প্রশাসনবিষয়ক ১৫টি গ্রন্থ অনার্স এবং মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠ্য হিসেবে পঠিত হচ্ছে।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করা অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের কাঞ্চনা হাইস্কুল মাধ্যমিকের পর চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনহা, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এ এন্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে উচ্চতর শিক্ষা এবং গবেষণা সম্পন্ন করেন তিনি।

কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ১৯৮৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কমার্স কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০০৪ সালে ওই বিভাগে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।

;

ঢাবিতে ৬ শিক্ষার্থী পেলেন 'সূরুচী বালা পাল ট্রাস্ট ফান্ড' বৃত্তি



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

পড়াশোনায় অসাধারণ সাফল্যের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগের ৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে 'সূরুচী বালা পাল ট্রাস্ট ফান্ড' বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তির চেক বিতরণ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. একেএম মাহবুব হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা ড. তাপস চন্দ্র পাল বক্তব্য রাখেন। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, দেশ, জাতি ও পরিবারের প্রত্যাশা পূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। পিতা-মাতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। ট্রাস্ট ফান্ডের দাতার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে মানব কল্যাণে কাজ করার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান। মায়ের স্মৃতি রক্ষার্থে এই ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের জন্য তিনি দাতাকে ধন্যবাদ দেন।

বৃত্তিপ্রাপ্তরা হলেন, মাহিয়ুল ইসলাম (ম্যানেজমেন্ট), আল আরাফাহ (অর্থনীতি), বাবুল মিয়া (জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি), নয়ন চন্দ্র বর্মণ (ফার্মেসী), সাদিয়া শারমিন চৈতি (ফার্মেসী) ও রাবিনা আক্তার রোশনী (ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং)।

;