চবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন

নির্বাচনে যাবে না বিএনপি, স্বস্তিতে আ’লীগ



রকিব কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্যানেল দেয়নি বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তবে গত বছর এই দল থেকে বের হয়ে আসা বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আর এই দু’পক্ষের মতানৈক্যের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দলে।

এদিকে সোমবার (২৫ মার্চ) কিছু সংখ্যক ভোটারের সুবিধার্থে শিক্ষক সমিতির অগ্রিম ভোট নিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। তবে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) হবে এর চূড়ান্ত নির্বাচন।

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পেছনে সাদা দলের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের বর্তমান অগণতান্ত্রিক পরিবেশকে দায়ী করেছেন। এক্ষেত্রে কোনো ভোটার চাইলে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। অন্যদিকে অংশ নেওয়া প্যানেলটি বলছে, জামায়াতের আধিপত্য তকমা কাটিয়ে উঠতেই তারা আলাদাভাবে প্যানেলে নির্বাচনে যাচ্ছে।

সাদা দল সূত্র জানায়, গত ১১ মার্চ সাদা দলের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর গত ১৯ মার্চ দলের সাধারণ সভায় দেশের বর্তমান অগণতান্ত্রিক পরিবেশ বিবেচনায় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। একই সাথে সভায় শিক্ষক সমিতির কার্যপ্রণালী এবং কার্যক্রম নিয়ে সদস্যরা ক্ষোভের কথা জানান।

এ বিষয়ে সাদা দলের পরিচালনা পর্ষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম. আতিকুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের অগণাতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় প্যানেল দেওয়া থেকে বিরত থেকেছি। কারণ আমাদের সাধারণ সভা ও স্টিয়ারং কমিটি মনে করে প্রশাসন নিয়মমাফিক চলছে না। আর শিক্ষক সমিতি প্রশাসন থেকে দাবি আদায়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাদা দল হলো জাতীয়তাবাদী, জামায়াতপন্থী ও দলনিরপেক্ষ শিক্ষকদের একটি সংগঠন। চাইলেই জামায়াতও আলাদা প্যানেলে নির্বাচনে যেতে পারতো, এটা তাদের ব্যাপার। এর আগেও গত সিন্ডিকেট নির্বাচনে সাদা দলের বাইরে গিয়ে জাতীয়তা শিক্ষক ফোরাম আলাদাভাবে নির্বাচন করেছে। এটা ঠিক না।’

নির্বাচনে অংশ না নেওয়া এই পর্ষদে রয়েছেন বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ও হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের অংশ না নেওয়ায় নির্বাচনের জৌলুস হারাবে কিনা এমন প্রশ্নে আতিকুর রহমান বলেন, ‘এটার উত্তর আমি কী দিব। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখেন। নির্বাচনের কোনো আমেজ, পরিবেশ নাই। আর শিক্ষক সমিতি কার্যত কোনো ভূমিকা পালন করছে দেখছেন? তারা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় বিলীন হয়ে যায়। অনেক কারণেই আমরা নির্বাচন করছি না।’

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সমিতিসহ বিশ্বদ্যিালয়ের বিভিন্ন পর্ষদে সাদা দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা। কিন্তু জামায়াতের একক আধিপত্য, তকমা কাটিয়ে উঠতে সবর্শেষ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটে নির্বাচনে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। আলাদাভাবে নির্বাচনে যায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।

আলাদা প্যানেল দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তঃদ্বন্দ্ব এবং দূরত্বের কথা স্বীকার করেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এস.এম নছরুল কদির। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জামায়াতের সাথে থাকার কারণে বিএনপির অনেকেই আমাদের ভোট দেয় না। আমাদের পছন্দ করে না। আমরা কী বিএনপি না জামায়াত তাও বুঝে উঠতে পারি না। আমরা এতো বড় দল আমাদের কোনো আলাদা প্ল্যাটফরম থাকবে না। জামায়াতের নিজস্ব আদর্শ শিক্ষক ফোরাম আছে, আমাদের কেনো থাকবে না। এজন্য আমরা আলাদাভাবে নিজস্ব সংগঠন করেছি। আমাদের মতো নির্বাচন করছি। আমরা অনেক বড় দল। আমরা কোনো পরিচয়হীন হয়ে থাকতে চাই না। উই আর লিবারেল।’

নিজেদের মধ্যে বিভেদে হলুদ দল বাড়তি কোনো সুযোগ পাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে এটি সবসময় হয়। সুবিধা নিতে পারে, হবে। ওদের মধ্যেও (হলুদ দল) অনেক সমস্যা আছে। সবসময় দলীয় ভোটে নির্বাচনে যেতে হবে, সেটাতো ঠিক নয়। এখানে অনেক ইকুয়েশন হয়, অনেক ফ্যাক্টর। গত নির্বাচনে আমরা সেকেন্ড পজিশনে ছিলাম। আমি নিজে সেক্রেটারি নির্বাচন করেছি। কয়েক ভোটের জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারাতে পারি নাই। আলাদা প্ল্যাটফর্ম থাকলে তাদের পছন্দের জায়গা বেড়ে যায়। তারাও রিভেন্স নিতে পারল।’

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাদা দলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক বিষয়টিকে অত্যন্ত স্পর্শকতার এবং স্ববিরোধী বলে দাবি করছেন। তারা জানান, আলাদা হওয়ার যে কারণ দাঁড় করানো হচ্ছে এমন হলে হাইকমান্ড থেকে জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা আসতো। বরং বিদ্যামান পরিস্থিতিতে জামায়াত ও বিএনপি একসাথে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজনীতি করছেন।

অপরদিকে সাদা দলের নির্বাচনের না আসার সিদ্ধান্তকে হাস্যকর এবং উদ্ভট বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল। অন্যান্য পর্ষদ নির্বাচনে দলের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিলেও এবার এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি দলটিকে।

এ বিষয়ে হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সুলতান আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘উনারা
যেভাবে কথা বলছেন মনে হচ্ছে বিচ্ছিন্ন কোনো দেশের বাসিন্দা। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি কেমন আমরা সবাই অবগত আছি। আর শিক্ষক সমিতি কতটুকু দাবি আদায় করতে পারছে তা বিগত সময়কার আন্দোলনে প্রতীয়মান হয়েছে। এর আগেও একসাথে নির্বাচন করে তারা আমাদের সাথে জয়ী হতে পারেনি। অনেক কথায় বলবে। আমরা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

এদিকে এবারে নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআর) ১৮ শিক্ষকের নাম নেই ভোটার তালিকায়। ফলে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এই ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা। অথচ এর আগে এই ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত হন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.এম. আবদুল গফুর বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না। আমাকে সমিতি থেকে যে তালিকা দিয়েছে, সেখানে ওই শিক্ষকদের নাম নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) ৮০টি অগ্রিম ভোট পড়েছে। এবারে ৮৭৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।’

   

সন্ধ্যা নামতেই শুরু কেনাবেচা

চবির আবাসিক হলে মাদক কারবার



মুহাম্মাদ মুনতাজ আলী, চবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪. কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। প্রতি বছর আকাশসম স্বপ্ন বুকে নিয়ে দুঃখিনী মা ও পরিশ্রমী বাবার প্রত্যাশাগুলোকে বাস্তবে রূপদান করতে হাজারও শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করতে আসেন।

মুক্ত ক্যাম্পাসে অবাধ বিচরণ ও অসৎ সঙ্গ পেয়ে কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই কেউ কেউ যুক্ত হয়ে যান মাদক সাম্রাজ্যের গহীন অন্ধকারে। এই অন্ধকার জগত থেকে বের হতে না পেরে ঝরে যায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী! ভেস্তে যায়, কত কত বাবা-মায়ের আশা-আকাঙ্ক্ষা!

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাদক সাম্রাজ্যের গহীন অন্ধকারে নিমজ্জিত শিক্ষার্থীদের অনেকেই অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন হলে। এদের মধ্যে অনেকেই আবার অছাত্র কিংবা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী।

সন্ধ্যা নামতেই চবি ক্যাম্পাসে বসে মদ, গাঁজা ও ইয়াবার আসর। শুরু হয়, মাদকাসক্তদের আনাগোনা। যে করিডরে পাওয়ার কথা ছিল শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার চাপা গুঞ্জন, সেখানে মেলে গাঁজার উৎকট গন্ধ। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বিভিন্ন স্থান থেকে চালান নিয়ে এসে মদের ব্যবসাও করেন। সরবরাহ করেন ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর।

সম্প্রতি, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার একাধিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, তার মাদক কেনাবেচা ও সরবরাহের জন্য রয়েছে বিশাল এক সিন্ডিকেট। এজন্য তিনি রাজনৈতিক প্রভাবকে পুঁজি করে চালান মাদক ব্যবসা। তার দাবি, তিনি শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের একাংশের অনুসারী। থাকেন এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নম্বর কক্ষে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই হলে সম্প্রতি মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। মদ, গাঁজা ও ইয়াবা তাদের নিত্যসঙ্গী। এর কাউকে কাউকে প্রকাশ্যে মাতলামি করতেও দেখা গেছে।

এ ঘটনার অনুসন্ধানে এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নম্বর কক্ষে প্রকাশ্যে কয়েকটি মদের বোতল পাওয়ায়। এরপর বুধবার (২৪ এপ্রিল) কক্ষটি সিলগালা করে দেয় হল কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১১টায় এ এফ রহমান হলে মদপান, মাতলামি ও মাদক সরবরাহের অভিযোগে আশিকুজ্জামান জয় নামের এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে পিটিয়ে বের করে দেয় শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন কর্মী।

এ বিষয়ে এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শাকিল আহমেদ জানান, চবির এ এফ রহমান হলে সম্প্রতি মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিলে দেখা যাবে, সবচেয়ে বেশি মদ, গাঁজা ও ইয়াবা খায় এই হলের ছেলেরাই।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যাচেরই এক শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান জয় ঈদের পরপরই হলে ৭ থেকে ৮ কেজি মাদকদ্রব্য নিয়ে আসে এবং খেয়ে মাতলামি করে। এজন্য তাকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হলেও সে শোনেনি। ফলে, তার সঙ্গে আমাদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার কাছে বিষয়টির সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ এফ রহমান হলের সবাই জানে যে, জয় পুরোপুরি মাদকাসক্ত। সে অনেকদিন ধরেই মদ, ইয়াবা সেবনের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি হলে মাদক বিক্রিও করতো। আমরা তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও এগুলো ছাড়েনি সে। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের একটু ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটেছে।

আশিকুজ্জামান জয়কে মারধরের পর সরেজমিন এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নম্বর কক্ষ পর্যবেক্ষণ করলে কয়েকটি মদের বোতল দেখতে পাওয়া যায়। তবে সেগুলোতে মদ না থাকলেও মদের টাটকা গন্ধ মেলে।

আশিকুজ্জামান জয় নিজ গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ কেন জানতে চাইলে তিনি মারধরের কথা স্বীকার করেন। তবে মদপানের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

যদিও আশিকুজ্জামান জয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় একটি দেশি মদের বোতল নিয়ে বসে আছেন তিনি। পাশে রাখা আছে আরো দুটি বোতল।

এছাড়াও ওই হলে থাকা শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের অনুসারী কয়েকজনের মাধ্যমে আরো বেশ কয়েকজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, যারা মাদক গ্রহণ এবং হল জুড়ে মাতলামির জন্য পরিচিত। তাদের নাম, বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের একটি তালিকা বার্তা২৪.কমের হাতে এসেছে।

এ বিষয়ে জানতে এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আলী আরশাদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বুধবার হাউস টিউটরসহ আমরা কক্ষটিতে গিয়েছিলাম। কক্ষটি আপাতত সিলগালা করে দিয়েছি। রুমে যে থাকতো, তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। আমরা পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

মাদক কারবারের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্টের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে কথা বলবো। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।

 

 

;

২৭ এপ্রিল শুরু হচ্ছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী শনিবার (২৭ এপ্রিল) ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তিনটি ইউনিটে মোট ৩ লাখ ৫ হাজার ৩৪৬ জন পরীক্ষার্থী গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন দুর্দশা লাঘবে চতুর্থবারের মতো দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জিএসটি সমন্বিত ভর্তি কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বিঘ্নে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য ইতোমধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) থেকে অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কঠোর নিরাপত্তা প্রহারা ও গোপনীয়তা বজায় রেখে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে প্রশ্নপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। একইভাবে নিকটবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ২৬ এপ্রিলের মধ্যেই প্রশ্নপত্র পাঠানোর কাজ সমাপ্ত হবে। ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এ বছর ‘এ’ ইউনিটে এক লাখ ৭০ হাজার ৫৯৯ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৯৪ হাজার ৬৩১ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৪০ হাজার ১১৬ জন আবেদন করেছেন।

জিএসটির ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, ২৭ এপ্রিল ‘এ’ ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের দুপুর ১২টা-১টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একইদিন আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রয়িং) পরীক্ষাটি বিকেল ৩:৩০টা হতে ৪:৩০টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। আর ৩ মে ‘বি’ ইউনিটে মানবিক ও ১০ মে ‘সি’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগ থেকে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের বেলা ১১টা-১২টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের জন্য পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগেই সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্বিঘ্নে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য জিএসটি কর্তৃপক্ষ প্রায় সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন করেছে। আশা করি, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সব কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলমান। যেহেতু শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধা অনুযায়ী নিকটবর্তী কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন, সেহেতু এবার আমরা অভিভাবকদের কেন্দ্রে না আসার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। যদি কেউ আসেন, তাহলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত তাপপ্রবাহ সংক্রান্ত যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে গুচ্ছভুক্ত সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষায় আপনারা পরীক্ষা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সুপেয় পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীর ব্যবস্থা রাখবেন।

তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে ও পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রসমূহে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ও পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবেন। পরীক্ষার সময় কোনো পরীক্ষার্থী বা দায়িত্বরত কেউই মুঠোফোনসহ কোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি কেউ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে বা অসাধুপায় অবলম্বন করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য আমি জিএসটি গুচ্ছভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ স্ব স্ব এলাকার সব স্তরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।

উল্লেখ্য, জিএসটিভুক্ত ভর্তি পরীক্ষার আসন বিন্যাস, ফলাফলসহ অন্যান্য সব তথ্য https://gstadmission.ac.bd এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

 

;

অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যিরো
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে চুয়েটের উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১৫১তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সই করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ এপ্রিল মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে ২৫ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, ছাত্রদের বৃহস্পতিবার ( ২৫ এপ্রিল) বিকাল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের আগামিকাল শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ক্যাম্পাস থেকে শহরে চলাচল করবে।

এর আগে গত সোমবার মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী।

ওইদিন আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে মাঠে নামেন। আন্দোলন চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাসেও আগুন দেন।

;

কুবিতে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টর কার্যালয়ে তালা



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) প্রশাসনিক ভবন ঘুরে এই তিন দপ্তর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান, প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী দপ্তরে তালা লাগানো আছে। দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কেউ সকাল থেকে দপ্তরে আসেননি।

এই বিষয়ে জানতে তিনজনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, 'আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। সে সময় শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে দাবি বাস্তবায়নের কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তিন দপ্তরে তালা দিয়েছি।' 

;