আবাসন ভোগান্তিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা
নানা অব্যবস্থাপনা আর ত্রুটিপূর্ণ নীতিমালার কারণে বরাদ্দ করা ডরমিটরি ভবনে আবাসন নিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা। প্রশাসনের অনুমোদন প্রাপ্তির পরও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নামে বরাদ্দ করা ডরমিটরি ভবনে নিজেদের রুমে ওঠতে পারছেন না এসকল শিক্ষক-কর্মকর্তা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে গেল ১ ফেব্রুয়ারি নতুনভাবে বরাদ্দ করা ডরমিটরির রুম বুঝে নেওয়ার কথা থাকলেও তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন না বরাদ্দ বাতিল হওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তারা। ফলশ্রুতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ১২-১৫ জন সিনিয়র শিক্ষক ও কর্মকর্তা। তাদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অফিস আদেশ পেয়েও জোরপূর্বক অবৈধভাবে রুমে অবস্থান করছেন বরাদ্দ বাতিল হওয়া সহকর্মীরা।
রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রুম না পেয়ে নতুন বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তারা ডরমিটরির সামনে আসবাবপত্র-মালামালসহ গেস্টরুমে অবস্থান নেন বলে জানা যায়। ডরমিটরি ভবনের রুম বুঝে না পেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় রুমের বাইরে পড়ে থাকা আসবাবপত্র-মালামালের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা বরাদ্দ কমিটির আহবায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন বলেন, 'আবাসন নীতিমালা ২০১৬ অনুযায়ী এই বরাদ্দ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ও পরিবর্তনযোগ্য। বরাদ্দ বাতিল হবার পর রুম ছাড়তে হবে এবং নতুন বরাদ্দকৃতদের রুম বুঝিয়ে দিতে হবে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ অমান্য করে বাসা বুঝিয়ে দিচ্ছেন না তাদের বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। সেক্ষেত্রে উপাচার্য ছুটি থেকে ফিরে আসলে এই বিষয়ে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আমিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন নীতিমালা ত্রুটিপূর্ণ, যা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য সম্মান হানিকর। এই আবাসন বরাদ্দে প্রতিনিয়ত একপাক্ষিক সুবিধাভোগীরাই সুবিধা নিচ্ছে। ডরমিটরি বাতিল হবার পর আইনে উল্লেখ আছে একজন শিক্ষক নির্ধারিত মেয়াদের পর ফ্ল্যাট না ছাড়লে নির্ধারিত ভাড়ার তিনগুণ দিয়ে অবস্থান করতে পারবে। ত্রুটিপূর্ণ আইনের মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সম্মানহানি করা মোটেই উচিত নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'শিক্ষকদের নতুন আবাসনের ব্যবস্থা না করে ত্রুটিপূর্ণ আইনের প্রয়োগ হচ্ছে। আমরা চাই অতিদ্রুত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য নতুন ডরমিটরি নির্মাণ করে আবাসন সমস্যার সমাধান করা হোক।'
ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মকর্তারা জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালায় যথাযথভাবে কর্তৃপক্ষের নোটিশ পেয়ে বরাদ্দ বাতিল হওয়া সহকর্মীদের অবহিত করেছি। স্ত্রী-সন্তান, মালামাল আসবাবপত্র নিয়ে রুমে ওঠতে এসেছি, কিন্তু আমাদের রুম আমরা বুঝে পাচ্ছি না। অরক্ষিত অবস্থায় মালামাল বাইরে রেখে আমাদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং ভাড়া বাসা ছেড়ে দেওয়ায় বর্তমানে আমাদের গেস্টরুমে অবস্থান করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরাদ্দ বাতিল হওয়া এক কর্মকর্তা জানান, আমার ব্যক্তিগত কারণে বাসা ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে। এই বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি কয়েকদিনের মধ্যে বড় বাসা পেয়ে গেলেই ডরমিটরি ছেড়ে দেব।