আটকে রেখে সাংবাদিকদের মারধর করল ছাত্রলীগ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের মারধর ও হামলার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক।
গতকাল (১৫ ডিসেম্বর) শনিবার রাতে শেরে বাংলা হলের ক্রীড়াকক্ষে আটকে রেখে তাদের মারধর ও নির্যাতন করে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ঐ হলটিতে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন সাংবাদিকরা। ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে হলের দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ভেতরে ঢুকতে ছাত্রলীগের নিষেধ আছে। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিলে ভেতরে প্রবেশ করতে দেন।
হলে প্রবেশ করার পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভেতরে প্রবেশের কারণ জানতে চান। এ সময় শিক্ষার্থী অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের মারধর শুরু করে ছাত্রলীগ। কেড়ে নেয় মোবাইল ফোন, মানি ব্যাগ ও পরিচয়পত্র। সেখান থেকে হলের ক্রীড়া কক্ষে নিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
নির্যাতনের শিকার তিন সাংবাদিক হলেন- কালের কণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান, ইত্তেফাকের কবির কানন ও জনকণ্ঠের মুনতাসির জিহাদ।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতারা হলেন- শেরে বাংলা হল শাখার সহ-সভাপতি সন্টুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ মাহমুদ অয়ন, যুগ্ম-সম্পাদক নাফিউল আলম ফুজি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এসএম মাহমুদ সেতু, প্রচার সম্পাদক নিলাদ্রি নিলয় দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক আসিফ রায়হান মিনার প্রমুখ।
এদের সাথে আরও ছিলেন- মেকানিকাল বিভাগের অর্ণব চক্রবর্তী সৌমিক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রাউফুন রাজন ঝলক, মেকানিকাল বিভাগের মিনহাজুল ইসলাম, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের নিলাদ্রী নিলয় দাস, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের মেহেদী হাসান ও তড়িত কৌশল বিভাগের ফারহান জাওয়াদ।
হামলার শিকার মেহেদী হাসান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে নিয়ে গেছেন এমন তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। হলের ভেতর প্রবেশ করার পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মারধর করেন।’
পরে শনিবার রাত বারোটার দিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সভপতি খন্দকার জামী-উস সানী ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এসে ঘটনাটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না বলে তারা জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা একটি দুঃখজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।