কোটা বিরোধীদের মিলনায়তন ব্যবহার করতে দেয়নি ঢাবি
টাকা দিয়ে ভাড়া নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে 'বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ'কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনটি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ১১ হাজার টাকার বিনিময়ে রোববার (২ ডিসেম্বর) মিলনায়তনটি ভাড়া নেয় সংগঠনটি। কিন্তু আজ সোমবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে গেলে মিলনায়তনের দরজা বন্ধ দেখা যায়। বিষয়টি সংগঠনটির নেতারা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিমকে জানান। তখন সাদেকা হালিম মিলনায়তন ব্যবহারের অনুমতি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, 'ডকুমেন্ট পরীক্ষা করেছি। তাদের (বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ) আবেদন ছিল। কিন্তু ডিন তাদের অনুমতি দেননি।'
অনুমতির আগে কেন টাকা নেওয়া হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ওটা বুকিংয়ের জন্য। সেখানে পরীক্ষার কাজ চলায় তাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল।'
পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী মিলনায়তনটি ভাড়া নিই। কিন্তু প্রোগ্রাম শুরুর আগ মুহূর্তে বলা হয়, পরীক্ষার কাজ চলায় উপর মহলের নিদের্শে মিলনায়তনে প্রোগ্রাম করতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিমকে জানালে উত্তর ছিল, 'তোমাদের অডিটোরিয়াম দেওয়া হবে না।'
নুরুল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আমাদের আগাম কোনো তথ্য জানায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে ফোন করে এক ঘণ্টার জন্য অডিটোরিয়াম খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি বলেন, 'তোমাদের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অডিটরিয়াম দেওয়া হবে না। তোমরা অনেক বাড়াবাড়ি করছ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আচরণকে ‘বিমাতাসূলভ’ উল্লেখ করে নুরুল বলেন, 'পেশাজীবী সংগঠন এখানে প্রোগ্রাম করলেও সাধারণ ছাত্ররা কোনো সহযোগিতা পায় না। রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে তাদের নির্দেশ অনুযায়ী সাধারণ ছাত্রদের বাধা দেয়।’
পরে নিরুপায় হয়ে মিলনায়তনের সামনেই সংবাদ সম্মেলন করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী এই নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারুণ্যের দাবিসমূহ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ‘তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনা ২০১৮' প্রকাশ করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহারটি পড়ে শোনান যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান। সম্মেলনে ইশতেহার ভাবনা তুলে ধরেন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। সমাপনী বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন।