হজ পরবর্তী জীবনের শিক্ষা ও করণীয়



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম
মসজিদে হারামের বারান্দা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হাজীদের একাংশ, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে হারামের বারান্দা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হাজীদের একাংশ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ (২০ আগস্ট, সোমবার) পবিত্র হজপালন সম্পন্ন হয়েছে। সৌদি আরবের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে এবার ১৬৫টি দেশের ২৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৭৫ জন নাগরিক হজপালন করেছেন।

বিপুল পরিমাণ হাজীরা ইতোমধ্যে শুক্রবার (২৪ আগস্ট) থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ থেকে চলতি (২০১৮) বছর ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৮ জন যাত্রী হজপালনের জন্য সৌদি আরব গেছেন।

সোমবার (২৭ আগস্ট) থেকে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে। সর্বশেষ ফিরতি হজ ফ্লাইট হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর। বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে লক্ষাধিক মানুষ হজপালনের জন্য সৌদি আরব যান।

হজ একটি ফরজ ইবাদত। হজের অনেক ফজিলতের অন্যতম একটি হলো- হজের মাধ্যমে মানুষ অতীত জীবনের যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্তি লাভ করে। তবে বান্দার হক (মানুষের অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া) ব্যতীত। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং সকল অশ্লীল ও গুনাহর কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকে সে সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়।’ –সহিহ বোখারি:১/২০৬

অর্থাৎ হজ মানুষের জীবনের সব গুনাহ মুছে দেয়। তবে মানুষের কোনো হক অনাদায়ী থাকলে তা ব্যতীত। এজন্যই হজে যাওয়ার আগে হজের প্রধান প্রস্তুতি হচ্ছে মুরব্বিদের কাছ থেকে দোয়া নেওয়া ও কারো হক অনাদায়ী থাকলে তা পরিশোধ করে দেওয়া। আর পরিশোধ করা সম্ভব না হলে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।

আমরা জানি, হালাল উপার্জনের টাকায়, আল্লাহর প্রেমের ব্যাকুলতায়, আল্লাহর রাস্তায় নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার এক দৃপ্ত প্রশিক্ষণের নাম হজ। প্রবৃত্তির অনুসরণ, মনের খেয়ালখুশি ও অহংবোধের অস্তিত্বকে বিসর্জন দিয়ে মনের কাবায় শুধু আপন রবকে স্থান দেওয়া এবং মনে সর্বদা এ অনুভূতি জাগ্রত করা যে আল্লাহ আমাকে দেখছেন, এটাই শিক্ষা দেয় হজ।

ইমানি চেতনা দৃঢ়করণসহ মনের মাঝে আল্লাহর প্রেম সৃষ্টি এবং নিজে থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যদের ইসলামি মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্যই মূলত হজ ও কোরবানি। যাতে হজের পর হাজী পরিবারের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হন ইসলামি অনুশাসনের আদর্শ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে। আর কোরবানিকারী পরিবার পরস্পরে আত্মত্যাগের শিক্ষায় শিক্ষিত হন- ঔদার্য, সততা ও নৈতিক শক্তিবলে।

প্রতি বছর সারাবিশ্ব থেকে লাখ লাখ হাজী সাহেব হজে যান, কাবা তাওয়াফ করেন, হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন, সাফা-মারওয়া দৌঁড়ান, মিনায় শয়তানের প্রতি ঘৃণাভরে পাথর নিক্ষেপ করেন, পশু কোরবানী দেন, জমজমের পানি পান করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করেন, হজরত ইবরাহিম (আ.), হজরত হাজেরা (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)-এর জীবনের প্রেমময় ঘটনার অনুসরণে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান শেষে দেশে ফেরেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/26/1535279472503.jpg

পবিত্র কাবাকে সামনে রেখে নামাজ আদায় করছেন তাওয়াফকারীরা, ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু ভেবে দেখার বিষয় হচ্ছে- তাদের ত্যাগ, আদর্শ ও মূল্যবোধের শিক্ষা হজ-পরবর্তী সময়ে কতজনের জীবনে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়? অথচ পাপাচার, মিথ্যা, হিংসা, বিদ্বেষ, অসৎ ব্যবসা, সুদ, মুনাফেকিমুক্ত হয়ে সৎ ও সুশৃঙ্খল ইমানি জীবনযাপন করা হচ্ছে হজের শিক্ষা।

বর্তমানে পৃথিবীতে নামাজীর সংখ্যা বাড়ছে, হাজীর সংখ্যাও বাড়ছে। অন্যদিকে মুসলমানদের সমাজে অপশাসন-শোষণ, জুলুম-অত্যাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, মিথ্যা, পাপাচার ও বঞ্চনা কমছে না। নিষ্পাপ হওয়ার পরিবর্তে পাপের পঙ্কিলতায় ডুবছে পৃথিবী। এর কারণ কী?

হজ করতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে, কাজকর্ম ছেড়ে, অনেক অর্থ ব্যয় করে মক্কা-মদিনা যাচ্ছেন। তবুও সেই নিষ্পাপ হাজির সংখ্যা বাড়ছে না কেন? যাদের চরিত্র, কর্ম ও আচরণের ছোঁয়ায় সমাজ, দেশ ও জাতি সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও আদর্শবান হবে?

যারা হজ-পরবর্তী সময়েও আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্যের আশায় হজের প্রশিক্ষণ কাজে লাগবেন। ইমানি চেতনা বৃদ্ধি করে নৈতিক চরিত্রের উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করবেন। ইবরাহিমী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পরিবার গঠন করবেন এবং মানুষকে ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করবেন।

হজ থেকে ফিরে আশা মানে কাবার দূত হয়ে আদর্শবান মানুষ হিসেবে ইসলামের শিক্ষা, আদর্শ ও বাণী নিয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া। মানুষকে সঠিক ইসলামি শিক্ষার দাওয়াত দিয়ে শান্তিময় পৃথিবী গড়ে তোলা। হজ থেকে ফিরে এসে শুধু চল্লিশ দিন ভালোভাবে শরিয়তের বিধিবিধান মেনে চলে পরবর্তী সময়ে শরিয়তের বিধিবিধান হুকুম-আহকামের রশি খুলে একেবারে মুক্ত হয়ে যাওয়া নয়!

আমাদের মনে রাখতে হবে, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতসহ সব ইবাদত হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। হজ ও কোরবানিও তদ্রূপ।

সবাইকে মনে রাখতে হবে, শুধু ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা আর একনিষ্ঠতা যথেষ্ট নয়। বরং জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি কাজে নিয়তের বিশুদ্ধতা দরকার। সেই সঙ্গে বর্জন করা দরকার, লোক দেখানো মনোভাব ও হারাম উপার্জন। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘হারাম উপার্জন দ্বারা গঠিত শরীর দোজখের জ্বালানি হবে।’

তাই মুসলমানদের শুধু আচরণীয় হজ পালনের মাধ্যমে দায়িত্ব শেষ- এটা মনে করলে চলবে না। বরং বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণের জন্য সবাইকে উৎসর্গিত ও নিবেদিতপ্রাণ হতে হবে। মানুষের অন্তর থেকে পাশবিক শক্তি ও চিন্তা-চেতনাকে দূর করতে হবে।

ইসলাম শিক্ষা দেয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে নিজে পাপমুক্ত থাকার ও অন্যকে পাপমুক্ত রাখার। কিন্তু বর্তমান পরিবেশে যেহেতু গুনাহ থেকে বাঁচা কঠিন কাজ, তাই এ পরিবেশে পাপমুক্ত থাকার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো আল্লাহওয়ালাদের সাহচর্যে থাকা। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া, তাদের কথা মান্য করা।

এছাড়া নিম্নোক্ত আমলগুলো নিয়মিতভাবে করে যাওয়া-

১. প্রতিদিন নিয়মিত কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করা।
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায়ের চেষ্টা করা।
৩. প্রতিদিনের ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজের অভ্যাস গড়ে তোলা।
৪. নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাদ পড়তে চেষ্টা করা।
৫. প্রতিদিন ইস্তেগফার, দরূদ শরিফ ও অন্যান্য দোয়া-জিকির ইত্যাদি পাঠ করা।

প্রিয় হাজী সাহেবান! আসুন, আমরা ইসলামের দেখানো পথে জীবন পরিচালনা করি। হজের গুরুত্ব অনুধাবন করে, হজ-পরবর্তী জীবন সেভাবে পরিচালনা করি।

   

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;