ফরিদপুরের গেরদায় নবীর সা. কেশ ও বড় পীরের জুব্বা



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
গেরদা জামে মসজিদ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

গেরদা জামে মসজিদ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদপুর থেকে ফিরে: হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.) ইরাক থেকে ভারতবর্ষ আসার সময় দুষ্প্রাপ্য কিছু সম্পদ সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে রয়েছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র কেশ, হজরত আলী (রা.)-এর গোঁফ, হজরত ইমাম হাসান (রা.) ও হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর জুলফ (কানের দু'পাশের দাড়ির ওপরের অংশের চুল) এবং বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর গায়ের জোব্বা।

এই বরকতময় জিনিসগুলো এখনও ফরিদপুরের গেরদার একটি মসজিদ সংলগ্ন বিশেষ রুমে সংরক্ষিত রয়েছে।

গেরদা জামে মসজিদে সংরক্ষিত দুষ্প্রাপ্য জিনিসের একাংশ
গেরদা জামে মসজিদে সংরক্ষিত দুষ্প্রাপ্য জিনিসের একাংশ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সুলতানি আমলে বাংলাদেশে যে কয়েকজন মুসলিম সুফি-সাধকের আগমন ঘটেছিল, তাদের অন্যতম হলেন হজরত শাহ আলী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে শাহ আলী (রহ.) ৮১৩-১৪ হিজরিতে (১৪১২ খ্রিস্টাব্দে) বাগদাদ থেকে ৪০ জন মতান্তরে শতাধিক আত্মীয়-স্বজন, ধর্মীয় সাধক ও শিষ্যসহ দিল্লি হয়ে ফরিদপুরের (ফতেহাবাদ) গেরদাতে আসেন। স্থানীয়দের কাছে ঢোলসমুদ্র বলে খ্যাত নদী তীরবর্তী জঙ্গলময় স্থান গেরদা। পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুরে আস্তানা স্থাপন করেন। সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন। মিরপুরে হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর মাজার অবস্থিত।

গেরদা জামে মসজিদের বাইরের অংশ
গেরদা জামে মসজিদের বাইরের অংশ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ঢোলসমুদ্র বলতে মূলত নদী সংলগ্ন বিল এলাকাকে বুঝানো হয়। স্থানীয়ভাবে এটাকে বাওর বলা হয়। আর গেরদা শব্দটি ফারসি। এর অর্থ- উপশহর বা শহরতলি। যেহেতু স্থানটি ফরিদপুর শহর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে কিছুটা (তিন মাইল) দূরে অবস্থিত, তাই এটাকে উপশহর বলা হয়।

উপশহর হলেও গেরদা এখনও অনেকটা নিভৃত পল্লীর মতো। ফরিদপুর শহর ঘেঁষে বেয়ে চলা কুমার নদের তীরবর্তী পিচঢালা পাকা রাস্তা সংযুক্ত করেছে গেরদাকে। হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর আগমনের কারণে গেরদা বিশেষ স্থানের মর্যাদায় আসীন। তার সম্মানে তৎকালীন দিল্লির সুলতান ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত ঢোলসমুদ্র নামক স্থানের বার হাজার বিঘা ভূমিকে করমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন।

মসজিদে লাগানো সুলতানি আমলের শিলালিপি
মসজিদে লাগানো সুলতানি আমলের শিলালিপি, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মসজিদটির বর্তমান নাম ‘ঐতিহ্যবাহী গেরদা দরগাহ বাড়ি জামে মসজিদ।’ জনশ্রুতি আছে, এখানে শাহ আলী বাগদাদী (রহ.) একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। তার মৃত্যুর পর সেই মসজিদের ভগ্নাবশেষের ওপর আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা হয় হিজরি ১০১৩ সনের দিকে। কালের আবর্তনে সেই মসজিদটিও ধ্বংস হয়ে যায় নদীগর্ভে এবং স্থানটি ধীরে ধীরে জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। দীর্ঘদিন পর নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মসজিদের ভেতরের অংশ
মসজিদের ভেতরের অংশ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এখনও পুরনো ওই মসজিদের অখণ্ড পাথরের তৈরি পিলারসহ অনেক নিদর্শন অক্ষত রয়েছে। নতুন মসজিদের দুই প্রবেশপথে অখণ্ড পাথরের চারটি পিলারের অংশবিশেষ শোভা পাচ্ছে। এ ছাড়া মসজিদের আশপাশে পুরনো মসজিদের ভাঙ্গা ইট-পাথরের টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। যা থেকে অনুমান করা চলে, এখানে একটি পুরনো মসজিদ ছিল। এ ছাড়া নতুন মসজিদের প্রদর্শনী কক্ষের সামনে একটি পাথর ফলক লাগানো রয়েছে। ওই ফলকে লেখা রয়েছে, ১০১৩ হিজরি। এর দ্বারা অনুমান করা যায়, শাহ আলী বাগদাদী রহ.-এর মৃ্ত্যুর পর এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিংবা হতে পারে হজরত শাহ আলীর আমলের মসজিদটি তখন সংস্কার করা হয়েছিল। তবে ওই মসজিদটিতে জুমার নামাজ হতো। কারণ শিলালিপিতে সূরা জুমার যে আয়াতটি লেখা রয়েছে, ওই আয়াত দ্বারা মানুষকে জুমার নামাজে আসার আহবান জানানো হয়েছে।

হজরত শাহ আলী বাগদাদীর জায়নামাজ
হজরত শাহ আলী বাগদাদীর জায়নামাজ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

আরবি ও ফার্সি ভাষায় লেখা পাথরের ফলকটি (১২ ইঞ্চি X ৩৬ ইঞ্চি) ১০১৩ হিজরি বা ১৬০৪ খ্রিস্টাব্দে লেখা। ফলকটি বর্তমানে নতুন নির্মিত মসজিদের (২২ মি X ১১ মি) পশ্চিম দেয়ালে লাগানো আছে।

মসজিদটির নির্মাণ কাজ ১৯৭৮ সালে শুরু হয়। মসজিদের সামনে থাকা ফলকে লেখা রয়েছে, হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.) কর্তৃক আনীত রাসূলে কারীম (সা.), হজরত আলী (রা.), হজরত ইমাম হাসান (রা.), হজরত ইমাম হোসাইন (রা.), হজরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) এবং অন্যান্য পূণ্যাত্মাদের পবিত্র নিদর্শনাদি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান।

বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর গায়ের জোব্বা
বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর গায়ের জোব্বা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এই পবিত্র সম্পদগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছে হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর জায়নামাজ, পাগড়ি, মাছের দাতের তসবিহ, চন্দন কাঠের খাবার খাওয়ার পাত্র। রয়েছে হজরত শাহ মাদার (রহ.)-এর গায়ের ফতুয়া।

এগুলো বছরে ৫ বার সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসব বরকতময় জিনিসগুলো দেখতে আসেন। যে পাঁচদিন জিনিসগুলো দেখানো হয়- ১২ রবিউল আউয়াল, শবে মেরাজ, ১১ রবিউস সানি ফাতেহা ইয়াজদাহম (গাউসুল আজম বড় পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর মৃত্যু দিবস), ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন।

হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর খাবার খাওয়ার পাত্র
হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর খাবার খাওয়ার পাত্র, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এ ছাড়া বিশেষ কেউ আসলে কিংবা আগে থেকে মসজিদ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে স্মৃতিবহ জিনিসপত্রগুলো দেখার সুযোগ মেলে।

মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি সাইয়্যেদ সালিম রেজা। শাহ আলী (রহ.)-এর ১২তম অধস্তন পুরুষ। তার কাছে প্রশ্ন ছিলো এসব জিনিস সম্পর্কে। তিনি বলেন, হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এসব জিনিস সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি কতদিন গেরদা ছিলেন? এ প্রশ্নের জবাবে সালিম রেজা জানান, তিনি এখানেই থাকতেন। এখানে বিয়ে-শাদি করেছিলেন। দাওয়াতি কাজে মিরপুর যান এবং সেখানে ইন্তেকাল করেন। শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর দুই ছেলের কবরও রয়েছে গেরদাতে। মসজিদ সংলগ্ন দিঘীর পশ্চিম পাশে বড় ছেলে শাহ উসমান (রহ.)-এর কবর ও আরেক ছেলে হজরত শাহ হানিফ (রহ.)-এর কবর মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে।

   

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;