দাওয়াত ও তাবলিগের গুরুত্ব এবং দাঈর গুণাবলি



মোহাম্মদ মাকছুদ উল্লাহ, অতিথি লেখক, ইসলাম
কোরআনে কারিমে বিশদ বলা হয়েছে দাঈর গুণাবলি সম্পর্কে, ছবি: সংগৃহীত

কোরআনে কারিমে বিশদ বলা হয়েছে দাঈর গুণাবলি সম্পর্কে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হলো- দাওয়াত ও তাবলিগ। দাওয়াত আরবি শব্দ, অর্থ ডাকা বা আহবান করা। তাবলিগ শব্দটিও একই ভাষার। অর্থ পেীঁছে দেওয়া।

ইসলামের পরিভাষায় তাবলিগ বলতে আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আল্লাহর দ্বীন ও শরিয়তের বিধি-বিধান প্রচারের কাজকে বোঝায়। দাওয়াত ও তাবলিগের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীন তথা ইসলাম আল্লাহর জমিনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে যুগে যুগে। আর এ কাজের জন্যে মহান আল্লাহ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষগুলোকে বেছে নিয়েছেন। নবী-রাসূলদের মূলতঃ দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ দিয়ে দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। সে মতে মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে মানবসমাজে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ চলে আসছে।

হজরত আদম (আ.) ছিলেন পৃথিবীর প্রথম মানুষ এবং প্রথম নবী। সুতরাং এটাই বাস্তবতা যে, দ্বীনের দাঈর (আল্লাহর পথে আহবানকারী) আগমনের মাধ্যমে পৃথিবীতে মানবসভ্যতার সূচনা। নবী ও রাসূলদের একমাত্র তাবলিগের দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল এ বিষয়টি আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াতে বিভিন্ন ভঙ্গিতে বিবৃত করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘রাসূলের একমাত্র দায়িত্ব হলো (আল্লাহর দ্বীন মানুষের মাঝে) প্রচার করা। আর তোমরা যা প্রকাশ করো আর যা গোপন করো সবই আল্লাহ জানেন।’-সূরা আল মায়িদা: ৯৯

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি, যাতে তাদের নিকট পরিষ্কারভাবে (দ্বীনের কথা) ব্যাখ্যা করতে পারে।’-সূরা ইবরাহিম: ৪

দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ না করাকে আল্লাহ নবুওয়ত ও রিসালাতের অযোগ্যতা হিসেবে আখ্যায়িত করে ইরশাদ করেছেন, ‘হে রাসূল! তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর! যদি তুমি তা না করো, তাহলে তুমি তার বার্তা প্রচার করলে না।’-সূরা আল মায়িদা: ৬৭

যেহেতু দাঈর মাধ্যমে পৃথিবীতে মানব সভ্যতার সূচনা সুতরাং পৃথিবীটা দাঈ শূন্য হলেই কিয়ামত কায়েম হবে। এ বিষয়ে হজরত শাকিক (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ (রা.) ও আবু মুসা (রা.)-এর সঙ্গে একত্রে বসেছিলাম। এমন সময় তারা উভয়ে বললেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই কিয়ামতের আগে এমন সময় আসবে যখন ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে এবং মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে। আর সে সময়ে হারজ ব্যাপক হবে। হারজ হলো- হত্যাকাণ্ড। -সহিহ বোখারি: ৬৭৮৬

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে নবুওয়ত ও রিসালাতের সমাপ্তি ঘটলেও তাবলিগে দ্বীনের কাজ সমাপ্ত হয়নি আজও সেটা অব্যহত থাকবে কিয়ামত অবধি। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতকে দেওয়া হয়েছে দাঈর মহান দায়িত্ব। যেমন আল্লাহতায়ালা এ সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, ‘বল, এটাই আমার পথ; আমি সজ্ঞানে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করি আমি এবং আমার অনুসারীগণ।’-সূরা ইউসুফ: ১০৮

যেহেতু দ্বীনের দাওয়াতের কাজ না থাকলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে তাই হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইন্তেকালের আগে দাওয়াতের দায়িত্ব স্বীয় উম্মতের ওপর অর্পণ করে গেছেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার পক্ষ থেকে দ্বীনের একটি কথা হলেও পৌঁছে দাও।’ -সহিহ বোখারি: ৪৪১৮

যেহেতেু দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ অত্যন্ত মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ সেহেতু যে কেউ যেনতেনভাবে তা করতে পারে না। তাবলিগের জন্যে কিছু শর্ত রয়েছে এবং দাঈর জন্যে কিছু গুণেরও আবশ্যকতা রয়েছে। দাঈ যদি নিজের মধ্যে সেসব গুণ আয়ত্ব করতে ব্যর্থ হন, তাহলে বাহ্যিকভাবে তার কাজ তাবলিগ মনে হলেও আল্লাহর দরবারে সেটা সম্পূর্ণ মূল্যহীন। দাঈর মধ্যে যে গুণাবলি থাকা আবশ্যক সেগুলো হলো-

ওহির জ্ঞানের অনুসারী হওয়া: দাঈকে অবশ্যই ওহির জ্ঞানের অনুসারী হতে হবে এবং দাওয়াতের একমাত্র ভিত্তি হতে হবে ওহি তথা কোরআন ও সুন্নাহ। যেমন হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) সম্মোধন করে মহান আল্লাহর নির্দেশ, ‘তোমার ওপর যে ওহি নাজিল করা হয়েছে তুমি তার অনুসরণ করো আর তুমি ধৈর্যধারণ করো যে পর্যন্ত না আল্লাহ ফায়সালা করেন আর আল্লাহই সর্বোত্তম ফায়সালকারী।’-সূরা ইউনুস: ১০৯

প্রজ্ঞা: দাঈকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সত্য প্রতিষ্ঠিত করার মতো প্রজ্ঞা এবং প্রমাণ ও যুক্তি যথাযথভাবে উপস্থাপনে বিজ্ঞ হতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার রবের পথে মানুষকে আহবান করো প্রজ্ঞা ও সদুপদেশের মাধ্যমে আর প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়। তোমার রব জানেন তার পথ থেকে কে বিচ্যুত হয়ে গেছে আর তিনি জানেন হেদায়েতপ্রাপ্তদের সম্পর্কে।’-সূরা আন নাহল: ১২৫

ইখলাস: দাঈকে পার্থিব মোহমুক্ত হতে হবে। সে মানুষকে দ্বীনের দিকে আহবান করবে, দ্বীনের কথা প্রচার করবে ইখলাসের সঙ্গে। কোনো প্রকার পার্থিব মোহ তার মধ্যে থাকবে না। কোরআনে কারিমে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘বল, আমি এ জন্যে তোমাদের থেকে এটা ছাড়া অন্যকোনো প্রতিদান চাই না যে, যার ইচ্ছা সে তার রবের পথ অবলম্বন করুক।’ -সূরা আল ফোরকান: ৫৭

আল্লাহর ওপর ভরসাকারী: দাঈকে জীবনের সর্ববস্থায় একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে। যেমন আল্লাহতায়ালা নবী করিমকে (সা.) এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে তুমি বলো, আমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া অন্যকোনো ইলাহ নাই। আমি একমাত্র তার ওপরই নির্ভর করি আর তিনি মহান আরশের অধিপতি।’-সূরা আত তওবা: ১২৯

তাকওয়া: দাঈকে মুত্তাকি-পরহেজগার হতে হবে। পূর্ণমাত্রায় তাকওয়া তথা খোদাভীরুতা নিয়ে দাওয়াতের কাজ করতে হবে। ফাসেক-ফুজ্জারকে অনুসরণ করা যাবে না। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে নবী! আল্লাহকে ভয় করো আর কাফের ও মুনাফেকদেরকে অনুসরণ করো না। আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’-সূরা আল আজাযাব: ১

ধৈর্য: দাঈকে হতে হবে অত্যন্ত ধৈর্যশীল। বিরুদ্ধবাদিদের অবজ্ঞা-উপেক্ষা, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্যকরে দ্বীন প্রচারের মহৎ কাজ চালিয়ে যেতে হবে নিঃসংকোচে। আল্লাহতায়ালা আলোচ্য বিষয়ে স্বীয় হাবিবকে (সা.) কে ধমকের সুরে বলেছেন, ‘যদি তাদের উপেক্ষা তোমার কাছে দুর্বিসহ হয়, তাহলে পারলে জমিনে কোনো সুঢ়ঙ্গ খুঁজে নাও অথবা আকাশে কোন সিঁড়ি, তারপর তাদের কাছে কোনো মুজিযা নিয়ে এসো। যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তাহলে অবশ্যই তাদের সবাইকে হেদায়েতের ওপর একত্রিত করতেন। সুতরাং তুমি জাহেলদের অর্ন্তভূক্ত হবে না।’ -সূরা আল আনআম: ৩৫

উম্মতের মঙ্গলকামী: সাধারণ মানুষকে হৃদয়ের গভীর থেকে ভালোবাসতে হবে এবং সর্বদা তাদের মঙ্গল কামনা করতে হবে। যেমন আল্লাহ বলছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে একজন রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যেসব বিষয় বিপন্ন করে সেগুলো তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি সে দয়াদ্র ও পরম দয়ালু।’-সূরা আত তওবা: ১২৮

পরস্পর সাহায্যকারী: দ্বীনের দাঈদেরকে অবশ্যই পরস্পরের সমর্থক ও সাহায্যকারী হতে হবে। যেমন কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘স্মরণ করো, যখন আল্লাহ নবীদের থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তোমাদেরকে আমি কিতাব ও হেকমত যা কিছু দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে যখন একজন রাসূল আসবে, তখন অবশ্যই তোমরা তার ওপর ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। -সূরা আলে ইমরান: ৮১

সুভাষী: দ্বীনের দাঈকে অবশ্যই সুন্দর ভাষা ও আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গীর অধিকারী হতে হবে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তার চেয়ে উত্তম ভাষা আর কার হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, সৎকাজ করে আর বলে, আমি মুসলমানদের একজন।’ –সূরা আল মুমিন: ৩৩

বস্তুত দাওয়াতের মাধ্যমে পৃথিবীতে আল্লাহর দ্বীন প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যুগে যুগে। বস্তুত দাওয়াতের বিষয়বস্তুর মাহাত্ম্য এবং দাঈর গুণাবলি মানুষকে দলে দলে দ্বীনের পথে টেনে এনেছে। কিন্তু আজ দাওয়াতের কাজের ব্যাপকতা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি হলেও মানুষ দ্বীনের প্রতি ততটা আকৃষ্ট হচ্ছে না, বরং ভীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছে। ওয়াজ, বক্তৃতা ও লিখনি ইত্যাদি মাধ্যমে চলছে তাবলিগের কাজ, কিন্তু দাঈ গুণসম্পন্ন না হওয়ায় দাওয়াতের বিষয়বস্তু একই হলেও মানুষ দ্বীনের ব্যাপারে বিভ্রান্তিতে পড়ছে- যা উম্মতের জন্যে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আল্লাহতায়ালা উম্মতের সবাইকে উন্নত গুণসম্পন্ন দাঈ হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

লেখক: ইমাম ও খতিব, রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদ।

   

ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা কী?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ঈমানের স্বাদ সবাই আস্বাদন করতে পারে না, ছবি : সংগৃহীত

ঈমানের স্বাদ সবাই আস্বাদন করতে পারে না, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, হজরত জিবরাইল (আ.) রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, এবার আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন, রাসুল (সা.) বললেন, ‘ঈমান হলো, তুমি ঈমান রাখবে আল্লাহর প্রতি, তার (আল্লাহর) ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসুলদের প্রতি এবং শেষ দিবসের (কেয়ামত) প্রতি। (এবং) তুমি ঈমান রাখবে তাককিরের ভালো-মন্দের প্রতি।’ হজরত জিবরাইল (আ.) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। -সহিহ মুসলিম : ৮

ঈমানের স্বাদ
হজরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী কারিম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে ওই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে রবরূপে, ইসলামকে দ্বীনরূপে এবং মুহাম্মাদ (সা.)-কে রাসুলরূপে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে। -সহিহ মুসলিম : ৩৪

সুস্বাদু খাদ্যের স্বাদ সেই বুঝতে পারে যার জিহ্বায় স্বাদ আছে। রোগ-ব্যাধির কারণে নষ্ট হয়ে যায়নি। তদ্রূপ ঈমান ও যাবতীয় আমলের স্বাদও ওই খোশনসিব ব্যক্তিই অনুভব করে, যে সম্পূর্ণ সন্তুষ্টিচিত্তে ও সর্বান্তকরণে আল্লাহকে রব ও পরওয়ারদিগার এবং মুহাম্মদ (সা.)-কে রাসুল ও আদর্শ এবং ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করে।

আল্লাহতায়ালা, নবী মুহাম্মদ (সা.) ও ইসলামের সঙ্গে যার সম্পর্ক কেবলই বংশগত ও প্রথাগত বা কেবলই চিন্তাগত ও বুদ্ধিগত পর্যায়েই নয় বরং সে আল্লাহর বন্দেগি, মুহাম্মদ (সা.)-এর আনুগত্য এবং ইসলামের অনুসরণকে মনেপ্রাণে নিজের জীবনে গ্রহণ করে নেবে। সেই ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে। -মাআরিফুল হাদিস : ১/৯১

ঈমানের মিষ্টতা
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে সে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে। আল্লাহ ও তার রাসুল তার কাছে সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া, কাউকে ভালোবাসলে শুধু আল্লাহরই জন্য ভালোবাসা, আর কুফুরিতে ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা করা, যেমন সে ঘৃণা করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে। -সহিহ বোখারি : ১৬

এই হাদিসের বিষয়বস্তুও আগের হাদিসের বিষয়বস্তুর প্রায় কাছাকাছি। উপস্থাপনায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এই হাদিসে বলা হচ্ছে, ঈমানের মিষ্টতা ওই ব্যক্তিই অনুভব করতে পারবে, যে আল্লাহ ও তার রাসুলের ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সমর্পিত থাকবে; আল্লাহ ও তার রাসুলকে জগতের সবকিছু থেকে বেশি ভালোবাসবে। অন্য কারও প্রতি যদি তার ভালোবাসা হয়, তা হবে সম্পূর্ণ এই ভালোবাসার অধীন। আর ইসলাম তার এতই প্রিয় যে, ইসলাম থেকে ফিরে যাওয়া, কুফুরিতে লিপ্ত হওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সমতুল্য। -মাআরিফুল হাদিস : ১/৯১

;

মসজিদ নির্মাণ করবে দাউদ কিম

কোরিয়ার প্রতিটি গলি থেকে ভেসে আসবে আজানের সুর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জমি কেনার দলিল হাতে দাউদ কিম, ছবি : সংগৃহীত

জমি কেনার দলিল হাতে দাউদ কিম, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কয়েক বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী দক্ষিণ কোরিয়ান ইউটিউবার দাউদ কিম মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। এরই মধ্যে মসজিদের জন্য জমিও কিনেছেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে ওই জমি ও তার দলিলের ছবি শেয়ার করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক এই নওমুসলিম। তিনি দেশটির ইঞ্চোন শহরে মসজিদটি নির্মাণ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

ইনস্টাগ্রামে কিম লিখেছেন, ‘অবশেষে আপনাদের সাহায্যে আমি ইঞ্চোনে মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি ক্রয়ের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। খুব শিগগিরই জায়গাটিতে মসজিদ নির্মিত হবে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না আমার এই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।’

ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘ওই জমিতে মসজিদের পাশাপাশি একটি ইসলামিক পডকাস্ট স্টুডিও তৈরির ইচ্ছা আমার। সত্যি এটি একটি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ, এতে বহু সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। তবে আমার বিশ্বাস- আমি এগুলো সম্পন্ন করতে সক্ষম হব।’

দাউদ কিম আশাবাদ ব্যক্ত করে লিখেছেন যে, ‘এমন একটি দিন আসবে, যেদিন কোরিয়ার প্রতিটি গলি আজানের সুমধুর ধ্বনিতে ভরে উঠবে। এ জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

কিম ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন। এরপর ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তিনি সারাবিশ্বে বিখ্যাত বনে যান। জনপ্রিয় এই ইউটিউবার তার নিয়মিত ব্লগে ইসলামিক বিভিন্ন কনটেন্ট, নামাজ পড়ার ভিডিওসহ নানা কিছুই পোস্ট করে থাকেন। ২০২২ সালে কিম বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন। বাংলাদেশ ঘুরে তিনি পবিত্র উমরা পালন করতে সৌদি আরব যান।

দক্ষিণ কোরিয়ার এই গায়ক ইউটিউবিং করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান। ঘুরতে ঘুরতে তিনি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও তিউনিশিয়া যান। দেশগুলোতে গিয়ে ইসলাম ধর্মকে কাছ থেকে দেখে ও বুঝে তিনি আকৃষ্ট হন। ইসলামের জীবনবিধান দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে পুরোপুরি মুসলমান হয়ে যান।

দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। যা কোরিয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশ নিয়ে গঠিত। সিউল দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। সিউল বিশ্বের শীর্ষ ১০টি ধনী শহরের তালিকায় থাকা একটি শহর।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসলামের উপস্থিতি খুবই সামান্য। ২০০৫ সালেও দেশটির আদমশুমারিতে মুসলিমদের কোনো বিভাগের সদস্য হিসেবে ধরা হত না। বর্তমানে দেশটিতে ২ লাখ মুসলিম রয়েছে, যাদের বেশিরভাগ বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশ থেকে আসা অভিবাসী এবং কিছু ধর্মান্তরিত বাসিন্দা। দেশটিতে ২১টি মসজিদ, ১৩টি ইসলামিক সেন্টার ও ১৪০টির মতো নামাজের স্থান রয়েছে।

১৯৬৯ সালে কোরিয়ান সরকার প্রদত্ত জমিতে গড়ে ওঠে সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার। সিউল সেন্ট্রাল মসজিদ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম মসজিদ। যা হেনামডং সিউলে অবস্থিত। মসজিদটি ইতিমধ্যে বিশ্বের অনন্য সুন্দর মসজিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

;

তীব্র গরম মুমিনকে যা শিক্ষা দেয়



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
গরম থেকে বাঁচতে ফুটপাতের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাথায় পানি দিচ্ছেন, ছবি : রাজু আহমেদ

গরম থেকে বাঁচতে ফুটপাতের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাথায় পানি দিচ্ছেন, ছবি : রাজু আহমেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। ফলে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। বস্তুত শীত, গরম, রোদ, বৃষ্টি সবই আল্লাহর দেওয়া। তীব্র শীত আর প্রচণ্ড গরমে রয়েছে মুমিনে জন্য শিক্ষা। জনজীবন অতিষ্ট হওয়া গরম আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আজাবের কথা। তাই তীব্র তাপদাহের সময় দয়াময় আল্লাহতায়ালার কাছে বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি।

পৃথিবীতে ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে মানবতার কল্যাণ সাধনকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। ফলে তীব্র গরমের সময় ইবাদত-বন্দেগি সহজ করেছে ইসলাম। হজরত আবু জার (রা.) বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম।
এক সময় মোয়াজ্জিন জোহরের আজান দিতে চেয়েছিল। তখন নবী কারিম (সা.) বলেন, গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মোয়াজ্জিন আজান দিতে চাইলে নবী কারিম (সা.) পুনরায় বলেন, গরম কমতে দাও।
এভাবে তিনি (নামাজ আদায়ে) এত বিলম্ব করলেন যে, আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম।
এরপর নবী কারিম (সা.) বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচণ্ড হলে উত্তাপ কমার পর নামাজ আদায় করো। -সহিহ বোখারি : ৫৩৯
বর্ণিত হাদিসের আলোকে বিধান হলো, অতীব গরমের সময় কিছুটা বিলম্ব করে জোহরের নামাজ আদায় করা সুন্নত।

গরমের সময় এমন কিছু আমল রয়েছে, যেগুলোর সওয়াব অনেক। একজন মুমিন সেসব আমল করে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারেন। ওই সব আমলের কয়েকটি হলো-

নফল রোজা
গরমের রোজা শীতের থেকে বেশি কষ্টকর। গরমের কষ্ট উপেক্ষা করে যদি নফল রোজা রাখা যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালা বেশি নেকি দেবেন। সাহাবায়ে কেরাম ও পূর্ববর্তী বুজুর্গরা বেশি সওয়াবের আশায় গরমকালে রোজা রাখতেন।

পিপাসার্তকে পানি পান করানো
পিপাসার্তকে পানি পান করানো একটি উত্তম কাজ। আর যদি প্রচণ্ড গরমে কাউকে ঠাণ্ডা পানি পান করানো হয়, তাহলে তো কাজটি আরও উত্তম হবে। এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ‘কোন দান উত্তম? তিনি বললেন, ‘পানি পান করানো।’ -সুনানে নাসাই : ৫৪৫৬
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘তৃষ্ণার্তের তৃষ্ণা নিবারণ সর্বোত্তম মহৎ কাজের একটি।’
হাদিসের অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সদকা বা দান জাহান্নামের আগুন নির্বাপণ করে। আর পানি পান করানো উত্তম সদকা।’ -সুনানে আবু দাউদ : ৭৪৩৫

নফল নামাজ
অতিরিক্ত গরম হলো- জাহান্নামের নিশ্বাস, তাই জাহান্নামের ভয়ে বেশি করে এবং লম্বা লম্বা সুরা দিয়ে নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন গরম বেশি পড়বে, তখন বেশি নামাজ আদায় করো। কারণ অতিরিক্ত গরম হলো- জাহান্নামের নিশ্বাস।’ -মেশকাত : ৫৯১

গরম থেকে শিক্ষা
গরমের তীব্রতা থেকে মুমিনের জন্য রয়েছে শিক্ষা। কেননা জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ পৃথিবীর আগুনের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি। তাই এ গরম থেকে জাহান্নামের তীব্রতা অনুমান করে গোনাহ থেকে মুক্ত থাকা। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জাহান্নাম তার প্রতিপালকের কাছে এ বলে নালিশ করেছিল, হে আমার প্রতিপালক! (দহনের প্রচণ্ডতায়) আমার এক অংশ আরেক অংশকে গ্রাস করে ফেলছে। ফলে আল্লাহ তাকে দুইটি শ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি শীতকালে অপরটি গ্রীষ্মকালে। আর তাই তোমরা গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড উত্তাপ এবং শীতকালে তীব্র ঠাণ্ডা অনুভব করো।’ -সহিহ বোখারি : ৫৪৫৫

গ্রীষ্মকালকে গালমন্দ না করা
আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে, গরিবদের মাঝে সুমিষ্ট ফল বিতরণ করা। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা। ঘামে ভেজা শরীরে জনসমাগমে গমন না করা। গরমের সময় প্রবাহিত ঘামের গন্ধ যেন অন্যের কষ্টের কারণ না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখা। গ্রীষ্মকালকে গালমন্দ না করা বিষয়টিও খেয়াল রাখার নির্দেশ দেয় ইসলাম।

বৃষ্টির জন্য নামাজ
প্রচণ্ড গরমে একপশলা বৃষ্টির জন্য মুমিনরা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। শস্য ফলানোসহ পশুপাখির খাবারের জন্য যেমন বৃষ্টি দরকার, তেমনি তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট নানা জটিলতা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতেও আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি খুব প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে দয়াময় আল্লাহতায়ালার দরবারে বৃষ্টি কামনা করে নামাজ পড়া ও দোয়া করা সুন্নত। পরিভাষায় এই নামাজের নাম ‘ইসতিসকা’ বা বৃষ্টির নামাজ।

ইসলামের শিক্ষা হলো- সর্বাবস্থায় বান্দা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। প্রচণ্ড গরমের সময়ও এর ব্যতিক্রম নয়। তীব্র তাপদাহের সময় মানুষের উচিৎ জাহান্নামের গরমের কথা স্মরণ করা। জাহান্নাম থেকে বাঁচতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে আত্মনিয়োগ করা।

একটু শান্তির জন্য দুনিয়ার জীবনে গরমের কষ্ট ও তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্য যদি আমরা সম্ভবপর সব উপায় অবলম্বন করতে পারি, তাহলে আখেরাতের আজাব ও ভয়াবহতা থেকে বাঁচার জন্য আমলদার এবং সাধনাকারী হওয়া জরুরি।

;

৪০ বছর ধরে মদিনায় বিনামূল্যে চা-কফি খাওয়ানো বৃদ্ধের মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চা-কফি নিয়ে বসে আছেন শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা, ছবি : সংগৃহীত

চা-কফি নিয়ে বসে আছেন শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মদিনা জিয়ারতকারীদের অনেকের কাছে পরিচিত নাম শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা। গত ৪০ বছর ধরে তিনি পবিত্র হজ-উমরা পালনকারীদের মাঝে বিনামূল্যে চা, কফি, রুটি ও খেজুর বিতরণ করেছেন। অনেক বাংলাদেশি হাজি তার হাতে চা-কফি পান করেছেন।

সদাহাস্য সিরিয়ান এই নাগরিক মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৯৬ বছর বয়সে মদিনায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হারামাইনের খবর সরবরাহকারী ভেরিফায়েড পেইজ ‘ইনসাইড দ্য হারামাইন’ এই খবর জানিয়ে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।

জানা যায়, প্রতিদিন ৪০টি ফ্লাস্কে করে চা-কফি আনতেন তিনি। এ জন্য একটি বিশেষ ট্রলি ব্যবহার করতেন, মসজিদে নববিতে যাওয়া অন্যতম পথ জায়েদিয়া এলাকায় বসতেন তিনি। সবুজ চা, লাল চাসহ নানা স্বাদের চা বানিয়ে আনতেন। থাকত চিনিযুক্ত, চিনিমুক্ত চা-কফি। এছাড়া এলাচযুক্ত চা, পুদিনা চা, বিভিন্নরকমের মশলাযুক্ত চা আনতেন।

তিনি রাস্তার পাশে বসে পথচারীদের মধ্যে চা, কফি, খেজুর, রুটি ও বিস্কুট বিনামূল্যে বিতরণ করতেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন ছেলেরা। কেউ কিছু দিতে চাইলে বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখান করতেন।

গত বছর সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা আল আরাবিয়া তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সিরিয়ার নাগরিক শায়খ ইসমাইল প্রায় ৪০ বছর ধরে মদিনায় বসবাস করে আসছিলেন। মদিনার কুবা এভিনিউতে একটি সাধারণ বাড়িতে বসবাস করলেও নিজের সম্পদ পুরোটাই উৎসর্গ করেছিলেন হজ ও উমরা যাত্রীদের খেদমতে।

টানা চার দশক ধরে অনন্য এই সেবার কারণে সবার কাছে তিনি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হন। তার মৃত্যুতে মদিনায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাংলাদেশের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করে তার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।

;